somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অটিজম সম্বন্ধে সচেতনতা বিষয়ক প্রবন্ধ:

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১০ দুপুর ১২:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস:
প্রতিবন্ধিতা ও অটিজমের পাশে আমরা সবাই
আজমাল হোসেন মামুন

২ এপ্রিল ৩য় বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস। অন্যান্য বছরের মতো এবারো দিবসটি বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দেশব্যাপী পালিত হচ্ছে।

প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীদের অধিকার সম্বন্ধে অনেকে আজ সোচ্চার। একসময় দৃষ্টি তথা অন্ধদের শুধু প্রতিবন্ধী ব্যক্তি হিসেবে মানুষ জানতো। আধুনিক বিজ্ঞানের যুগে মানুষ নতুন করে ভাবতে শিখেছে। তাই চিন্তা ভাবনা করে মানুষের সমস্যা সমূহ চিহৃিত করছে। ফলে নতুন নতুন প্রতিবন্ধিতা চিহৃিত হচ্ছে। অটিজম তার মধ্যে অন্যতম। অটিজম বিষয়ে আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষের ধারনা নেই বললেই চলে। তাই অটিজম বিষয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতনতার জন্য ২০০৮ সাল থেকে আন্তর্জাতিক ‘ বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস’ পালিত হয়ে আসছে। এবারে দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘প্রতিবন্ধিতা ও অটিজমের পাশে আমরা সবাই।’
চিকিৎসা শাস্ত্র মতে, এটি একটি রোগ। তবে কোন মানসিক রোগ নয়। আর যেসব শিশুরা এ রোগে আক্রান্ত হয় তাদের বলা হয় আটিস্টিক। শিশু অবস্থায় এই রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়। সাধারণতঃ তিন বছর হওয়ার আগেই শিশুর অটিজম সম্বন্ধে লক্ষন দেখা যায়। এদের সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলেও বাংলাদেশেও বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় অটিস্টিক শিশু ও কিশোরদের সংখ্যা বৃদ্ধির হার ভয়াবহ। জানা যায়, প্রতি ১ হাজার শিশুর মধ্যে একজন শিশু অটিস্টিক হয়ে জন্ম গ্রহণ করে বা অটিজমে আক্রান্ত হচ্ছে। ছেলেরা এই রোগে আক্রান্ত হয় বেশি। ছেলে মেয়ের আনুপাতিক হার ৪:১। আবার প্রতি ১০ জন অটিস্টিক শিশুর মধ্যে ২ জনের মধ্যে অত্যন্ত দক্ষতা দেখা যায় ছবি আঁকা, গান, নৃত্য অথবা কম্পিউটার বা গণিতসহ নানা ক্ষেত্রে।
আটিস্টিক শিশুরা দেখতে শিশু কিশোরদের দেখতে অন্য সব স্বাভাবিক শিশু কিশোরদের মতই। কারণ শারীরিক গঠনে কোন সমস্যা থাকে না। বাস্তব তথা তাদের কার্যক্রম ও আচরণ দেখে উপলব্ধি করতে পারা যায়। এদের প্রধান সমস্যা হলো যোগাযোগ ও গঠনমূলক খেলাধূলা।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, গর্ভকালীন সময়ে মায়েদের ভাইরাস জ্বর, জন্মের সময়, জন্মের সময় শিশুর অক্সেজেনের অভাব, পরিবেশ দূষণ, অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়েটিক গ্রহণ এবং বংশগত কারণ হচ্ছে এর মূল কারণ।

বিশ্বের উন্নতশীল দেশ সমূহে অটিজমের চিকিৎসা বের হলেও আমাদের দেশে এদের নিয়ে সরকারি বা বে-সরকারীভাবে তেমন চিন্তাভাবনা করা হয়নি বললেই চলে। অটিস্টিক শিশুর সবচে কার্যকরী চিকিৎসা হচ্ছে, বিশেষ শিক্ষা পদ্ধতি। এসব শিশুরা আলাদা পরিবেশে দ্রুত খাপ খাওয়াতে পারে না। এরা স্বাভাবিক শিশুর মত মানসিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারে না। মাঝে মধ্যে খুব চিৎকার করে, লাফালাফি করে, রাগান্বিত হয়। অনেক সময় নিজেকে আঘাত করে।

বাংলাদেশে ২০০০ সালে অটিস্টিক শিশুদের উন্নয়নের জন্য ঢাকায় প্রথম কাজ শুরু করে ‘সোসাইটি ফর দ্য ওয়েলফেয়ার অব অটিস্টিক চিলড্রেন (সোয়াক)। তবে এখানে শিক্ষা ব্যয় খুবই বেশি। যা নিম্নবিত্ত পরিবারের পক্ষে বহন করা অসম্ভব। একজন শিক্ষার্থীর মাসিক ব্যয় ২ হাজার ৯শ টাকা। এছাড়াও বে-সরকারি পর্যায়ে রাজধানী ঢাকা শহরে তিনটি স্কুল রয়েছে । আসন সংখ্যা মাত্র ৫০ টি।
তাই এদের উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকারি ও বেসরকারী সংস্থা, নীতি নির্ধারকসহ সকল সুশিল সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। এদের দিকে নজর দিলে হয়ত: এরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অবদান রাখতে সক্ষম হবে।


বর্তমান সরকার নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কথা স্পষ্ট উলে¬খ করেছে। পাশাপাশি ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে Digital Bangladesh গড়ার কথা বলা হয়েছে। এই অটিস্টিক শিশুদের বাদ দিয়ে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়া অসম্ভব। সে জন্য ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে প্রতিবন্ধিতা ও অটিজমের পাশে নিজ উদ্যোগে দাঁড়াতে হবে। তবে করম্নণা হিসেবে নয়। মনে রাখতে হবে, এটা তাদের অধিকার। বিষয়টির প্রতি সকলের আশু দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

লেখক-

আজমাল হোসেন মামুন
([email protected])
উন্নয়নকর্মী ও ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক
দক্ষিণখান, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০।
মোবাইল নং-০১১৯১০৮৯০৭৫ (প্রয়োজনে মিস কল)।




৫টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে এসো রাফসান দি ছোট ভাই

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৮

রাফসানের বাবার ঋণ খেলাপির পোস্ট আমিও শেয়ার করেছি । কথা হলো এমন শত ঋণ খেলাপির কথা আমরা জানি না । ভাইরাল হয় না । হয়েছে মূলতো রাফসানের কারণে । কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুমীরের কাছে শিয়ালের আলু ও ধান চাষের গল্প।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০



ইহা নিউইয়র্কের ১জন মোটামুটি বড় বাংগালী ব্যবসায়ীর নিজমুখে বলা কাহিনী। আমি উনাকে ঘনিষ্টভাবে জানতাম; উনি ইমোশানেল হয়ে মাঝেমাঝে নিজকে নিয়ে ও নিজের পরিবারকে নিয়ে রূপকথা বলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×