যে গ্রামে আমার জন্ম সে গ্রামের নাম বটিয়া। বটিয়া নামটির অর্থ আমি জানিনা। তবে আমার ধারণা, সারা পৃথিবীতে বটিয়ার মতো সুন্দর জায়গা আর দ্বিতীয়টি নেই। অনেক খুঁজে দেখেছি, পাইনি।
ঢাকা জেলার দোহার উপজেলার মাঝখানে অবস্থিত এ গ্রামটি। দোহার থানার সামনের চৌরাস্তার মোড় থেকে ৫ টাকা (২০০৭ সালে আমি যখন চলে আসি তখন ৫ টাকাই ভাড়া ছিল। এখন কত হয়েছে আমি জানি না।) রিক্সা ভাড়া দিলেই এ গ্রামে নিয়ে যাবে।
গ্রামটিতে তেমন কিছুই নাই। খালি মানুষ আর মানুষ। সরকারী একটি প্রতিষ্ঠান আছে তার নাম বটিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। আমার ভাবতে ভাল লাগে, আমি আমার গ্রামের স্কুলে আমার প্রথম পাঠ নিয়েছিলাম। আমি আমার মাধ্যমিক শিক্ষা গ্রহণ করি জয়পাড়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে। এসএসসি পাস করার পর যত আড্ডা দিয়েছি তার বেশীর ভাগই এই স্কুলের মাঠে বসে।
২০০৭সালের ১০ ফেব্রুয়ারি আমি শ্রীলংকা চলে আসি। এখন আমি প্রচন্ড মিস করি আমার গ্রামকে। আমার বিদ্যালয়কে। মনটা অনেক খারাপ হয়ে যায়। ইস্ আবার যদি আমি আবার সেই বাল্যকালে ফিরে যেতে পারতাম! সেই বর্ষার দিনে কত কষ্ট করে খাল পার হয়ে স্কুলে যাওয়া। কাচা রাস্তায় বৃষ্টির পানিতে পিছলে পড়ে যাবার যোগাড়। লুঙ্গি পেচিয়ে বই চেপে ধরে কত কষ্টেই না স্কুলে যেতাম। উদ্দেশ্য একটাই ১০০% উপস্থিতির পুরস্কারটা পাওয়া। তবে দুঃখের কথা রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে নবম শ্রেণীতে (১৯৮৭ সালে) ১০০ % উপস্থিতি ছিল আমার ক্লাসে। দুর্ভাগ্য সে বছর বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী উৎসবে সেরা উপস্থিতির পুরস্কার নামে কোন পুরস্কারই রাখা হয়নি। কি যে খারাপ লেগেছিল সেদিন!