এমনিতেই বন্ধুদের গালাগালি শুনতে শুনতে আর মুন্নিশাহাদের আতলামি দেখতে দেখতে কাল থেকে পুরাই ভেলকা হইয়া আছি ।
বুঝলাম না, কোন কথায় কার গায়ে জ্বালা ধরে ? হেফাজতি ভাইদের কইলাম, গজবের দিকে যাইয়েন না । এখন মানুষের দাবি সবচেয়ে বেশি । হুজুর হইয়া কাথা মুড়ি দিয়া ঘুমায়েন না । আপাতত ১৩ দফা পকেটে রাইখা আগে সাভারের কাজে ঝাঁপ দেন….
ব্যাপক গালি খাইলাম ।
তবে মানবতার ধর্ম ইসলামের হেফাজত নিয়ে যারা নামছে, তারা সত্যই ঝাঁপায়া পড়ছে ।
বললাম, একটা ব্যানারও সামনে রাখেন । যদিও হুজুররা প্রচারের ধার ধারে না । তবু বললাম, রাখেন, কারণ, এখানে হেফাজতকে ফেস করা উদ্দেশ্য না । ইসলামের চেতনাবাহী বিশাল জনগোষ্ঠীকে ফেস করা উদ্দেশ্য ।
ব্যানারও পাইলাম ।
এরা বিপুল উদ্যমে মানুষের শেষ তামান্নার সম্মানার্থে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহর শ্লোগানে মুখর হয়ে, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উদ্ধারকাজে নিরত হলো ।
এইবার গাত্রদাহ শুরু হলো মুন্নিশাহাদের । ঢাকার এসি রুমের স্টুডিওতে বইসা ঘেউ ঘেউ করে উঠলো ‘বিশৃঙ্খলা’ ‘চুরি যাবে’ আরো ইত্যকার ডগ স্টাইলের মুখরামিতে । মনে হয় যেন ওর ববকাটিং চুলের বাকিটা চুরি করছে ওই দাড়িওয়লারাই !
যাই হোক, আমার ভালো লাগলো যে, ওখানে গিয়ে হেফাজত-শাহবাগ, কওমি-ভার্সিটি, ভারতী-বাংলাদেশি-পাকিস্তানি সব একাকার হয়ে গেছে ।
‘উম্মাহ’ চেতনা কি একেই বলে ?
এভাবে চললে জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে জাতীয় সমস্যা সমাধান সুদূর পরাহত হবে না ।
কিন্তু প্রশ্নটা হইলো, এখানে এসে সবাই এক কাতারে দাঁড়ালো ক্যান ? কাঁধে কাঁধ মিলায়া একই কাজে ঝাঁপায়া পড়লো ক্যান ?
দেশের বিরাট এক দুর্যোগের কারণেই তো, নাকি ? তাইলে মাঝে সাঝে এমন দুর্যোগ আসাই ভালো, কি বলেন ?
কেন দেখেন নাই, এর আগেরবার আ.লীগ আইসা হুজুরগোরে কি পিটনিটা দিলো ? আর অমনি সবাই মিলা ‘ইসলামি ঐক্যজোট’ করলো । আবার সুখে থাইকা কয়েক খণ্ড হইলো ।
ফখরুদ্দীনের দুর্যাগে দুই নেত্রী একই সুরে গান গাইলো । তার আবার যেই সেই ।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এবার বিরাট উন্মাদনার সৃষ্টি হইলো । অহঙ্কারের ফলে আকাম-কুকাম শুরু করলো । ট্রাপ খায়া গেলো । ‘আস্তিক আস্তিক’ কইয়া চিল্লায়াও পার পাইলো না ।
তারপর ঝরের মতো আইলো হেফাজত । সরকার কাঁপলো । কিন্তু কুট-ক্যাচালি ছাড়লো না । হেফাজতরে বাডা দিতে নারী সমাবেশ আসি আসি করছিলো…
তারপর কাণ্ডটা কি হইলো ! সবাই জানে..
সবাই যার যার চেতনা নিয়া লাফ ঠিকই দিছিলো, কিন্তু এই খেটে খাওয়ার মানুষের কথা কইলো না কেউ । হরতাল-অবরোধ-অস্থিরতায় ওরা না খাইয়া ঠায় মইরা যাইতো এমনিতেই । ওগো চিৎকার কারো কানে যায় নাই ।
উপরওয়ালা সবই দেখছেন । ওরাই সবার চেতনারে এমন ধাক্কা দিলো, কাঁদলো মানুষ, এখনও কাঁদে । ভাবলো মানুষ । তারপর, সব চেতনার পরিচয় রাইখা ছুটলো ওদের কাছে ।
শেষপর্যন্ত তামাশার নাটক দিয়া কি শেষ হবে এই ভাবনার ? নইলে হাইকোর্ট শেষবেলা এইটা কোন প্রহসনের পাট নিলো ? অক্সিজেন দিতে রুল । মগের মুল্লুকের পর্দায় এর চেয়ে ভালো নাটকের আশা করে কোন মগায় ?