নাটোরের বড়াইগ্রাম মহিলা কলেজের ১৯ শিক্ষক দীর্ঘ ১৩ বছর যাবৎ বিনা বেতনে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যেই ছাত্রীদের পাঠদানের অনুমতি ও সরকারী মঞ্জুরী পেলেও বছরের পর বছর ধরে এমপিওভূক্ত (মান্থলী পে-অর্ডার) না হওয়ায় প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ১৯জন প্রভাষক ও ৮ জন কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
বড়াইগ্রাম পৌরসভা কার্যালয় থেকে আধা কিলোমটার পূর্বদিকে ১৯৯৮ সালে ১.১৫ একর জায়গার নিয়ে ছায়াঘেরা নিরিবিলি পরিবেশে স্থানীয় শিক্ষানুরাগী ও নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের আর্থিক সহায়তায় বড়াইগ্রাম মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার পরে ধীরে ধীরে সকল শর্ত পূরণ করায় বিধি অনুসারে কলেজটি সরকারী মঞ্জুরী লাভ করে। বিগত বছরের পাবলিক পরীক্ষাগুলোতে এ কলেজের ছাত্রীরা কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফল করেছে। দীর্ঘ ১৩ বছরেও এমপিওভূক্ত না হওয়ায় এ প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীরা মানসিকভাবে হতাশ হয়ে পড়েছেন। অদ্যাবধি এমপিওভূক্ত হয়নি।
ফলে এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীরা দীর্ঘদিন যাবৎ বিনা বেতনে কর্মরত থাকায় বর্তমান দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতির যুগে আর্থিক অভাব-অনটনের কারণে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। অন্যদিকে, স্থানীয়ভাবে সংগৃহিত আয়ের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের ব্যয়ভার চালু রাখাও খুবই দুরুহ হয়ে পড়েছে বলে জানান প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটির সভাপতি হাজী আব্দুস সোবহান। তিনি আরো বলেন সরকার দীর্ঘ ৬ বছরপর নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিও ভুক্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সে লক্ষ্যে গত ১৭ ফেব্রুয়ারী স্থানীয় সাংসদ অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুসের সুপারিশসহ (ডিও) আবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির ফলাফল বরাবরই ভাল । ২০০৯ এর এইচএসসি পরীক্ষায় পাসের হার ছিল ৮১%, চলতি বছর ৪৫জন ছাত্রী পরীক্ষায় অংশ নিবে। এবছর কলেজটিকে এইচএসসি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্র করা হয়েছে।
অধ্যক্ষ মাহবুব উল হক বর্তমান ক্ষমতাসীন দলে যোগদান করেছেন যদি এবার একটা কিছু হয়। তিনি জানান, এমপিওভূক্তির আশায় দীর্ঘ একযুগ যাবৎ শিক্ষক কর্মচারীদের নিয়ে বিনা বেতনে পরিশ্রম করে যাচ্ছি। বেতন না পাওয়ায় আর্থিক অভাব-অনটনের কারণে সামজের সর্বোচ্চ শিক্ষিত হয়েও সামাজিক মর্যাদা নিয়ে জীবনযাপন করতে পারছি না।