পঞ্চপ্রদীপ নিয়ে থরথর হাতটা এগিয়ে নিই তোমার দিকে।
জানি না, কেমন আরতি তোমার পছন্দ!
জলঘটের সিঁদুরটাকে মনে হচ্ছে
কেমন জীবন্ত, অপলক চেয়ে আছে আমার দিকে!
কিছু বলবে, অথচ কিছু বলবে না।
চন্দন, অষ্ট ধাতুর ছোঁয়া,
গঙ্গা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, গয়া, আরও বিশটা নদির জল,
আমের পঞ্চপলক নিয়ে কেমন সম্ভ্রান্ত সোনারঙের ঘট!
উলঙ্গ বেদিতে বসিয়েছি অঞ্জলি পেতে-
একটু আশীর্বাদের আশায়।
সোনার থালায় প্রসাদ সাজিয়েছি তোমার জন্য;
স্বর্গের ললনাদের আমোদে কেঁপে কেঁপে উঠছে ধূপদানি;
লজ্জিত ষোড়শির মতো পানগুলো বারবার সরে যাচ্ছে দানি থেকে।
কয়টা পাত্র চাই পূজনীয়া! ষোলটা?
ঘোমটা টেনে স্থির পাত্রগুলো, তোমার মত।
তারপর, শাঁখায় রেঙে উঠল তোমার হাত।
পলার নড়াচড়ার শব্দ অদ্ভুত মানাচ্ছে তোমাকে!
তুলসি মালাটা পরে নিয়ে লালপাড়ের শাড়িতে-
গীতাকে সাক্ষি করে বললে, 'বিলিয়ে দিলাম তোমায়।'
অতপর, গীতাটা বুকে তুলে নিয়ে
বিড়বিড় জপতে শুরু করল আশাগুলো।
সাদা কাপড়ে জড়াতে লাগল আকাঙ্ক্ষা।
মাতাল গন্ধ ছড়াচ্ছে ধূপ, চিত হয়ে শুয়ে থাকা স্বপ্নের পৈতানে।
শ্মশানের ক্রুদ্ধ সবুজ ঘাস
খৈয়ের আস্তরণ ভেদ করে মাথা তুলল গিজগিজিয়ে-
'চিতার শপথ, আর চাই না দুর্মুখ নারীর হাড্ডি।'
চন্দন, ঘি, মধু আর তুলসির সঙ্গে একাকার হয়ে গেল
স্বপ্নের পোড়া গন্ধ।
গয়ার জলে দুলতে দুলতে ছাইগুলো নিরুদ্দেশ হল।
আমি সম্মোহিতের মত চেয়ে রইলাম-
ভাগ্যাহত স্বপ্নগুলোর ভস্মের দিকে।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১০ দুপুর ১:১৭