somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইসলাম সম্পর্কে ব্লগারদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ মন্তব্যে নিন্দার ঝড়

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে চলমান শাহবাগ আন্দোলনে সম্পৃক্ত রাজীবসহ কিছু নাস্তিক ব্লগার মানবতার মুক্তির দূত বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.), ইসলাম
এবং ইবাদত-বন্দেগী সম্পর্কে যে কুরুচিপূর্ণ ও অভব্য মন্তব্য করেছে তার বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠতে শুরু করেছেন বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। তারা বলছেন, ইসলাম অবমাননার এ জঘন্য ঘটনাকে জামায়াতে ইসলামী যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত তাদের নেতাদের পক্ষে জনমত সৃষ্টির কাজে ব্যবহার করতে পারে।
বিকৃত মানসিকতার এ সব ব্লগারের ইসলাম বিদ্বেষী লেখা বাংলাদেশের মুসলমানদের হৃদয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছে ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক ইনকিলাব। দৈনিকটি বলেছে, এ আগুনের ক্ষোভ ক্রমেই ধূমায়িত হচ্ছে। এ ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে নবী (সা.) প্রিয় বিভিন্ন সংগঠন সমাবেশ, মিছিল, মতবিনিময় এবং সংবাদ সম্মেলনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি শুরু করেছে।
কোন কোন সংগঠন আলাদা আলাদা কর্মসূচি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। রাসূল (সা.), ইসলাম ও মুসলমানদের ইবাদত-বন্দেগী নিয়ে এ সব জঘন্য মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করে ব্লগগুলো বন্ধ করে দেয়া এবং কটূক্তিকারী নাস্তিকদের বিচার করার জন্য সরকারের কাছে দাবী করে রাসূল (সা.) ও ইসলাম প্রিয় বহু দল ও সংগঠনের নেতৃবৃন্দ প্রতিবাদ বিবৃতি দিয়ে যাচ্ছেন। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সরকার এসব বিষয়ে শক্ত পদক্ষেপ না নিলে কঠোর কর্মসূচি দিয়ে নাস্তিকদের প্রতিহত করা হবে।
বেফাক
ব্লগসহ সারা দেশে চলমান ইসলাম বিরোধী পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ, সব ইসলাম বিরোধী কর্মকাণ্ড বন্ধসহ সরকারের প্রতি চার দফা দাবি পেশ করেছে বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের নেতারা। গতকাল (মঙ্গলবার) বিকেলে মাতুয়াইলের শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে বেফাক সহ-সভাপতি আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমীর সভাপতিত্বে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের এক জরুরি বৈঠকে এ দাবি পেশ করা হয়।
বৈঠকে বলা হয়, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে ইসলাম অবমাননাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আল্লাহ, রাসূল (সা.), কুরআন, দাড়ি, টুপি, পর্দা, হিজাব প্রভৃতি ইসলামী প্রতীক অবমাননার মাধ্যমে বিদ্যমান সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করে দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির অপচেষ্টাকারীদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। প্রকাশ্য রাজপথে দাড়ি টুপিধারী পথচারীকে অপমান করার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করে অবিলম্বে শাস্তি দিতে হবে এবং বাংলাদেশের যে কোন জায়গায় তৌহিদী জনতার গণজমায়েত, সভাসমাবেশ, মিছিল মিটিং ও গণঅবস্থানের গণতান্ত্রিক অধিকার দিতে হবে।

পীর সাহেব মশুরীখোলা দরবার শরীফ
সৃষ্টির মূল উৎস সারা বিশ্বের সব ধর্ম, বর্ণের মানুষের কাছে নন্দিত ব্যক্তিত্ব রাসূলে পাক (সা.)-এর সুমহান চরিত্র নিয়ে ব্লগার রাজিব পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে জঘন্যতম নিন্দনীয় কটূক্তি করার মাধ্যমে কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ে ক্ষোভের দাবানল জ্বালিয়ে দিয়েছে। এর জন্য নাস্তিক ইসলাম বিদ্বেষীদেরকে চরম মূল্য দিতে হবে।

