somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দুই শূণ্য শূণ্য নয় (পূর্ণ্য পূর্ণ্য)

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জানুয়ারি
দুই দুইটা মানুষের জন্ম হওয়া দেখলাম একদিনে। দু'টোই সিজারিয়ান অপারেশন ছিল। দেখতে দেখতে মনে হলো, আরে, মানুষের জন্ম হওয়ার মত এত সিরিয়াস ব্যাপার আসলে খুব কঠিন না। প্রথমে ক্যাথেটার ঢুকায়, যেটা দেখতে খুব খারাপ লাগছিল, কারণ মনে হচ্ছিল বাংলাদেশে গরিবের মেয়েদের প্রাইভেসি থাকতে নেই। এক গাদা ইন্টার্ন ডাক্তার, বড় ডাক্তার, নার্স, আয়া, বয়ের সামনেই একটা মেয়ের জীবনের সবচেয়ে সুন্দর আর সবচেয়ে কষ্টের ঘটনাটার লজ্জাজনক সুচনা হয়। তারপর, বড় একটা সুঁই দিয়ে পিঠের নিচের দিকে এপিডিউরাল দেয়া হয়। তার কিছুক্ষন পরে একটা তরল মেখে এক পোঁচে পেট কেটে ফেলা হয়, তারপরে হাত ঢুকিয়ে একটা রক্ত মাখানো মাংসের পুটলি বের করে আনা হয়। তখন ডাক্তাররা সবাই খুব খুশি হয়ে যায়। 'এই মেয়ে হয়েছে', 'তিন কেজি!', 'ওয়েল ডান', 'দেখেন, কত সুন্দর মেয়ে'। তারপর হঠাৎ করে আবার সবাই খুব সিরিয়াস, যে সেলাই করছে, সে চিৎকার করে এই কেঁচি, সেই তুলা, ওই সূতা চায়। তার কিছুক্ষনের আবার সব স্বাভাবিক।

স্বাভাবিক জন্ম দেখার জন্য ডেলিভারি রুমে ঢুকেছিলাম। দেখলাম, একটা পেট উঁচু মেয়ে দুই পা ফাঁক করে একা একা শুয়ে আছে। পরণে ম্যাক্সি কোমর পর্যন্ত গুটানো। একটা চিকন রক্ত ধারায় বিছানার ওয়েলক্লথ ভরে যাচ্ছে। সাথে সাথে বের হয়ে চলে আসলাম। কয়েকবার ডিউটি ডাক্তারের চাপাচাপিতেও দ্বিতীয়বার আর ঢুকতে রাজি হই নি।

ফেব্রুয়ারি
সেন্ট মার্টিনসে অনেক অনেক মাছ ভাজা আর ডাব খেলাম। ঘোলা পানিতে স্নর্কলিং করলাম। বার্মিজ আচার খেয়ে পেট খারাপ করলাম। জীবনের শ্রেষ্ঠ রিকশা ভ্রমন করে কক্সবাজার থেকে হিমছড়ি গেলাম। সমুদ্র সৈকতে ঝাউবনের ছায়ায় বসে বার্মিজ গামছা বিছিয়ে দুপুরের খাবার খেলাম।

কোলকাতার ভাঁড়ের চা খেলাম। প্রেসিডেন্সি কলেজের সামনে একটা সাদা লুঙ্গি পড়া বুড়া লোকের মমতা মাখা 'মা' ডাক শুনে চোখ ভিজিয়ে ফেললাম।দীপা আর অনিমেষের কফি হাউজ আর কলেজ স্ট্রীটের বইয়ের দোকানে ঘুরলাম। নাখোদা মসজিদের শীতল সিমেন্টে কপাল ঠেকিয়ে সিজদা দেয়ার সময় ভাবলাম, পৃথিবীর সব মসজিদে গেলেই নিজের বাড়ি নিজের বাড়ি মনে হয়।

দুবাই এয়ারপোর্টে এক রাত কাটালাম। 'ক্যাশ কনভার্টার বুথে' সাথের সমস্ত বাংলাদেশী আর ভারতীয় বড় নোট, ছোট নোট আর খুচরা পয়সা ভাঙিয়ে একটা টুনা স্যান্ডউইচ আর কফি খেলাম।

