somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

১৪ টি বসন্তের পর

২০ শে জানুয়ারি, ২০১০ রাত ২:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



২০০৯ এর মধ্যভাগে সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ বাজারের একটি ফটোস্টুডিও তে বেশ কয়েকটি ছবি দেখে মেয়েটিকে ভালো লাগে। তারপর মেয়েটির নাম,পরিচয়, অবস্থান, মন-মানসিকতা জানার নিরন্তর প্রচেষ্টা। পরে জানা হয় তার সব কিছু। এক পর্যায়ে মেয়েটির সাথে যোগাযোগ স্থাপন। গত ঈদ উপল্েয হাছন নগরস্থ উপতক্যা এলাকাবাসীর উদ্যোগে স্থানীয় একটি শিল্পী গোষ্ঠীর আয়োজনে একটি ওপেন কনর্সাটে বক পয়েন্টে চ্যানেল আইয়ের সেরাকন্ঠ আশিকের গানের অনুষ্ঠানে ২২ সেপ্টেম্বর মেয়েটিকে প্রথম চাুস দেখা। পরণে কালো রংয়ের জামা ও চুরিধার। একটু পরপর ঘর থেকে বের হয়ে এসে কিছুণ অনুষ্ঠানে অবস্থান করে। আবার ঘরের ঘরের ভেতরে চলে যায়। এভাবে কাটে প্রায় ২/৩ ঘন্টা সময়। এক পর্যায়ে মেয়ের বন্ধুর মাধ্যমে মোবাইল কনফারেন্সে মেয়েটির কথোপকথন শুনা। এ রকম ঘটনা ৩/৪ দিন ঘটে। পরে বন্ধুটি সরাসরি কথাবলার জন্য স্বেচ্ছায় মোবাইল নাম্বার দেয়। ফোন করবো কি করবো না ভেবে ভেবে ৭ দিন কেটে যায়। সাহস করে আরিয়ান মিডিয়ার ছাঁদের এক কোনে দাঁড়িয়ে থেকে মেয়েটির সাথে ৪৫ মিনিট টানা কথা বলা। পরে আমার একজন সিনিয়র বন্ধু মেয়েটি কে সুনামগঞ্জ শহরের তৎকালীন নন্দন ফাস্টফুডে আসার জন্য আমন্ত্রন করেন। বান্ধবী কে নিয়ে নন্দনে আসে। তখন সন্ধ্যা। নন্দনে মেয়েটি প্রায় ১ ঘন্টা অবস্থান করে। সে রাত পৌঁনে ৮ টার দিকে রিক্সা করে বাসায় চলে যায়। তারপর ২৫ হাজার মিনিট ননস্টপ কথা বলা। মেয়েটি শুধু ছেলেটিকে মিসকল দিতো। ছেলেটি ফোন ঘুরিয়ে কথা বলতো। ৩/৪ রাত ১২ টার পর ভোর ৫ টা ৭ টা পর্যন্ত টানা কথাবলা পর্ব চলে। মেয়েটি কে বিশ্বাস করে ছেলেটি তার জীবনের সব কথা বলে। কিন্তু মেয়েটি চাপা স্বভাবের ছিলো। মেয়েটি শুধু শুনে যেতো কথোপকথনের ফাঁকে ফাঁকে উঁ,হ্যাঁ,অয়,হে শব্দাবলীর ব্যবহার করতো। মেয়েটির সংগে ক্রমশ গভীর সখ্যতা গড়ে ওঠে ছেলেটির। তার সাথে দীর্ঘ সময় কথা বলার পর বুঝা যায়। বাবা মারা যাওয়ার পর সে টানা বিষন্নতার মধ্যে দিনযাপন করতে থাকে। বিগত ২/ ৩ বছর সে বিষন্নতায় আক্রান্ত ছিলো। সারাণ মুখ ঘোমরা করে গালে হাত, কখনও মাথায় হাত দিয়ে বিরস বদনে বসে সময় পার করতো। স্থানীয় নিবন্ধন অফিসে পার টাইম কাজ করার সময় নিজের সব দুঃখ কষ্ট কে চাপা দিয়ে নীরবে ভলিউম বইয়ের পাতায় বুদ হয়ে সকাল থেকে শেষ বিকেল পর্যন্ত লিখে যেতো। সারা দিনমান কঠোর পরিশ্রম করে বাসায় যেয়ে আবার ঘর সংসারের কাজের ফাঁকে ফাঁকে ছেলেটির সাথে মোবাইলে কথা বলতো। কিন্তু ছোট ভাই ঘরে এলে লাইনটি কেটে দিতো। ঘরের দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ শুনে বলতো “ভাই আইছে, অখন রাখি দেই, পরে কথা কথা কইমু নে”। ভাই ঘর থেকে চলে গেলে আবার চলতো কথা বলা। কিন্তু মেয়েটি তার ছোট দুবোনের সামনে ছেলেটির সাথে অনায়াসে কথা বলতো। ধনাঢ্য পিতৃহীন পরিবারের ৪ ভাইবোনের মধ্যে মেয়েটি বড়, ভাইটি তৃতীয়। যথেষ্ট পরিমাণ সম্পদ থাকার পরও পারিপার্শ্বিক কারণে মেয়েটির পরিবার কাকাদের উপর নির্ভরশীল। যারা সবসময় তাদের পিছনে লেগে থাকতো। মেয়েটির বাবা মারা যাওয়ার শোক কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই আপন কাকা মেয়েটির বয়স এবং বিয়ের কথা নিয়ে নানান কূটুক্তি করে। কাকাদের এরকম আচরনের ফলে মা,মেয়ে মানসিক আঘাত পায়। সেই সাথে অনেকটা বিমর্ষ হয়ে পড়ে। এভাবে শাঁখের করাতের আঘাতে তবিত মা,মেয়ের মতামতের কোন দাম থাকেনি সংসারে। হঠাৎ একদিন মেয়েটি মোবাইলে মেসেজ দিয়ে ছেলেটিকে বলে “তোমাকে ছাড়া আর কাউকে বিয়ে করবো না আমি”। কিন্তু কাকাদের প্রচন্ড চাপের মধ্যে পড়ে মা মেয়েটি কে বলে “তুই যদি আমাদের সবাই কে কষ্ট দিয়ে তোর পছন্দের ছেলের কাছে যেতে চাস, তবে যা আমরা তরে তার হাতে তুলে দেব” আর এ ঘটনার নেপথ্যের নায়ক থাকে মেয়েটির একজন সুদখোর কাকা, উচ্চাবিলাসী বোনসহ তাদের পরিবারের আরও অনেকেই। এ অবস্থায় মেয়েটি ছেলেটিকে এসএমএস করে “তুমি যদি আমাকে একটুও ভালোবাসো তবে আমাকে ভুলে যাও কারণ আমি অসহায়”। মেয়েটির পরামর্শে তার কাকাদের সামাজিক ভাবে রাজী করানোর জন্য শহরের গণ্যমান্য বিশিষ্ট ব্যাক্তিদের দ্বারস্থ হয়। তারাও ব্যর্থ হন তাদের নানান টালবাহানার কাছে। এক পর্যায়ে ছেলেটি মেয়েটিকে বলে “তোমার জন্য জন্ম জন্মান্তরের অপোয় রইবো আমি”। অবশেষে পরিবারিক অনুগত্য মেনে নিয়ে মেয়েটি সিলেটে চাকুরীরত জনৈক সরকারী চাকরের গলায় বরমাল্য দিতে যাচ্ছে।
৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সভ্যতার কলঙ্ক ইজরাইল

