ভাষা আন্দোলনের চেতনা বাস্তবায়নকারী প্রথম প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমী।বাঙালি জাতির ভাষা, সংস্কৃতি ও মননের প্রতীক। বাংলা ভাষার উন্নয়ন, চর্চা ও গবেষণা এবং বিশ্বসাহিত্য ভুবনে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য প্রচার ছিল এর উদ্দেশ্য।১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের ২১ দফা দাবির মধ্যে অন্যতম দাবি ছিল বাংলা একাডেমী প্রতিষ্ঠা।
১৯৫৫ সালের ৩রা ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলা একাডেমী প্রতিষ্ঠিত হয়। তবে এরও আগে বিভিন্ন ব্যক্তি ও মহল থেকে এই একাডেমী প্রতিষ্ঠার দাবি ওঠে। বাংলা একাডেমীর ইতিহাস গ্রন্থে বলা হয়েছে : ভাষা-আন্দোলন তথা ভাষা আন্দোলন কেন্দ্রিক পূর্ব বাংলার রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক আন্দোলনের আপাত ফল রূপে বাংলা একাডেমী প্রতিষ্ঠা হয়েছিল।
প্রিন্সিপাল আবুল কাসেম, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, আবুল মনসুর আহমদ সহ অনেকেই বাংলা ভাষার উন্নয়নের জন্য একটি গবেষণাগার প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্ব দেন।৫৫ সালের নভেম্বরে পূর্ব পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী আবু হোসেন সরকার বাংলা একাডেমী প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেন।২রা ডিসেম্বর সরকার এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে।এর ৬ দিন পর বর্ধমান হাউজের নীচ তলার একটি কক্ষে অফিসের কার্যক্রম শুরু হয়।
একাডেমীর প্রথম পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পান ড. এনামূল হক। ১৯৫৭ সালে বাংলা একাডেমী আইন পাশ হলে এটি একটি স্বায়িত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ শুরু করে। লোকসাহিত্য, পাঠ্যবই, অনুবাদ, জীবনী গ্রন্থ সহ এ পর্যন্ত পাঁচ হাজারেরও বেশি গ্রন্থ প্রকাশ করেছে বাংলা একাডেমী। প্রজন্মের পর প্রজন্ম বাংলা ভাষাকে সমৃদ্ধ করার ব্রতে নিয়োজিত এই একাডেমী নানা প্রতিকূলতার মাঝেও প্রত্যাশা পূরণ করে যাচ্ছে।বাংলা একাডেমী মাতৃভাষা বাংলার গৌরব ছড়িয়ে দেবে বিশ্বব্যাপী।