২০০৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর থেকে ২০০৭ এ ১/১১ এর আগে পর্যন্ত দেখেছি মিছিল আর ধর্মঘটের রাজনীতি। ১/১১ এর পর অনেকগুলো দিন ভালই কেটেছে। '০৮ এর নির্বাচনের আগে দিন বদলের হই-হল্লা শুনে গিয়েছিলাম কেন্দ্রে। আশা ছিল এবার হয়ত দিন বদলাবে। রাজনীতিবিদেরা ছ্যাকা তো আর কম খেলেন না! কিন্তু সেদিন ক্লাসে বসে ঠুসঠাস শব্দে ভাংলো নতুন দিনের স্বপ্ন।যদিও গত বছরের শুরু থেকেই হলে হলে গ্রপিং আর দল-শিবির পিটানো রাজনীতি দেখে আসছি, ভেবেছিলাম এটা গত টার্মের প্রতিক্রিয়া। কিন্তু সেদিন যা দেখলাম তা প্রতিক্রিয়া নয়, নতুন ক্রিয়া। কারণ, গত ৫ বছরে ঢাবিতে প্রকাশ্যে অস্ত্র দেখা যায়নি, যা দেখা গেল ১৮ জানুয়ারী। আবার ছাত্রদলের অন্তকোন্দলের নামে! আচ্ছা যে ছাত্রদল সরকারে থাকা অবস্থায় প্রকাশ্যে অস্ত্র দেখাতে পারল না তারা বিরোধীদলে গিয়ে এতো শক্তিশালী হল কী করে? যারা ক্যাম্পাসে ছিলেন না, তারা তো গোলকধাধায় পরে গেছেন কোন মিডিয়ার খবর সত্য? কার দাবী সত্য? BNP না আওয়ামী লীগ? অস্ত্র আসলে কার হাতে ছিল? আসুন তলিয়ে দেখি।
১. ২০০৮এর ২৯/১২ এর নির্বাচনের পর থেকেই ছাত্রদলের ক্যাডাররা হল ছাড়া। তাহলে ১৮ জানুয়ারী তারা হল থেকে অস্ত্র আনল কিভাবে?
২. যদি তারা হলে থেকেও থাকে, হলে তাদের নিয়ন্ত্রণ না থাকলে অস্ত্র রাখা সম্ভব নয়, যেকোন সময় পুনিশী অভিযানের ভয় থাকে।
৩. বিরোধী সঙ্গঠন অস্ত্র রাখলে যেকোন সময় হলের দখল নিতে পারে, সুতরাং, ছাত্রলীগ কখোনোই সেটা মেনে নেবে না।
৪. পুলিশের চোখের সামনে অস্ত্রধারীরা ঘুরলেও পুলিশ কেনো কোনো পদক্ষেপ নিল না (সাধারণত ক্ষমতাসীণদের ক্ষেত্রেই এমনটা ঘটে)
৫. ভারতের সাথে করা সমঝোতা চুক্তি নিয়ে বিরোধীদলের হুমকি আর মিডিয়ার হইচই-এ কয়েকদিন ধরেই সরকার বিব্রতকর অবস্থায় ছিল। তাদের একটা ইস্যু দরকার ছিল মিডিয়ার নজর সরাবার জন্য।
৬. একইসাথে ছাত্রদলকেও আপাতত একটু দুর্বল করা দরকার ছিল যেন ভারত ইস্যুটা শুরুতেই ট্যাকল করা যায়।
সবমিলিয়ে যে হিসাব দাড়াচ্ছে তাতে মনে হয় পাঠক বুঝতে পেরেছেন আসলে অস্ত্রধারীরা কারা ছিল। আর ক্যাম্পাসের হাড়ীর খবর রাখেন যে ছাত্ররা তাদের তো এত হিসাবের প্রয়োজন নেই।এছাড়া দৈনিক আমার দেশ কিছু অস্ত্রধারী ক্যাডারের নাম পরিচয় ছেপেছে ২০ বা ২১ জানুয়ারী। তো আসুন আমরা আবার স্বপ্ন ভাঙ্গার গান গেয়ে নতুন করে সেশনজ়টের জন্য প্রস্তুত হই।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১০ ভোর ৪:০৩