somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মিরপুরে নয়া আতঙ্ক 'জনি-রিয়াদ বাহিনী'

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১০ রাত ৯:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মিরপুর এলাকার নতুন আতঙ্ক জনি-রিয়াদ বাহিনী। ছাত্রলীগের নেতাকর্মী পরিচয়ে এ গ্রুপের সদস্যরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এ বাহিনীর চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ মিরপুরবাসী। ফুটপাতের পান দোকানদার থেকে শুরু করে ধনাঢ্য ব্যবসায়ীরাও ভয়ঙ্কর এ সন্ত্রাসী বাহিনীর কাছে জিম্মি। মিরপুর বাঙলা কলেজের অর্থলোভী উচ্ছৃঙ্খল ছাত্রদের দলে ভিড়িয়ে সন্ত্রাসীরা মাঝেমধ্যেই রাজপথে গাড়ি ভাংচুর করে অরাজকতা সৃষ্টি করছে। গত মঙ্গলবার এ সন্ত্রাসী বাহিনীর অন্যতম বাঙলা কলেজ ছাত্রলীগের নেতা নামধারী রিয়াদ ও তার সহযোগী শামীম পুলিশের হাতে অস্ত্রসহ গ্রেফতার হয়েছে। পুলিশ ও সন্ত্রাসীদের সঙ্গে গোলাগুলির এক পর্যায়ে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় রিয়াদকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর থেকেই সহযোগীরা তাদের ছাড়ানোর নাম করে অপ্রতিরোধ্য চাঁদাবাজি চালিয়ে যাচ্ছে।
দারুস সালাম থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তাক হোসেন জানান, বাঙলা কলেজের উচ্ছৃঙ্খল ছাত্রদের কাছে সাধারণ ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক ও আশপাশের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকরা জিম্মি। ছাত্রদের ছদ্মাবরণে পেশাদার সন্ত্রাসীরা অপরাধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গেলেই ছাত্র আন্দোলনের নামে রাজপথে ভাংচুর চালিয়ে অরাজকতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। গত শনিবারের ঘটনায় ৩০ হামলাকারীর বিরুদ্ধে দারুস সালাম থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার রাতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়ার সময় ধরা পড়ে চার সন্ত্রাসী।
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, গাবতলীর পর্বতা সিনেমা হল থেকে মিরপুর এক নম্বর হয়ে সনি সিনেমা হল পর্যন্ত এলাকার ছিনতাইকারী নেটওয়ার্ক, মাদক বিক্রেতা, টানা পার্টি ও ছিঁচকে সন্ত্রাসীদের নিয়ন্ত্রণ করছে জনি-রিয়াদ বাহিনী। দক্ষিণ বিসিলের আলিফ, স্টাফ কোয়ার্টারের নাজির, সফিক, ইব্রাহিম এবং আনসার ক্যাম্পের ভাঙ্গাড়ি বাবুল ও আবুল এই বাহিনীর সক্রিয় সদস্য। ইতিপূর্বে এ সন্ত্রাসীরা গার্মেন্টের মাল ডাকাতি, ছিনতাই ও হত্যা মামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগে গ্রেফতার হলেও জামিনে ছাড়া পেয়ে আবারও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এ বাহিনীর সদস্যরা পুলিশের হাতে ধরা পড়লে তাদের ছাড়াতে প্রভাবশালী মহল থেকে থানায় তদবির করা হয় বলে মিরপুর থানা পুলিশের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
