somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রতিদান-১

২৭ শে মার্চ, ২০১০ সকাল ৯:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
(আসমান থেকে লাফ দিয়েন না আমার এ শিরোনাম দেইখা। আর চোখগুলা বড় করাও দরকার নাই। যেমন আছেন, তেমনই থাকেন। সেইটা হইবো আমাদের সবার জন্য মঙ্গলময়। ঠিক আছে এবার শোনেন আমার ঘটনাটা..........)

মানুষের জীবনে কখনো কখনো এমন কিছু মুহূর্ত আসে, যা সে চাইলেও এড়াতে পারে না, আবার না চাইলেও ছাড়াতে পারে না।
আমার জীবনেও এমন একটা ক্ষণ ছিল, যা আমি বলছি আপনাদের।
শুরু করার আমি দুটো প্রশ্ন করি আপনাদেরকে, কথায় বলে, চোর নাকি কখনো ধর্মের কাহিনী শোনে না। আর, নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি নাকি মানুষের লোভ থাকে একটু বেশী।
এ কথাগুলো আপনারা কতটুকু বিশ্বাস করেন? যদিও আমি আগে করতাম না। কিন্তু এখন বিশ্বাস করি।
এর কারণটা হচ্ছে এ রকমঃ-

(গত কয়েক মাস ধরে আরোহীকে খুব শাসনে রাখছি, যেন সে কোন ভুল না করে। কুমিল্লা শহরে তার কেউ নেই বলে, সে আমাকে তার বড় ভাইয়ের মত সম্মান করে। আর আমিও তাকে নিজের ছোট বোনের মতো স্নেহ করতাম এতদিন। এজন্য তাকে অনেক কিছু শিখিয়েছি। আমি নিজেই তাকে ফোন করেছি বেশীরভাগ সময়। মুসলিম সমাজের রীতি নীতি সম্পর্কে প্রচুর ধারণা দিয়েছি। যেন জয়ের পরিবারের সাথে সে খাপ খাইয়ে নিতে পারে নিজেকে।
এখন আরোহীর সাথে কথা বললেই আমি বুঝতে পারি, সে অনেক কিছুই শিখেছে। তারপরও একটা কিন্তু থেকে যায়।)


আজ সন্ধ্যাবেলা আরোহী ঘন ঘন মিসকল দিয়েছে আমাকে।
খুব ব্যস্ত ছিলাম, তাই কল ব্যাক করতে পারি নি তখন।
রাত নয়টা বাজে ফোন করলাম তাকে।
সে ফোন রিসিভ করেই কাদতে লাগলো।
আমি তার কান্না শোনে ঘাবড়ে গেলাম। তাকে প্রশ্ন করলাম,"কি হয়েছে তোমার? কাদচ্ছো কেন?"
সে জবাব দিলো,"ভাইয়া, আমি তোমাকে একটা কথা বলবো, তুমি কি রাগ করবে আমার কথা শোনে?"
"ঠিক আছে বল? আমি রাগ করবো না মোটেও।"
"সত্যি তো?"
"হ্যা, তিন সত্যি।"
এবার সে খুব ঠান্ডা মাথায় বললো,"ভাইয়ারে তোর আরোহী আর নেই।"
আমি বিন্দুমাত্র বুঝতে পারলাম না তার কথার অর্থ। তাই জিজ্ঞেস করলাম, "এ কথার মানে কি?"
"মানে আবার কি? মানে, আমি হারিয়ে গেছি?"
"বুঝলাম না?"
"বুঝলে না?"
"না।"
"তুমি যে কথা বলে সবসময় সাবধান করতে আমাকে,আমি রাখতে পারি নি সে কথা।"
(যারা এ লেখা পড়ছেন, তাদেরকে জানিয়ে দেই, আমার সাবধান বাণীটা ছিলঃ-"বিয়ের আগে জয়কে কোন রকম সুযোগ দেবে না। কারণ, তোমার সবকিছু জয়ের নয়, তোমার স্বামীর। আর জয় যদি তোমার দুবর্লতার সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করে, তুমি সরাসরি আমাকে বলবে।" আরোহীর জবাব ছিল,"ঠিক আছে।")
"তারমানে?"
আরোহী কাদতে কাদতে বললো, "ভাইয়ারে, আমি তোমার কথা রাখতে পারি নি। আমি আমার সবকিছু হারিয়ে ফেলেছি। আমি আমার সবকিছু তুলে দিয়েছি জয়ের হাতে।"
এবার আমার আর কোন অসুবিধা হলো না আরোহীর কথা বুঝতে।
এসব কি বলছে সে? এসব কি শুনলাম আমি?
আমি নিজেই নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছি না।