পড়াশোনা শুরু করলাম খুব অনিশ্চয়তা আর অনাগ্রহ নিয়ে। প্রতিদিন বকা খাই। মন বসে না।

মার্চ
প্রজেক্ট বদলাতে হলো। এক মাস পরে লিটারেচার রিভিউ ডিউ।

এপ্রিল
জার্নাল পড়তে পড়তে একসময় পড়ার, লেখার আর চিন্তা করার জগতে ঢুকে গেলাম। স্বপ্নে তখন থিওরী দাঁড় করানোর চেষ্টা শুরু করলাম। লিটারেচার রিভিউ জমা দিলাম সহিসালাহ মত।

মে
কয়েক ইঞ্চি ইঁদুর বাচ্চাগুলো হাতে নেয়া শরু করতেও বিপুল সাহস অর্জন করতে হলো। হাতে নিলেই ছোট ছোট নখ দিয়ে আঁচড়ানো শুরু করে, একটু আগে মাকে ধরায় গ্লাভসে মায়ের গন্ধ। আমার হাত কাঁপতে থাকে, বুক দুরু দুরু।

জুন
রুটিন = ল্যাব-ইদুর-বাসা-ইন্টারনেট-ঘুম-ল্যাব…

মাঝে মাঝে রুটিনে ছেদ পড়ে ল্যাবের নানা নাটকে।

যেই বন্ধুরা চাকরি করছে, তারা যখন কলিগদের পলিটিক্সের কথা বলত, তখন হাসি পেত। মনে হতো, কি ছেলেমানুষী। সারাদিন ল্যাবে কাটাতে কাটাতে, আর দায়িত্ব নিয়ে প্রজেক্টের কাজ করতে গিয়ে টের পেলাম, বিজ্ঞানী আর ইউনিভার্সিটির লেকচারার হলেও কি, কিন্ডারগার্টেন পলিটিক্স, ছেলেমানুষী এখানেও আছে! এই ছেলেমানুষী পলিটিক্সটা বিচ্ছিরি মাকড়শার জালের মত। নিজের মধ্যে সামান্য সমস্যাও থাকলে, ইকটুশ খানি ফাঁকিবাজি বা অস্পষ্টতা থাকলেই এই জালে জড়িয়ে যেতে বাধ্য। যে আঙ্গুল তুলছে তার সারা শরীরে দগদগে বসন্ত, কিন্তু আঙ্গুল তুলতে পারছে বলেই অপরজনের মুখের একটা লাল ব্রনকেও ভয়াবহ বিচ্ছিরি লাগছে।

একজন মানুষকে চেনার সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে, তাকে একটা ঝামেলায় ফেলে দেয়া। এত সব কান্ডের ভালো দিক ছিল, বেশ একটা দারুণ সোশ্যাল এক্সপেরিমেন্ট হয়ে গেল।

মালয়শিয়ান একটা চাইনীজ ডাক্তার ফ্যাং, আমাদের ল্যাবে পিএইচডি করছি। ফ্যাং অসম্ভব সৎ। কখনও মিথ্যা বলে না, বাড়িয়ে বলে না, অনুমানে বিন্দুমাত্র কথা বলবে না। ওর এই সমস্ত গুণের জন্যই ও একেবারে আদর্শ বিজ্ঞানী।

ল্যাবের অন্যান্যরা পিছনে পিছনে লাগাচ্ছে, আসল ঘটনাকে অনেকগুণ বাড়িয়ে বাড়িয়ে বলছে, আস্তে আস্তে আসল ঘটনা ফুলে ফেপে একাকার। এ সব কিছু হচ্ছে, যাকে নিয়ে এতসব ঘটনা, পুরাপুরি তার অজান্তে। একটা অদ্ভূত 'সুশীলতার' মুখোশ পরে ঘুরছে মানুষ, যাকে নিয়ে কলিজা ফাটিয়ে গীবত করলো, তার সামনে একটু পরেই অমায়িক হাসি।

অন্যদিকে এমনও আছে, যে, যাকে সহ্য হচ্ছে না, তাকে পুরাপুরি না দেখার ভান করে দিন কাটাচ্ছে। রুমে ঢুকে সবাইকে সুপ্রভাত কামনা করে দিব্যি একজনকে পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছে। কনটেম্পট দেখানোটা যে একধরণের প্রবল রকমের চারিত্রিক দুর্বলতা, সেটা ভালো ভাবে বুঝলাম।

