somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

৫০ কমান্ডো ও বিপন্ন স্বাধীনতা!

৩০ শে ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ১২:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রাজনীতির রান্নাঘরে নতুন একটা ইস্যু রান্না হচ্ছে যা নিয়ে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া ইতিমধ্যে হৈ চৈ শুরু করে দিয়েছে। বলা হচ্ছে ভারত তার দূতাবাস রক্ষার্থে নিজস্ব কমান্ডো বাহিনী আনছে। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে অতি দেশপ্রেমী একটা গুষ্টি আশংকা করছে প্রতিবেশী দেশের ৫০ কমান্ডো আগমনের ফলে আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব হুমকির মূখে পরবে। এ ধরনের প্রচারনা সাধারণ মানুষের মনে ইতিমধ্যে জন্ম নেয়া এন্টি-ভারত সেন্টিমেন্ট কিছুটা ঝালাই করতে সক্ষম হলেও এর স্থায়িত্ব কতটা দীর্ঘ হবে এ নিয়ে সন্দেহের অবকাশ আছে। প্রথমত, দূতাবাস একটা দেশের নিজস্ব সম্পত্তি এবং এ রক্ষার দায়িত্ব শুধু হোষ্ট দেশেরই নয়, বরং যার সম্পত্তি তার নিজেরও। কিছুদিন আগে বাংলাদেশের মাটিতে পাকিস্তানী একটা চক্রকে বন্দী করা হয়েছে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস উড়িয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে। একথা সরকারী ভাবেই স্বীকার করা হয়, ঢাকাস্থ ভারতীয় দূতাবাসের কার্য্যালয়গুলোতে সন্ত্রাষী হামলার হুমকি আসছে প্রতিনিয়ত। একদিকে এ হুমিক দিচ্ছে দেশী-বিদেশী মৌলবাদী দলগুলো, পাশাপাশি এতে অংশ নিচ্ছে ভারতের বিভিন্ন বিছিন্নতাবাদী দল এবং গুষ্টি। বহু বছর ধরেই ভারত অভিযোগ করে আসছে বাংলাদেশের মাটিতে সে দেশের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের পাকিস্তানী সহায়তায় ট্রেনিং দেয়া হচ্ছে। বাংলাদেশের সরকারগুলো বরাবরই এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিল। কিন্তূ ভারতবান্ধব বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ আসামের বিচ্ছিন্নতাবাদী দল উলফার মূল নেত্রীত্বকে বাংলাদেশে গ্রেফতার পূর্বক ভারতীয়দের হাতে তুলে দিয়ে এটাই প্রমান করেছে এতদিন এ সম্পর্কে বাংলাদেশ যা বলে আসছিল তা ছিল নিছক মিথ্যা। উলফা নেতা রাজখোয়া এবং পরেশ বড়ুয়া সহ অনেকেই বছরের পর বছর ধরে বাংলাদেশে বাস করছিল এবং ৪ দলীয় জোট সরকারের অনেক নেতা-নেত্রীর প্রত্যক্ষ মদদে এ দেশে ব্যবসা বানিজ্য করে আসামের সসস্ত্র সন্ত্রাষে মদদ যোগাচ্ছিল। চট্টগ্রামে আটক ১০ ট্রাক অস্ত্র এবং এর শেষ গন্তব্যস্থল নিয়ে পর্য্যালোচনা করলে একটা জিনিষ পরিস্কার হবে আমাদের রাজনৈতিক নেত্রীবৃন্দের অনেকেই সড়াসাড়ি ভারত বিরোধী সন্ত্রাষী তৎপরতার সাথে জড়িত। এমন একটা রাজনৈতিক বাস্তবতার প্রেক্ষপটে ভারত কেন আমাদের সরকার এবং এর আইন-শৃংখলা বাহিনীকে বিশ্বাষ করে তার দূতাবাসের নিরাপত্তা নিয়ে নিশ্চিত হবে তার কোন কারণ দেখছিনা। ভারতীয়রা এতটা বোকা নয় যে আওয়ামী লীগের চীরস্থায়ী ক্ষমতায় বিশ্বাষ করবে, সংগত কারণেই তারা সূযোগ নিচ্ছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতার। ৫০ কমান্ডো আগমনের সত্যতা নিয়ে হৈ চৈ করার আগে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলির উচিৎ হবে ভারত সর্ম্পকে তাদের অবস্থান পরিস্কার করা। এন্টি-ভারত প্রপাগান্ডা আমাদের রাজনৈতিক সাংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ, এ নিয়ে ভারত যে খুব একটা উদ্বিগ্ন তা মনে হয়না, কিন্তূ সরকারী মদদে রাজখোয়া এবং পরেশ বড়ুয়াদের মত ওয়ান্টেড সন্ত্রাষীদের যখন জামাই আদরে ১০ট্রাক অস্ত্র দিয়ে আপ্যায়ন করা হয় ভারতের চিন্তিত হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে। যে কোন দেশ হলেও তাই করত। ভারতের সাথে খোচাখুচিকে যারা আওয়ামী-বিএনপির খোচাখুচির সমপর্য্যায়ে দেখতে ভালবাসেন তাদের জন্যে দুঃসংবাদ হচ্ছে, ভারত আর আগের ভারত নেই। প্রতিবেশী এই দেশটার আষ্টেপৃষ্টে আমাদের ভাগ্যচাকা বাধা পরে আছে, আগুন নিয়ে খেলতে গেলে নিজদেরই পুড়ে মরার সম্ভাবনা থাকবে বেশী। অন্যদিকে ভারত যদি সত্যি সত্যি বাংলাদেশে তার দূতাবাস নিরাপত্তার জন্যে কমান্ডো নিয়ে আসে তা হবে আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রতি মারাত্মক চপোটাঘাত এবং আর্ন্তজাতিক পর্য্যায়ে এর গ্রহনযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে বাধ্য।

বিদেশী ৫০ কমান্ডো আগমনের ফলে আমাদের স্বাধীনতা হুমকির সন্মখিন হবে এই ভাংগা রেকর্ড না বাজিয়ে আমাদের উচিৎ হবে যেসব বাস্তবতার কারণে কমান্ডো বাহিনীর আগমন ঘটতে পারে তা নিয়ে মাথা ঘামানো। একটা জিনিষ ভূলে গেলে চলবেনা বিশ্ব আমাদের চোখে চোখে রাখছে, ভারত সহ যেকোন দূতাবাসে অপ্রীতিকর কিছু ঘটে গেলে তা আমাদের জন্যে মারাত্মক ফল বয়ে আনতে বাধ্য।
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

নারী একা কেন হবে চরিত্রহীন।পুরুষ তুমি কেন নিবি না এই বোজার ঋন।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১২:৫৪



আমাদের সমাজে সারাজীবন ধরে মেয়েদেরকেই কেনও ভালো মেয়ে হিসাবে প্রমান করতে হবে! মেয়ে বোলে কি ? নাকি মেয়েরা এই সমাজে অন্য কোন গ্রহ থেকে ভাড়া এসেছে । সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

=সকল বিষাদ পিছনে রেখে হাঁটো পথ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৮



©কাজী ফাতেমা ছবি

বিতৃষ্ণায় যদি মন ছেয়ে যায় তোমার কখনো
অথবা রোদ্দুর পুড়া সময়ের আক্রমণে তুমি নাজেহাল
বিষাদ মনে পুষো কখনো অথবা,
বাস্তবতার পেরেশানী মাথায় নিয়ে কখনো পথ চলো,
কিংবা বিরহ ব্যথায় কাতর তুমি, চুপসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×