somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্ধশত চিকিৎসক নেশাগ্রস্ত

১৩ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ সকাল ১১:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্ধশত চিকিৎসক নেশাগ্রস্ত! হাসপাতালে কর্তব্যরত অবস্থায় এসব চিকিৎসক ফেনসিডিল, গাঁজা, চরস ও সিরাপ সেবন করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুধু তাই নয়, হƒদরোগে আক্রান্ত মুমূর্ষু ও পোস্ট-অপারেটিভ রোগীদের নামে বরাদ্দকৃত উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন বেদনানাশক প্যাথেডিন, মরফিন, ঘুমের ট্যাবলেট ডরমিকাম ও সেডিল অন্যতম ‘নেশার উপকরণ’ হিসেবে ব্যবহার করছে। তাদের এ গর্হিত কাজের জন্য সঠিক সময়ে সুচিকিৎসা না পেয়ে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ), করোনারি কেয়ার ইউনিটসহ (সিসিইউ) ও পোস্ট-অপারেটিভসহ বিভিন্ন বিভাগে রোগীর অনাকাক্সিক্ষত মৃত্যুসহ নানা অঘটন ঘটছে বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। গত কয়েক মাসে কয়েকজন চিকিৎসকের অবহেলায় কয়েকজন রোগীর মৃত্যুর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গোপনে এর সত্যতা যাচাই করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্র্তৃপক্ষ। আশংকাজনক তথ্য হল, শুধু এনেসথেসিয়া বিভাগেই এমন কমপক্ষে ৬ জন নেশাগ্রস্ত চিকিৎসকের সন্ধান পেয়েছেন তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ভিসির (নাক, কান ও গলা) বিভাগসহ আরও বেশকিছু বিভাগের চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে নেশাগ্রস্ত থাকার অভিযোগ ও সতত্য পাওয়া গেছে। সূত্র জানায়, আসন্ন একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় বিষয়টি উত্থাপন ও কাউন্সিলের অনুমোদনক্রমে অভিযুক্ত ৬ জন চিকিৎসকের ‘ডোপ টেস্ট’ করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবরেটরিতেই এ পরীক্ষা করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ডা. প্রাণগোপাল দত্ত যুগান্তরকে বলেন, এ ধরনের অভিযোগ তার কাছেও এসেছে। কিন্তু প্রমাণ ছাড়া কাউকে নেশাগ্রস্ত বলা অনুচিত হবে। প্রমাণের জন্য ডোপ টেস্ট করা হবে বলে তিনি স্বীকার করেন। চাঞ্চল্যকর এ খবরে গোটা বিশ্ববিদ্যালয়ে রীতিমতো তোলপাড় শুরু হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে আলাপকালে ও অনুসন্ধান চালিয়ে জানা গেছে, হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে কমপক্ষে অর্ধশত চিকিৎসক ফেনসিডিল, গাঁজা, চরস, প্যাথেডিন, সিরাপ ও ঘুমের বড়ির নেশায় আক্রান্ত। নেশাগ্রস্ত হওয়ার কারণে তারা সঠিক সময়ে ডিউটিতে আসেন না। ফলে রোগীদের চিকিৎসা মারাÍকভাবে ব্যাহত হয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব চিকিৎসক বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে রাজনৈতিক খুঁটির জোরে চাকরি নেন। ওই আমলে বিপুলসংখ্যক চিকিৎসক নিয়োগ করায় অনেক চিকিৎসকের বসার জায়গা ছিল না। তারা আড্ডা মেরে সময় কাটাতেন। পরবর্তী সময়ে অলস সময় কাটানো চিকিৎসক নামধারী যুবকরা নেশায় জড়িয়ে পড়েন। প্রথমদিকে সংগঠনের, বন্ধুবান্ধবদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে এবং পরবর্তী সময়ে ঋণ করে নেশায় জড়িয়ে পড়েন। বর্তমানে দল ক্ষমতায় নেই, টাকা নেই, মোহ নেই, বন্ধুবান্ধবরাও দুরে সরে গেছেন। তাই এখন নেশার টাকা জোগাতে তারা বিবেকবর্জিত হয়ে রোগীদের জন্য বরাদ্দকৃত বেদনা ও ঘুমনাশক প্যাথেডিন, মরফিন, ডরমিকাম, সেডিলসহ বিভিন্ন ধরনের ইনজেকশন ও ট্যাবলেট চুরি করতে থাকে। নার্সরা কিছু বললে তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে রোগীর অভিভাবকদের বাইরে থেকে ওষুধ ও ইনজেকশন কিনে আনতে নির্দেশ দেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক নার্স জানান, অনেক সময় রোগীর অবস্থা এমনই সংকটাপন্ন থাকে যে, ওষুধ নিয়ে আসতে দেরি হলে রোগীর মৃত্যু হয়।

জানা যায়, আগে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেই বিকাল থেকে গভীর রাত অবধি নেশাখোরদের ওপেন আড্ডা বসত। কিন্তু বর্তমান ভিসি দায়িত্ব গ্রহণের পর শাহবাগ থানার ওসিকে ডেকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, এ অবস্থা চলতে থাকলে হয় তিনি ভিসি থাকবেন না নতুবা ওসি থানায় থাকবেন না। এরপর প্রকাশ্যে নেশার আড্ডা বন্ধ হয়ে যায়। এখনও চুপিসারে ক্যাম্পাস ও ক্যাম্পাসের বাইরে নেশাখোররা নেশা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি পাওয়া সহজ ও চাকরি খাওয়া ততটা কঠিন। ফলে ডোপ টেস্টে নেশাখোর প্রমাণিত হলেও শেষ পর্যন্ত তাদের চাকরিচ্যুত করা যাবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন রয়ে যায়।


সূত্রঃ দৈনিক যুগান্তর, ১৩ই ডিসেম্বর, ২০০৯
৬টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×