somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নজিরবিহীন ঘটনা : স্বাধীনতা ও বিজয় দিবসে জাতীয় প্যারেড হলো না

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৪:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এবার ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস এবং ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে ন্যাশনাল প্যারেড বা জাতীয় কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়নি। এটি একটি নজিরবিহীন ঘটনা। বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন দেশে প্রতিবছর অন্তত একবার জাতীয় প্যারেড অনুষ্ঠিত হয়। এর মাধ্যমে একটি দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রতীক সেনা, নৌ, বিমানবাহিনীসহ বিভিন্ন আধাসামরিক এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা মার্চপাস্ট ও তাদের দেশের সামরিক সরঞ্জামাদি প্রদর্শনের মাধ্যমে শৌর্য-বীর্যের একধরনের মহড়া দিয়ে থাকেন। এ প্যারেড জাতীয় জীবনে গর্ব করার মতো একটি অনুষ্ঠান। বাংলাদেশে সাধারণত রাষ্ট্রপতি এ প্যারেডে সালাম গ্রহণ করেন। প্রধানমন্ত্রীসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকেন। সাধারণ মানুষের জন্য দেশের সামরিক শক্তির মহড়া দেখার একটি সুযোগও হয় এ জাতীয় অনুষ্ঠানের মাধ্যমে।
এদিকে বাংলাদেশে জাতীয় প্যারেড না হলেও এবার ভারতীয় সেনাবাহিনীর ইস্টার্ন কমান্ডের সদর দফতর ফোর্ট উইলিয়ামে বেশ ঘটা করেই ৪ দিনব্যাপী ‘বিজয় উত্সব’ পালিত হচ্ছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তাদের উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল ওই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছে। সহযোগী একটি পত্রিকার যুগ্ম সম্পাদকও ওই প্রতিনিধিদলে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। তার পাঠানো প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘সোমবার সন্ধ্যায় সিগন্যালস অফিসার্স মেসে নৈশভোজ শেষে ব্রিগেডিয়ার প্রেমজিত্ সিং ভাঙা ভাঙা বাংলায় বললেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশ মুক্তিবাহিনীর কাছে পাকিস্তানি বাহিনী পরাজিত হয়েছে। বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। এর চেয়ে গৌরবের আর কী হতে পারে! প্রত্যুত্তরে বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে মেজর জেনারেল মুহাম্মদ আইনুদ্দিন বীর প্রতীক (অবসরপ্রাপ্ত) তাকে অভিনন্দিত করেন।’ জানা গেছে, সেনাবাহিনীর একজন কর্মরত জেনারেলের নেতৃত্বে অপর একটি প্রতিনিধিদলও ইস্টার্ন কমান্ডের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছে। জাতীয় প্যারেড না হওয়া এবং সাবেক ও বর্তমান উচ্চপর্যায়ের সেনা কর্মকর্তাদের ইস্টার্ন কমান্ডের অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার ব্যাপারে মন্তব্য করতে গিয়ে ’৭২ ও ’৭৩ সালের জাতীয় প্যারেড পরিচালনাকারী উপাধিপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা একজন অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল বলেন, এটা দুঃখজনক। আমরা এবার কেন জাতীয় প্যারেড করতে পারলাম না? যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া থেকে শুরু করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভিক্টোরি ডে সেলিব্রেশনের অন্যতম অনুষ্ঠান হলো কুচকাওয়াজ। বাংলাদেশেও বরাবর এ কুচকাওয়াজ হয়। এবার নিজেরা কুচকাওয়াজ করতে পারলাম না। কিন্তু ভারতের ইস্টার্ন কমান্ডের কুচকাওয়াজে যেতে আমাদের কোনো অসুবিধা হলো না।
বাংলাদেশে সাধারণত দেশের স্বাধীনতা ঘোষণার দিনটিতে প্রতিবছর ২৬ মার্চ জাতীয় প্যারেড অনুষ্ঠিত হয়। পুরনো বিমানবন্দরের একাংশ জাতীয় প্যারেড স্কোয়ার হিসেবে পরিচিত। জাতীয় প্যারেড স্কোয়ার ও মানিক মিয়া এভিনিউ এলাকায় বরাবরই জাঁকজমকের সঙ্গে জাতীয় প্যারেড হয়ে থাকে। গতবছরও ২৬ মার্চ জাতীয় প্যারেড হয়েছে। বরাবরের মতো রাষ্ট্রপতি সালাম গ্রহণ করেছেন এবং সেনাবাহিনীর নবম পদাতিক ডিভিশনের জিওসির নেতৃত্বে তিনবাহিনী, পুলিশ, র্যাব, বিডিআর, বিএনসিসি, আনসার-ভিডিপি ও মুক্তিযোদ্ধারা কুচকাওয়াজে অংশ নিয়েছেন। কিন্তু শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বিগত আওয়ামী লীগ সরকার ২৬ মার্চের পরিবর্তে ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে কুচকাওয়াজের আয়োজন করে। এবার ২৬ মার্চ কুচকাওয়াজ না হওয়ায় অনেকে ধারণা করেছিলেন ১৬ ডিসেম্বর এই কুচকাওয়াজ হবে। কিন্তু গতকাল কোনো কুচকাওয়াজ হয়নি। কেন হয়নি, তার কোনো কারণই সরকারিভাবে বলা হয়নি। আইএসপিআর পরিচালকের বাসায় রাতে যোগাযোগ করা হলে জানানো হয়, তিনি বাসায় নেই। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকেও একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে পাওয়া যায়নি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমানে দেশে নেই। ১৪ ডিসেম্বর রাতে তিনি জলবায়ু সম্মেলনে যোগ দিতে কোপেনহেগেন গেছেন। কিন্তু যেহেতু প্রধানমন্ত্রী কুচকাওয়াজে সালাম নেন না, তাই তার অনুপস্থিতি কোনো কারণ হতে পারে না।
কী কারণে এবার কুচকাওয়াজ হলো না বা বাতিল কিংবা স্থগিত করা হলো, তার কোনো ব্যাখ্যা সরকারিভাবে না থাকায় এ নিয়ে কৌতূহল বেড়েছে। নিরাপত্তাজনিত কোনো কারণেও যদি এবার প্যারেড না হয়ে থাকে, তাহলেও সরকারের তরফ থেকে এর একটি ব্যাখ্যা দেয়া জরুরি ছিল। বিডিআর বিদ্রোহকে কেন্দ্র করে দেশের সীমান্ত রক্ষীবাহিনী প্রায় ধ্বংস এবং সেনাবাহিনীতে যে ক্ষত হয়েছে, তা কাটিয়ে ওঠার আগেই ন্যাশনাল প্যারেড না হওয়ায় সশস্ত্র বাহিনীর ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে

