somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রবাসে বাংলা ভাষার ব্যবহার

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১০ ভোর ৪:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রবাস জীবনে ভাষা হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্ব পূর্ণ, যে যত সুন্দর ভাবে তা প্রয়োগ করতে পারবে তিনিই চচ্ছেন সবচেয়ে সফল। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে এ কোন ভাষা আমাদের মাতৃভাষা বাংলা, যার জন্য সেই বায়ান্নর ভাষা আন্দেলন থেকে শুরু করে একাত্তর এর স্বাধীনতা সংগ্রাম এর মাধ্যমে শেষ করেছি। না না না, সেটা শুধু আমাদের গর্বের ভাষা মাতৃ ভাষা হয়েই রইল। যার জন্য এত রক্ত জরিয়েছি, হারিয়েছি কত প্রান, লাখে মা বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত এই বাংলা ভাষা। আজ সেই ভাষায় কথা বলার লোক খুজে পাইনা। মনখুলে বলতে পারিনা আমার হৃদয়ের কথা, সকাল থেকে শুরু করে রাত পর্যন্ত বিদেশীদের শিখানো বুলি তোতা পাখির ন্যায় বলতে আছি। যেখানে খুঁজে পাইনা নিজস্ব স্বাধীনতা, এত সংগ্রামের পরেও আজ মনের ভাষায় কথা বলতে পারিনা। কারন আমরা প্রবাশী, আমরা অন্যের দেশে এসেছি আর্থ উপার্জন এর জন্য, তাই তাদের কর্ম সম্পাদন করিতে হইলে তাহাদের ভাষায় কথা বলিতে হইবে, এটাই সাধারন নিয়ম।

আরব দেশের ভাষা আরবি, এটা নবীর ভাষা, আমরা যারা মুসলমান আমরা সবাই এ ভাষা কে শ্রর্ধা করি, এবং চেষ্টা করি শিখতে কারন এটা কোরআনের ভাষা। মধ্যপ্রাচ্যে যারা কাজ করতে আসেন তারা সবাই ভাষাগত সমস্যাই ভুগেন। এটা স্বাভাবিক ব্যাপার ভাষা না জানলে মনেরভাব লেনদেন করা যায় না, আর মনের ভাব যদি লেনদেন নাই করা যায় তাহলে তাদের সাথে কাজ করবেন কিভাবে। আর কি ধরনের সমষ্যায় আমরা বাঙ্গালীরা সম্মুখীন তা এখানে তুলে ধরা হলো আমার ক্ষুদ্র অভিজ্ঞতা থেকে

ভাষা না জানার কারনে আমাদের শ্রমিক রা বসের কাছ থেকে কাজ বুঝে নিতে পারে না, আর এ না পারার কারনে সে ঐ কাজ ভালো ভাবে শেষ করতে পারেনা তখন হয় কি বস বলে তুমি কাজ পারনা এই বলে তাকে ট্রেডধারী মেস্তুরী থেকে হেলপার করে দেয়া হয়।

:(( কিন্তু দেখা গেছে এই লোকটা কাজ টা চাহিদা মোতাবেক সম্পন্ন করতে পারত, কিন্তু সে কাজ জেনেও তা পারে নাই কারন সে মালিকের চাওয়াটাই বুঝতে পারে নাই।

/:) যদি একজন শিক্ষিত বাঙ্গালী মেস্তুরী হওয়ার পরেও সে এক অশিক্ষিত পাকিস্তানী লেবারের আওতায় কাজ করতে হচ্ছে, কারন সে বলতে পারে না বুঝতে পারেনা। আর পাকিস্তানী তার নিজের ভাষায় কথা বলতেছে। উল্লেখ থাকে যে, এখানে ৭৫% মানুষের ভাষা হচ্ছে উর্দু এবং হিন্দি। আর এ দুই ভাষা হচ্ছে মামাত ফুপাত ভাই, তাই তাদের কোন সমস্যা নেই। বাকী টা হচ্ছে আরবী এবং ইংরেজি। ইংরেজির ব্যবহার হচ্ছে মুষ্টিমেয় জায়গায় বিশেষ করে আমরা যারা অফিসিয়াল কাজ করি তারাই ব্যবহার করি, আর এদের মধ্যে আমরা বাঙ্ঘালীর সংখ্যা খুবই নগন্য। বেশির ভাগ হচ্ছে শ্রমিক শ্রেনীর।

এখন বলতে হয় যে হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে জয় লাভ করেছি ঠিকই কিন্তু উর্দূর বিরুদ্ধে আমরা আজও পরাধীন বিশেষ করে আমরা যারা প্রবাশী। পাইক্যারা আজও আমাদের শোষন করতেছে।

:(( আজ বিকেলে আমার এক দেশী ভাইয়ের সাথে সাক্ষাত তখন দেখলাম সে কাঁদতে আছে, জিগ্যেশ করতেই বলল তার ২দুই দিনের হাজিরা কেটে দিয়েছে কারন তার পাইক্যা ফোরম্যানের কথা শুনেনাই বলে, আমি তাকে জিগ্যেস করলাম আপনার সমস্যা কি তখন সে বলল ভাই আমি নতুন মানুষ হিন্দি বলতে পারি না সে কি বলেছে তাই বুঝতে পারিনি। আমার খুব খারাপ লেবার মানুষ কতই আর বেতন পায় তার উপর দুই দিন, অথচ লোকটা সারা দিন কাজ করেও তার ন্যার্য আদায় পাচ্ছে না। এমনি করে আমরা এখনও পাইক্যার কাছে জিম্মি শুধু তাদের ভাষার কারনে।

এই যদি হয় আমাদের প্রবাশে ভাষার ব্যবহার তাহলে তো বিদেশি ভাষার যাতাকলে পড়ে এক দিন আমাদের নিজের মাতৃভাষাকে হারিয়ে ফেলব।

অবশেষে বংলা ভাষার জন্য যারা নিজেদের বিলিয়ে দিয়েছেন তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এখানে বিদায়।

সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১০ ভোর ৫:৪৪
১৬টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস-পরীক্ষার হলে দেরিঃ পক্ষ বনাম বিপক্ষ

লিখেছেন BM Khalid Hasan, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



বর্তমানের হট টপিক হলো, “১ মিনিট দেরি করে বিসিএস পরীক্ষার হলে ঢুকতে না পেরে পরীক্ষার্থীর স্বপ্ন ভঙ্গ।” প্রচন্ড কান্নারত অবস্থায় তাদের ছবি ও ভিডিও দেখা যাচ্ছে। কারণ সারাজীবন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

×