সংযুক্ত আরব আমিরাত একটি ধনী রাষ্ট্র। দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্কও ভালো। এবং দেশে প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণে শেষ পর্যš- সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) অগ্রাধিকার পাচ্ছে বলে জানা গেছে। সম্প্রতি দেশটির আš-র্জাতিক বাণিজ্যবিষয়ক মন্ত্রী শেখ রুবনা বিনতে খালেদ ঢাকা সফরে এসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বিভিন্ন উচ্চপর্যায়ে আনুষ্ঠানিক বৈঠকে মিলিত হন। এ প্রেক্ষাপটে কক্সবাজারের সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্রবন্দর ¯’াপনে আš-ঃসরকারের প্র¯-াব পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও পর্যালোচনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ১৩ ফেব্র“য়ারি মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। গভীর সমুদ্রবন্দর সম্পর্কে প্যাসিফিক কনসালটেন্ট ইন্টারন্যাশনালের স্টাডি রিপোর্টের আলোকে এ কমিটি প্রয়োজনীয় সুপারিশ করবে। এর পাশাপাশি তারা চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরের উন্নয়নসহ রাজধানীতে ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপোর (আইসিডি) উন্নয়নেও প্রবল আগ্রহী। এ বিষয়ে দ্বিমতের অবকাশ নেই যে, ট্রানজিট-ট্রান্সশিপমেন্টের আওতায় ভারত, নেপাল ও ভুটানকে বিদ্যমান দুটি বন্দর ব্যবহারের সুবিধা দেয়ার ব্যাপারে চিš-াভাবনা করছে বাংলাদেশ সরকার। তবে সড়ক ও রেল যোগাযোগসহ বন্দরের বর্তমান অবকাঠামো অপর্যাপ্ত। সেক্ষেত্রে ইউএই’র আগ্রহ ও বিনিয়োগকে অবশ্যই স্বাগত জানানো যেতে পারে। কক্সবাজারের সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। চট্টগ্রাম বন্দরের অবকাঠামোগত অসুবিধার কারণে সেখানে বড় জাহাজ ভিড়তে পারে না। সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মিত হলে দেশ-বিদেশের বড় বড় জাহাজ সেখানে ভিড়তে পারবে সহজেই। এতে সময় বাঁচার পাশাপাশি আমদানি-রফতানি ব্যয়ও কমবে। তদুপরি সার্কভুক্ত দেশগুলো ছাড়াও চীন, মিয়ানমার ও অন্যান্য দেশ এ বন্দর ব্যবহার করতে পারবে। এসব দিক বিবেচনায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় চীনের ইয়াংসান গভীর সমুদ্রবন্দরের আদলে ৬০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে তিন ধাপে ২০৫৫ সাল নাগাদ গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের বিষয়টি চূড়াš- করেছে। এর জন্য অনুসন্ধান চলছে অভিজ্ঞতাসমৃদ্ধ বিনিয়োগকারীর। চীন প্রথম দিকে এ বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করলেও পরে ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় ঝুলে যায় প্র¯-াবটি। সর্বশেষ ইউএই সরকার সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্রবন্দর ¯’াপনের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে প্রতিনিধি দল পাঠানোর প্র¯-াব জানায় গত বছরের নভেম্বরে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ইতিবাচক ইঙ্গিতের পরিপ্রেক্ষিতে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ প্র¯-াব পাঠিয়েছিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে। সেখানে জানতে চাওয়া হয়, এসব খাতে ইউএই সরকার ঠিক কী ধরনের বিনিয়োগে আগ্রহী এর পাশাপাশি ভারত, চীন ও সিঙ্গাপুরকেও এ খাতে বিনিয়োগে আকৃষ্ট করার চেষ্টা চলছে বলে জানা যায়।
আরব আমিরাতে অসংখ্য বাংলাদেশী সে দেশের অর্থনীতিতে শ্রম দিয়ে ফলপ্রসূ অবদান রাখছে। এ অব¯’ায় সে দেশের সরকার সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণে আগ্রহী হলে বাংলাদেশ সরকারের তাকে স্বাগত জানানোই উচিত। এতে অš-ত আš-র্জাতিক রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে তেমন কোন কথা উঠবে না। ইউএই’র পক্ষ থেকে চূড়াš- সাড়া পেলে সরকারের উচিত হবে প্র¯-াবটি লুফে নেয়া। তবে বিপুল বিনিয়োগের বিষয়টি যেন অবশ্যই যথাসম্ভব স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার সঙ্গে সম্পন্ন করা হয়। সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের ক্ষেত্রে আরও একটি ‘পদ্মা সেতু’র পুনরাবৃত্তি কাম্য নয় কোন অব¯’াতেই।