somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আজ ঐতিহাসিক ও বরকতপূর্ণ ১১ ই রবিউছ ছানী শরীফ তথা পবিত্র ফাতিহায়ে ইয়াযদাহম শরীফ; সাইয়্যিদুল আউলিয়া হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পবিত্র বিছাল শরীফ দিবস

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ ঐতিহাসিক ও বরকতপূর্ণ ফাতিহায়ে ইয়াযদাহম শরীফঃ

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘সাবধান! নিশ্চয় যাঁরা মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী, উনাদের কোনো ভয় নেই এবং চিন্তা-পেরেশানীও নেই।’
আজ ঐতিহাসিক ও বরকতপূর্ণ পবিত্র ফাতিহায়ে ইয়াযদাহম শরীফ।
মহান আল্লাহ পাক উনার খালিছ ওলী গাউছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পবিত্র বিছাল শরীফ উনার দিবস
তাই প্রত্যেক মুসলমান এবং বাংলাদেশ সরকারসহ পৃথিবীর সকল দেশের সরকারের উচিত-
যথাযথ ভাবগাম্ভীর্যতার সাথে অর্থাৎ পবিত্র মীলাদ শরীফ, পবিত্র ক্বিয়াম শরীফ ও পবিত্র দোয়া-মুনাজাত শরীফসহ উনার পবিত্র সাওয়ানেহ উমরী মুবারক আলোচনার মাধ্যমে এদিনটি পালন করা এবং উনার সম্মানার্থে এদিনে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা।
পবিত্র রবীউছ ছানী শরীফ মাস অত্যন্ত বরকত ও ফযীলতপূর্ণ মাস। এই মাস উনারই ১১ শরীফ অর্থাৎ আজ বড়পীর ছাহেব মাহবুবে সুবহানী, কুতুবে রব্বানী, গাউছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া হযরত শায়েখ সাইয়্যিদ মুহিউদ্দীন আব্দুল কাদির জিলানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি পবিত্র বিছাল শরীফ লাভ করেন।

হযরত গাউছুল আ'যম রহমতুল্লাহি আলাইহি আল্লাহ পাক উনার খালিছ ওলী ছিলেনঃ

বড়পীর সাহেব গাউছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া হযরত শায়েখ সাইয়্যিদ মুহিউদ্দীন আব্দুল কাদির জিলানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ থেকে পবিত্র বিছাল শরীফ পর্যন্ত আমরা যে ওয়াকিয়া বা ইতিহাস দেখতে পাই; তার মধ্যে হাজার-লক্ষ নছীহত মুবারক বা ইবরত মুবারক রয়ে গেছে। মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, “সাবধান! নিশ্চয় যাঁরা মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী উনাদের কোনো ভয় নেই এবং চিন্তা-পেরেশানীও নেই।”
পূর্ববর্তী হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ উনাদের ভবিষ্যদ্বাণীঃ

গাউছুল আ’যম, বড়পীর ছাহেব হযরত শায়েখ সাইয়্যিদ মুহিউদ্দীন আব্দুল কাদির জিলানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সম্পর্কে পূর্ববর্তী হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ উনারা ভবিষ্যদ্বাণী করে গেছেন। আওলাদে রসূল এবং আহলে বাইত শরীফ উনাদের অন্তর্ভুক্ত হযরত ইমাম জাফর সাদিক আলাইহিস সালাম (যিনি হযরত ইমাম আবু হানিফা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পীর ছাহেব বা শায়েখ বা মুর্শিদ ছিলেন) উনি উনার ‘কাশফূল গুয়ুব’ নামক কিতাব মুবারক উনার মধ্যে লিপিবদ্ধ করেন যে, এক বিশেষ রূহানী মজলিসে মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সাইয়্যিদুল আউলিয়া, গাউছুল আ’যম হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার আগমনের সুসংবাদ দান করেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলেন যে, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম ও সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনাদের পবিত্র শাহাদাত মুবারক উনার পর আমি আমার উম্মতের কথা ভেবে চিন্তিত হলে মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার দুই মাহবুব বান্দা দ্বারা আমাকে সুসংবাদ দান করেন। সেই দুই মাহবুব বান্দার অন্যতম একজন মাহবুবে সুবহানী, কুতুবে রব্বানী, সাইয়্যিদুল আউলিয়া হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি। সুবহানাল্লাহ!

