প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতা বহাল রাখার নির্বাচন কমিশনের পরিবর্তিত অবস্থানকেও সন্দেহের চোখে দেখছে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি।
Published : 30 Aug 2013, 01:00 AM
তবে স্বাগত জানিয়েছে সাবেক একজন নির্বাচন কমিশনার, যারা ওই ক্ষমতাটি প্রথমবারের মতো নির্বাচনী আইনে যুক্ত করে।
কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন ইসি নিজেদের ক্ষমতা ছেড়ে দিতে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৯১ (ই) অনুচ্ছেদটি বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
দীর্ঘ এক মাস ধরে তার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে। এ নিয়ে সবমহলে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে ইসি।
প্রধান বিরোধী দল বিএনপিও ধারাটি বহাল রাখার দাবি জানায়। যদিও নবম সংসদের আগে তা স্থগিতের দাবি জানিয়েছিলেন স্বয়ং বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া।
সর্বশেষ দাতাসংস্থার প্রতিনিধিরাও ওই বিষয়ে ব্যাখ্যা খোঁজেন। এরপরই বৃহস্পতিবার আগের অবস্থান থেকে সরে গিয়ে কমিশন বলে, ধারাটি বাতিলে তাদের অবস্থান সঠিক। কিন্তু সরকারের কাছে প্রস্তাবটি পাঠানোর আগে যে প্রতিক্রিয়া তা ‘দারুণভাবে প্রতিকূল’।
এর প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়েই ৯১ (ই) বহাল রাখার পক্ষে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নেয় ইসি।
আজ্ঞাবহ: বিএনপি
এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার বলেন, “আমরা যা চেয়েছি তা থাকলেও সাধুবাদের কিছু নেই। বর্তমান ইসি যা করছে সবই সরকারের আজ্ঞাবহ হয়ে করছে।
“৯১ ই বাতিল নিয়ে সব জায়গায় যখন ইসি পাগলামি করছে বলে সমালোচনা হচ্ছে, তখন তারা সরে গেছে। নতুন এ অবস্থানকেও সন্দেহের চোখে দেখি আমরা।”
ধারাটি বহাল রাখায় তার প্রয়োগ কীভাবে করবে তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, সরকারের সুবিধা মতো ইসি কাজ করবে। বিএনএফ-কে নিবন্ধন দেওয়া ও নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের বিষয়ে ইসির অবস্থানের সমালোচনা করেন বিএনপির এ নেতা।
‘অনর্থক বিতর্ক সঙ্কট বাড়াবে’
সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন বর্তমান ইসির সিদ্ধান্তের প্রশংসা করে বলেন, “দেরিতে হলেও ইসির হুঁশ হয়েছে।
“তারপরও অনর্থক একটি বিষয় নিয়ে মূল্যবান একমাস সময় নষ্ট হয়ে গেল। সরকারকেও একদিক থেকে বিব্রত অবস্থায় মধ্যে পড়তে হত। নিজেদের ওপর নিজেরাই আস্থা সংকটের ক্ষেত্র তৈরি করছে ইসি।”
‘বিতর্কিত’ কাজ বাদ দিয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতির দিকে নজর দিতে উত্তরসূরিদের প্রতি আহ্বান জানান সাখাওয়াত।
নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ আয়োজনের পরামর্শ দেন এ সাবেক নির্বাচন কমিশনার।
সাখাওয়াত বলেন, “নির্বাচনের অনেক কাজ বাকি। নিজেদের ভাবমূর্তি ও সময় ক্ষেপন না করে প্রস্তুতি এগিয়ে নিতে হবে।”
নির্বাচনী প্রস্তুতি এগোচ্ছে: সচিব
সাংবিধানিকভাবে, ২৬ অক্টোবর থেকে ২৪ জানুয়ারির মধ্যে দশম সংসদ নির্বাচনের কথা রয়েছে। নির্বাচনকালীন সরকার পদ্ধতি নিয়ে সরকারি দল ও বিরোধী দল অবস্থান বিপরীতমুখী।
বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন সচিব মোহাম্মদ সাদিক বলেন, “জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। ওই সময়কে টার্গেট করেই কর্মপরিকল্পনা মেনে প্রস্তুতি নিচ্ছি আমরা। আগামী সপ্তাহে প্রস্তুতির বিষয়ে রুটিন মিটিং করবো।”
তফসিল ঘোষণা না হওয়ার আগে ভোটের সম্ভাব্য সময় সম্পর্কে ধারণা দেওয়া ঠিক নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সংসদ নির্বাচনের পর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের পরিকল্পনাও ইসির রয়েছে বলে জানান সচিব।