এদের অবস্থা ইতিহাসের আঁস্তাকুড়ে নিক্ষেপ, নবীদ্রোহী আবু জাহেল ও আবু লাহাবদের মতই হবে। মশুরীখোলা দরবার শরীফের পীর সাহেব আল্লামা শাহ মুহাম্মদ আহসানুজ্জামান (মা. জি. আ.) মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, নবীদ্রোহীদের প্রতি ঘৃণা প্রদর্শন ও এদের ধ্বংস কামনা করা ফরজ। তাই প্রত্যেক মুসলমানদের ঈমানী দায়িত্ব হচ্ছে এ সব নবীদ্রোহীদের রাষ্ট্রির, সামাজিক ও পারিবারিকভাবে প্রত্যাখ্যান করে ঈমান তাজা রাখা

কল্যাণ পার্টি
বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বলেছেন, সাম্প্রতিককালে কোনো কোনো মহল থেকে বা কোনো কোনো ব্যক্তি কর্তৃক মহানবী (সা.) এবং দ্বীন ইসলামের প্রতি ভয়ংকর মাত্রায় কটূক্তি করা হয়েছে। তিনি এর তীব্র প্রতিবাদ জানান। তিনি বলেন, যারা প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে এ সব কাজে জড়িত অথবা পৃষ্ঠপোষকতা করছেন তাদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, এরূপ ধৃষ্টতাপূর্ণ কর্ম থেকে বিরত থাকার, কারণ, বাংলাদেশের জনগণ ধর্মপরায়ণ এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিশ্বাস করে।

গুটিকয়েক নাস্তিক এদেশের মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে দেশের অভ্যন্তরে বিশৃংখলা সৃষ্টিতে লিপ্ত। তাদের প্রতি আমার আহ্বান, প্রগতির নামে মানুষের ধর্ম বিশ্বাসের উপর আঘাত করবেন না, এর প্রতিক্রিয়ায় সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে।

গণ অধিকার রক্ষা কমিটি
গণ অধিকার রক্ষা কমিটির সদস্য অধ্যাপক ড. রাইস উদ্দিন, জাহাঙ্গিরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এস এ ওয়াদুদ ও শিল্পপতি এমএ আউয়াল বলেছেন, রাসূল (সা.) প্রত্যেক মুমিনের জানের চেয়েও অধিক প্রিয়, তাই উনার প্রতি কটুক্তি জীবন থাকতে কোন প্রকৃত মুসলমান সহ্য করতে পারে না।

তারা বলেন, যৌক্তিক কারণে শাহবাগ আন্দোলনের সাথে আমাদের সংহতি, কিন্তু গুটি কয়েক নাস্তিক ব্লগার জামায়াতকে প্রত্যাখ্যানের নামে ইসলাম ও নবীজির (সা.)-এর প্রতি কটূক্তি এবং সব ইসলামী দল নিষিদ্ধের যে দাবি করছে তা কখনই মেনে নেয়া যায় না। তাদের এই ধরনের কর্মকাণ্ড তরুণ প্রজন্মের চলমান আন্দোলনকে বিতর্কিত করবে।

তাই চলমান আন্দোলনকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে হলে এদেশের গণমানুষের সমর্থন দরকার। প্রজন্ম আন্দোলন জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি তুলে গণসমর্থন পেয়েছে, কিন্তু রাজিবসহ কিছু ব্লগার রাসূল (সা.) ও ইসলাম নিয়ে তাদের ব্লগে যে সব মন্তব্য করছে তা গণসমর্থনের বিরুদ্ধে যাচ্ছে।

ব্লগারদের এ অশুভ প্রবণতা অব্যাহত থাকলে এ আন্দোলন গণসমর্থন থাকবে না। আর তখন এ আন্দোলনের ফলাফল শূন্য হয়ে যেতে পারে। তাই আন্দোলনের নেতৃত্বকে ইসলামও রাসূল (স.) সম্পর্কে কোন প্রকার মন্তব্য থেকে এবং গণভাবে ইসলামী দল নিষিদ্ধের দাবী থেকে সরে আসতে হবে।


