somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধর্ম ব্যাবসায় সোচ্চার বাঙ্গালী।।

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ ধর্ম নিয়ে যেই সহিংসতা হোল তা নিয়ে কোন মন্তব্য করার মত সাহস কিংবা শক্তি কোনটাই আমার নেই। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অধিনে একজন সাধারন নাগরিক হিসেবে নিজের একান্তই ব্যাক্তিগত কিছু ক্ষোভের কথা তুলে ধরার চেষ্টা করছি।

প্রথম কথাঃ

বাংলাদেশ ইসলামিক দেশ হিসেবে স্বীকৃত এবং একাধারে অসম্প্রদায়িক চেতনায় জাগ্রত। এখানে কোন ধর্ম নিয়ে কোন্দল সৃষ্টি হওয়ার প্রশ্নই উঠে নাহ। এমনকি ইসলামী রাষ্ট্র হিসেবে আমাদের উচিৎ সকল প্রকার ইসলামী আইন ও অনুশাসন মেনে চলার। কিন্তু আমার প্রশ্ন হোল এখানে ইসলামী আইন টা কোথায়? আমাদের মাননীয় প্রধান মন্ত্রী সবসময় নারী মুক্তির কথা বলেন! তার নারী মুক্তির এই শাশ্বত অগ্রযাত্রার বেশ কিছু নমুনা আমাদের কারোরই অজানা নয়। আমার ব্যাক্তিগত পর্যবেক্ষণ থেকে আমি দেখেছি , তার নারী মুক্তির সকল প্রচেষ্টাই ইসলামী দৃষ্টিতে হারাম! বর্তমানে বাংলাদেশের নিজস্ব কোন সংস্কৃতি অবশিষ্ট আছে বলে আমি মনে করি না, ভারতীয় সংস্কৃতি ধারন করতে গিয়ে আমরা কিংবা আমাদের বোনরা প্রতিনিয়ত ইসলাম কে অবমাননা করছেন! আমার জানা মতে কোন নারীর একটি চুলও যদি কোন পরপুরুষ দেখে ফেলে তা তার জীবনের অভিশপ্ত একটি দিন বলে আখ্যায়িত হবে, সেই দিক থেকে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট আমি ব্যাখ্যা করতে লজ্জা পাচ্ছি। তাহলে এখানে কি ইসলাম কে অবমাননা করা হচ্ছে না!? আমরা কোন ইসলামের অনুসারী? আমি উদাহরন স্বরূপ এই ব্যাখ্যা টি দিলাম এবং আমাদের নষ্ট জাতির অবক্ষয়ের চিত্র তুলে ধরলাম । এরকম আরও হাজারও ঘটনা আমাদের নাকের ডগায় ঘটে চলেছে , যা থেকে ইসলাম কে অপমান থেকে শুরু করে প্রতিনিয়ত ইসলাম কে কলুষিত করা হচ্ছে। আজ যে নাস্তিক কিছু ব্লগার ধর্ম নিয়ে কটাক্ষ ও প্যারডি করছেন তার জন্য দায়ী কে? কি করে একটি ইসলামী রাষ্ট্রে তারা ইসলাম কে নিয়ে কটাক্ষ করেন? তবে কি আমরা এখান থেকে এই সহজ কথা বলতে পারি নাহ , যে বাংলাদেশে কোন ইসলামের ছিটেফোঁটাও নেই? (আল্লাহ মাফ করুক)

দ্বিতীয় কথাঃ

শাহবাগের গণজাগরণ এখন কোন দিকে তা একজন প্রতিবন্ধীও বলতে পারবে! যেখানে কিছুদিন আগে ছাত্রলীগ তাদের মহান কর্মকাণ্ডের জন্য আমাদের সকলের চক্ষুশূল ছিল আজকে তারাই শাহবাগের সাইবার যোদ্ধা! যেই ইমরান এইচ সরকার প্রথমে এই আন্দোলন কে রাজনীতিমুক্ত স্বাধীন আন্দোলন বলে ঘোষণা করেছিলেন আজ তিনি ছাত্রলীগের দোসর! (কত টাকায় বিক্রি হোল খুব জানতে ইচ্ছে হচ্ছে!) সে যাই হোক, দাবিও এখন অনেকটাই স্থিমিত, কারন গতকালের মহাসমাবেস থেকে যেই কর্মসূচী দেয়া হয়েছে তা পুরোপুরি সরকার পন্থী। এখন রাজাকারের ফাঁসির চেয়ে অনেকেই মোটা টাকা গুনতে ব্যাস্ত। ৪২ বছরের এই কলঙ্ক হয়তো কলঙ্কই রয়ে গেলো!! ব্লগার রাজিব হত্যা থেকে উঠে আসলো নতুন একটি আলোচ্যসুচি। ধর্ম নিয়ে শুরু হোল মাতামাতি। রাজিব নাস্তিক ছিল নাকি আস্তিক ছিল এই নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ! কিন্তু কি কারনে তাকে হত্যা করা হোল, তা এখনও অজানা। যে দিন থেকে কর্মসূচী দুপুর ৩ টা - থেকে রাত ১০ টা ঘোষণা করা হোল ঐ দিনই কেন তাকে হত্যা করা হোল? জামায়েত- শিবির যদি হত্যা করতো তবে আগে কেন করলো না? এটা কি কাকতালীয় ঘটনা নাকি এই মৃত্যুর পিছনে রয়ে গেছে কিছু ভালো মানুষরুপী কুরুচিপূর্ণ জীবস্বত্বা? সে যাই হোক প্রশ্ন গুলো আজও অজানাই রয়ে গেল। শুরু হোল ধর্ম নিয়ে নতুন ব্যাবসা। কতিপয় ধর্ম ব্যাবসায়ি যারা কিনা জামায়েত- শিবির নামে ক্রমাগত ধ্বংস লীলা চালিয়ে যাচ্ছেন , তারা তখন আস্তিকতা ও নাস্তিকতা নিয়ে নতুন করে জাল বুনতে শুরু করলো। আর অন্য দিকে, ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিনের মত নিকৃষ্ট মানসিকতার মানুষ মসজিদে-মসজিদে দোয়া মাহফিলের ব্যাবস্থা করলেন! মজার বিষয় হোল সব কিছুই ধর্ম ভিত্তিক! যে যাই বলুক ওরা মানুষের অনুভূতি নিয়ে জুয়া খেলেই যাচ্ছে।