-
আমারদেশ অনলাইন
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৪:৪৭
১০টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্যাড গাই গুড গাই

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১১ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

নেগোশিয়েশনে একটা কৌশল আছে৷ ব্যাড গাই, গুড গাই৷ বিষয়টা কী বিস্তারিত বুঝিয়ে বলছি৷ ধরুন, কোন একজন আসামীকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে৷ পারিপার্শ্বিক অবস্থায় বুঝা যায় তার কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

টান

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১১ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:২২


কোথাও স্ব‌স্তি নেই আর
বিচ্যুতি ঠেকা‌তে ছু‌টির পাহাড়
দিগন্ত অদূর, ছ‌বি আঁকা মেঘ
হঠাৎ মৃদু হাওয়া বা‌ড়ে গ‌তি‌বেগ
ভাবনা‌দের ঘুরপাক শূণ্যতা তোমার..
কোথাও স্ব‌স্তি নেই আর।
:(
হাঁটুজ‌লে ঢেউ এ‌সে ভাসাইল বুক
সদ্যযাত্রা দম্প‌তি... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বল্প আয়ের লক্ষ্যে যে স্কিলগুলো জরুরী

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৯

স্বল্প আয়ের লক্ষ্যে যে স্কিলগুলো জরুরীঃ


১। নিজের সিভি নিজে লেখা শিখবেন। প্রয়োজন অনুযায়ী কাস্টোমাইজ করার অভ্যাস থাকতে হবে। কম্পিউটারের দোকান থেকে সিভি বানাবেন না। তবে চাইলে, প্রফেশনাল সিভি মেকারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৫

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না
অহনা বলেছিল, আমি জানি আমি তোমাকে পেয়েছি সবখানি
আমি তাই নিশ্চিন্তে হারিয়ে যাই যখন যেখানে খুশি

অহনা বলেছিল, যতটা উদাসীন আমাকে দেখো, তার চেয়ে
বহুগুণ উদাসীন আমি
তোমাকে পাওয়ার জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিয়াল ফিলিস্তিনীরা লেজ গুটিয়ে রাফা থেকে পালাচ্ছে কেন?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১১ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১০



যখন সারা বিশ্বের মানুষ ফিলিস্তিনীদের পক্ষে ফেটে পড়েছে, যখন জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে সাধারণ সদস্য করার জন্য ভোট নিয়েছে, যখন আমেরিকা বলছে যে, ইসরায়েল সাধারণ ফিলিস্তিনীদের হত্যা করার জন্য আমেরিকান-যুদ্ধাস্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

×