সেদিন ছিল শুক্রবার, ১৩ই ফেব্রয়ারি, ১লা ফাল্গুন, প্রায় রাত বারোটা ছুঁই ছুঁই। ’দেশ টিভি’ তে খায়রুল আনাম শাকিল এবং ইয়াসমিন মুশতারি লাইভ প্রোগ্রামে। শাকিল শচীন কত্তার ”বর্ণে গন্ধে.......” গাইছেন, চোখ বন্ধ করলাম, অঝরে কাঁদলাম। সেই আমি, ফাঁকা ক্লাস, বললাম আমার ভিন্ন ওরিয়েন্টশনের কথা কান্না সহযোগে। প্রথমবারের মতো অতটুকু বয়সে, একজন আমাকে ঘৃণা করলো না। সে, তুমি। কত টুকরো স্মৃতি ঐ গানের ফাঁকে আমার মনে ভাসতে থাকলো!
আমরা সময়ের গল্প শুনতে চাই, ভালোবাসাকে পৌঁছে দিতে চাই বর্তমান থেকে অতীতে কিংবা ভবিষ্যতের দূরত্বের দেউড়িতে। আমরা অপেক্ষাকে প্রতিবন্ধক মনে করে নিজের রুচি বদলের উসিলাও হয়তো খুঁজে নিতে চাই সন্তর্পণে। আমরা নিজেদের ছুঁতে না পেরে একে অন্যকে ইথারে ফিসফিস্ করে হয়তো বলবো, - ”তোমাকে ছুঁতে না পেরে/ আমি নিজ নিয়তির অন্তর্গত রোদনকে বোল্লাম, দ্যাখো/ আমি আর কাঁদতে পারবো না!” বেলা শেষে জানব কোনদিন পেরেছিলাম প্রতিযোগীতাহীন সহজিয়া এক সম্পর্ক রচনা করতে, যেখানে পেয়েছি শুধুই নিষ্কলুষ, নিঃস্বার্থ ভালোবাসা। নতুনের আহ্বানে তোমার ঋজু প্রস্থান ঘটবে তোমারই কাঙ্ক্ষিত ’প্রাইড’ সহকারে। ক্ষমতা নেই এতটুকু কোথাও আঁচড় কাটবার। যদি শুনতে পাও অর্থহীন কাগুজে বন্ধন প্রত্যাখ্যান করেছি কেঁপে উঠে আমাকে ত্যাগ দিও না। আমি হাইপেশিয়া না, নই অন্য অনেককিছু।
আমি তোমার, নিতান্তই তোমার বোকাসোকা সেই বাচ্চাটা যে বয়স্ক শরীরে আজো নিরেট শৈশব বয়ে বেড়ায়। আবেগে হাপুস করে কাঁদে। কিভাবে ভালোবাসলে ভালোবাসার মানুষ চলে যায় না, জানি না। হয়তো এই এক আয়ুতে আর জানাও হবে না- আমার মন মদিরা ভুলো না আমার প্রতিজ্ঞা আমাদেরই তরে - " যে তুমি আমাকে ফেলে নৈরাশ্যের কঙ্কালবাসরে/ চলে গেছ চোখের আড়ালে, শোনো, সকল সময়/ উতসবে কি দুর্বিপাকে কামনার উন্মাতাল ঝড়ে/ তোমার আসার পথে আমার উন্মুখ চক্ষুদ্বয়/ জ্বেলে রাখি। / তোমার নিভৃত প্রতীক্ষায় কী অধীর/ মৃত্যুর পরেও আমি রাখবো দু’চোখ খুলে স্থির।”
ছোটপাখি
১৪.০২.১০