somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্মৃতি রোমন্থন (মহান সাধীনতা যুদ্ধে যারা জীবন দিয়েছিল তাদের জন্য আজ মহান বিজয় দিবসে আমার ছোট্ট একটা লেখা, দেখুন ভাল লাগে কিনা, ভাল লাগলে জানাবেন কিন্তু)

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ১০:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি ভাল নেই! জানি জেনে হয়তবা খুশিই হবে। তবুও বলব তুমি ভাল থেক। তোমার কি মনে আছে সেই মায়াবী চাঁদনী রাতের কথা? আকাশে ছিল পুরা পূর্নিমার চাঁদ। মাথার উপরের ওই এক টুকরো চাঁদ, আর পায়ের নিচে প্রখর রোদ্রে ফেঁটে চৌচির হয়ে যাওয়া মাটি। আচ্ছা বলতে পার রাস্তার দুই পাশে কি ছিল? আজকাল আমার কি যে হল, কিছুই মনে রাখতে পারি না। আচ্ছা তুমিই বলত এমন কথা কি কেউ কখনো ভুলে যায়।কি যে হল আমার, আচ্ছা একটু ভেবে দেখি মনে করতে পারি কিনা।এক ধারে কাঁটা গাছে সারি। মনে আছে একবার তোমার গায়ে একটা কাঁটার আঁচর লেগেছিল, তুমি আমাকে জরিয়ে ধরে বলেছিলে, আমার না ভয় করছে।আমি কি বলেছিলাম তোমার কি তা মনে আছে? জ়ানি মনে থাকার কথা নয়। সেই ত অনেক আগের কথা। তখন মনে হয় যুদ্ধের প্রথম দিকে। সেইদিন ছিল যুদ্ধে যাবার জন্য তমার কাছ থেকে বিদায় নিতে আসা। সেই শেষ রাতে তোমার সাথে যে আমার দেখা হল আর কখনোই আর হল না। তুমি আমার একটা বাহু জরিয়ে ধরে বলেছিলে সারাটা জীবন আমাকে তোমার এই বাহুটা জরিয়ে ধরে রাখতে দিও। আমি বলেছিলাম কেন নয়? এই বাহু ধরার অধিকার যে শুধুই তোমার। তুমি কি মনে করতে পার আমাদের ডান পাশ দিয়ে নদীর কূলু কুলু শব্দে কি মধুর না লাগছিল।মনে হচ্ছিল আমরা দুজনে হারিয়ে গিয়েছি আমাদের আপন ভুবনে। হঁঠাত তুমি বায়না ধরলে তুমি বিশ্রাম নিবে, এমন একটা যায়গায় তুমি বায়না ধরলে যেখানে আমাদের বিন্দু মাত্র দেরি করা বোকামি ছাড়া আর কিছুই ছিলা না। পাক সেনারা তখন হন্য হয়ে খুঁজছে দেশের যুবক দের যারা যুদ্ধে যাবার জন্য মরিয়া হয়ে আছে। কিন্তু তুমি এতই ক্লান্ত হয়ে পরেছিলে যে কোনো উপায় ছিল না। তুমি বার বার বলেছিলা তুমি আর পারছনা, আমি তোমার মুখের দিকে তাকিয়ে বসে পড়লাম দুজনে। তুমি আমার কাঁধে মাথা রেখে দুচোঁখ বন্ধ করে বিশ্রাম নিচ্ছিলে। হঁঠাত রাজাকারের বাচ্চা দুই জন পাক সেনা নিএ হাজির, তারা তোমাকে টেনে নিয়ে যেতে চাইল, তুমি না হঠাত করে নদীতে ঝাপ দিলে। আমি জানতাম তুমি সাঁতার জান না। আমাকে ওই পশুর বাচ্চারা হাত কড়া পড়িয়ে দিল। আমি একবুক জালা নিয়ে দেখলাম তমার সেই আত্নচিথকার, জান তুমি কতো চেষ্টা করেছিলে বাঁচার জন্য, কিন্তু বাংগালী জাতির চরম শ্ত্রু তোমাকে বাঁচতে দিল না। তোমাত কাছ থেকে তারা কেড়ে নিল তোমার বাঁচার সবপ্ন।আর তুমি মায়াবী চোখে আমার দিকে তাকালে, জান আমি জান ভুলতে পারি নাই সেই স্মৃতি। আজও আমার বুকের মধ্য সেই যন্ত্রনা ভর করে আছে। তুমি একবার আমার কাছে জানতে চেয়েছিলে তুমি যদি না থাক তবে আমি আবার অন্য কাউকে ভালবাসব কিনা কাওকে বিয়ে করব কিনা? খুব সুন্দর করে বলেছিলে আচ্ছা তুমি কি কখন অন্য কাউকে আমার মত করে ভালবাসবা? আমি বলেছিলাম পাগল আমার, আমি তমার যায়গাটা কোনো দিন কাওকে দিব না। তুমি কি জান আমি আমার কথা রেখেছি। আজও আমি তোমার পথ চেয়ে বসে আছি। আজও আমি তোমার কথা রেখেছি। তুমি মরে গিয়ে বেচে গিয়েছিলে। আর আমি বেচে থেকেও মরে আছি। জান সেই দিনের পর থেকে প্রতিদিন আমার শ্ রির থেকে কি পরিমান রক্ত ঝরতো? মাঝে মাঝে আমাকে আমার রক্ত দিয়ে স্নান করতে হত। কত কষ্ট, আজ না হয় থাক সে কথা।আজ শুধু তোমাকে একটা কথা বলতে চাই, দেশ সাধীন হয়েছে, কিন্তু যান মানুষ গুলো এখনও পরাধীন। সভ্য মানুষ হিসাবে আজও আমরা নিজেদেরকে পরিছয় দিতে পারিনি।কি হল তাহলে এত কষ্ট করে, তোমাকে হারিয়েছি, হারিয়েছি আমার স্বপ্ন গুলো, হারালাম আমার সব কিছু। শুধু তোমাকে দেওয়া কিছু কথা নিয়ে আজও আমি বেছে আছি। বেচে থাকব হয়ত আর কিছুদিন তোমার স্মৃতি বুকে নিয়ে। খুব স্বপ্ন ছিল একদিন দেশ সবাধীন হবে দেশের মানুষ অনেক সুখি হবে, তুমি জান আজও না দেশের মানুষ শান্তিকে খুজে পায়নি।আজও তারা গভীর রাতে আমারি মত শান্তি খোজে আকাশ পানে। আজ ও আমি শান্তি খুজি আজ ও আমি স্বপ্ন দেখি। হয়ত এই স্বপ্ন দেখা শেষ হবে না শেষ হব আমি।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ১১:৪১
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কাঁচা আম পাড়ার অভিযান

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২



গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরের বাড়ীয়া ইউনিয়নের দেউলিয়া গ্রামে আমার প্রায় ৫২ শতাংশ জমি কেনা আছে। সেখানে ছোট একটি ডোবা পুকুর, অল্প কিছু ধানের জমি আর বাকিটা উঁচু ভিটা জমি। বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×