somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাতে ইলেক্ট্রনিক্স শেখা...২

২৬ শে জানুয়ারি, ২০১০ সকাল ১০:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যারা আমার আগের লেখাটা পড়েছেন, তাদের সবাইকে ধন্যবাদ দিয়ে শুরু করছি বাংলায় ইলেক্ট্রনিক্স শেখার দ্বিতীয় পাঠ। আগের পোস্টে বলেছিলাম, ইলেক্ট্রনকে নিয়ন্ত্রন করার তিনটা উপায় হচ্ছে, রেজিস্ট্যান্স, ক্যাপাসিটেন্স এবং ইন্ডাকটেন্স। এখন একটু বুঝানোর চেষ্টা করি, রেজিস্টর, ক্যাপাসিটর বা ইন্ডাকটর কিভাবে ইলেক্ট্রনের চলাফেরা নিয়ন্ত্রন করে।
রেজিস্ট্যান্স- আগের পর্বের উদাহারন টেনে আনা যাক। যখন একজন শিক্ষক বেত হাতে আর একজন শিক্ষক চকলেট হাতে দাঁড়ালেন, বাচ্চারা চকলেট-ওয়ালার দিকে দউর দিল। এখন মনে করি বাচ্চাদেরকে অই শিক্ষকের কাছে পৌছতে হলে একটা করিডর পার হয়ে যেতে হবে। যদি সেই করিডরটা ফাঁকা থাকে, তবে বাচ্চারা সহজেই দৌড়ে অপর প্রান্তে চলে যেতে পারবে। হয়ত এক মাথা থেকে অন্য মাথায় যেতে তাদের সময় লাগবে ২ মিনিট। এখন যদি এমন হয় ঐ করিডরে অন্য ক্লাসের আরো ৪-৫টা বাচ্চা জটলা করে আছে, তবে এই বাচ্চাগুলো যখন দৌড়ে যাবে তখন এদের সাথে গুতো-ধাক্কা খেয়ে তাদের গতি কমে যাবে। যদি করিডর অন্য ক্লাসের বাচ্চা আরো বেশি থাকে, তবে দৌড়ের গতি আরো কমে যাবে। আর যদি করিডর একদম ভরতি থাকে, তবে এই বাচ্চাগুলো সবাইকে পেরিয়ে চকলেট-ওয়ালা শিক্ষকের কাছে পৌছতেই পারবে না। এই যে ব্যপারটা বাচ্চাদের দৌড়ের গতি কমিয়ে বা বন্ধ করে দিল এটাই হচ্ছে রেজিস্ট্যান্স। যত বেশি মানুষ = তত বেশি বাধা = তত বেশি রেজিস্ট্যান্স বা রোধ। ইলেক্ট্রনের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা প্রায় একইরকম। ইলেক্ট্রনগুলো কোন একটা পদার্থের মধ্য দিয়ে এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে যাবার চেষ্টা করে ভোল্টেজ পার্থক্যের কারনে। ঐ পদার্থের মধ্য যদি বিভিন্ন রকম বাধা থাকে তবে তার অপর প্রান্তে পৌছবার গতি কমে যায়। অর্থাৎ কারেন্ট কমে যায়। সুতরাং আমরা যদি কোন সার্কিট (বর্তনী)- এ কারেন্ট কমাতে চাই, তবে দু পাশের ভোল্টেজ এর মাঝে রেজিস্ট্যান্স বাড়িয়ে দিতে হবে। রেজিস্ট্যান্স মাপার একক হল ওহম এবং বড় হাতের গ্রীক অক্ষর ওমেগা (Ω) দিয়ে এই একক সঊচিত করা হয় ।
রেজিস্ট্যান্স, ভোল্টেজ ও কারেন্ট হিসেব করার কিছু উদাহারন দেয়া যাক। এই হিসাব করার জন্য যে সুত্র ব্যবহার করা হয় তার নাম “ওহমের সূত্র”, বিজ্ঞানী ওহমের নামে। সূত্রটা হলো,
V= I x R.
অর্থাত ভোল্টেজ হচ্ছে কারেন্ট আর রেজিস্ট্যান্স এর গুনফল।
উদাহারন ১ঃ

উপরের সার্কিট টা লক্ষ্য করা যাক। প্রথম ছবিতে প্রতিটা রেজিস্ট্যান্স এর দুপাশে ভোল্টেজ কত দেয়া আছে, নিচে দেয়া আছে রেজিস্ট্যান্স এর মান। এর থেকে আমরা হিসেব করে বের করে ফেলতে পারবো এক একটা রেজিস্ট্যান্স এর মধ্য দিয়ে কি পরিমাণ কারেন্ট প্রবাহিত হচ্ছে। R1 এর জন্য হিসেব করা যাক। এর দু’পাশে ভোল্টেজ এর পার্থক্য হচ্ছে, V = 10V- 5V= 5V. রেজিস্ট্যান্স হচ্ছে, R = 5. অতএব, কারেন্ট এর হিসেব হবে, I = V/ R = 5V/5 (অ্যাম্পিয়ার) আবার উল্টোটাও হিসেব করা যেতে পারে। ডানের ছবি থেকে দেখা যাচ্ছে, R2 রেজিস্ট্যান্স এর ভিতর দিয়ে ১ অ্যাম্পিয়ার কারেন্ট যাচ্ছে, এর রেজিস্ট্যান্স হচ্ছে 3Ω. সুতরাং এর দু প্রান্তে ভোল্টেজ হবে ওহমের সুত্রানুসারে, V= I x R = 1A x 3Ω = 3V. বামের ছবি থেকে যদি আমরা ভোল্টেজ পার্থক্য হিসেব করি তবে পাব, V= 5V – 2V = 3V. মানে দাড়াচ্ছে, V, I, R এই তিনটার যে কোন ২ টা জানা থাকলেই আমরা অন্যটা হিসেব করে বের করে ফেলতে পারব।

--------------------------------------------------------------------
আমি খুব দ্রুত মসফেট ও ট্রানজিস্টর এবং তারপর অ্যাম্পলিফায়ার এর ডিজাইনে ঢুকে যেতে চাইছি। তার আগে কতখানি ভূমিকা আলোচনা করা দরকার বুঝতে পারছি না। উপদেশ কাম্য। বেশি সংক্ষিপ্ত করতে চাই না যে পরের আলোচনা কেউ বুঝতে পারবে না, আবার বেশি দীর্ঘায়িতও করতে চাই না।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১০ সকাল ১০:২৯
১০টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পুরোনো ধর্মের সমালোচনা বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেই নতুন ধর্মের জন্ম

লিখেছেন মিশু মিলন, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:১৫

ইসলামের নবী মুহাম্মদকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তিথি সরকারকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে এক বছরের জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীনে প্রবেশনে পাঠানোর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

চরফ্যাশন

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫৯



নয়নে তোমারি কিছু দেখিবার চায়,
চলে আসো ভাই এই ঠিকানায়।
ফুলে ফুলে মাঠ সবুজ শ্যামলে বন
চারদিকে নদী আর চরের জীবন।

প্রকৃতির খেলা ফসলের মেলা ভারে
মুগ্ধ হয়েই তুমি ভুলিবে না তারে,
নীল আকাশের প্রজাতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×