ইত্তেফাকুল মাদারিসিল
মোহাম্মাদপুরস্থ ইত্তেফাকুল মাদারিসিল কওমিয়ার উদ্যোগে মাওলানা আবুল কালাম সাহেবের সভাপতিত্বে এক প্রতিবাদ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনায় নেতৃবৃন্দ বলেন, সম্প্রতি খুন হওয়া নাস্তিক ব্লগার রাজীবসহ বিভিন্ন মহল ও ব্লগে ইসলাম ও মহানবী (সা.) সম্পর্কে শিষ্টাচার বহির্ভূত, কুরুচিপূর্ণ ও অবমাননাকর নির্লজ্জ মন্তব্য করে ইসলাম, মহানবী (সা.) ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে যে ধৃষ্ঠতা প্রদর্শন করছে, এর মাধ্যমে তারা বাংলাদেশসহ সমগ্র বিশ্ব মুসলমানের অন্তরে শুধু আঘাত করেই ক্ষান্ত হয়নি বরং সবার অন্তরে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে। এ পরিস্থিতিতে একজন ক্ষুদ্র ঈমানদারও চুপ থাকতে পারে না।
তাই সরকার-বিরোধীদল, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, অফিস-আদালত, পাড়া-মহল্লাসহ প্রতিটি সেক্টরে মুসলিম পরিচয় দানকারী প্রত্যেককে ঐকবদ্ধভাবে অবমাননাকারীদের প্রতিহত করার জন্য উদাত্ত আহবান জানান নেতৃবৃন্দ। সভায় অন্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন- মাও: মাহফুজুল হক সাহেব, মাও: ফারুক আহমাদ সাহেব, মাও: ত্বালহা সাহেব, মাও: যোবায়ের সাহেব ও মাও: জালালুদ্দীন সাহেব।


বাতিল প্রতিরোধ কমিটি
বাতিল প্রতিরোধ পরিষদের সভাপতি হাজী জালাল উদ্দীন বকুল এক বিবৃতিতে গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, হযরত মুহাম্মদ (সা.)কে যে কুরুচিপূর্ণ লেখা লিখে বাংলাদেশের ৯০ ভাগ মুসলমানের হৃদয়ে চরম আঘাত করেছে ব্লগার রাজীব।

সে আমাদের প্রাণের স্পন্দন মুহাম্মদ (সা.)কে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ ও অমার্জিত লেখা লিখেছে বিশ্বের কোন নাস্তিক, বেঈমানও এতদিন সে সাহস পায়নি। এর মাধ্যমে রাজিব মুসলমানদের হৃদয়ে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের ঈমানী আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে। এসব নাস্তিক-মুরতাদকে প্রতিহত না করা পর্যন্ত এই প্রতিবাদের আগুন নিভবে না। গণভাবে ইসলামী রাজনীতি নিষিদ্ধের আওয়ামী ও বামদের খায়েশ ঈমানদার জনতার দেশে পূরণ হবে না।


আনযুমানে গাউছুল আযম

আনযুমানে গাউছুল আযমের মুখপাত্র মোহাম্মদ গোলাম জিলানী বলেছেন, তথ্য-প্রযুক্তির বিকাশ ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার নামে রাসূল (সা.) সম্পর্কে কটূক্তি করে এদেশের কোটি কোটি ধর্মপ্রিয় মানুষের অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার অধিকার কারো নেই এবং মেনেও নেয়া যায় না। মত প্রকাশের স্বাধীনতার নামে মুরতাদ রাজীব সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ আদর্শের মূর্ত প্রতীক রাসূল (সা.) এর চরিত্র নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে বিশ্বের ইতিহাসে জঘণ্যতম অধ্যায় রচনা করেছে।

রাজীব তার জঘণ্য মন্তব্যের মাধ্যমে দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার অপকর্মটি করেছে। আগামীতে আর কেউ যেন এই ঘৃণিত কাজ করতে না পারে সে জন্য তরুণ প্রজন্মের আন্দোলনের নেতৃত্বকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। অন্যথায় চলমান আন্দোলন বাধাগ্রস্ত হবে।

নেতৃবৃন্দ বলেন, রাসূল (সা.)এর অবমাননার জন্য মৃত্যুদণ্ডের বিধান করে সংসদে আইন পাস করা মুসলিম দেশের সরকার ও সংসদ সদস্যদের ঈমানী দায়িত্ব। নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, রাজীবের কটাক্ষের কারণে জামাত-শিবির ফায়দা হাসিল করার সুযোগ পেয়ে যাবে। সুতরাং সতর্ক না হলে আন্দোলন নিরর্থক হয়ে যেতে পারে।

বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে চলমান শাহবাগ আন্দোলনে সম্পৃক্ত রাজীবসহ কিছু নাস্তিক ব্লগার মানবতার মুক্তির দূত বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.), ইসলাম
এবং ইবাদত-বন্দেগী সম্পর্কে যে কুরুচিপূর্ণ ও অভব্য মন্তব্য করেছে তার বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠতে শুরু করেছেন বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। তারা বলছেন, ইসলাম অবমাননার এ জঘন্য ঘটনাকে জামায়াতে ইসলামী যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত তাদের নেতাদের পক্ষে জনমত সৃষ্টির কাজে ব্যবহার করতে পারে।
বিকৃত মানসিকতার এ সব ব্লগারের ইসলাম বিদ্বেষী লেখা বাংলাদেশের মুসলমানদের হৃদয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছে ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক ইনকিলাব। দৈনিকটি বলেছে, এ আগুনের ক্ষোভ ক্রমেই ধূমায়িত হচ্ছে। এ ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে নবী (সা.) প্রিয় বিভিন্ন সংগঠন সমাবেশ, মিছিল, মতবিনিময় এবং সংবাদ সম্মেলনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি শুরু করেছে।
কোন কোন সংগঠন আলাদা আলাদা কর্মসূচি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। রাসূল (সা.), ইসলাম ও মুসলমানদের ইবাদত-বন্দেগী নিয়ে এ সব জঘন্য মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করে ব্লগগুলো বন্ধ করে দেয়া এবং কটূক্তিকারী নাস্তিকদের বিচার করার জন্য সরকারের কাছে দাবী করে রাসূল (সা.) ও ইসলাম প্রিয় বহু দল ও সংগঠনের নেতৃবৃন্দ প্রতিবাদ বিবৃতি দিয়ে যাচ্ছেন। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সরকার এসব বিষয়ে শক্ত পদক্ষেপ না নিলে কঠোর কর্মসূচি দিয়ে নাস্তিকদের প্রতিহত করা হবে।
বেফাক
ব্লগসহ সারা দেশে চলমান ইসলাম বিরোধী পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ, সব ইসলাম বিরোধী কর্মকাণ্ড বন্ধসহ সরকারের প্রতি চার দফা দাবি পেশ করেছে বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের নেতারা। গতকাল (মঙ্গলবার) বিকেলে মাতুয়াইলের শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে বেফাক সহ-সভাপতি আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমীর সভাপতিত্বে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের এক জরুরি বৈঠকে এ দাবি পেশ করা হয়।
বৈঠকে বলা হয়, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে ইসলাম অবমাননাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আল্লাহ, রাসূল (সা.), কুরআন, দাড়ি, টুপি, পর্দা, হিজাব প্রভৃতি ইসলামী প্রতীক অবমাননার মাধ্যমে বিদ্যমান সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করে দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির অপচেষ্টাকারীদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। প্রকাশ্য রাজপথে দাড়ি টুপিধারী পথচারীকে অপমান করার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করে অবিলম্বে শাস্তি দিতে হবে এবং বাংলাদেশের যে কোন জায়গায় তৌহিদী জনতার গণজমায়েত, সভাসমাবেশ, মিছিল মিটিং ও গণঅবস্থানের গণতান্ত্রিক অধিকার দিতে হবে।

পীর সাহেব মশুরীখোলা দরবার শরীফ
সৃষ্টির মূল উৎস সারা বিশ্বের সব ধর্ম, বর্ণের মানুষের কাছে নন্দিত ব্যক্তিত্ব রাসূলে পাক (সা.)-এর সুমহান চরিত্র নিয়ে ব্লগার রাজিব পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে জঘন্যতম নিন্দনীয় কটূক্তি করার মাধ্যমে কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ে ক্ষোভের দাবানল জ্বালিয়ে দিয়েছে। এর জন্য নাস্তিক ইসলাম বিদ্বেষীদেরকে চরম মূল্য দিতে হবে।

এদের অবস্থা ইতিহাসের আঁস্তাকুড়ে নিক্ষেপ, নবীদ্রোহী আবু জাহেল ও আবু লাহাবদের মতই হবে। মশুরীখোলা দরবার শরীফের পীর সাহেব আল্লামা শাহ মুহাম্মদ আহসানুজ্জামান (মা. জি. আ.) মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, নবীদ্রোহীদের প্রতি ঘৃণা প্রদর্শন ও এদের ধ্বংস কামনা করা ফরজ। তাই প্রত্যেক মুসলমানদের ঈমানী দায়িত্ব হচ্ছে এ সব নবীদ্রোহীদের রাষ্ট্রির, সামাজিক ও পারিবারিকভাবে প্রত্যাখ্যান করে ঈমান তাজা রাখা

