somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিয়মিত নামাজ আদায়ের তাৎপর্য

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কালিমা স্বীকার করার পরেই যে কাজটি একজন মুসলমানের জন্য অবধারিত হয়ে যায় তাহলো নামাজ। কারণ কালিমা বিশ্বাস করার পরে নামাজ না পড়লে এই বিশ্বাসের কোন অর্থ হয় না। তাছাড়া কালিমা বিশ্বাস করার সঙ্গে সঙ্গে তার উপর ইসলামের যে পাঁচটি বুনিয়াদ-কালিমার পরে বাকী চারটি তথা- নামাজ, রোজা, হজ্ব ও যাকাতও তার উপর অবধারিত হয়ে যায়।

আল্লাহ তায়ালা সুরা মু’মিনুনের প্রথম অংশে বলেছেন,

''যারা নামাজের প্রতি যত্মশীল হবে আমি তাদেরকে জান্নাতুল ফিরদাউসের উত্তরাধিকারী করবো। সেখানে তারা অনন্তকাল বসবাস করবে।''

নামাজের প্রতি যত্মশীল তার মানে হলো নামাজকে আল্লাহ যে সময়ে যে নিয়মে যতবার আদায় করতে বলেছেন ঠিক সেভাবে আদায় করা। আমাদের মধ্যে অনেক নামাজী আছেন যারা দিনে ২/৩ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করেন। আবার কেউ দিনে এক ওয়াক্ত পড়ে অথবা পড়েন না। কেউ আছেন কেবল শুক্রবারে সপ্তাহে কেউ প্রতিবছরে নামাজ আদায় করেন। আবার কেউ প্রতিবছর কেবলমাত্র রমজান মাসে পড়েন। অনেকে সেটাও পড়েনা কেবলমাত্র দু’ঈদের নামাজ পড়েন ও মানুষ মারা গেলে জানাযার নামাজ পড়েন।

এইভাবে কিন্তু আল্লাহ নামাজ আদায় করতে বলেননি। তাছাড়া এইভাবে নামাজ পড়াকে কিন্তু নামাজের প্রতি যত্মশীল হওয়া বলেনা।

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন,

“সাহাবীরা তোমাদের কারো বাড়ীর পাশ দিয়ে যদি কোন নদী প্রবাহিত হয়। আর তোমাদের কেউ যদি সেই নদীতে প্রতিদিন পাঁচবার করে গোসল করে। তাহলে তার শরীরে কি কোন ময়লা থাকবে? সাহাবীরা বললেন, না ইয়া রাসূলাল্লাহ (সাঃ)? মহানবী (সাঃ) বললেন, এটাই হলো নামাজের দৃষ্টান্ত। যদি কোন মু’মিন প্রতিদিন পাঁচবার করে নামাজ আদায় করে তাহলে তার আমলনামায় কোন গোনাহ থাকতে পারেনা।”

একদিন বিকাল বেলা হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) তাঁর সাহাবী হযরত আবুজর গিফারী (রাঃ) কে নিয়ে ভ্রমণে বের হয়েছিলেন। সময়টা ছিল শীতের সময়। রাসূল (সাঃ) একটি গাছের ডাল ধরে মৃদু নাড়া দিলেন। সঙ্গে সঙ্গে গাছের পাতাগুলো ঝর ঝর করে ঝরতে লাগল। শীতের সময় তো এমনিতেই গাছের পাতা ঝরে যায়। আর হাত দিয়ে নাড়া দিলে তো আরো বেশিই ঝরবে এটাই স্বাভাবিক।

