রক্তে লেখা বাংলায়
শরীফ এ. কাফী
সূতী, গোপালপুর
১২ অগাষ্ট ১৯৮৪
(কবি সৌনাক দত্তের কমেন্টের পর আমারও মনে হয়েছে ১৬ বছর আগে লেখা কবিতাটি সম্পাদিত ও পরিমার্জিত হওয়া প্রয়োজন। তাই সম্পাদনা করে প্রকাশ করলাম)
পাখীরা কি ভালবাসে প্রেম করে
চোখের দৃষ্টিতে কি প্রেম থাকে
ওরা কি হৃদয় ঢেলে গান করে
জ্যোৎস্নার আলোয় পূর্ণিমা রাতে?
ওরা কি গায় -কে প্রথম কাছে এসেছি
ওরা কি বলে -কে প্রথম ভালবেসেছি?
আহা পাখীদের ভাষা যদি জানতাম
ওদের প্রেম নিয়ে আমি কবিতা লিখতাম!
কেমন হয় পাখীদের প্রেমালাপ
ইস একবার যদি শুনতে পেতাম
পাখীর শক্ত ঠোটে চুম্বন স্বাদ
কত উষ্ণ তা জানিবার ছিল সাধ
কত গভীর হয় পাখীদের চুম্বন
মন দেয়া-নেয়া হৃদয়ের বন্ধন
দেখেছ কি টোনাদের প্রেম আলিঙ্গন
বিবশে টুনীর খসে যাওয়া বসন?
নিজেদের নীড়ে পাশাপাশি বসে
গভীর প্রেমালাপ শৃঙ্গার রসে
দু'জনে দু'জনার ডানায় ভাসে
ডালে ডালে তারা নাচা-নাচি করে
রোমাঞ্চে মেতেছে টোনা আর টুনি
মধুচন্দ্রিমা হবে সারা রাত জাগি
জোনাকীর জ্যোস্না আলো দেবে ঘরে
কাটাবে প্রহর তারা গলাগলি ধরে।
ছানাগুলি সব হা করে থাকে
মা বুঝি ঐ খানা নিয়ে আসে
আদরে আদরে পরম সোহাগে
তুলে দেবে সব কচি কচি গালে
ধূর্ত ঈগল ছিল তাকে তাকে
এক ছোঁ’তে নিল মা টুনী ‘টাকে
টুনীর চিৎকারে বুক যায় ফাটি
অসহায় টোনার বৃথা ছুটাছুটি।
নিমেষে সব হয় ছারখার
যতনে গোছানো সোনার সংসার
অবুঝ ছানারা এখনও অপেক্ষায়
ঈগলের নখরে নির্মম ঠোকরে
টুনিদের রক্ত আজও ঝরে যায়
কত টুনি গেছে কত টুনি যাবে
পরিসংখ্যান তার নাই কারো কাছে
রক্তে লেখা আমাদের শ্যামল বাংলায়!
(সম্পাদিত : ২২ মার্চ ২০১০)
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মার্চ, ২০১০ রাত ৯:৩০