তো, যা বলছিলাম। চাকরিতে এখনও জয়েনই করিনি কিন্তু এরিমধ্যে ফ্যামিলিতে প্রত্যাশার হাওয়া আমাকে ঘিরে ফেলেছে! আমি ঘরের বড় সন্তান। এই প্রথম মাসিক বেতনের চাকরিতে ঢুকছি। তাই বাবা-মার ধারণা সংসারের চাহিদা পূরণ করতে যাচ্ছি! হাঃ হাঃ হাঃ বুঝতে পারছি হতচ্ছাড়া চাকরি আমার বয়স বাড়িয়ে দিবে। মধ্যবিত্তের এই মনোভাব আমার খুব মজা লাগে! কিভাবে কঠিন বাস্তবতা স্বপ্নগুলোকে পায়ে দলিয়ে এগিয়ে যেতে শেখায় কিংবা বাধ্য করে। সেই ছোটবেলা থেকে আমাদের স্বপ্ন আর বাস্তবতার মধ্যে নিরন্তর যুদ্ধ। নিম্নবিত্তের চাইতে মধ্যবিত্তের পরিস্থিতি জটিল। মধ্যবিত্ত হওয়া মানে মাইনকার চিপায় পড়ার মতো। নিম্নবিত্তের যে স্বাধীনতা সেটা মধ্যবিত্তের নেই। উচ্চবিত্তের সঙ্গে সদ্ভাব বজায় রাখার খাতিরে এখানে স্বাধীনতা মার খায়। এই অদ্ভূত মধ্যবিত্তের সুখ-দুঃখগুলোও অদ্ভূত। যাযাদির সেই টাকাগুলো পাওয়ার জন্য আমি কখনও রিজভী ম্যাডামের (!) সঙ্গে খাতির জমাতে চাইনি। তার সঙ্গে এই বিষয়ে কথাই বলিনি, যা সে চেয়েছিল। ভেবেছিল তার কাছে অনুরোধ করবো, কিন্তু তা হয়নি। যদিও আমি টাকাটা না পাওয়াতে ফ্যামিলি দুঃখ করেছিল। কিন্তু আমার এই আপোষহীনতাই মধ্যবিত্তের অহমিকা, এটাই আমার সুখ। আবার যখন আমার ক্লাস সিক্স পড়ুয়া ছোট বোন মীম আজ সকালে আমাকে ছোট্ট এক চিরকূট দিল, যেখানে লেখা ছিল:
"একটা চশমা কিনে দিবা। MFC তে খাওয়াবা। [তুমি যখন প্রথম টাকা পাবে তখন] হাঃ হাঃ হাঃ"
...যা পড়ে আমার মধ্যবিত্ত দুঃখগুলোকে কেন যেন তুচ্ছ মনে হলো! জীবনের ছোট ছোট সুখগুলো কিভাবে যেন বড় দুঃখগুলোকে পরাভূত করে! ছোট বোনের ছোট এই প্রত্যাশা অদ্ভূত সুখী করলো আমাকে। যা আমার উচ্চবিত্তের বন্ধুরা কখনই অনুভব করতে পারবে না! অদ্ভূত মধ্যবিত্তের সুখগুলো মধ্যবিত্তের মতোই অদ্ভূত মধ্যমানের!
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে মার্চ, ২০১০ দুপুর ১:১৫