তাঁর প্রতি প্রণতি
জন্ম : ৩০ নভেম্বর, ১৯০৮
জন্মস্থান : কুমিল্লা
মৃত্যু : ১৮ মার্চ, ১৯৭৪
মৃত্যুস্থান : কলকাতা।
বুদ্ধদেব বসু বিংশ শতাব্দীর দুই ও তিনের দশকের নতুন কাব্যরীতির সূচনাকারী কবি হিসেবে সমাদৃত। তার পিতা ভূদেব বসু পেশায় উকিল ছিলেন, মায়ের নাম বিনয়কুমারী। তার পৈতৃক আদি নিবাস ছিল বিক্রমপুরের মালখানগর গ্রামে। বুদ্ধদেব জন্মের অল্প পরেই তার মাতার মৃত্যু ঘটে। এতে শোকাভিভূত হয়ে তার পিতা সন্যাসব্রত গ্রহণ করে গৃহত্যাগ করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে ১৯৩০-এ প্রথম শ্রেণীতে বিএ অনার্স এবং ১৯৩১-এ প্রথম শ্রেণীতে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি মেধাবী ছাত্র ছিলেন। বিএ অনার্স পরীক্ষায় তিনি যে নম্বর লাভ করেন তা একটি রেকর্ড। আজও সে রেকর্ড অক্ষুণ্ন আছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাজীবন শেষে ১৯৩১ থ্রিস্টাব্দে তিনি কলকাতায় অভিভাসন গ্রহণ করেন।
তাকে কল্লোল যুগের অন্যতম প্রধান কান্ডারি হিসেবে গণ্য করা হয়। ইউরোপীয় এবং মার্কিন সাহিত্যের কলাকৌশল বাংলা সাহিত্যে প্রবর্তনে তিনি বিশেষ ভূমিকা রাখেন। কলকাতায় তার বাড়ির নাম রেখেছিলেন কবিতাভবন যা হয়ে উঠেছিল আধুনিক বাংলা সাহিত্যের তীর্থস্থান। সাহিত্যের প্রায় সব শাখায় তিনি কাজ করেছেন।
কবিতা পত্রিকার প্রকাশ এবং সম্পাদনা কবি বুদ্ধদেব বসুর জীবনের একটি উল্লেখযোগ্য কীর্তি।
মর্মবাণী, বন্দির বন্দনা, কঙ্কাবতী, শীতের প্রার্থনা : বসন্তের উত্তর, তিথিডোর, কালের পুতুল ইত্যাদি তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ।
তাঁর একটি কবিতা
--------------------
চিল্কায় সকাল
কী ভালো আমার লাগল আজ এই সকালবেলায়
কেমন ক'রে বলি।
কী নির্মল নীল এই আকাশ, কী অসহ্য সুন্দর,
যেন গুণীর কণ্ঠের অবাধ উন্মুক্ত তান
দিগন্ত থেকে দিগন্তে :
কী ভালো আমার লাগল এই আকাশের দিকে তাকিয়ে;
চারদিক সবুজ পাহাড়ে আঁকাবাঁকা, কুয়াশায় ধোঁয়াচে,
মাঝখানে চিল্কা উঠছে ঝিলকিয়ে।
তুমি কাছে এলে, একটু বসলে, তারপর গেলে ওদিকে,
ইস্টেশনে গাড়ি এসে দাঁড়িয়েছে, তা-ই দেখতে।
গাড়ি চ'লে গেল। - কী ভালো তোমাকে বাসি,
কেমন ক'রে বলি।
আকাশে সূর্যের বন্যা, তাকানো যায় না।
গোরুগুলো একমনে ঘাস ছিঁড়ছে, কী শান্ত।
- তুমি কি কখনো ভেবেছিলে এই হ্রদের ধারে এসে আমরা পাব
যা এতদিন পাইনি?
রুপোলি জল শুয়ে-শুয়ে স্বপ্ন দেখছে, সমস্ত আকাশ
নীলের স্রোতে ঝ'রে পড়ছে তার বুকের উপর
সূর্যের চুম্বনে। - এখানে জ্ব'লে উঠবে অপরূপ ইন্দ্রধনু
তোমার আর আমার রক্তের সমুদ্রকে ঘিরে
কখনো কি ভেবেছিলে?
কাল চিল্কায় নৌকোয় যেতে-যেতে আমরা দেখেছিলাম
দুটো প্রজাপতি কত দুর থেকে উড়ে আসছে
জলের উপর দিয়ে। - কী দুঃসাহস ! তুমি হেসেছিলে, আর আমার
কী ভালো লেগেছিল
তোমার সেই উজ্জ্বল অপরূপ সুখ। দ্যাখো, দ্যাখো,
কেমন নীল এই আকাশ। - আর তোমার চোখে
কাঁপছে নীল এই আকাশ, কত মৃত্যু, কত নতুন জন্ম
কেমন ক'রে বলি।
১১ নভেম্বর ১৯৩৪, চিল্কা
আলোচিত ব্লগ
অপরূপের সাথে হলো দেখা
আট এপ্রিলের পর দশ মে আরো একটা প্রাকৃতিক আইকন বিষয় ঘটে গেলো আমার জীবনে এবছর। এমন দারুণ একটা বিষয়ের সাক্ষী হয়ে যাবো ঘরে বসে থেকে ভেবেছি অনেকবার। কিন্তু স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমরা কেন এমন হলাম না!
জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন
অভিমানের দেয়াল
অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি
২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন
বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১
তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন