somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আজকের ঠান্ডা পরোটা-ভাজিও আমার কাছে অসাধারণ লাগল!!

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১০ সন্ধ্যা ৬:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমাদের কাজের বুয়া দুই দিন যাবত অসুস্থ। ভোগান্তিটা আমরা ভালই টের পাচ্ছি। নিজেরা রান্না করে খাওয়ার মত অবস্তাও নেই। একমাত্র ভরসা মেসের পাশে অবস্থিত নোংরা ভাতের হোটেল টা। বুয়া না আসলে প্রায়ই আমরা সেখানে খাওয়া দাওয়া করি। আজকে সকাল এগারোটার সময় আমরা তিনজন গেলাম সেখানে পরোটা খেতে। দুইজনে পরোটা ভাজি খেলাম, অন্যজন পরোটা ঠান্ডা বলে সেটা ফিরিয়ে দিয়ে গরম গরম সিঙ্গাঁড়া আনিয়ে খেল। আমরা যে টেবিলটাতে বসলাম তার পাশের টেবিলে দেখলাম তিনজন ভদ্রলোক নাস্তা খাওয়া শেষ করে চায়ের পর্ব সারছেন। উনাদের দেখে আমার যা মনে হল তা হল এরা নিশ্চয়ই এই নোংরা হোটেল খাওয়ার লোক নন। ভাল রেস্টুরেন্টে এদের আনাগোনা। তবুও এখানে বসে কিভাবে খাচ্ছেন তা একটা ভাবার বিষয় বৈকি। ইতিমধ্যে উনাদের একজনের ফোন কল আসল আর উনি উঠে চলে গেলেন। অন্যজন গিয়ে বিলটা মিটিয়ে আসলেন। টেবিলে বসা জন না না করছেন অন্য ভদ্রলোক কে বিলটা দিতে। কিন্তু তিনি শুনলেন না। বিলটা মিটিয়ে এসে চেয়ারটা টেনে বসলেন। তখন বসা ভদ্রলোকটি উনার কাছে পাঁচটা টাকা চাইলেন। আমি একটু অবাক হলাম। ভাবলাম, উনাকে লক্ষ্য করে দেখি টাকাটা দিয়ে তিনি কি করেন! তিনি করলেন কি, হোটেলের যে ছেলেটা তাদের কে সার্ভ করছিল তাকে ডেকে আনলেন। এনে ওর হাতে পাঁচ টাকার নোটটা ধরিয়ে দিয়ে বললেন, নে! এটা তোর! পিচ্চিটা যেন একেবারে ভ্যাঁবাচ্যাকা খেয়ে গেল! এতক্ষনে ফোনের কাজ সেরে তৃতীয় ভদ্রলোকও ফিরে এসে বসলেন। নিদেনপক্ষে এই হোটেলে পিচ্চিটাকে কেউ কোন কালে টিপস দিয়েছে বলে মনে হয় না!

কাঁপা কাঁপা হাতে টাকাটা নিয়ে পিচ্চিটা চলে গেল। পিচ্চিটাকে অনুসরণ করল দুই জোড়া চোখ, আমার এবং ঐ ভদ্রলোকের। পিচ্চিটা সোজা কিচেনে চলে গেল। গিয়ে টাকাটাকে ভাল করে দেখল এবং পকেটে পুরে রাখল। ওর চেহারায় একটা উজ্জ্বল দ্যুতি দেখতে পেলাম। আমার বড় ভাল লাগল সে দৃশ্যটা দেখে! সেইসাথে আমার চোখজোড়া ভদ্রলোকের উপর ফিরিয়ে নিলাম। দেখলাম উনিও মুগ্ধ দৃষ্টিতে পিচ্চিটার দিকে তাকিয়ে আছেন। কিছুক্ষন পর উনারা হোটেল থেকে বেরিয়ে গেলেন। কিন্তু ভাল লাগার একটা আবেশ আমার মধ্যে রেখে গেলেন। যার ফলে আজকের ঠান্ডা পরোটা ভাজিও আমার কাছে অসাধারণ লাগল। ইচ্ছা করছিল আমিও পিচ্চিটাকে কয়েকটা টাকা দেই। কিন্তু না, আজ নয়, আরেকদিন দিব। আজ পকেটের অবস্থা যে তেমন সুবিধার নয়। তবে দিব অবশ্যই।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:২৭
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অতিরিক্ত বা অতি কম দুটোই সন্দেহের কারণ

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৩০

অনেক দিন গল্প করা হয়না। চলুন আজকে হালকা মেজাজের গল্প করি। সিরিয়াসলি নেয়ার কিছু নেই৷ জোসেফ স্টালিনের গল্প দিয়ে শুরু করা যাক। তিনি দীর্ঘ ২৯ বছর সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রধান নেতা ছিলেন। বলা... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সীমানা পিলার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৮



বৃটিশ কর্তৃক এদেশে ম্যাগনেটিক পিলার স্থাপনের রহস্য।
ম্যাগনেটিক পিলার নিয়ে অনেক গুজব ও জনশ্রুতি আছে, এই প্রাচীন ‘ম্যাগনেটিক পিলার' স্থাপন নিয়ে। কেউ কেউ এটিকে প্রাচীন মূল্যবান ‘ম্যাগনেটিক’ পিলার... ...বাকিটুকু পড়ুন

মাথায় চাপা ভূত ভূত ভূতং এর দিনগুলি

লিখেছেন শায়মা, ৩১ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৫


এই যে চারিদিকে এত শত কাজ কর্ম, ঝামেলা ঝক্কি, ক্লান্তি শ্রান্তি সব টপকে আমার মাথায় আজও চাপে নানান রকম ভূত। এক ভূত না নামতেই আরেক ভূত। ভূতেদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায় (দ্বিতীয় অংশ)

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ৩১ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:০৫


আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায় (প্রথমাংশ)
আমাদের সদ্য খনন করা পুকুরটা বৃষ্টির পানিতে ভেসে গেল। যা মাছ সেখানে ছিল, আটকানোর সুযোগ রইল না। আমি আর দুইবোন শিউলি ও হ্যাপি জালি... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিজের পাসওয়ার্ড অন্যকে দিবেন না ;)

লিখেছেন অপু তানভীর, ৩১ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৭



কথায় আছে যে পাসওয়ার্ড এবং জাঙ্গিয়া অন্যকে দিতে নেই । মানুষ হিসাবে, বন্ধু হিসাবে প্রেমিক/প্রেমিকা হিসাবে অথবা আজ্ঞাবহ হওয়ার সুবাদে আমরা অন্যকে ব্যবহার করতে দিই বা দিতে বাধ্য হই।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×