somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শিক্ষাঙ্গনে শাসকশ্রেণীর ছাত্র সংগঠনগুলোর সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলি!

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১০ রাত ১১:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শিক্ষাঙ্গনে শাসকশ্রেণীর ছাত্র সংগঠনগুলোর সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোল!
সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গণতান্ত্রিক প্রশাসন প্রতিষ্ঠার আন্দোলন গড়ে তোল!


বন্ধুগণ!
ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী তৎপরতার পরিণতিতে ঝরে গেলো আরো একটি তাজা প্রাণ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এফ রহমান হলে গত ১ ফেব্রুয়ারী সোমবার রাতে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপে সংঘর্ষের সময় মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়ে দু’দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে আমাদের ছেড়ে চলে গেছে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আবু বকর সিদ্দিকী। শিক্ষাঙ্গনে ছাত্রলীগ-ছাত্রদল- ছাত্র শিবিরের ধারাবাহিক সন্ত্রাসী তান্ডবের শিকার হল আমাদের আরেক ভাই।

আবু বকরের মৃত্যু আমাদেরকে নতুন করে সেই একই প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। আর কতকাল ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ-ছাত্রদল-ছাত্রশিবিরের ফ্যাসিষ্ঠ সন্ত্রাসী তৎপরতার কাছে জিম্মী হয়ে থাকবে আমাদের শিক্ষাঙ্গন, আমাদের জীবন? বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আর কত সন্তানের লাশ ফেরত যাবে মায়ের বুকে? আর কতবার ভাইয়ের লাশের সামনে দাঁড়িয়ে আমাদের শুনতে হবে ফ্যাসিষ্ঠ সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ঔদ্ধ্যত্বপূর্ণ বক্তব্য, “এরকম ঘটনা ঘটতেই পারে।”

বন্ধুগণ!
গত ২৯ শে ডিসেম্বর শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ছাত্রলীগ পূর্ববর্তী ক্ষমতাসীন দলগুলোর ছাত্র সংগঠনের মতোই ক্যাম্পাসগুলোতে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে আর সরকারের যোগ্য এজেন্ট হিসেবে তাদের মদদ দিচ্ছে ক্যাম্পাসগুলোর প্রশাসন। প্রশাসনের ছত্রছায়ার টেন্ডারবাজী, হল দখল, ভর্তি ও সিট বাণিজ্য, ছাত্র নির্যাতন, শিক্ষক নির্যাতন। আমরা জানি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের নামে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের মোটরসাইকেলের পেছনে বসে ক্যাম্পাসে মহড়া দেন। কয়েকদিন আগে সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী ছাত্র ঐক্যের নেতৃবৃন্দকে প্রক্টর হুমকি দিয়ে বলেছেন, “এই ৪ বছরে ক্যাম্পাসে সরকার বিরোধী কোন কর্মসূচী পালন করতে দেয়া হবে না।” আমাদের প্রশ্ন কাদের প্রতিনিধিত্ব করছেন এই প্রক্টর? এই প্রশাসন? এই প্রক্টর দলীয় কোন্দল নিজ হাতে নিয়ন্ত্রণ না করে গভীর রাতে হলের ভেতরে পুলিশ লেলিয়ে দিয়ে নির্দলীয় নিরপরাধ ছাত্রদের ওপর হামলা চালানোর সুযোগ করে দিয়েছে। যার পরিণতিতে মেধাবী ছাত্র আবু বকর আঘাতপ্রাপ্ত হন এবং পরবর্তীতে মৃত্যুবরণ করেন। গত ২৩ জানুয়ারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের দু’গ্র“পের সংঘর্ষের পর প্রক্টর দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য, “আমি পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছি কিন্তু পুলিশ গ্রেফতার করেনি” প্রমাণ করে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে কতটা নিরাপত্তাহীনতার ভেতর আছি। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রী নির্যাতনের প্রতিবাদে উত্তাল বিক্ষোভকে দমন করার জন্য তৎপরতা চালিয়েছিল প্রশাসন ও ছাত্রলীগের যৌথ বাহিনী। অন্যায়ভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী ছাত্রঐক্যের নেতা আন্দোলনকারী সংগঠক জাহিদুর রহমান রোকন কে। রাজশাহী পলিটেকনিকে খুন হয়েছেন ছাত্রমৈত্রী নেতা।

একদিকে আবাসন সংকট, বছর বছর ফি বৃদ্ধি, প্রশাসনের হুমকি অন্যদিকে ছাত্রলীগ-ছাত্রদল-ছাত্রশিবিরের নির্যাতন এই হলো বাংলাদেশের উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চিত্র।

