somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হাছন রাজার এককালের বাড়ী -ছবিসহ ভ্রমণবৃত্তান্ত

১৫ ই মার্চ, ২০১০ রাত ১২:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একটা কাজে সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা ডাকবাংলোতে থাকতে হলো বেশ কিছুদিন। অবশ্য কাজের পরিধি সিলেট জেলার সব উপজেলাতেই ছিল। সিলেট শহরে থাকা যেহেতু একটু ব্যয়বহুল। তাই কাছাকাছি কোন উপজেলায় ডাকবাংলো পাওয়া যায় যেখান থেকে পুরো জেলাতেই গাড়ী নিয়ে অতি সহজেই যাতায়াত করা যায় একথা চিন্তা করে বিশ্বনাথ উপজেলাকেই প্রাধান্য দিলাম। বিশ্বনাথ উপজেলা ডাকবাংলোতে উঠলাম। এখানে এসে দেখা গেল বড় বড় বিভিন্ন আকৃতি প্রকৃতি আর বাহারী সব বাড়ি। অবশ্য আমরা জানি সিলেট এলাকার বেশীর ভাগ পরিবারেই কেউ না কেউ ইংল্যান্ড প্রবাসী বিশেষ করে লন্ডনে তাদের অবাধ আনাগোনা। কিন্তু এই উপজেলায় যেন পরিমাণটা একটু বেশী, যার দরুণ লন্ডনী পাউন্ডে বাড়িও বানিয়েছে চমৎকারভাবে। নিত্যপণ্যের দামও চড়া আর হোটেলে খেতে গেলে পকেটখালী হওয়ার উপক্রম হয়।

এরমধ্যে কেয়ারটেকার কে জিজ্ঞেস করলাম এখানে দেখার মত কোন কিছু আছে কিনা। সে এক বাক্যে বলে দিল রাজার বাড়ি আছে ৬ কিমি দূরে। কোন রাজা জিজ্ঞেস করায় বলল হাছন রাজা। এখানে যে হাছন রাজার বাড়ি আছে তাতো কোনদিন শুনিনি। সুনামগঞ্জ শহরে তার বাড়ি আছে এটাই শুধু জানি। এদিকে টাইট সিডিউল রাজার বাড়ি দেখতে যাওয়ার সময় বের করা বেশ মুশকিল। তাই একদিন কাজ শেষে বিকেল বেলা বেছে নিলাম। কিন্তু যেতে যেতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গেল। রামপাশা নামক জায়গায় এই বাড়িটি যা আগেই বলেছি বিশ্বনাথ উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৬ কিমি। এলাকা বাসিকে জিজ্ঞেস করলাম হাছন রাজার বাড়ি তো সুনামগঞ্জে এখানে আবার কবে বানিয়েছে। এক প্রবীণ ব্যক্তি বলল কোন এক রাজার সাথে বাজিতে জিতে এই বাড়িটি এবং এলাকার জমিদারী পেয়েছিল হাছন রাজা। কথায় কথায় বের হয়ে আসল-হাছন রাজা এই বাড়িটি অবকাশ যাপন কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করতো।


দূর থেকে হাছন রাজার বাড়ি


মূল দ্বিতল ভবনের সম্মুখভাগ।


পেছনের দিক থেকে।


আবার পেছন দিক থেকে


জীর্ণপ্রাচীর


আবারও জীর্ণপ্রাচীর


পুকুর ছিল এটি কালের বিবর্তনে ভরাট হয়ে গেছে। সেই সঙ্গে ঘাটের অবস্থাও জীর্ণ। ঘাটটি দেখে কেন জানি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "ঘাটের কথা" নামক ছোটগল্পটির কথা মনে পড়েছিল। কিন্তু এই ঘাট তো সেই ঘাট না। কোন এক পূর্ণিমা রাত্রে তার কাছে বসলে হয়ত সে হাছন রাজা আর পেয়ারীর কাহিনী অকপটে ব্যক্ত করে দিবে!


বারান্দায় যখন দাঁড়িয়েছি ততক্ষণে দিনের আলো প্রায় নিবুনিবু।


নিচতলার প্রধান রুমটির ভিতরে দাঁড়িয়েছি আর মনে হচ্ছে যেন রাজা অকস্মাৎ আমার কাঁধে হাত দিয়ে বলবে তার অতীত ইতিহাস। একটু ভয়ভয় লাগল কেন জানি।

দিনের আলো শেষের পথে তাই পটাপট ছবি তুলে যাচ্ছিলাম। পরে ফেরার পথে কানে আসল একটু দূরে যে বাড়িটি দেখা যাচ্ছিল ঐ বাড়িতে রাজার উত্তরাধিকারী একজন বসবাস করে। ঐ বাড়িটির ছবি নিতে না পাড়ায় বেশ খারাপ লাগল।

পরে আর একদিন ভাগ্যক্রমে রামপাশার দিকে যেতে হলো- তখন দ্বিপ্রহর আর রৌদ্রকোজ্জ্বল দিন। তাই আরও কয়েকটি ছবি নিলাম বাড়িটির।


কৌনিকভাবে বাড়িটি।


এটি ছিল হাম্মামখানা।


পেছনের দিকের বারান্দা।


এখন বাড়িটির নিচতলা গরু-ছাগলের আড্ডাখানা।


দোতলায় উঠার সিঁড়ি।


জানালা দিয়ে উকিঁদিয়ে দেখা গেল হাছন রাজার এক জীবিত বংশধরের বাড়ি। যার নাম আগেই উল্লেখ করেছি-গণিমিয়া। যিনি সন্তানাদি নিয়ে সেই রাজার অতীত ইতিহাস আগলে রাখার চেষ্ঠা করে যাচ্ছেন।

রাজার বাড়ি ঘুরে দেখতে দেখতে হাঁফায় গিয়েছেন। তাই রাজার এলাকার একটি জনপ্রিয় খাবার খেয়ে নেন।


খেতে তেলপিঠার মত মিষ্টি আবার দেখতে পুরীর মত। স্থানীয় জনগণ বলে সন্দেষ।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই আগস্ট, ২০১১ রাত ১০:৫৯
২২টি মন্তব্য ২২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে এসো রাফসান দি ছোট ভাই

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৮

রাফসানের বাবার ঋণ খেলাপির পোস্ট আমিও শেয়ার করেছি । কথা হলো এমন শত ঋণ খেলাপির কথা আমরা জানি না । ভাইরাল হয় না । হয়েছে মূলতো রাফসানের কারণে । কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুমীরের কাছে শিয়ালের আলু ও ধান চাষের গল্প।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০



ইহা নিউইয়র্কের ১জন মোটামুটি বড় বাংগালী ব্যবসায়ীর নিজমুখে বলা কাহিনী। আমি উনাকে ঘনিষ্টভাবে জানতাম; উনি ইমোশানেল হয়ে মাঝেমাঝে নিজকে নিয়ে ও নিজের পরিবারকে নিয়ে রূপকথা বলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×