somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গান ছাড়লেন আসিফ

১৭ ই মার্চ, ২০১০ বিকাল ৪:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


গান গাওয়া ছেড়ে দিচ্ছেন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবর। কয়েক মাস আগে তিনি আর প্লেব্যাক করবেন না বলে জানিয়েছেন। গতকাল সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছেন, তিনি আর কোনো অ্যালবামে গান করবেন না। বাণিজ্যিক উদ্দেশে শিল্পী এখন থেকে আর কোনো গান করবেন না বলেই জানিয়েছেন। অনেকেই মনে করতে পারেন, হঠাত্ করে কেন এমন সিদ্ধান্ত নিলেন শিল্পী। তবে তিনি বলেন, আমি হঠাত্ করে গান না করার সিদ্ধান্ত নেইনি। এক বছর আগে থেকেই আমি আমার মায়ের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছি। আসছে ২৫ তারিখ আমার ৩৮ বছর পূর্ণ হবে। জন্মের পর থেকে এ ৩৮ বছর আমি সংগ্রাম করেছি। শিল্পী হওয়ার পর আমার স্বাভাবিক জীবনযাপন করা আর হয়ে ওঠেনি। এ জন্য আমি আবার শিল্পী থেকে সাধারণ মানুষ হয়ে যেতে চাই। এ জন্য আমি আমার পারিবারের সঙ্গে কথা বলেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার প্রতিটি কাজই প্ল্যান করে করা। এ সিদ্ধান্তটিও আমি হঠাত্ করে নেইনি। ক্যারিয়ারের শুরুতেই বলেছিলাম, দশ বছর গান করব এরপর রাজনীতি। এ খবরটি অনেক পত্রিকাতেই প্রকাশিত হয়েছিল। এ জন্য কেউ বলতে পারবেন না যে আমি হঠাত্ করে গান ছেড়ে দিচ্ছি। আমি এ পর্যন্ত দেড় হাজারের কিছু বেশি গান গেয়েছি। আমার শ্রোতারা যে আমার সব গানই শুনেছেন তাতো নয়। যে গানগুলো তারা শোনেনি এখন সেই গানগুলোই তাদের কাছে নতুন মনে হবে। আমার না শোনা গানগুলো শুনতে অনেক সময় লাগবে শ্রোতাদের। গান ছেড়ে দিলেও নতুন শিল্পীদের জন্য কাজ করব। আমার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে নতুন শিল্পীদের অ্যালবাম করব।
গান থেকে দূরে সরে যাওয়ার পেছনে শিল্পীর ভেতর কোনো অভিমান কাজ করেছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, না আমি কোনো অভিমানের জন্য গান ছাড়ছি না। এখানে অভিমানের কোনো জায়গা নেই। এটি প্রি-প্ল্যান করা। গান ভালোবাসি বলেই কিছুদিন খারাপ লাগবে। এরপর সব ঠিক হয়ে যাবে। শিল্পী জীবনে আমি বেশ কিছু দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করেছি। বেশ কয়েকজন সিনিয়র শিল্পী নিয়ে কণ্ঠশিল্পীদের স্বার্থরক্ষার জন্য কাজ করার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু শিল্পীদের মধ্যে একাত্মতা না থাকার কারণে তা পুরোপুরি সম্ভব হয়নি। রুনা লায়লা ৪০ বছর ধরে প্লেব্যাক করে আজ ৮ হাজার টাকা সম্মানী পাচ্ছেন। অথচ সিনেমার একজন এক্সট্রার সম্মানীও বেড়েছে। প্লেব্যাক শিল্পীদের সম্মানী বাড়ানোর জন্য কাজ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু গানের সঙ্গে জড়িত নেপথ্যের কিছু লোকজনের কারণেই আমি শিল্পীদের প্রাপ্য সম্মানী অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছি। এ জন্য আমি দেখেছি আমাদের গন্তব্য একটি কুপের মতো। যেখানে কোনো দিক-নির্দেশনা নেই, সেখানে আমি এগিয়ে যেতে পারি না বলেই নিজে সরে দাঁড়িয়েছি।