কল্যাণ পার্টি
বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বলেছেন, সাম্প্রতিককালে কোনো কোনো মহল থেকে বা কোনো কোনো ব্যক্তি কর্তৃক মহানবী (সা.) এবং দ্বীন ইসলামের প্রতি ভয়ংকর মাত্রায় কটূক্তি করা হয়েছে। তিনি এর তীব্র প্রতিবাদ জানান। তিনি বলেন, যারা প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে এ সব কাজে জড়িত অথবা পৃষ্ঠপোষকতা করছেন তাদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, এরূপ ধৃষ্টতাপূর্ণ কর্ম থেকে বিরত থাকার, কারণ, বাংলাদেশের জনগণ ধর্মপরায়ণ এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিশ্বাস করে।

গুটিকয়েক নাস্তিক এদেশের মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে দেশের অভ্যন্তরে বিশৃংখলা সৃষ্টিতে লিপ্ত। তাদের প্রতি আমার আহ্বান, প্রগতির নামে মানুষের ধর্ম বিশ্বাসের উপর আঘাত করবেন না, এর প্রতিক্রিয়ায় সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে।

গণ অধিকার রক্ষা কমিটি
গণ অধিকার রক্ষা কমিটির সদস্য অধ্যাপক ড. রাইস উদ্দিন, জাহাঙ্গিরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এস এ ওয়াদুদ ও শিল্পপতি এমএ আউয়াল বলেছেন, রাসূল (সা.) প্রত্যেক মুমিনের জানের চেয়েও অধিক প্রিয়, তাই উনার প্রতি কটুক্তি জীবন থাকতে কোন প্রকৃত মুসলমান সহ্য করতে পারে না।

তারা বলেন, যৌক্তিক কারণে শাহবাগ আন্দোলনের সাথে আমাদের সংহতি, কিন্তু গুটি কয়েক নাস্তিক ব্লগার জামায়াতকে প্রত্যাখ্যানের নামে ইসলাম ও নবীজির (সা.)-এর প্রতি কটূক্তি এবং সব ইসলামী দল নিষিদ্ধের যে দাবি করছে তা কখনই মেনে নেয়া যায় না। তাদের এই ধরনের কর্মকাণ্ড তরুণ প্রজন্মের চলমান আন্দোলনকে বিতর্কিত করবে।

তাই চলমান আন্দোলনকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে হলে এদেশের গণমানুষের সমর্থন দরকার। প্রজন্ম আন্দোলন জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি তুলে গণসমর্থন পেয়েছে, কিন্তু রাজিবসহ কিছু ব্লগার রাসূল (সা.) ও ইসলাম নিয়ে তাদের ব্লগে যে সব মন্তব্য করছে তা গণসমর্থনের বিরুদ্ধে যাচ্ছে।

ব্লগারদের এ অশুভ প্রবণতা অব্যাহত থাকলে এ আন্দোলন গণসমর্থন থাকবে না। আর তখন এ আন্দোলনের ফলাফল শূন্য হয়ে যেতে পারে। তাই আন্দোলনের নেতৃত্বকে ইসলামও রাসূল (স.) সম্পর্কে কোন প্রকার মন্তব্য থেকে এবং গণভাবে ইসলামী দল নিষিদ্ধের দাবী থেকে সরে আসতে হবে।