রাসূলল্লাহ (সঃ) এর সাহাবী আবু জর গিফারী (রাঃ) জিজ্ঞাসা করলেন ইয়া রাসুলুল্লাহ (সাঃ) আপনি তো অনর্থক কোন কাজ করেন না তাহলে এই গাছের ডাল ধরে নাড়া দিলেন কেন? এর হেতু কি আমি বুঝতে পারলাম না। মহানবী (সাঃ) বললেন, আবু জর! যে কোন মু’মিন ব্যক্তি প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করবে, তার আমলনামা হতে গোনাহ্‌গুলো এভাবে ঝরঝর করে ঝরতে থাকবে। শীতের সময় গাছের পাতা ঝরতে ঝরতে যেমন শেষে কোন পাতাই থাকে না-নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজীর আমল নামায় শেষ পর্যন্ত কোন গোনাই থাকে না। যার ফলে আমলনামাটা হয়ে যায় পুতঃপবিত্র ও গোনাহ মুক্ত। লোকটা তখন নিষ্পাপ মা’ছুম অবস্থায় জান্নাতের ওয়ারিশ হিসেবে দুনিয়ায় চলা ফেরা করে।

এখানেই শেষ নয় অন্য বর্ণনায় প্রিয় নবী (সাঃ) বলেছেন, এক ওয়াক্ত হতে পরবর্তী ওয়াক্ত-এর মধ্যবর্তী সময়ের গোনাহ মাফ হয়ে যায়।

তাহলে প্রতীয়মান হয় যে, নিয়মিত যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি হাছিলের জন্য নামাজ আদায় করে তারা পৃথিবীতে বেঁচে থাকে জান্নাতের উত্তরাধিকারী হিসেবে এবং মৃত্যুবরণ করার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর উপর আল্লাহর জান্নাতের শান্তি বর্ধিত হতে থাকে।

এখন আসুন এই মর্যাদাপ্রাপ্তদের আরো কিছু কর্তব্যবোধ সম্পর্কে অবহিত হই।

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন,

যারা আজান শুনলো অথচ মসজিদে আসলো না, আমার ইচ্ছা হয় ঐ সব লোকদের বাড়ীঘরগুলো আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেই, তবে যদি সেখানে নারী ও শিশুরা না থাকতো তাহলে অবশ্যই আমি এই কাজ করতাম, যারা নিয়মিত নামাজী, তাদেরকে জামায়াত বদ্ধ ভাবে মসজিদে এসে নামাজ আদায় করার বিষয়টি এখানে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।

অন্য বর্ণনায় আছে বিনা ওজরে ফরজ নামাজ পুরুষের জন্য বাড়ীতে আদায় হয় না।

তার দৃষ্টান্ত হলো : রাসূল (সাঃ) এর একজন অন্ধ সাহাবী ছিলেন যার নাম আব্দুল্লাহ ইবনে উম্মে মাখতুম।

তিনি বলেছিলেন, ইয়া, রাসূলুল্লাহ! (সাঃ) আমি তো অন্ধ মানুষ আমাকেও কি মসজিদে গিয়ে জামায়াতের সাথে নামাজ আদায় করতে হবে? রাসূল (সাঃ) বললেন, হে আব্দুল্লাহ ইবনে উম্মে মাখতুম? তুমি কি বেলালের হায়্যা আলাস ছলাহ, হায়্যা আলাল ফালাহ্‌ শুনতে পাও।

তিনি বললেন, পাই ।রাসূল (সাঃ) বললেন,''তাহলে তোমাকেও জামায়াতে নামাজে আসতে হবে।”

রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর এই ঘোষণার পর আব্দুল্লাহ ইবনে উম্মে মাখতুম বাড়ী হতে মসজিদের সাথে একটি রশি টাঙ্গিয়ে নিয়েছিলেন এবং প্রত্যেক ওয়াক্তে রশি ধরে ধরে জামায়াতে চলে আসতেন।



সুতরাং আমরা যদি আমাদের গোনাহ্‌ মাফ করিয়ে নিয়ে আল্লাহর জান্নাতের উত্তরাধিকারী হতে চাই তাহলে আমাদের নিয়মিত জামায়াতবদ্ধ ভাবে নামাজ আদায় করতে হবে।

আল্লাহ আমাদের সে তাওফিক দান করুন, আমীন।



সূএ: http://articles.ourislam.org/
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০০৯ দুপুর ২:০১
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×