পুলিশের একাধিক সূত্র জানায়, মিরপুর এলাকায় দাগি মাদক বিক্রেতা, ছিনতাইকারী ও অজ্ঞান পার্টির কর্মকাণ্ডও নিয়ন্ত্রণ করে জনি-রিয়াদ বাহিনী। এ বাহিনীর সদস্যরা ধরা পড়লে নানা অজুহাতে বাঙলা কলেজের সামনে ছাত্র বিক্ষোভ উস্কে দিয়ে বাস ভাংচুরের নামে জিম্মি করা হয় পুলিশ প্রশাসনসহ সাধারণ মানুষকে। এ বাহিনীর সদস্যরা বিভিন্ন সময় কারাবন্দি শীর্ষ সন্ত্রাসী বিকাশ, পিচ্চি হেলাল ও ভারতে পলাতক শাহাদাতের নির্দেশে ভাড়ায় খুন-খারাবিসহ অপরাধ কর্মকাণ্ড চালায়। গোটা মিরপুরের চাঁদাবাজি, দখলবাজি, ঝুট সন্ত্রাস ও টেন্ডারবাজি নিয়ন্ত্রণে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে এ বাহিনী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাঙলা কলেজ ছাত্রলীগের এক নেতা জানান, কবির হোসেন জনি ও সাহাদাত হোসেন রিয়াদ ছাত্রলীগের কমিটিতে নেই, এমনকি কলেজেরও ছাত্র নয়। কিন্তু শীর্ষ সন্ত্রাসী বিকাশ, মোহাম্মদপুরের পিচ্চি হেলাল ও শাহাদাতের হোয়াইট কালার দলপতি হিসেবে তারা বাঙলা কলেজ ছাত্রলীগের ওপর জেঁকে বসেছে। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে লুকিয়ে রাখা হয় এ বাহিনীর আগ্নেয়াস্ত্র। মিরপুরের এক পরিবহন মালিক অভিযোগ করেন, মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পরপরই নানা ছুতায় বাঙলা কলেজের সামনে বেশ কয়েকবার বাস ভাংচুর করে চাঁদাবাজির নির্ধারিত রেট নির্ধারণ করে দিয়েছে জনি-রিয়াদ। পুরো এলাকার বিভিন্ন বাস কাউন্টারে একাধিকবার হামলা চালানোসহ ফুটপাত ও স্থানীয় সব অবৈধ অর্থের নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চাঁদার টাকা না পেয়ে অনেক ব্যবসায়ী ও নির্মাণাধীন বাড়ির মালিককে বাঙলা কলেজ ক্যাম্পাসে নিয়ে আটকে নির্যাতন চালানোর মতো ঘটনা অহরহ ঘটছে।
পাড়া-মহল্লার গড়ে তোলা বিভিন্ন সোর্সের মাধ্যমে ফোন নম্বর সংগ্রহ করার পর ফোনে তাদের কাছে চাঁদা দাবি করা হচ্ছে। সম্প্রতি ১২ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি নোমানের ওপর গুলি চালানোর ঘটনায় নিহত ড্রাইভারের পরিবার এ বাহিনীর বেশ কয়েক সদস্যকে আসামি করে মামলা করে।
স্থানীয় লোকজন জানান, এ বাহিনীর কর্মকাণ্ডে সরকারদলীয় স্থানীয় শীর্ষ নেতারাও ক্ষুব্ধ। খোদ স্থানীয় সংসদ সদস্য আসলামুল হক তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় এক নেতার শেল্টারে এ সন্ত্রাসীরা অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে।

সুত্র সমকাল ০৩/০২/২০১০
১০টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে এসো রাফসান দি ছোট ভাই

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৮

রাফসানের বাবার ঋণ খেলাপির পোস্ট আমিও শেয়ার করেছি । কথা হলো এমন শত ঋণ খেলাপির কথা আমরা জানি না । ভাইরাল হয় না । হয়েছে মূলতো রাফসানের কারণে । কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুমীরের কাছে শিয়ালের আলু ও ধান চাষের গল্প।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০



ইহা নিউইয়র্কের ১জন মোটামুটি বড় বাংগালী ব্যবসায়ীর নিজমুখে বলা কাহিনী। আমি উনাকে ঘনিষ্টভাবে জানতাম; উনি ইমোশানেল হয়ে মাঝেমাঝে নিজকে নিয়ে ও নিজের পরিবারকে নিয়ে রূপকথা বলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×