somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আর্জেন্টিনার সাপোর্ট কইরা কাঁদতে কাঁদতে জীবন গেল.....একটি আফসুস পোস্ট! :((

১৮ ই মার্চ, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সামনে আসছে ফুটবল বিশ্বকাপ।আমার এ ক্ষুদ্র জীবনে আমার মাত্র তিনটা বিশ্বকাপ দেখার সৌভাগ্য হয়েছে।আর একটা দেখার সৌভাগ্য বোধহয় হতে যাচ্ছে।কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, তিনটা বিশ্বকাপের কোনটারই স্মৃতি আমার জন্যে সুখকর নয়।কারন আর কিছুনা।কারন হচ্ছে আমি আর্জেন্টিনার সাপোর্টার।

আর্জেন্টিনা আর ম্যারাডোনার গল্প শুনতাম আমার বাবার কাছ থেকে। তখন খেলা বুঝতাম না।ক্লাস টু'তে পরি।অজ পাড়াগাঁয়ে থাকি, বিশ্বকাপ কী জিনিস তা বোঝার কথাও না।কিন্তু বাবার কাছে গল্প শুনে মনে হত ম্যারাডোনা না জানি কি একটা!! দেবতা টেবতাও হতে পারে।

১৯৯৪ সালে বাবা বাড়িতে পেপারের একটা পেজ নিয়ে গেলেন।ওই পেজে '৯৪ বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করা সব কয়টি দেশের স্কোয়াডের ছবি ছিল।পেজটি দেয়ালে টানিয়ে আমাকে ডেকে এনে পিচ্চি একটা লোকের ছবির দিক ইঙ্গিত করে বললেন এই দেখ, এইটা ম্যারাডোনা।সত্যি, আমার প্রথম কথা ছিল "এতটুকু লোকটা ম্যারাডোনা?"

তখন থেকেই শুরু।ওই বিশ্বকাপেই ম্যারাডোনা নিষিদ্ধ হলেন।আমি অবশ্য ওই বিশ্বকাপটা দেখিনি।কিন্তু বাবার কাছে শুনে বুঝেছিলাম ম্যারাডোনা নিষিদ্ধ না হলে সেবারেও একটা চান্স ছিল আর্জেন্টিনার।
খেলা দেখার আগ থেকেই আমি আর্জেন্টিনার সাপোর্টার।

প্রথম বিশ্বকাপ দেখি '৯৮ এ।ক্লাস সিক্স এ পড়ি।খুব একটা খেলা না বুঝলেও বুঝেছিলাম যে আমার আর্জেন্টিনা নামের দলটা ভালো খেলে বাদ পড়েছে।কিন্তু অনুভুতি ততটা স্পর্শ করেনি।২০০২'এ তো স্কুল পালিয়ে খেলা দেখতাম।আর্জেন্টিনা যেদিন বাদ পড়ে ওই দিনও স্কুল পালিয়ে এসেছিলাম।হেরে যখন বাতিস্তুতারা মাঠের মধ্যে শুয়ে পড়ে কাঁদছিল, নিজেকে সামলিয়ে রাখতে তখন খুব সংগ্রাম করতে হয়েছিল।

সর্বশেষ ২০০৬ এ খেলার প্রথম দিকে বাড়িতে ছিলাম।আমার বাবা আর্জেন্টিনার খেলার সময় আমার উত্তেজনা দেখে বলত, 'এটা তো খেলাই, নাকি? এত উত্তেজিত হস ক্যান? এরকম উত্তেজিত হলে তো তোর হার্ট
এ্যাটাক হবে!' কিন্তু কে রাখে আমার উত্তেজনা দমিয়ে রাখতে!!অবশেষে কোয়ার্টার ফাইনালে জার্মানির সাথে খেলার সময়ে মেসে ছিলাম।সবাই খেলা দেখতে টি.এস.সি. তে গেছিল।আমি অসুস্থ থাকায় রুমের ছোট টি.ভি.টাতেই একা একা খেলা দেখছিলাম।আর্জেন্টিনা হারার সাথে সাথেই আমার বাবার ফোন, "খেলা দেখছিস?" আমি কই "হুমম দেখছি"।তখন বাবা কয় "হারা-জেতা খেলারই অংশ।এগুলো ব্যাপার না...ইত্যাদি ইত্যাদি"।আমারে বুঝায় আর কি! যদি উত্তেজনার বশে কিছু করে ফেলি!!