সংবাদ সম্মেলনে আসিফ হাসিমুখেই গান থেকে তার সরে যাওয়ার ঘোষণা দেন। তবে অ্যালবামের জন্য কোনো গান না করেলও স্টেজে গান করবেন তিনি। রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে তিনি এখন সেখানেই বেশি সময় দেবেন। দলের প্রতিটি অঙ্গসংগঠনের জন্য থিম সং গাইবেন তিনি। পাশাপাশি সারাদেশ ঘুরেই তিনি দলের হয়ে কাজ করবেন। এতদিন ব্যক্তিকেন্দ্রিক কাজ করেছেন, এখন দেশের জন্য কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। আসিফ বলেন, এখন রাজনীতিই আমার একমাত্র প্রধান কাজ। আমি একজন পরিপূর্ণ রাজনীতিবিদ হতে চাই। অনেকেই মনে করেন, রাজনীতি মানেই এমপি নির্বাচন করা। কিন্তু আমি তা মনে করি না। ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে যাওয়াটাই আমার লক্ষ্য।
ক্যারিয়ারের এ দশ বছরে অনেক হিট গান উপহার দিয়েছেন আসিফ আকবর। অডিওর পাশাপাশি প্লেব্যাকেও তিনি সমান জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। শিল্পীর প্রকাশিত সর্বশেষ অ্যালবাম সেই দিনগুলি কই (একক) এবং স্বপ্ন দেখি (ডুয়েট) ভালোবাসা দিবসে বাজারে এসেছে। কতটা রাত একা শিরোনামে তার সঙ্গে মুহিনের একটি ডুয়েট অ্যালবামের কাজ শেষ হয়েছে, যা খুব শিগগিরই বাজারে আসবে। এছাড়া কনক চাঁপার সঙ্গে একটি ডুয়েট অ্যালবাম নির্মিতব্য অবস্থায় রয়েছে। আর গান ছেড়ে দেয়ার কারণে শ্রোতাদের জন্য একটি নতুন একক অ্যালবাম উপহার দেবেন শিল্পী। এ অ্যালবামটি ভিন্ন ধাঁচে তৈরি করবেন তিনি। আর এ অ্যালবাম থেকে অর্জিত টাকা দিয়ে তিনি বাবার নামে একটি ট্রাস্ট গঠন করবেন। এ ট্রাস্ট থেকে তিনি বিভিন্ন রকম জনহিতকর কাজ করবেন।
এখন অনেক নতুন শিল্পী আমাদের সঙ্গীতাঙ্গনে এসেছেন। এদের সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছা ছিল আসিফের। মুহিন এবং হৈমন্তির সঙ্গে তিনি অ্যালবাম করেছেন। তবে আরও কয়েকজন নতুন শিল্পীর সঙ্গে তার গান করার ইচ্ছা ছিল। এছাড়াও দেশের বরেণ্য শিল্পী রুনা লায়লা, সাবিনা ইয়াসমিন, সামিনা চৌধুরী, ফাহমিদা নবী, মিতালি মুখার্জির সঙ্গে অ্যালবাম করার ইচ্ছা থাকলেও তা আর পূরণ করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে এসব শিল্পীর সঙ্গে তিনি চলচ্চিত্রের অনেক গান করেছেন বলে কোনো আক্ষেপ তার নেই। আসিফের গান ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত তার অনেক ভক্তকে চোখের পানিতে ভাসাবে। কেননা তারা তাদের প্রিয় শিল্পীর নতুন কোনো গান শুনতে পাবেন না। তারপরও নিজের গেয়ে যাওয়া গান দিয়েই শ্রোতাদের মাঝে বেঁচে থাকবেন তিনি।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×