কিন্তু ফ্যাংকে আমি কখনও গীবত করতে দেখি নি। আর কখনও কোন কিছু অপছন্দ হলে সেটা বলতে দেরি করতে দেখি নি। আর ও যখন ভুল ধরিয়ে দেয়, সেখানে জয়ী হওয়ার আনন্দও দেখি নি! ফলে, ফাঁকিবাজেরা ওর আশে পাশে অস্বস্তিতে থাকলেও ওর শত্রু নেই একদম। ছোটবেলা মাধবী আপার মত ভালো স্কুল টিচার হওয়ার স্বপ্ন দেখতাম। নতুন স্বপ্ন দেখা শুরু করলাম, ফ্যাঙের মত মানুষ হওয়া।


জুলাই
ল্যাব-ইদুর-বাসা-ইন্টারনেট-ঘুম-ল্যাব… এর ফাঁকে ফাঁকেই ভবিষ্যত নিয়ে ভাবা শুরু করলাম।

এরকম করে পরবর্তী জীবনের বাকি প্রতিটি দিন, এবং এর চেয়েও ক্রমবর্ধমান ব্যস্ততায় নিজেকে ভাবতে পারছিলাম না। আমার সুপারভাইজারের নিজের সংসার নেই, উইকেন্ডেও ইউনিতে কাটায়, ওনার রিসার্চই ওনার বিনোদন, ঘুম। এরকম জীবনের ফলাফল কি? রিসার্চ প্রকাশিত হলে অনেক অনেক নাম, ডাক, ততটুকুর জন্য নিজের ব্যক্তিগত জীবনের সমস্ত আরাম বোধ, ভালোবাসার মানুষদের সাথে সময় কাটানো, সব কিছু ভুলে থাকা কতটুকু অর্থবহ?

মনে হওয়া শুরু হলো, 'দুনিয়াদারি আর ভাল্লাগে না'। ল্যাব, ইঁদুর, এক্সপেরিমেন্ট, দৈনিক সম্পর্কগুলার ঝক্কি সব গোল্লায় যাক। আমি বাংলাদেশে যাই।

তখনই ভয় পেলাম। ঐতিহাসিক ভাবে প্রমানিত, আমার কোন কিছুতে বিরক্তি ধরে গেলে সেই কাজটা আর শেষ করতে পারি না। কিন্তু আবেগ আর দায়িত্ববোধ--দুইটার ঠোকঠোকিতে আবেগকে জিততে দেয়া ঠিক না, সেটা কেবলই বুঝতে শুরু করেছি। আবেগ জিতে গেলে, মায়েরা বাচ্চাদের উপর বিরক্তিবোধের চূড়ান্তে তাদের আছড়ে মেরেই ফেলতো।

কোন কিছু শুরু করে শেষ করতে পারাটা একটা বিশাল লাইফস্কীল, যেটা আমি অর্জন করি নি, কিন্তু অর্জন করাটা খুব দরকার মনে হলো।


দাঁতে দাঁতে চেপে ঘুরতে থাকলাম সেই ল্যাব-ইদুর-বাসা চক্রে।


আগস্ট
রোজাতে স্কাইপের সময়ের পুরাটুকুই দিলাম ইফতার আর তারাবিতে।
ল্যাব-ইদুর-বাসা-ইফতার-তারাবি-ঘুম-সেহেরী-ল্যাব…


