somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কোরআন জ্ঞানের অফুরন্ত ভান্ডার।

৩০ শে মার্চ, ২০১০ ভোর ৫:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মিসরের খ্যাতনামা বিজ্ঞানী ড. রশীদ খলিফা কোরআন নিয়ে এক ব্যাপক গবেষণা চালিয়েছেন। তিনি প্রাথমিকভাবে কোরআনের প্রতিটি অক্ষর যেভাবে কোরআনে সন্নিবেশিত আছে সেভাবেই তিনি কম্পিউটারে বিন্যস্ত করেন। কোরআনে ১১৪টি সুরার অবস্থান ও ২৯টি সুরার শুরুতে ব্যবহৃত 'হরফে মোকাত্তায়াত' যে নিয়মে বিন্যস্ত আছে সে নিয়মের ভিত্তিতে তিনি হিসাব করতে শুরু করেন। এতে কোরআনের কিছু অলৌকিক তত্ত্ব তার তার কম্পিউটার স্ক্রীনে ভেসে উঠে। এ অলৌকিক তত্ত্বের একটি হচ্ছে এই যে, সমস্ত কোরআন গণিতের এক রহস্যময় বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে আছে। সমগ্র কোরআন যেন ১৯ সংখ্যাটিরই একটি সুদৃঢ় বন্ধন।

আল কোরআনে সুরা মুদাচ্ছিরে ৩০ নং আয়াতে সম্ভবত আল্লাহ তায়ালা একথাটিই বুঝাতে চেয়েছেন, এই আয়াতে আল্লাহ বলছেন,

عَلَيْهَا تِسْعَةَ عَشَرَ

এবং তার উপরে রয়েছে ঊনিশ.
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে "কার উপর"? আগের আয়াতে যেহেতু জাহান্নামের বর্ণনা রয়েছে তাই অনেক মুফাসসির বলেছেন, এরা জাহান্নামের প্রহরী। কোন কোন মুফাসসির বলেছেন,এটা মানুষের ১৯ প্রকারের ইন্দ্রিয় শক্তির কথা বলা হয়েছে।

আসলে আল্লাহর নবী নিজের মুখে একথাটার অর্থ না বলে মনে হয় ভবিষ্যত গবেষণার দ্বার খোলা রাখতে চেয়েছেন।

সমগ্র কোরআনে আল্লাহ শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে ২৬৯৮ বার, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য। 'রহমান' শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে ৫৭ বার, যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।

'রহীম' শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে ১১৪ বার, যা ১৯ দ্বারা ভাগ করা যায়।

আরবী ভাষার বর্ণসমুহের নিজস্ব একটি সংখ্যামান আছে। সে হিসেবে

بِسْمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحْمَنِ ٱلرَّحِيمِ -এর আয়াতটিতে ব্যবহৃত ১৯ হরফের সংখ্যামানের সমষ্টি হচ্ছে ৭৮৬; এ আয়াতটিতে একই অক্ষরের পুনরাবৃত্তি বাদ দিলে মোট বর্ণ থাকে ১০ টি; ১৯ সংখ্যায় ব্যবহৃত অংক দু'টির যোগফল ১+৯=১০; 'বিসমিল্লাহতে' পুনরাবৃত্ত অক্ষরগুলোর সংখ্যামান হচ্ছে ৪০৬; ৭৮৬ থেকে ৪০৬ বাদ গেলে বাকী থাকে ৩৮০, তা ১৯ দ্বারা ভাগ করা যায়। এই ১৯ টি বর্ণমালার ছোট বাক্যটি

'بِسْمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحْمَنِ ٱلرَّحِيمِ' দিয়ে আল্লাহ তায়ালা গোটা কোরআনকে যেন একটি দুশ্ছেদ্য বাঁধনে বেঁধে রেখেছেন।