ইত্তেফাকুল মাদারিসিল
মোহাম্মাদপুরস্থ ইত্তেফাকুল মাদারিসিল কওমিয়ার উদ্যোগে মাওলানা আবুল কালাম সাহেবের সভাপতিত্বে এক প্রতিবাদ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনায় নেতৃবৃন্দ বলেন, সম্প্রতি খুন হওয়া নাস্তিক ব্লগার রাজীবসহ বিভিন্ন মহল ও ব্লগে ইসলাম ও মহানবী (সা.) সম্পর্কে শিষ্টাচার বহির্ভূত, কুরুচিপূর্ণ ও অবমাননাকর নির্লজ্জ মন্তব্য করে ইসলাম, মহানবী (সা.) ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে যে ধৃষ্ঠতা প্রদর্শন করছে, এর মাধ্যমে তারা বাংলাদেশসহ সমগ্র বিশ্ব মুসলমানের অন্তরে শুধু আঘাত করেই ক্ষান্ত হয়নি বরং সবার অন্তরে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে। এ পরিস্থিতিতে একজন ক্ষুদ্র ঈমানদারও চুপ থাকতে পারে না।
তাই সরকার-বিরোধীদল, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, অফিস-আদালত, পাড়া-মহল্লাসহ প্রতিটি সেক্টরে মুসলিম পরিচয় দানকারী প্রত্যেককে ঐকবদ্ধভাবে অবমাননাকারীদের প্রতিহত করার জন্য উদাত্ত আহবান জানান নেতৃবৃন্দ। সভায় অন্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন- মাও: মাহফুজুল হক সাহেব, মাও: ফারুক আহমাদ সাহেব, মাও: ত্বালহা সাহেব, মাও: যোবায়ের সাহেব ও মাও: জালালুদ্দীন সাহেব।


বাতিল প্রতিরোধ কমিটি
বাতিল প্রতিরোধ পরিষদের সভাপতি হাজী জালাল উদ্দীন বকুল এক বিবৃতিতে গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, হযরত মুহাম্মদ (সা.)কে যে কুরুচিপূর্ণ লেখা লিখে বাংলাদেশের ৯০ ভাগ মুসলমানের হৃদয়ে চরম আঘাত করেছে ব্লগার রাজীব।

সে আমাদের প্রাণের স্পন্দন মুহাম্মদ (সা.)কে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ ও অমার্জিত লেখা লিখেছে বিশ্বের কোন নাস্তিক, বেঈমানও এতদিন সে সাহস পায়নি। এর মাধ্যমে রাজিব মুসলমানদের হৃদয়ে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের ঈমানী আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে। এসব নাস্তিক-মুরতাদকে প্রতিহত না করা পর্যন্ত এই প্রতিবাদের আগুন নিভবে না। গণভাবে ইসলামী রাজনীতি নিষিদ্ধের আওয়ামী ও বামদের খায়েশ ঈমানদার জনতার দেশে পূরণ হবে না।


আনযুমানে গাউছুল আযম

আনযুমানে গাউছুল আযমের মুখপাত্র মোহাম্মদ গোলাম জিলানী বলেছেন, তথ্য-প্রযুক্তির বিকাশ ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার নামে রাসূল (সা.) সম্পর্কে কটূক্তি করে এদেশের কোটি কোটি ধর্মপ্রিয় মানুষের অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার অধিকার কারো নেই এবং মেনেও নেয়া যায় না। মত প্রকাশের স্বাধীনতার নামে মুরতাদ রাজীব সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ আদর্শের মূর্ত প্রতীক রাসূল (সা.) এর চরিত্র নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে বিশ্বের ইতিহাসে জঘণ্যতম অধ্যায় রচনা করেছে।

রাজীব তার জঘণ্য মন্তব্যের মাধ্যমে দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার অপকর্মটি করেছে। আগামীতে আর কেউ যেন এই ঘৃণিত কাজ করতে না পারে সে জন্য তরুণ প্রজন্মের আন্দোলনের নেতৃত্বকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। অন্যথায় চলমান আন্দোলন বাধাগ্রস্ত হবে।

নেতৃবৃন্দ বলেন, রাসূল (সা.)এর অবমাননার জন্য মৃত্যুদণ্ডের বিধান করে সংসদে আইন পাস করা মুসলিম দেশের সরকার ও সংসদ সদস্যদের ঈমানী দায়িত্ব। নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, রাজীবের কটাক্ষের কারণে জামাত-শিবির ফায়দা হাসিল করার সুযোগ পেয়ে যাবে। সুতরাং সতর্ক না হলে আন্দোলন নিরর্থক হয়ে যেতে পারে।
১১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কৃষ্ণচূড়া আড্ডার কথা

লিখেছেন নীলসাধু, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:০২



গতকাল পূর্ব নির্ধারিত কৃষ্ণচূড়ায় আড্ডায় মিলিত হয়েছিলাম আমরা।
বছরের একটি দিন আমরা গ্রীষ্মের এই ফুলটির প্রতি ভালোবাসা জানিয়ে প্রকৃতির সাথে থাকি। শিশুদের নিয়ে গাছগাছালি দেখা, ফুল লতা পাতা চেনাসহ-... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×