তবে সবচেয়ে কষ্টের ব্যাপার হচ্ছে আমার ছোট ভাই।ওইডারে আমি সব কিছু শিখাইতে পারলেও আর্জেন্টিনার সাপোর্ট করা শিখাইতে পারিনাই।ওইটা খাস ব্রাজিলের সাপোর্টার।কত বুঝাইলাম, কিছুতেই কিছু হয়না।বাসায় আর তিনটা মানুষ আর্জেন্টিনার সাপোর্টার, আর ও একাই ব্রাজিলের!!আর্জেন্টিনা হারার পর অবশ্য সেও ফোন দিয়েছিল।ফোন দিয়া কয়......"হারছে, হারছে......আর্জেন্টিনা হারছে।খুশি হইছি"।আর আমি মনে মনে কই " তোরে খালি যদি হাতের কাছে পাইতাম একবার!!!"

কোন একটা পত্রিকায় পড়েছিলাম, "ম্যারাডোনা '৮৬ এ ইংল্যান্ডের সাথে যে খেলা খেলেছে, ওই একটা ম্যাচের জন্যেই '৮৬ সালের আগের এবং পরের ১০০ বছর ম্যারাডোনার বা আর্জেন্টিনার সাপোর্ট করে কাঁদলেও শান্তি!!"

সেই কানতে কানতেই এতদুর আসা.........এবারও কি তারই পুনরাবৃত্তি হবে? যেহেতু '৮৬ তে জন্মই হয়নাই, সুতরাং এখন কিছু একটা দেখাইয়া তারপর আমাদের কাঁদা।এরকম খালি খালি কষ্ট পেতে আর ভাল্লাগেনা!!


সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:৪৬
২৭টি মন্তব্য ২৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। হরিন কিনবেন ??

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১০ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৯



শখ করে বন্য প্রাণী পুষতে পছন্দ করেন অনেকেই। সেসকল পশু-পাখি প্রেমী সৌখিন মানুষদের শখ পূরণে বিশেষ আরো এক নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এবার মাত্র ৫০ হাজার টাকাতেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঠিক কোন বিষয়টা মৌলবাদী পুরুষরা শান্তি মত মানতে পারে???"

লিখেছেন লেখার খাতা, ১০ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:২৭


ছবি - গুগল।


ফেসবুক আর ইনস্টাগ্রাম এখন আর শুধু সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম নয়, রোজগার এর একটি চমৎকার প্ল্যাটফর্মও। একটু স্মার্ট এবং ব্রেন থাকলে ফেসবুক/ইনস্টাগ্রাম থেকে রোজগার করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধখানা ভ্রমন গল্প!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১০ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৩৯


২০০২ সাল বান্দারবানের রিগ্রিখ্যাং-এর এই রিসোর্ট আজ সকালেই আমরা আবিস্কার করলাম! পাহাড়ের এত উপরে এই মোড়টাতে একেবারে প্রকৃতির মাঝে এমন একটা রিসোর্ট থাকতে পারে তা আমরা সপ্নেও কল্পনা করিনি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্যাড গাই গুড গাই

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১১ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

নেগোশিয়েশনে একটা কৌশল আছে৷ ব্যাড গাই, গুড গাই৷ বিষয়টা কী বিস্তারিত বুঝিয়ে বলছি৷ ধরুন, কোন একজন আসামীকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে৷ পারিপার্শ্বিক অবস্থায় বুঝা যায় তার কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

টান

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১১ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:২২


কোথাও স্ব‌স্তি নেই আর
বিচ্যুতি ঠেকা‌তে ছু‌টির পাহাড়
দিগন্ত অদূর, ছ‌বি আঁকা মেঘ
হঠাৎ মৃদু হাওয়া বা‌ড়ে গ‌তি‌বেগ
ভাবনা‌দের ঘুরপাক শূণ্যতা তোমার..
কোথাও স্ব‌স্তি নেই আর।
:(
হাঁটুজ‌লে ঢেউ এ‌সে ভাসাইল বুক
সদ্যযাত্রা দম্প‌তি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×