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ২৯ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৮

ইহুদিদের প্রধান ধর্মগ্রন্থের নাম তোরাহ। এটি ৫ টি পুস্তকের সমন্বয়ে গঠিত। ইহুদি এবং সকল একেশ্বরবাদীরা বিশ্বাস করে তোরাহ হচ্ছে প্রফেট Moses ( মুসা নবী ) এর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেসবুক থেকে ভালোবাসার পথে: আমার এবং মীমের গল্প

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ৩০ শে মে, ২০২৪ রাত ২:৩৭

## প্রথম অধ্যায়: অনলাইন থেকে অফলাইনে

ফেসবুকের পাতায় একটি সাধারণ দিন। আমি তখন নিউইয়র্কের ব্যস্ত শহরে বসে থাকি, চারপাশে মানুষের কোলাহল আর কাজের চাপ। হঠাৎ করেই ফেসবুকে একটি পোস্টে কমেন্ট করতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে প্রায় প্রত্যেকেই স্ব স্ব স্হান থেকে সমস্যার সৃষ্টি করেন।

লিখেছেন সোনাগাজী, ৩০ শে মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৮



শেখ সাহেব পশ্চিম পাকিস্তান থেকে এসে ৩য় দিন ( ১/১২/১৯৭২) দেশের প্রধানমন্ত্রীর পদটা তাজউদ্দিন সাহেব থেকে নিয়ে নিয়েছিলেন; ৯ মাস জেলের পর, উনার দরকার ছিলো কিছুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক্যারিয়ার কথন: ফ্রিল্যান্সিং, আউটসোর্সিং এবং সর্তকতা।

লিখেছেন জাদিদ, ৩০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:২৪

গত কয়েক বছরে বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সিং, পেশা হিসাবে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সম্মানজনক সামাজিক স্বীকৃতি পাওয়ায় অনেকেই এই পেশায় যুক্ত হয়ে আগ্রহ প্রকাশ করছেন। এছাড়া বাংলাদেশে কর্মক্ষেত্রে একজন মানুষকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজ মনটা কেমন যেন অনেক কিছু চিন্তা করছে।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ৩০ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



সকালের মৃদু আলোয় মোড়ানো একটি মনোরম দৃশ্য ধরা পড়েছে এই ছবিতে। এটি একটি খোলা জায়গা, যেখানে সবুজের সমারোহ এবং প্রকৃতির ছোঁয়া স্পষ্ট। ছবির বাম দিকে গাছের সারি এবং ডান... ...বাকিটুকু পড়ুন

×