সাইয়্যিদুল আউলিয়া হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি ছিলেন ওই যামানার মুজাদ্দিদঃ
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ আছে, “প্রত্যেক হিজরী শতকের শুরুতে মহান আল্লাহ পাক তিনি এই উম্মতের ইছলাহর জন্য এমন একজন মহান ব্যক্তি প্রেরণ করবেন, যিনি পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার সংস্কার করবেন।” অর্থাৎ বিদয়াত, বেশরা এবং পবিত্র ইসলামী শরীয়ত বিগর্হিত কাজগুলোর সংশোধন করবেন।সেই রকম একজন খাছ ও বিশিষ্ট ওলীআল্লাহ হলেন- গাউছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি।

কারামতপূর্ন আগমন এবং বংশ পরিচয়ঃ

গাউছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি ৪৭১ হিজরীতে পহেলা রমাদ্বান শরীফ, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীমি বা সোমবার শরীফ পবিত্র জিলান নগরে পবিত্র বিলাদত শরীফ লাভ করেন। জিলান নগরীটি তৎকালে ইরানে অবস্থিত ছিলো। তিনি পিতার দিক থেকে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম এবং মাতার দিক থেকে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনাদের বংশধর অর্থাৎ আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। গাউছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পিতা উনার নাম মুবারক হযরত সাইয়্যিদ আবু ছালেহ মুসা জঙ্গী দোসত রহমতুল্লাহি আলাইহি। যেহেতু তিনি জিহাদ প্রিয় ছিলেন সেহেতু উনাকে জঙ্গী দোসত বলা হয়। আর উনার মাতা উনার নাম মুবারক হযরত উম্মুল খায়ের আমাতুল জাব্বার ফাতিমা রহমতুল্লাহি আলাইহা।

কারামতপূর্ন বিছাল শরীফঃ

‘বাহজাতুল আসরার’ নামক কিতাব মুবারক উনার মধ্যে হযরত শায়েখ শিহাবুদ্দীন সোহরাওয়ার্দী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, গাউছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ৫৬১ হিজরী সনের পবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ মাস হতে অসুস্থ হয়ে পড়লেন। ‘তাওয়ারিখে আউলিয়া’ নামক কিতাব উনার মধ্যে হযরত শায়েখ আব্দুল ফতেহ বাগদাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, ইয়াওমুল আহাদি বা রোববার দিবাগত রাত্রে অর্থাৎ ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীমি বা সোমবার শরীফ রাত্রে গাউছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি গোসল করেন। গোসলান্তে ইশার নামায আদায় করে তিনি উম্মতে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের গুনাহখাতা মাফের জন্য ও উনাদের উপর খাছ রহমত মুবারক নাযিলের জন্য দোয়া করলেন। এরপর গায়েব হতে আওয়াজ আসলো, “হে প্রশান্ত নফস, আপনি সন্তুষ্টচিত্তে, সন্তুষ্টিপ্রাপ্ত হয়ে নিজ প্রতিপালক উনার দিকে প্রত্যাবর্তন করুন। আপনি আমার নেককার বান্দার মধ্যে শামিল হয়ে যান এবং বেহেশতে প্রবেশ করুন।” এরপর তিনি পবিত্র কালিমা শরীফ পাঠ করে তাআজ্জাজা (অর্থ বিজয়ী হওয়া) উচ্চারণ করতে লাগলেন এবং তিনি আল্লাহ, আল্লাহ, আল্লাহ বললেন। এরপর জিহ্বা মুবারক তালু মুবারক উনার সাথে লেগে গেলো। এভাবে ৫৬১ হিজরীর ১১ই রবীউছ ছানী শরীফ মাস উনার ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীমি বা সোমবার শরীফ গাউছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার মহান দরবার শরীফ উনার মধ্যে প্রত্যাবর্তন করলেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আর এদিনটিই সারাবিশ্বে ‘পবিত্র ফাতিহায়ে ইয়াযদাহম শরীফ’ নামে মশহুর। আগামীকাল সেই পবিত্র ফাতিহায়ে ইয়াযদাহম শরীফ।

সরকার এবং মুসলমানগণ উনাদের করনীয়ঃ

তাই প্রত্যেকের উচিত এই ঐতিহাসিক ও বরকতপূর্ণ দিবসটি অত্যন্ত জওক-শওক্ব ও মুহব্বতের সাথে পবিত্র মীলাদ শরীফ, পবিত্র ক্বিয়াম শরীফ ও পবিত্র দোয়া-মুনাজাত শরীফসহ উনার বরকতময় সাওয়ানেহ উমরী বা জীবনী মুবারক আলোচনা করে অতিবাহিত করা। আর সরকারের জন্য দায়িত্ব ও কর্তব্য হচ্ছে- এ দিবসটি যথাযথ মর্যাদায় পালনের সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণসহ এদিনে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা। পাশাপাশি মাদরাসা, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সিলেবাসে উনার জীবনী মুবারক অন্তর্ভুক্ত করা।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৯
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×