বন্ধুগন!
আজ বাংলাদেশের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চিত্র একই। সন্ত্রাস, চাঁদাবাজী, টেন্ডারবাজী, ছাত্র নির্যাতনের নিরাপত্তাহীন ফ্যাসিষ্ঠ কারাগারে বন্দী আমরা নিজেরা, আমাদের শিক্ষা জীবন। আবু বকরের রক্তের উপর দাঁড়িয়ে যখন সরকারের মন্ত্রীরা বলেন, “তারা বিব্রত বোধ করছেন”, “এরকম ঘটনা ঘটতেই পারে” তখন আমাদের বুঝতে অসুবিধা হয় না কারা আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সন্ত্রাসীদের কাছে ইজারা দিয়েছে। শুধু ছাত্র নয় শ্রমিক, কৃষক, জাতিসত্ত্বা সহ ব্যাপক জনগণের নিরাপত্তা জাতীয় স্বার্থ বিরোধী সাম্রাজ্যবাদের তাঁবেদার স্বেচ্ছাচারি ফ্যাসিষ্ঠ শাসক শ্রেণী দলগুলোর হাতে জিম্মি। এই সন্ত্রাস ফ্যসিবাদের কারাগার থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য দরকার লড়াই-সংগ্রাম-আন্দোলন। সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী ছাত্রঐক্য ছাত্র সমাজের কাছে সেই লড়াই সংগ্রামের ডাক দিয়ে যাচ্ছে।

আসুন, ছাত্রলীগ-ছাত্রদল-ছাত্রশিবিরের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে একজোট হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে অগণতান্ত্রিক নির্যাতক প্রশাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই। সরকারের ফ্যাসিষ্ঠ তৎপরতার বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলি।

কর্মসূচী:
০৮ ফেব্রুয়ারি সোমবার সকাল ১১.৩০ মিনিটের সময় ঢাবি কলাভবন প্রাঙ্গনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ঢা.বি প্রক্টরের কুশপুত্তিলিকা দাহ ও বিক্ষোভ মিছিল।


আওয়াজ তুলুন:
১. আবু বকরের হত্যাকারীদের শাস্তি চাই ও তার পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে!
২. অবিলম্বে সন্ত্রাসীদের প্রশ্রয়দাতা প্রক্টরের অপসারণ চাই!
৩. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ সারা দেশের শিক্ষাঙ্গনে ছাত্রলীগ-ছাত্রদল-শিবিরের সন্ত্রাসী তৎপরতা বন্ধ কর!
৪. সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গণতান্ত্রিক প্রশাসন নিশ্চিত কর!


**************************************************************
সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী ছাত্র ঐক্য
অস্থায়ী কার্যালয়:- মধুর কেন্টিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ফোন ০১৫৫-৪৩২১৭২০, ০১৯১১-৯৫০৩৯১।
(প্রপদ এই সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী ছাত্র ঐক্যের অন্তর্ভুক্ত একটি সংগঠন)
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মাটির কাছে যেতেই..

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

মাটির কাছে
যেতেই..


ছবি কৃতজ্ঞতাঃ https://pixabay.com/

ঠিক যেন
খা খা রোদ্দুর চারদিকে
চৈত্রের দাবদাহ দাবানলে
জ্বলে জ্বলে অঙ্গার ছাই ভস্ম
গোটা প্রান্তর
বন্ধ স্তব্ধ
পাখিদের আনাগোনাও

স্বপ্নবোনা মন আজ
উদাস মরুভূমি
মরা নদীর মত
স্রোতহীন নিস্তেজ-
আজ আর স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাকা ভাংতি করার মেশিন দরকার

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ৯:১০

চলুন আজকে একটা সমস্যার কথা বলি৷ একটা সময় মানুষের মধ্যে আন্তরিকতা ছিল৷ চাইলেই টাকা ভাংতি পাওয়া যেতো৷ এখন কেউ টাকা ভাংতি দিতে চায়না৷ কারো হাতে অনেক খুচরা টাকা দেখছেন৷ তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

বেলা ব‌য়ে যায়

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩০


সূর্যটা বল‌ছে সকাল
অথছ আমার সন্ধ্যা
টের পেলামনা ক‌বে কখন
ফু‌টে‌ছে রজনীগন্ধ্যা।

বাতা‌সে ক‌বে মি‌লি‌য়ে গে‌ছে
গোলাপ গোলাপ গন্ধ
ছু‌টে‌ছি কেবল ছু‌টে‌ছি কোথায়?
পথ হা‌রি‌য়ে অন্ধ।

সূর্যটা কাল উঠ‌বে আবার
আবা‌রো হ‌বে সকাল
পাকা চু‌ল ধবল সকলি
দেখ‌ছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পর্ণআসক্ত সেকুলার ঢাবি অধ্যাপকের কি আর হিজাব পছন্দ হবে!

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৩ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:২৭



ইন্দোনেশিয়ায় জাকার্তায় অনুষ্ঠিত একটা প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক জিতেছে বাংলাদেশি নারীদের একটা রোবোটিক্স টিম। এই খবর শেয়ার করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপিকা। সেখানে কমেন্ট করে বসেছেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেকজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায়

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ২৩ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:১৪


কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায়
আমার বাবা-কাকারা সর্বমোট সাত ভাই, আর ফুফু দুইজন। সবমিলিয়ে নয়জন। একজন নাকি জন্মের পর মারা গিয়েছেন। এ কথা বলাই বাহুল্য যে, আমার পিতামহ কামেল লোক ছিলেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×