তৃতীয় কথাঃ

এই রাজনৈতিক কোন্দলের শিকার হোল আজকের এই সাধারন জনগন! আজ বায়তুল মোকারমে কোন ব্লগার আহত হয় নি, আহত হয়েছে সাধারন মানুষ ,গুলিবিদ্ধ হয়েছে সাংবাদিকরা। একজন সাংবাদিকতার ছাত্র হিসেবে আমার প্রশ্ন এর জন্য দায়ী কে? কি দোষ ছিল তাদের? শাহবাগের গণজাগরণ কে মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দেয়া কি পাপ ছিল? উত্তর বরাবরের মতই অজানা! ধর্ম নিয়ে যেই দুই দল কথা বলছেন তাদের চিত্র অনেকটা এমন, একদল যারা ধর্ম নিয়ে কটাক্ষ করে , আবার সেই ধর্মকেই অস্ত্র হিসেবে ব্যাবহার করে জনমনে স্থান নেবার চেষ্টা চালাচ্ছেন! অপরপক্ষে , একদল যারা আল্লাহ'র পথে জিহাদের নামে নির্বিচারে মানুষ খুন করছেন, ভাঙছেন মসজিদ , চালাচ্ছেন জ্বালাও - পোড়াও কর্মসূচী! তাহলে এখানে ধর্ম টা কোথায়!? প্রশ্ন হোল স্বাধীনতার ৪২ বছর পরও কি করে একটি স্বাধীনতা বিরোধী রাজনৈতিক দল শাপলা চত্বরে দাড়িয়ে গৃহযুদ্ধের হুমকি দেয়? কি করে চিহ্নিত কিছু রাজাকারের মুক্তির দাবিতে দেশে হরতালের নামে অরাজকিয়তা সৃষ্টি হয়? কি করে শিবির আজও টিকে আছে এই বাংলায়? কি করে একটি মুসলিম দেশে প্রতিনিয়ত ধর্ম কে অবমাননা করে? এখানে আমরা কিসের ধর্ম প্রতিষ্ঠা করছি? এর নাম কি ইসলাম? (আল্লাহ মাফ করুক)

শেষ কথাঃ

আমার এক বন্ধুর বলা একটি গল্প মনে পরল। গল্প টা খানিক টা এমন যে, এক নির্জন কোলাহল মুক্ত এলাকায় একটি বাড়ি ছিল। সেই বাড়িতে বসবাস করতো দুই ভাই, এবং তাদের সেবা করার জন্য ছিল একটি কাজের মেয়ে। ছোট ভাই বড় ভাইয়ের চেয়ে কিছুটা উশৃঙ্খল ছিল। যার ফলশ্রুতিতে ছোট ভাই বড় ভাইয়ের সামনেই প্রতিদিন কাজের মেয়েটিকে শারীরিক ভাবে নির্যাতন করতো। বড় ভাই দেখত কিন্তু কিছুই বলতো নাহ। একসময় বড় ভাই সহ্য করতে না পেরে ছোট ভাইকে ঘর থেকে বের করে দেয়, এবং নিজেই তখন মেয়েটিকে শারীরিক ভাবে নির্যাতন করতে শুরু করে।

গল্পের সারসংক্ষেপঃ

এখানে বড় ভাই হোল , গণজাগরণ মঞ্চের সেই সব কালো মুখোশ ধারী নাস্তিক শূয়রের পাল গুলো, আর ছোট ভাই হোল ইসলাম পন্থী একমাত্র রাজনৈতিক দল জামায়েত- শিবির ( বেজন্মার বাচ্চা) । আর মেয়েটি হোল ইসলাম! যে যেখান থেকে পারছে ইসলাম কে কলুষিত করছে, আর আমরা অন্ধ কিছু মানুষ তাদের কে অনুসরন করে যাচ্ছি।

ইস্যু ছিল একটাই, রাজাকারের ফাঁসি চাই। কিন্তু কোথায় সেই দাবি!? কাল রাতে কেন প্রজন্ম চত্বর খালি হয়ে গেল? অঙ্গীকার ছিল ফাঁসি হওয়ার আগ পর্যন্ত আমরা এখানেই থাকবো, তবে কি দেশপ্রেম ফুটো হয়ে গেছে কালো টাকার আঘাতে?