সেপ্টেম্বর
আমার আটচল্লিশটা ইঁদুরকে একে একে এনেসথেশিয়া দেয়া হলো। জাপটে ধরে পেটের বাঁ দিকে ইনজেকশন দেয়ার আতঙ্ক আর ব্যথায় ছটফট করতে থাকা ইঁদুরটার হঠাৎ গতি স্লথ হয়ে যায়। হাঁটা এলোমেলো হয়ে যায়। তারপর এক সময় ইঁদুরটা নিস্তেজ হয়ে পড়ে থাকে। হঠাৎ দেখলে মনে হবে ঘুমাচ্ছে, কিন্তু লাল চোখগুলো তখনও খোলা, আর অস্বাভাবিক রকমের স্থির, ফ্যাকাশে। তখন পায়ে চিমটি দিলে যদি ঝটকে পা সরিয়ে নেয়, তাহলে আরও কিছুক্ষন অপেক্ষা করতে হয়। পুরাপুরি নিস্তেজ হয়ে যাওয়ার পরে বুকে সিরিঞ্জ ঢুকিয়ে সবগুলো রক্ত বের করে আনতে হয় ড্রাকুলার মত। পেট কেটে মেদগুলো ছোট ছোট টিউবে ভরতে হয়। ধারালো কেঁচি দিয়ে ধুকপুকে তাজা হৃদপিন্ডটা বের করে এনে মাপতে হয়। আর যকৃত, কিডনী। মাথার খুলি কেটে হাইপোথালামাস আর হিপোক্যাম্পাস।

পর পর কয়েক রাত ঘুরে ফিরে ই১, কে৩, বি৪ কে স্বপ্ন দেখলাম… শেষের দিকে আটচল্লিশটা ইঁদুরকে আলাদা করে চিনতে পারতাম। বুকের কাছে নরম উষ্ণ শরীরটা চেপে রাখলে ওরা নিশ্চিন্তে মিশে থাকতো। কখনও আমার কনুই আর কোমরের তৈরি ছোট্ট অন্ধকার খুপড়িতে নাক মুখ গুঁজে রাখতো, আমার শুড়শুড়ি লাগতো, হেসে ফেলতাম। কখনও মাথা বাড়িয়ে ইতি উতি তাকাতো, কিন্তু পালাতে চাইতো না। এনিমেল হাইজের নির্জনতায় ওদের গান শোনাতাম। মন খারাপের কথা শোনাতাম। ওরা একটু অবাক হয়েই তাকিয়ে থাকতো যেন। ওদের মুখের দিকে তাকিয়েই বুঝতে পারতাম, কখন ভয় পাচ্ছে, কখন বোরড, কখন স্রেফ কৌতুহলী।

রিসার্চটা এতদিন ভালো লাগছিল না, কিন্তু আটচল্লিশটা প্রানের বিনিময়ে মানব জাতিতে জ্ঞানের পরিমান এক বিন্দুও বাড়বে না, সেটা ভাবতে ভালো লাগছিল না একদম। মন লাগালাম।

ইঁদুর নিয়ে রিসার্চের উপকারী দিকগুলো লিখতে হলে আমি অনেক কিছু লিখে ফেলতে পারব। এর প্রয়োজনীয়তা আমি বুঝি। কিন্তু বুঝলাম, এই বস্তু আমার জন্য না। সারাজীবনে হাজার হাজার প্রানহত্যার দায় আমি নিতে পারব না।

সুপারভাইজারকে জানিয়ে দিলাম, আমি আর থাকছি না এই ল্যাবে, কিংবা অন্য কোন ল্যাবে যেখানে প্রানীর উপর গবেষনা হয়…


অক্টোবর
সুপারভাইজার ভেগেছেন আমেরিকায় কনফারেন্সে। আমার স্ট্যাট পুরাটুকুই বাকি। কখনও স্ট্যাটের কাছ ধার দিয়ে যাই নি। জুলি পেলানের একটা আস্ত বই পড়ে ফেললাম। সারাদিন এসপিএসএস আর প্রিজম গুঁতাই। মাঝ রাতে ঘুম ভেঙে গেলে আর এসএমএস করি না, টু-ওয়ে এনোভার নতুন কোন পোস্ট-হক টেস্ট করি। স্কাইপে কনভারসেশন শুরু করেও হঠাৎ কোন কাজে ডুবে যাই, পাঁচ মিনিট পরে খেয়াল করি অপর পাশে নি:শব্দতা।

সুপারভাইজার আসলেন থিসিস জমা দেয়ার দশ দিন আগে। সেই দশ দিন বাসায় ফিরতে ফিরতে রাত দশটা কিংবা আরও দেরি। ঘর ছাড়ি সেই ভোর সাড়ে ছয়টায়।

