somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিজয়ের খিদে

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ সকাল ১১:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার এক অদ্ভুত খিদে রোগ আছে ! /:) এমনি তে তো খাবার খাওয়ার কথা মনে পরে না। মাঝে মাঝে কাজের চাপে থাকলে তো খেতে ভুলে যাই সারাদিন, খিদে যে লেগেছে সেটাই বুঝিনা। কিন্তু যদি কোথাও কোন খাবার ছবি বা কোন খাবার কেউ খাচ্ছে বা টিভি তে কোন খাবার কাউকে খেতে দেখি অমনি আমার সেই খাবারের খিদে পেয়ে যায়। অবস্থা এমন হয় যে তখন মনে হয় ঐ খাবার ছাড়া আমি বাচব না। জিভে পানি চলে আসে চোখ ফেরাতে পারিনা। :P

ঢাকায় থাকতে সব বিজয় দিবসে রমনা এলাকায় গেছি। মেলায় যত খাবার পাওয়া যায় তা খাওয়া ছিল আমার প্রধান টার্গেট। বিজয় দিবসে বিজয়কে উপভোগ করেছি পেট ভরে যা পাই তা খেয়ে। বিশেষ করে পান্তা ইলিশ আমার চরম পর্যায়ে প্রিয়। বিজয় দিবসের সকালে উঠেই আমার পান্তা ইলিশের খিদে পেয়ে যায় বিজয়ের উল্লাসে। এবার তাই হয়েছে। সকাল বেলা উঠেই এখন আমার পান্তা ইলিশের খিদে কি করি কোথায় যাই অন্য কোন খাবারে আর মন বসছে না। :((:((:(( আবার চিংড়ির মাথা ভাজাটাও আমার খুবই ভাল লাগে সেটাও এখন খাবার জন্য মন আকুঁপাকুঁ করছে। কি করি কি করি কোথায় যাই অবস্থা আমার এখন। এসবের খিদে বার বার মনে করিয়া দিচ্ছে আহা আজ আমাদের বিজয় দিবস !!!:D:)B-)

অনেক দিন আগে এক কাজিনের সাথে গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দুপুরে খাবার পরে পাড়া বেড়াতে গিয়ে এক পরশীর বাড়ি বেড়াতে গেছি। গিয়ে দেখি সেই পড়শী উনার দেড় বছরের সদ্য ঘুম থেকে ওঠা নাতিকে খওয়াচ্ছেন। খাদ্য হচ্ছে চাল, ডাল, কাচা কলা মিস্টি কুমড়ো আরো অন্যান্য সবজি সহযোগে রান্না করা ও চটকানো কাদা কাদা মত একরকমের জিনিস, চামচে করে তা উনি গিলিয়ে দিচ্ছেন বাচ্চাটিকে। আর সেই মোটা সোটা বাচ্চাটিও হাপুস হুপুস করে গিলে যাচ্ছে। অসহ্য কদাকার খাবারের দৃশ্য !!

আমারা তখন মাত্র দুপুরের ভাত খেয়ে বের হয়েছি। পেট আমার কুমড়ো পটাশের মত ভরা!! আর তখন ঐ খাবার আর খাওয়া দেখে তো আমার মাথা খারাপ হবার যোগার !!! /:)/:):( মনে হলো সারা বিশ্বে এর চাইতে সুঃস্বাদু খাবার বোধ হয় আর হয়না। মনে হলো এই খাবার ছাড়া আমার জীবন নষ্ট !! জিভে ভিষন ভাবে জল আসতে থাকল। :P:P

চোখ ফেরাতে পারিনা ঐ খাবার দৃশ্য থেকে। যতই মনকে বলি এভাবে বাচ্চার খওয়ায় চোখ দিলে বেচারার পেট খারাপ হবে তবু মন মানে না। না পেরে ভাবলাম জিঙ্গেস করে নেই কি করে উনি ওটা রাধলেন। বাড়ি গিয়েই রান্না করে খাব। উনি আমাকে শেখালেন কি করে ঐ কদাকার জিনিস রান্না করতে হয়। বাড়ি ফিরেই রান্না করে খেয়ে বাচলাম।

