somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চশমা !!!!!!

০৪ ঠা মার্চ, ২০১০ সকাল ১১:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যাহারা আমার মত অর্ধ অন্ধ তাহারা বুঝে চশমার প্রয়োজনীয়তা কি? ভাল চোখওয়ালা কারো পক্ষে চশমার এত প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করা সম্ভব নহে। অষ্টম শ্রেণীতে পড়িবার সময় চোখ দেখাতে গিয়েছিলাম। সমস্যা পিছনের সিটে বসিলে ব্ল্যাক বোর্ডের লেখা কম দেখি। আমি মনে করিতাম সবাই আমার মত কম দেখে!! এই ভুল ধারণার কারণে ডাক্তার দেখাইতে দেরি হইয়া গিয়েছিল। । আরো আগে দেখাইলে এক দিকে লাভ হইত। বাঁচিয়া যাইত ৫০ টাকা। কেননা এই ডাক্তারের ফি পূর্বে আরো ৫০ টাকা কম ছিল। আগে দেখাইলে ৫০ টাকা কম লাগিত।

তো ডাক্তারের কাছে গেলাম এক শনিবার। ডাক্তার শহর থেকে আসেন। প্রতি সপ্তাহে একবার মাত্র। সামনে থাকা বিভিন্ন অক্ষর পড়তে দিলেন। একটা অদ্ভূত আকারের ভারী চশমা লাগাইয়া একটু পর পর কাঁচ পরিবর্তন করে করে দেখতে লাগিলেন আমার চোখের জন্য কোন পাওয়ার ভালো হয়। পরিশেষে নির্ধারিত হয়ে গেল। চশমা প্রেসক্রাইবের সাথে কিছু ওষুধ ও দিলেন।

সে থেকে আমি চশমা পরিহত। সময়ের ব্যবধানে বয়স বেড়েছে অনেক। বয়সের সাথে বেড়েছে চশমার গ্লাসের পুরুত্ব।

এই চশমা ব্যবহারের কারণে কম যন্ত্রণার সম্মুখীন হই নাই। প্রথম দিকে অনেকে মনে করিত স্টাইলের জন্য চশমা ব্যবহার করছি। কলেজে পড়ার সময় এক ম্যাডাম চশমু বলিয়া ডাকিত, এই চশমু বলোতো ইহা কি হইবে, চশমু এদিকে এসো। তাহার দেখাদেখি আরো কয়েকজন এই নামেই আমারে ডাকা শুরু করে। আকিকাকৃত নামটি হারানোর দশা তখন। ভাগ্য ভাল দুই বছরের কলেজ জীবন শেষ হয়ে যায়। আর কিছু দিন থাকলে আমার পিতৃ প্রদত্ত নামই আমি নিজেই ভুলে বসিতাম। এখনও চশমা পড়ি দেখে অনেকে কানা বলিয়া আমারে সম্বোধন করে। । এই কষ্ট গুলো কই রাখি।

চশমা ভাঙিবার রেকর্ডও অনেক গুলো ইতিমধ্যে হইয়া গেছে। শুয়ে শুয়ে গল্প বই পড়ছি হঠাৎ ঘুম চলে আসছে, সকালে উঠে দেখি আমার চশমা আমার শরীরের চাপে আহত হইয়া পড়িয়া আছে। কি কষ্ট কি কষ্ট। এই ধরণের ঘটনা বেশ কয়েকবার ঘটিল।

চশমাকে আমার অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ বলিয়া মনে হয়। তা বুঝিলাম অজু করার সময় চশমার উপর দিয়ে মুখে পানির ঝাপটা দিতে গিয়ে। পরে হাতের আঙুলের স্পর্শে টের পাই। চশমা খুলি। এই ভুলটা ডজন খানেকবার ঘটিল।

রাতে চশমা রাখা নিয়ে আরো বিপদ। এখন ভালো বুদ্ধি পাইয়াছি। আমি ঘুমানোর আগে চশমাটা খাটের নিচে মেঝেতে রেখে দিই। অক্ষত অবস্থায় তা সেখানে থাকে। চশমার জন্য নিরাপদ আবাসনের ব্যবস্থা করতে পারায় আমি যারপরনাই আনন্দিত। আমার চশমা এখন নিরাপদে থাকে।

আমার কাজিন এক বড় বোনের খুব শখ জাগিল চশমা নেবে। সে চোখের বিভিন্ন সমস্যার কথা বলায় তাকে ডাক্তারের কাছে নেওয়া হলো। ডাক্তার অক্ষর পড়তে দিলেন। সে ইচ্ছা করিয়া ভুল করল। ডাক্তার গম্ভীর মুখে টেবিলে ফিরে গেলেন। আপু মহাখুশী। চশমা পাবেন নিশ্চয়। ক্লাসে যারা চশমা পড়েন তাহাদের অনেক জ্ঞানী লাগে, তাহাকেও নিশ্চয় জ্ঞানী মনে হইবে। চশমা পাওয়ার আশায় তিনি উত্তেজিত। একটু পর ডাক্তার টর্চ লাইট আকৃতির একটি যন্ত্র দিয়ে তাহার চোখ পরীক্ষা করিয়া তাহার দুরভিসন্ধি ধরিয়া ফেলিলেন।

চশমা পড়ায় কেউ কেউ মনে করে অনেক জ্ঞানী। আমি গাধাকে জ্ঞানী ভাবার পুরা অবদান আমার চশমার। আমার চশমাটি আমার অনেক প্রিয়। আমি আমার চশমাকে অনেক ভালবাসি।

( সাধু ও চলিত ভাষার মিশ্রণ দোষে অভিযুক্ত লেখাটির শাস্তি চাই)
৯টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×