নভেম্বর
স্ট্যাট শেষ হয়ে যেতেই লেখাটা কি যে ভালো লাগছিল! নিজের কেইসটা নিয়ে বিতর্ক করা অনেকটা বোধ হয় শিখেছি ব্লগ করার সময়। একই লাইনের কাজ, কিন্তু বিশুদ্ধ জ্ঞানচর্চা। গালাগালি নেই, অপবাদ নেই, মিথ্যা কথা নেই, অনর্থক, অর্থহীন অহামিকার প্রদর্শন নেই।

অক্টোবরের শুরু থেকে নভেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত ঘুম হলো দৈনিক গড়ে ৪-৫ ঘন্টা। বাসার সবার চেহারা ভুলতে বসলাম। কিন্তু তবু, ফাইনাল প্রেজেন্টেশন দিয়ে বাসায় ফিরে মনে হলো… মনে হলো অনেক কিছুই!

যেমন, সারা জীবন আলসেমি করে এসেছি, কিন্তু, দায়িত্ব পালনে সিনসিয়ার, ব্যস্ত জীবনটা আসলে তৃপ্তিদায়ক! অসম্ভব তৃপ্তিদায়ক। অলস মানুষেরা হয়তো অনেক 'আরাম' পায়, কিন্তু 'তৃপ্তি' পায় না। কাজ' না করতে করতে একটা সময়ে নিজের উপর বিরক্তি ধরে যায়। সেই বিরক্তির কাছে সবটুকু সিননিয়ারিটি নিয়ে কাজ করার কষ্টটা পুরাপুরি অনুল্লেখযোগ্য!

আমার জীবনের সব বড় বড় স্বপ্নগুলো আবর্জনার বালতিতে ফেলে দিয়ে আসলাম। আমি শুধু একটা জিনিসই শিখতে চাই---যা করছি, তা-ই সবটুকু সিনসিয়ারিটি নিয়ে করতে চাই। সেটা রান্না হোক, রিসার্চ হোক আর ল্যাবের কোন কলিগের সাথে কনফ্লিক্ট রেজুলুশন হোক।


ডিসেম্বর
ঈদের দুই দিন পর থেকে ভালো খবরগুলো পেলাম একে একে।

- রেজাল্ট - কষ্ট পুরাপুরি সার্থক। মা বাবাকে বলার সাথে সাথে দু'জনের মুখে যেই আলো ছুটলো, সেটা চোখ ধাঁধিয়ে দেয়ার জন্য যথেষ্ট। ইউনিভার্সিটি জীবনের শ্রেষ্ঠ অধ্যায়। বিদায়বেলা ভালো হলেই নাকি সব ভালো হয়?

- রিসার্চ - আমার অনার্সের প্রজেক্টটা দিয়েই এএনএতে এবস্ট্রাক্ট জমা দেয়া হলো। আমার অ্যাম্বিশন এত বেশি ছিল না। ইচ্ছা ছিল কোন মতে অনার্স পার করে দিয়েই ভাগবো, বাংলাদেশে যাবো!

- সারা বছর ভীষণ চিন্তায় ছিলাম আগামী বছর নিয়ে। পুরাদস্তুর বেকার হয়ে যাব না তো?
চাকরির জন্য আবেদন শুরু করার আগেই আল্লাহ অভাবনীয় একটা পথ খুলে দিল, ঠিক যেমনটা স্বপ্ন দেখছিলাম, তেমনটা।

বছরের মাঝখানে অসংখ্যবার মনে হয়েছে, সব বাস্তবতা থেকে ছুটে পালিয়ে যাই। আর দুই-তিন বছর আগে হলে আমি তাই করতাম, ছুটে পালাতাম। এবার নিজের স্বপ্নময় বুদবুদ থেকে বের হয়ে খুব করে চাইছিলাম পালাই পালাই মনটার বিপরীতে দাঁড়াই। সত্যিকারের সাহস দেখাই।

কিছুদিন আগে যখন নিচের কথাটা পেলাম একজনের ব্লগে, টুকে রাখলাম। মনের কথাটা বলেছেন ব্লগার…...

"Something is worth fighting for only AFTER you’ve fought for it.”

(কোন কিছু পাওয়ার জন্য যুদ্ধ করার পরেই কেবল যুদ্ধটা সার্থক হয়)।
১০টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×