আবার লগি-বৈঠা নিয়ে জামায়াত-শিবির উত্খাত করা হবে : মেয়র লিটন
রাজশাহী অফিস
পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেছেন, আমি আপনাদের কাছে বিচারের দাবি নিয়ে আসিনি, আমি কান্নাকাটি করতেও আসিনি, আমি এসেছি আপনাদের রায় নিতে। ৫ম সংশোধনী বাতিলের পর জামায়াত-শিবিরের এদেশে থাকার কোনো অধিকার থাকবে না। তিনি বলেন, আপনারাই সুপ্রিমকোর্ট, আপনারা রায় দিন, আমরা তা কার্যকর করব। আপনারা কি চান দেশে জামায়াত-শিবির প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াক। এখন সিদ্ধান্ত নিতে হবে জামায়াত-শিবিরকে আমরা বাংলার মাটিতে রাজনীতি করতে দেবো কিনা? এদিকে রাজশাহীর মেয়র লিটন বলেছেন, এর আগে প্রধানমন্ত্রীর লগি-বৈঠার আহ্বানে সাড়া দিয়ে জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলাম। এবারও আমরা লগি-বৈঠা নিয়ে জামায়াত-শিবির উত্খাত করে ছাড়ব। রাবি ছাত্রলীগ কর্মী ফারুক হত্যার প্রতিবাদে গতকাল বিকালে আ’লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের উদ্যোগে রাজশাহী নগরীর সাহেববাজার বড় রাস্তায় এক জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
রাজশাহী সিটি মেয়র ও আ’লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের সভাপতিত্বে জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি, আ’লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন ও ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় পলিটব্যুরো সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা। এতে আরও বক্তব্য রাখেন মহানগর আ’লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য আকতার জাহান এমপি, জাসদের রাজশাহী মহানগর সভাপতি অ্যাড. মজিবুল হক বকু প্রমুখ।
রাশেদ খান মেনন বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এ বাংলার মাটিতেই হবে। যখন তারা বাঁচার কোনো উপায় দেখছে না, তখনই তারা রগ কাটার রাজনীতি শুরু করেছে। জামায়াত-শিবিরের কোনো ক্ষমা নেই। ’৭২-এর সংবিধানে ফিরে যাওয়ার এখনই সময়। তিনি আরও বলেন, দেশে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। ছাত্রলীগ কর্মী ফারুকের খুনিদের বিচারের সঙ্গে তিনি ছাত্রমৈত্রী নেতা রেজওয়ানুল ইসলাম চৌধুরী সানির হত্যাকারীদেরও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
হাসানুল হক ইনু বলেন, মহাজোটের নেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিদ্ধান্ত নিলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে একজন জামায়াতকর্মীও দেশে থাকতে পারবে না। কিন্তু আমরা খুনি নই। আমরা আইনের শাসনে বিশ্বাসী। জামায়াত-শিবিরকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, নির্বাচনে পরাজিত হয়ে মাঠ ত্যাগ করেনি। তারা পিছু হটেছে ঠিকই, কিন্তু বারবার তারা পিছন থেকে ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করছে। তাদের চক্রান্ত থেকে দেশকে মুক্ত করতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাটবাজারসহ প্রতিটি জায়গায় যুদ্ধ করতে হবে। তাদের পাকড়াও করে পুলিশের হাতে তুলে দিতে হবে।
ফজলে হোসেন বাদশা এমপি বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়কে বার বার রক্তাক্ত করা হয়েছে। এখানে অসংখ্য মেধাবী ছাত্রকে জীবন দিতে হয়েছে। আজ জামায়াত শিবিরের সব তত্পরতা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তিনি মহাজোটের কমিটি গঠন করে ঐক্যবদ্ধভাবে জামায়াত-শিবিরকে প্রতিহত করার আহ্বান জানান। তিনি রাবি’র সহিংস ঘটনায় জামায়াতের আমীর মতিউর রহমান নিজামীকে দায়ী করে বলেন, তারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচালের চেষ্টা করছে।
সিটি মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, আমরা এর আগেও আজকের মতো প্রতিবাদ-সমাবেশ করেছি। কিন্তু জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি বন্ধ করতে পারিনি। তারা বার বার ফিরে এসে রগ কাটার রাজনীতি শুরু করেছে। কিন্তু এবার আমরা ক্ষমতায় আছি। এবার আমরা ’৭২-এর সংবিধানে ফিরে গিয়ে জামায়াত-শিবিরের রাজনীতিকে নিষিদ্ধ করতে চাই। আমি এর মধ্যেই পাড়ামহল্লায় কমিটি গঠন করতে বলেছি। শহরের মেসগুলোতে শিবিরের তালিকা তৈরি করতে বলা হয়েছে। আমরা সবাই জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করতে চাই। তাদের সঙ্গে লেনদেন বন্ধ করে দিলে, তারা কোথাও চলাফেরা করতে পারবে না। এর আগে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর লগি-বৈঠার আহ্বানে সাড়া দিয়ে জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলাম। এবারও আমরা প্রয়োজনে লগি-বৈঠা নিয়ে রাজশাহী থেকে জামায়াত-শিবিরকে উত্খাত করে ছাড়ব।