somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মানুষের আদিম চাহিদা

২৭ শে জানুয়ারি, ২০১০ রাত ৮:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঈদের আগে সবাই ব্যাস্ত থাকে কেনাকাটায়। বিলাসবহুল প্রাসাদ থেকে বস্তিতে বাস করা ঠিকে বুয়াটাও চায় বিশেষ কিছু করতে। কেউ হয়তো কয়েক প্রস্থ জামা জুতো আর কেউ হয়তো কিছু পোলাও চাল আর ডালডা অথবা পাড়ার মুদি দোকানে বিক্রি করা কমদামী ভেজাল নিম্নমানের ঘি নিয়েই একটু আলাদা করে দেখতে চায় বছরের এই দিনটা। কারও কারও কপালে তাও জোটে না। রাস্তার অনেক ছিন্নমূল শিশু যারা প্রতিনিয়ত উচ্ছিষ্টের সাথে বসবাস করে চলে, পিতা মাতার আদর বলে কোন শব্দ যাদের অভিধানে নাই, অথবা সেহরী করে যারা শুধু পানি দিয়ে তাদের মনে ঈদ কোন আলাদা অনুভুতি আনে না। মানুষ নির্মমভাবে বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত। আমাদের কারও ক্ষমতা নেই এই ভাগ বিশিষ্টতাকে নির্মূল করার। কোন অবস্থাপন্ন মেয়ে কখনোই কোন দিনমজুরের সাথে বিয়ে বসবে না, অথবা তার পরিবার তাকে তা করতে দেবে না। এক সাধারণ সৈনিকের ছেলের কাছে পদস্থ সামরিক কর্মকর্তার মেয়েকে বিয়ে করা বা উল্টোটা বলতে গেলে অসম্ভব এক বস্তু। অথবা আপনার বাসার ভদ্রস্থ টেবিলে একজন ভিখিরিকে বসিয়ে একসাথে দুপুরের ভাত খাওয়াটা কতদূর সম্ভব আমি এখনো জানি না।

যাই হোক আমার পোষ্টের বিষয়বস্তু এসব না। একবার ঈদের দুই তিনদিন আগে বাবা আমাদের সবাইকে বলছেন, আমার এবারের ঈদের শুভেচ্ছা দুইজন মানুষের জন্য। আমরা আমাদের ত্যাদড়ামী স্বভাবমত জিজ্ঞাসাও করছিনা কাদের জন্য। শুধু বলছি, ও আচ্ছা। আমরা বাড়ীতে সবাই সবসময় কৌতুক হাসি ঠাট্টার মধ্যে থাকি। একজন সবসময় আরেকজনকে পচাই। আমরা ভাবছি, বাবা নিজের মধ্যে কতক্ষণ রাখতে পারে কথা দেখি। আমরা ভাব দেখাচ্ছি যেন আমাদের কোন আগ্রহই নাই এ সম্পর্কে। বাবা কতক্ষণ পর জিজ্ঞাসা করলেন, বলতে পারিস কাদের জন্য আমার এবারের ঈদের শুভেচ্ছা। আমরা ভাল করেই বুঝতে পারছিলাম আমাদের কারো জন্য তো অবশ্যই নয়। তাই সোজা বলে দিলাম, না জানি না। বাবা বললেন আজকের পত্রিকা পড়েছিস? বললাম, না।

বাবা বললেন, আজ পত্রিকায় দেখলাম, দুইজন মহিলা, তাদের খাবার নাই, কাজ নাই। পেটের ক্ষুদায় তারা শেষ পর্যন্ত পতিতাপল্লীর সর্দারনীর কাছে নিজেদের সমর্পন করেছে। মানুষ কতটুকু নিপীড়িত হলে এতদুর যায়? স্বাভাবিকভাবে কাজ করে দুইটা ভাত খাবে সেই সুযোগটুকুও তাদের নাই। একটু ভাত, ক্ষুধার ভাত তাদের কেউ দিতে পারল না। মানুষের দুইটা আদিম চাহিদা, সেক্স এন্ড ফুড। তাদের একটি আদিম চাহিদা খাদ্যের জন্য তারা আরেকদলের চাহিদার কাছে নিজেদের বলি দিল। তারা একপ্রকার নিজের একটা চাহিদা বিসর্জন দিল আরেকটি চাহিদার জন্য। এই দুঃখী দুইটা মানুষের জন্য আমরা কেউ কিছুই করতে পারি নাই। কেউ তাদের ঈদের শুভেচ্ছা জানাবে না। তারা আমাদের এই ভদ্র সমাজ যেখানে সবাই নিশ্চিন্তে তাদের দুটি চাহিদাই মিটিয়ে যাচ্ছে সেখান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল। এই ভদ্র সমাজেরই এক অংশের চাহিদার কাছে বলি হল এই দুর্ভাগা মানুষ দুটো। অনেকেই হয়তো অনেককে ঈদের শুভেচ্ছা জানাবে। কিন্তু ঈদের এই কয়েকদিন আগে হারিয়ে যাওয়া দুটি মানুষকে কেউ ঈদের শুভেচ্ছা জানাবে না। তাই আমি আমার ঈদের শুভেচ্ছা তাদের জানালাম।

আসলেই ফুড এন্ড সেক্স সেই সৃষ্টির শুরুর চাহিদা। তাই অনেক ধরণের বাজার ইতিহাসে আসা যাওয়া করলেও এই দুটি জিনিসের বাজার এখনো টিকে আছে আর হয়তো থাকবেও। খাদ্যের অবাবে মানুষ মানুষের মাংশ পর্যন্ত খায়। যৌনতার অভাবে মানুষ জন্তু জানোয়ারের উপরেও চড়াও হয় পর্যন্ত। মুতাহ বিবাহ পর্যন্ত চালু করতে হয়েছিল এই যৌনতার জন্য। ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়, পূর্ণিমার চাদ যেন ঝলসানো রুটি। এদের এড়িয়ে যাওয়া দুষ্কর।

( অসম্পূর্ণ লেখা )
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১২ রাত ১২:২২
২০টি মন্তব্য ২০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×