somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চর ভঙ্গুর, এই ভবের মতো

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১০ রাত ৯:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



১।

বাঙলাদেশে বহু হন্তারক বুক ফুলিয়ে, দাঁত কেলিয়ে ঘুরে বেড়ায়। এদের মুখে দেশপ্রেমের খই ফোটে। এদের দেখলে আমি চিনি ফেলি। মানুষ খুন করে যারা তাদের চোখে-মুখে ছাপ পড়ে যায়। এদের কাউকে কাউকে খুবই মিষ্টভাষী মনে হয়। আসলে এরা খুবই ভয়ংকর। আমি এখনও আমার এলাকায় রাজাকার নিয়ে চিন্তা করি। এরা বোধ হয় সমাজের মূলস্রোতে মিশে গেছে, এদেরকে দেখি না আর। একই পরিবারের কেউ রাজাকার, কেউ আওয়ামি লীগ করে, কেউ বিনপি। কী আশ্চর্য কারবার!

বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রাম নি্য়ে মেলা গবেষণার দরকার রয়েছে। বাংলার সব ঘর শহিদের ঘর। মুক্তিযুদ্ধের সময় অচেনা বাড়ির সব উঠান চেনা। যোদ্ধার খাদ্য প্রকৃতি রাঁধে- বাড়ে, প্রস্তুত করে। আঁধার গেরিলাকে সাহায্য করে। আমার মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি এখনো টাটকা। কারণ, ছোটবেলার কথা। আমার কৈশোর ও উন্মুখ যৈবনের শুরুর দিকটা কেটেছে, যে গ্রামে, তার নাম রাজশপুর। কেউ কেউ বদরপুরও বলে।

শানু আমার বোন। প্রায় পিঠাপিঠি বলতে পারেন। আমরা আমাদের বাড়ির সামনে ঝান্ডু বুড়া চুনা আমগাছের তলায় বসে খেলতাম, কখনো দোকান-দোকান, কখনো অন্য কিছু, কখনো বসে বসে চপল-ছটপটানি, হুদাহুদি। প্রভাতে আমাদের সবসময়ই খেলাখেলা ভাব হতো। খেলতে খেলতে ঘুমাতাম, নিদ্রা শেষে খেলতাম। ২৬ মার্চ সকালেও খেলছি। পান্জাবি-মুক্তি খেলতে -খেলতে ১৬ ডিসেম্বর এসে গেলো।

কয়েকটা গুলির শব্দ হলো। এখনও কানে বাজে। নূরবানু বললো, শিকারি। চন্দ্রবান কোথায় তখন, মনে নাই। সে নূরবানুর বোন। আমার মা, খালা, ফুফু সকালের রান্না প্রায় শেষ করে এনেছেন। ইতি্হাসের চাল-চলন বড়োদের কাছে আগে ধরা পড়ে। দাদা তার ডাক্তারি যন্ত্রপাতি, জমির দলিল দস্তাবেজ এবং আর যা কিছু তার সখের, আনন্দের ও প্রয়োজনের সব গুছিয়ে শরণার্থি হবার জন্য প্রস্তুত। আমার কাকা হারুণ_উর -রশীদও আগে থেকেই একদম ছুটার জন্য তৈরি। তিনি ন্যাপ করতেন। ঢাকায় যা ঘটেছে, তা তিনি জানতেন। তার রাজনৈতিক মর্মও বোধ হয়, তিনি কিছুক্ষণ আগে আমাদের বাহির বাড়ির ঐতিহাসিক ময়দানে কিছু হাতলভাংগা-হাতলওয়ালা চেয়ারে বসে আলাপ করছিলেন। তিনি এবং আরো অনেকে অনেক কিছুই জানতেন, পরে বুঝেছি।

"আসলে তখন আমাদের জ্ঞান হইতেছিল। আস্তে আস্তে চোখ ফুটিতে আরম্ভ করিল। ব্ই পড়িয়া যা জানা যায় না, লড়াই তা শেখায়। সব শিশুই মুক্তি সংগ্রামে গেরিলা হয়ে ওঠে, পিতা কিংবা দাদা রাজাকার হলেও। শিশুরা রাজনীতির আসল খেলাটা বুঝতে পারে। ওরা তো সবসময়ই খেলে।

২। আসলে সংগ্রামের বছর শুরু হয়ে গেছে। বাংলাদেশে সংগ্রামের বছর বার বার ফিরে আসে। আমরা আসলে তৌহিদের তল্লাটে থাকি, কিন্তু চরের চৌকিদার। চর ভঙ্গুর, এই ভবের মতো। চর ও চরাচরের প্রাণ আছে।

আমরা জেগে উঠি ক্ষরণ-ক্ষুব্দ কালে। যখন সব তছনছ হয়ে যতে থাকে, ছ্ত্রখান সব একসাথে করি। উন্নয়নের একটি জ্যোতির্ময় প্রেক্ষিত চাই। একটি দিব্যকাল ও দিব্যদৃষ্টির জন্য সব কানা একসাথে বসে আছি।

কিন্তু কাঁদতে-কাঁদতে আমাদের চোখ কানা হয়ে যায়, ভবিষ্যতের আশায়। তখন স্রোতরিক্ত নদীর কাছে পদ্মাপাগল স্রোত চাই। আসমান ফুটে উঠুক তারায়, আমরা অনির্দিষ্ট থেকে সুনির্দিষ্ট পথে যাই।


আরো লিখবো এই বিষয়ে








০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×