১৯-এর এই বিন্যাস ছাড়াও কোরআনের দুটি বিপরীত বস্তুর তুলনার ক্ষেত্রে একটি অবিশ্বাস্য মিল অবলম্বন করা হয়েছে। তা হচ্ছে সে দুটি নাম অথবা বস্তুকে সমান সংখ্যাতেই আল্লাহ তায়ালা তার কেতাবে উল্লেখ করেছেন। যেমন 'দুনিয়া ও আখেরাত' এ দুটি কথা কোরআনে সমান সংখ্যায় এসেছে, ১১৫ বার করে।

ঈমান-২৫ বার কুফর-২৫ বার।

'ক্বুল'- মানে বল তার জবাবে বলা হয় 'ক্বালু' মানে তারা বলল। এ দুটি শব্দ কোরআনে সমান সংখ্যায় এসেছে, ৩৩২-বার করে।

গরম-৫ বার আবার ঠান্ডাও ৫ বার এসেছে।

কোন একটি কাজ করলে তার যে অবশ্যম্ভাবী ফল দাঁড়াবে তার উভয়টিকে আশ্চর্যজনকভাবে সমান সংখ্যায় বর্ণনা করা হয়েছে।

'মানুষ সৃষ্টি' কথাটা এসেছে ১৬ বার, আর মানুষ সৃষ্টির উদ্দেশ্য হচ্ছে 'ইবাদাত' তাও এসেছে ১৬ বার।

'গাছের চারা উৎপাদন' করলে 'গাছ' হয়। তাই এ দুটো শব্দই এসেছে ২৬-বার করে।

কোন মানুষ 'হেদায়াত' পেলে তার প্রতি 'রহমত' বর্ষিত হয়, তাই দুটো শব্দ কোরআনে এসেছে ১৬ বার করে।

আল্লাহ বলেছেন 'যাকাত' দিলে বরকত আসে এ দুটো শব্দও কোরআনে এসেছে ৩২ বার করে।

'আবদ' মানে গোলামী আর 'আবীদ' মানে গোলাম, তাই কোরআনে উভয় শব্দই এসেছে ১৫২-বার করে।

নেশা করলে মাতাল হয় এ দুটো শব্দ এসেছে ৬ বার করে।

অংকগত মোজেযা এখানেই শেষ নয়। আশ্চর্য্য হয়ে যাওয়ার মত তথ্য রয়েছে আরও। সামনে "দৈনন্দিন পথনির্দেশিকায়" এ ব্যাপারে আরও তথ্য আসবে ইনশাল্লাহ।

আরও একটি তথ্য দিয়ে আজকের আলোচনা আমরা এখানেই শেষ করছি,

'ইয়াওমুন' মানে দিন। সমগ্র কোরআনে এ শব্দটি ৩৬৫-বার উল্লেখ করা হয়েছে। বছরে যে ৩৬৫-দিন তা কে না জানে?

'ইয়াওমুন' শব্দের বহুবচন 'আইয়াম' মানে দিনসমুহ, এ শব্দটি এসেছে ৩০ বার। আরবী ভাষায় 'চাঁদ' হচ্ছে মাসের সূত্র সূচক, গড়ে বছরের প্রতি মাসে ৩০ দিন, এটাই হচ্ছে চান্দ্র বছরের নিয়ম। হতবাক হতে হয় চাঁদের আরবী প্রতিশব্দ 'ক্বামার' শব্দটি কোরআনে মোট ৩০ বারই এসেছে।

'শাহরুন' মানে মাস, কোরআন মাজীদে এ শব্দটি এসেছে মোট ১২ বার।

'সানাতুন' মানে বছর, কোরআনে এ শব্দটি এসেছে ১৯ বার। কারণ হিসেবে আমরা সম্প্রতি আবিস্কৃত গ্রীক পন্ডিত মেতনের 'মেতনীয় বৃত্তের' কথা উল্লেখ করতে পারি। তিনিই প্রথম এ তত্ত্বটি আবিস্কার করেন যে, প্রতি ১৯ বছর পর সূর্য ও পৃথিবী একই বৃত্তে অবস্থান করে।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×