যাখনই টিভি তে কোন রান্নার প্রগ্রাম দেখায় ক্লিফ আড় চোখে আমার দিকে তাকায় তারপর মিনিট খানেক পরে মুচকি হেসে জিঙ্গেস করে "আর ইউ হাঙ্গরি?" অথবা কোন মুভিতে কোন খাবার দৃশ্য থাকলে ও মনে মনে প্রমাদ গুনে এই ভেবে নয় যে আমাকে ঐ খবার কিনে দিতে হবে বরং এই ভেবে যে অত রাতে ঐ খবার কোথায় পাওয়া যাবে। কারন ঐ নিদ্দিষ্ট খাবরটি ছাড়া আমার ঘুম হবে না আর আমার ঘুম না হলে তার ও ঘুম হবে না ।:P

ছোট বেলায় একবার দুপুরের পরে এক ফকির আমাদের বাড়ি এসে ভাত চাইল। সবার খাওয়া হয়ে যওয়ায় কোন তরকারি অবশিষ্ট ছিলনা। কাজের মেয়েটি ফকিরকে বলল ভাত আছে তবে তরকারি নেই। ফকির বলে "তাই দেও মা, লবন আর কাচা মরিচ দিও গোটা ছয়েক তাহলেই হবে" সেই ফকির ৮ টি কাচামরিচ আর লবন দিয়ে চটকিয়ে যেভাবে এক থালা সাদা ভাত তৃপ্তি নিয়ে খেল তা দেখে ত আমার পেটে জিভে উথাল পাথাল শুরু হলো খিদেয়। এর পরে ঠিক সেই ভাবে ৭/৮ টি কাচা মরিচ দিয়ে সাদা ভাত খেয়ে তবে আমার মাথা ঠান্ডা ঝালে চোখ মুখ লাল করে। আজও আমার খিদে পায় ঐ ফকিরের খাওয়ার দৃশ্য মনে হলে কাচা মরিচ দিয়ে সাদা ভাত খাবার। ঠিক যেমন করে আজও আমার পরন্ত দুপুরে বিজয়ের দিনে দেশে যাবার জন্য মন আনচান করে।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ সকাল ১১:০৯
২৯টি মন্তব্য ২৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অতিরিক্ত বা অতি কম দুটোই সন্দেহের কারণ

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৩০

অনেক দিন গল্প করা হয়না। চলুন আজকে হালকা মেজাজের গল্প করি। সিরিয়াসলি নেয়ার কিছু নেই৷ জোসেফ স্টালিনের গল্প দিয়ে শুরু করা যাক। তিনি দীর্ঘ ২৯ বছর সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রধান নেতা ছিলেন। বলা... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সীমানা পিলার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৮



বৃটিশ কর্তৃক এদেশে ম্যাগনেটিক পিলার স্থাপনের রহস্য।
ম্যাগনেটিক পিলার নিয়ে অনেক গুজব ও জনশ্রুতি আছে, এই প্রাচীন ‘ম্যাগনেটিক পিলার' স্থাপন নিয়ে। কেউ কেউ এটিকে প্রাচীন মূল্যবান ‘ম্যাগনেটিক’ পিলার... ...বাকিটুকু পড়ুন

মাথায় চাপা ভূত ভূত ভূতং এর দিনগুলি

লিখেছেন শায়মা, ৩১ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৫


এই যে চারিদিকে এত শত কাজ কর্ম, ঝামেলা ঝক্কি, ক্লান্তি শ্রান্তি সব টপকে আমার মাথায় আজও চাপে নানান রকম ভূত। এক ভূত না নামতেই আরেক ভূত। ভূতেদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায় (দ্বিতীয় অংশ)

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ৩১ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:০৫


আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায় (প্রথমাংশ)
আমাদের সদ্য খনন করা পুকুরটা বৃষ্টির পানিতে ভেসে গেল। যা মাছ সেখানে ছিল, আটকানোর সুযোগ রইল না। আমি আর দুইবোন শিউলি ও হ্যাপি জালি... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিজের পাসওয়ার্ড অন্যকে দিবেন না ;)

লিখেছেন অপু তানভীর, ৩১ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৭



কথায় আছে যে পাসওয়ার্ড এবং জাঙ্গিয়া অন্যকে দিতে নেই । মানুষ হিসাবে, বন্ধু হিসাবে প্রেমিক/প্রেমিকা হিসাবে অথবা আজ্ঞাবহ হওয়ার সুবাদে আমরা অন্যকে ব্যবহার করতে দিই বা দিতে বাধ্য হই।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×