এই প্রশ্ন গুলো রেখে গেলাম। নিজস্ব অভিমত হোল, রক্ত দিয়েছি অনেক কিন্তু, হিসেবের খাতা শুন্য, এবার প্রত্যেকটি রক্তের দাম বুঝে নিবো, সাগর- রুনি'র রক্ত , বিশ্বজিতের রক্ত, ৩০ লক্ষ শহীদের রক্ত - সব। ৩০ লক্ষ শহীদের আত্মদান বৃথা যেতে দিবো না। দরকার নাই ঐ দালাল রুপী প্রজন্ম চত্বরের নেতাদের , প্রজন্ম চত্বর কারো বাবার সম্পদ নয়। আমি আমার মুক্তিযোদ্ধা বাবার অসম্পূর্ণ কাজ পূর্ণ করবো। ধর্ম কে আশ্রয় করে যারা প্রতিনিয়ত ধর্ম কে অবমাননা করছে তাদের ধর্মের ক্ষমতা বুঝিয়ে দিবো।

সমঝোতা নয় অধিকার চাই,
এসপার নয় ওসপার চাই-
চাই ৭১ এর রক্তের প্রতিশোধ,
ফাঁসির মঞ্চে কুত্তার দলকে করতে চাই নিখোঁজ।

ভয় করি নাকো আর,
আমি মুক্তিসংগ্রামী ৭১' আমার হাতিয়ার।।

জয় বাংলা।।

(( বিঃদ্রঃ সাংবাদিকদের উপর জামায়েত- শিবিরের হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি, জানাচ্ছি শহীদ মিনার ভাঙ্গার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। বেঁচে থাকলে , তোদের কাছ থেকে প্রত্যেকটা হামলার হিসেব নিবো, কুত্তার দল। মনে রাখিস আমি বাঙ্গালী- বাংলাদেশ আমার সম্মান))
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তোমার ভাঁজ খোলো আনন্দ দেখাও :: দু শ'রও বেশি পুরোনো ব্লগারের প্রোফাইল পিকচার নিয়ে একটি মিউজিক ভিডিও

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ৩০ শে মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৭

১৫ সেপ্টেম্বর ২০১২ তারিখে সামহোয়্যারইন ব্লগের দু শ'রও বেশি ব্লগারের প্রোফাইল পিকচার নিয়ে বানানো একটা মিউজিক ভিডিও শেয়ার করেছিলাম। যে-সব ব্লগার ঐ সময়ে অ্যাক্টিভ ছিলেন, প্রোফাইল পিকচারগুলো তাদের ছিল।



কয়েকদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রহস্যময় কলা

লিখেছেন বিষাদ সময়, ৩০ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:৩১




এই কলা শব্দটা আমার কাছে পুরাই বিভ্রান্তিকর। নারীদের কলা বলতে যে ছলাকলা সেটা ভালই বুঝি। সেই ছলাকলা দেখে গলা বাড়ালেই যে ষোলকলা পূর্ণ হয় সেটাও জানা। কিন্তু এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ দরজা

লিখেছেন মোঃ আরিফুজ্জামান আরিফ, ৩১ শে মে, ২০২৪ রাত ১:১৬


বাইরে ঝুম বৃষ্টি। বাইরে ঘোর অন্ধকার, বিদ্যুৎ নেই। মা চুলায় খিচুড়ি দিয়েছে। ঘ্রাণে চারপাশ ছেয়ে আছে। সাথে বেগুন ভাজা, ইলিশের দো পিয়াজি, দই-কাতলা, রুই মাছের মাথা দিয়ে মুড়ি ঘন্ট,... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সীমানা পিলার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৮



বৃটিশ কর্তৃক এদেশে ম্যাগনেটিক পিলার স্থাপনের রহস্য।
ম্যাগনেটিক পিলার নিয়ে অনেক গুজব ও জনশ্রুতি আছে, এই প্রাচীন ‘ম্যাগনেটিক পিলার' স্থাপন নিয়ে। কেউ কেউ এটিকে প্রাচীন মূল্যবান ‘ম্যাগনেটিক’ পিলার... ...বাকিটুকু পড়ুন

মাথায় চাপা ভূত ভূত ভূতং এর দিনগুলি

লিখেছেন শায়মা, ৩১ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৫


এই যে চারিদিকে এত শত কাজ কর্ম, ঝামেলা ঝক্কি, ক্লান্তি শ্রান্তি সব টপকে আমার মাথায় আজও চাপে নানান রকম ভূত। এক ভূত না নামতেই আরেক ভূত। ভূতেদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×