somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গ্রেট নিউজ!

২৭ শে ডিসেম্বর, ২০০৯ সকাল ১১:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সকাল দশটা বেজে পঞ্চাশ মিনিট। আমি, শিহান, জুয়েল, মামুন, আরাফাত, রকিব পাশাপাশি বেঞ্চে বসে ক্লাস করছি। ক্লাসটা হচ্ছিল একাউন্টিং ইনফরমেশন এন্ড সিস্টেম এর। আর ক্লাসটা নিচ্ছিলেন আমাদের স্যার ড.আবু সালেহ । আমরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় মার্কেটিং বিভাগের ২য় সেমিষ্টারের ছাত্র। আমাদের আবু সালেহ স্যার অষ্ট্রেলিয়া থেকে পিএইচডি ডিগ্রী নিয়েছেন। আমরা স্যারের কয়েকটা ক্লাস করেছি মাত্র। অন্যন্য দিনের মত স্যার আজও ক্লাস নিচ্ছিলেন। ক্লাসের এক ফাকে স্যার বললেন তোমাদের একটা গ্রেট নিউজ আছে। আমরা বললাম স্যার সেটা কী। স্যার বললেন আমি অষ্ট্রেলিয়ার একটা ভার্সিটি থেকে অফার পেয়েছি। অফারটা হল ফুল টাইম টিচিং চার বছরের জন্য। আমরা কয়েকটা বেঞ্চ পেছনে বসার কারণে আমরা শুনতে পারলাম না স্যার কোন ভার্সিটি থেকে অফারটা পেয়েছে। আমাদের পাশে বসা একটা মেয়ে নুসরাত জামান বাধন জিজ্ঞাসা করল স্যার কোন ভার্সিটি থেকে। আমরা শুনলাম অষ্ট্রেলিয়ার ক্যানবারা ভার্সিটি থেকে। স্যার বললেন তোমাদের ক্লাসটা আর নেওয়া হচ্ছেনা। আমি আজই শিক্ষাছুটির জন্য এ্যাপ্লিকেশন করব। ক্লাস যথারীতি শেষ হল। আমরা বন্ধুরা মিলে ডিপার্টমেন্টের বারান্দায় আড্ডা দিচ্ছিলাম। আমি বললাম স্যার যে বললেন আমাদের জন্য একটা গ্রেট নিউজ আছে সেটা কী আদৌ আমাদের জন্য গ্রেট নিউজের আওতায় পড়ে। বিষয়টা স্যারের জন্য মহা সুখবরের হতে পারে। স্যার শিক্ষাছুটি থাকাকালীন সময়ে বেতনসহ সকল সুযোগ সুবিধা পাবেন। আবার অষ্ট্রেলিয়ার ভার্সিটি থেকে আর্থিক তো সুবিধা পাবেনই। এই দিক থেকে নিউজটা স্যারের জন্য সুসংবাদ হতে পারে। এমনকি এটা গ্রেট গুড নিউজ। অপর পক্ষে একজন দক্ষ, অভিজ্ঞ শিক্ষক বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষারত ছাত্রদেরকে ছেড়ে অষ্ট্রেলিয়ার ছাত্রদেরকে জ্ঞান শিক্ষা দিবেন। আমরাও তো তাদের মতো স্যারের কাছথেকে অভিজ্ঞতালব্ধ শিক্ষা অর্জন করতে পারতাম। নিজেদেরকে চাকরি ক্ষেত্রে যোগ্য হিসেবে উপস্থাপন করতে পারতাম। এখানে আমরা স্যারকে মিস করছি। অমূল্য সম্পদ গ্রহণ থেকে বিরত থাকছি। তাই বিষয়টি স্যারের জন্য গ্রেট গুড নিউজ হলেও আমাদের জন্য গ্রেট বেড নিউজ । হতে পারে এটি আমাদের দেশের জন্য গর্ব। আমাদের ভার্সিটির টিচার অষ্ট্রেলিয়ার ভার্সিটিতে ক্লাস নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। কিন্তু দেশ প্রেম বলে একটা কথা আছে। আগে দেশের ছেলের জনসম্পদে পরিণত করা উচিত। তারপর অন্য কথা। হয়তো বাংলাদেশের চেয়ে অষ্ট্রেলিয়াতে আর্থিক সুবিধা বেশী পাওয়া যাবে। কিন্তু দেশের স্বার্থে এটা করা অনুুচিত। এই বিষয়গুলো আমার চেতনায় আসত না। যদি আমাদের শিক্ষকমহোদয় চারবছর পর শিক্ষাছুটি শেষে ফিরে এসে আবার আমাদের দেশে অভিজ্ঞলব্ধজ্ঞান দিয়ে আমাদের শিক্ষা পেশায় নিয়োজিত হতেন। আমি আশংকা বোধকরছি স্যার আর সেই দেশ থেকে আর ফিরে আসবেননা। সেই দেশের এয়ারকন্ডিশনড গাড়ি, বাড়ি পেয়ে কেউ কি এই দেশে ফিরে আসতেচায়। দেশ প্রেমের কথা দিয়ে আর কি হবে। আশংকা বোধ করছি এই জন্য যে ইতিপূর্বে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যাালয় থেকে ৯৪ জন টিচার শিক্ষছুটি নিয়ে বাহিরে যাওয়ার পর আর কখনো তারা ফিরে আসেননি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষকদরে কাছথেকে অর্ধকোটির চেয়েও বেশি টাকা পাবেন। আমাদের মত দেশের সরকারী ভার্সিটি গুলো পরিচালিত হয় কৃষকের ঘামজরানো কষ্টের উপার্জিত টাকা দিয়ে, রিকসাওয়ালার রক্তকে পানি করে উপার্জিত টাকা দিয়ে । এমন একটি দেশের ভার্সিটি থেকে শিক্ষাছুটি নিয়ে ফিরে না আসা সেই দেশের জন্য বিষয়টি কেমন হতে পারে। ভাবতে বড় কষ্ট লাাগে। আমাদের আবার দেশ প্রেম। দেশপ্রেম!। দেশ প্রেমের কথাটা বলে আমার এখন বড্ড হাসি পাচ্ছে। আমাদের মানুষগুলো উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত। তবে দেশপ্রেমের শিক্ষায় শিক্ষিত নয়। আমি আশা করছি ইতিপূর্বে শিক্ষকদের ন্যায় বাহিরে গিয়ে দেশে না ফিরে আসার মত ঘটনায় তিনি ৯৫ তম ব্যাক্তি হিসেবে ভার্সিটির রেজিষ্ট্রুার খাতায় তার নাম লিপিবদ্ধ করবেন নাতো। ব্লগার ভাইরা আপনারা কি মনে করেন।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০০৯ সকাল ১১:৩৩
৫টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×