আগে জানতাম, কোন মেয়ে তার সব হারানোর কথা নিজের মায়ের কাছেও নাকি গোপন রাখে।
তাই আরোহীর কথাটাও আমার বিশ্বাস হচ্ছিল না মোটেও।
ভাবলাম, সে হয়তো মিথ্যে বলছে আমার সাথে। কিন্তু কোন মেয়ে নিজের এই ব্যাপারটা নিয়ে মিথ্যে বলবে?
তাও আবার আমার মতো অচেনা-অজানা মানুষের কাছে?
আমার সবকিছু কেমন যেন এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে?

আমি একটুও মিথ্যের গন্ধ পাচ্ছি না তার কথায়।
কারণ, আমার ধারণা, যে কোন মেয়ে অন্তত তার এ ব্যাপার নিয়ে মিথ্যে বলবে না কখনো।

তার কথা শোনার পর কেমন যেন অবশ লাগছে আমার শরীরটা।
একটুও শক্তি পাচ্ছি না নড়াচড়া করার।
বুঝতে পারছি না, বেচে আছি, নাকি মরে গেছি।
কিন্তু আমি যে কাদচ্ছি, এটা বুঝতে পারছি পরিস্কারভাবে।
(কারণ, একজন টিচার একজন ছাত্রকে যেভাবে পড়ায়, ঠিক সেভাবে আমিও আরোহীকে অনেক কিছু শিখিয়েছি। একজন ছাত্র যখন ফেল করে, তখন টিচারের যে কি অবস্থাটা হয় তখন আমারও একই অবস্থা হয়েছিল।)

প্রায় পাঁচ মিনিট পর আমি আরোহীকে জিজ্ঞেস করলাম, "‌‌‍‌তুমি নিজেকে তার হাতে তুলে দেওয়ার আগে, তোমার কি একটুও মনে ছিল না তোমার তোমার বাবা-মা আর বোনদের কথা। আর আমার কথা না হয় আমি বাদ-ই দিলাম?"
সেও কাদতে কাদতে বললো,"না, আরমান, তুমি এরকম করে বলো না। সবার কথাই আমার মনে ছিল। এমন কি তোমার কথাও আমি ভুলি নি।"
"তারপরও তুমি কেন করলে এমন কাজটা?"
(চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা মে, ২০১০ সন্ধ্যা ৬:৫৪
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পুরনো ধর্মের সমালোচনা বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেই নতুন ধর্মের জন্ম

লিখেছেন মিশু মিলন, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:১৫

ইসলামের নবী মুহাম্মদকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তিথি সরকারকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে এক বছরের জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীনে প্রবেশনে পাঠানোর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

চরফ্যাশন

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫৯



নয়নে তোমারি কিছু দেখিবার চায়,
চলে আসো ভাই এই ঠিকানায়।
ফুলে ফুলে মাঠ সবুজ শ্যামলে বন
চারদিকে নদী আর চরের জীবন।

প্রকৃতির খেলা ফসলের মেলা ভারে
মুগ্ধ হয়েই তুমি ভুলিবে না তারে,
নীল আকাশের প্রজাতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×