somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিশ্ব মানবাধিকার দিবস ও বেগম রোকেয়া দিবস উপলে বিশেষ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ সকাল ১০:৩০টায় বিশ্ব মানবাধিকার দিবস ও বেগম রোকেয়া দিবস উপলে জাতীয় কন্যাশিশু এডভোকেসি ফোরামের আয়োজনে এক বিশেষ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। শ্যামলীতে অবস্থিত সাউথ এশিয়া পার্টনারশীপ-বাংলাদেশ-এর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রোকেয়া ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং জাতীয় কন্যাশিশু এডভোকেসি ফোরামের সহ-সভাপতি লতিফা আকন্দ।

জাতীয় কন্যাশিশু এডভোকেসি ফোরামের সম্পাদক জনাব নাছিমা আক্তার জলি’র পরিচালনায় এতে ফোরামভুক্ত প্রায় ৪০টি সংগঠনের প্রতিনিধি ছাড়াও কয়েকটি শিা প্রতিষ্ঠানের শিার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।

আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক আকন্দ খোলামেলাভাবে রোকেয়ার জীবনের কথা, তাঁর পরিবারের কথা, তাঁর লেখা, রোকেয়া সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল থেকে নিজের মেট্রিকুলেশন পাশ করার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, তিনি আসলে একজন অসা¤প্রদায়িক চেতনাসম্পন্ন মানবাধিকার চেতনার ধারক ও বাহক ছিলেন। বিংশ শতাব্দীতে থেকেই তিনি একবিংশ শতাব্দীর স্বপ্ন দেখতে পেরেছিলেন। কিন্তু এই বেগম রোকেয়াকে চিনতে হলে তাকে আগে জানতে হবে। এই জানাটা নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলের জন্য, বর্তমান প্রজন্মের জন্য জরুরি। তিনি বলেন, কর্ম এবং আদর্শের গুণে তাঁকে আসলে শুধু বেগম বললেই যথার্থ বলা হয় না তার সাথে ‘মা’ও বিশেষণ হিসেবে যুক্ত হওয়া উচিত। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সনদের কথা উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, রাষ্ট্র হিসেবে আমাদের কোনো কিছুতে স্বার করা যেমন গুরুত্বপূর্ণ একইভাবে তা আমরা কতটুকু পালন করতে পারছি, কিংবা বাস্তবে প্রয়োগ ঘটাতে পারছি তা দেখাটাও অত্যন্ত প্রয়োজন। সবশেষে তিনি সকল নারীকে মা বেগম রোকেয়ার উত্তরসূরি হবার এবং সকল পুরুষদেরকেও বেগম রোকেয়ার আদর্শে উজ্জীবিত থেকে দেশ গঠনের কাজে নারীকে সাথে নিয়ে এগিয়ে যাবার আহ্বান জানান।

মা বেগম রোকেয়ার আদর্শ ধারণ করে দায়িত্ব নিলেই সমাজটাকে নতুনভাবে বদলে দেয়া সম্ভব উল্লেখ করে জনাব রফিকুল ইসলাম সরকার বলেন, আমরা যদি অন্যের জন্য বাঁচতে শিখি তাহলে সেখানে কোনো প্রকার নির্যাতন থাকতে পারবে না এবং তাহলেই নির্মল শান্তির পরিবেশ প্রতিষ্ঠিত হবে। নারীর প্রতি সকল বৈষম্যকে না বলুন, সম অধিকার নিশ্চিত করুন Ñ এই আহ্বান রেখে জনাব নাছিমা আক্তার জলি বলেন, আমরা যাঁরা এ প্রজন্মের তাঁরা বেগম রোকেয়াকে চিনেছি বই পড়ার মাধ্যমে। কিন্তু প্রকৃত অর্থে তাঁকে চিনতে হলে ও বুঝতে হলে এ ধরনের আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। রোকেয়া দিবস উপলে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে ক্রোড়পত্র প্রকাশের উদ্যোগকে এ সময় তিনি স্বাগত জানান। তিনি বলেন, এটি বিরাট একটি অগ্রগতি ও নিঃসন্দেহে ইতিবাচক দিক। বেগম রোকেয়ার চিন্তা-চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সবার আগে নিজেরা নিজেদের পরিবারকে সুন্দর করে তোলার জন্য দায়িত্ব নেবার আহ্বান জানান সাউথ এশিয়া পার্টনারশীপের প্রোগ্রাম ডিরেক্টর জনাব দেলোয়ার হোসেন।

মুসলিম এইডের প্রতিনিধি জনাব ফাতিমাহ্ রহমান বলেন, অনেক মা’রা না জানার কারণে অনেক মেয়ের তি হচ্ছে, তাড়াতাড়ি বিয়ে হয়ে যাচ্ছে। তাই বেগম রোকেয়ার চেতনা আজ প্রতিটা ঘরেই যাওয়া উচিত। এজন্য সচেতনতা সৃষ্টিতে আমাদের সকলেরই দায়িত্ব রয়েছে। জনাব জাহিদুল হক খান বলেন, বেগম রোকেয়াকে জানতে হলে যেমন ব্যক্তি বেগম রোকেয়াকে বুঝতে হবে, ঠিক তেমনিভাবে নারীদের প্রকৃত অবদানকে মূল্যায়ন করতে হলে বিভিন্ন পর্যায়ে তাদের কাজের উপযুক্ত সম্মান ও স্বীকৃতি জানাতে হবে। মানবাধিকার কমিশনকে সক্রিয় করার জোরালো দাবি জানান ঢাকা আহছানিয়া মিশনের প্রতিনিধি জনাব ইয়াসমিন আরা বেবী। রোকেয়ার বাড়িতে সোয়েটার ফ্যাক্টরি অন্যত্র স্থানান্তর করা এবং স্মৃতিচিহ্ন সমুন্নত রাখার জন্য একটি জাদুঘর স্থাপনের দাবি জানিয়ে স্যাপ-এর প্রতিনিধি জনাব রোকসানা বেগম বলেন, এজন্য আমাদের সকলেরই দায়িত্ব রয়েছে। সরকারকেও এজন্য এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। টিএমএসএস-এর প্রতিনিধি জনাব গাজী মোঃ হেদায়েত উল্লাহ বলেন, আমাদের আজ নানাভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। ঘরে কিংবা বাইরে এজন্য সকলকেই সচেতন হয়ে দায়িত্ব নিতে হবে এবং সোচ্চার হতে হবে। আলোচনার মধ্যে না থেকে রোকেয়ার আদর্শ ধারণ ও লালন করে সকলকেই কাজের মাধ্যমে এগিয়ে যাবার পরামর্শ দেন এএসডি’র প্রতিনিধি সেলিনা বানু। ডাব্লিউএসিসি’র প্রতিনিধি জনাব রেজিয়া খন্দকার বলেন, নারীদের খোলামেলা কথা বলার জায়গাটা কম এ ধরনের ত্রে আরো বৃদ্ধি হওয়া উচিত তাহলেই মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা পাবে।

এছাড়া আরো বক্তব্য রাখেন পুষ্প নদীর সভাপতি জনাব ইশরাত জাহান, নারী মৈত্রীর জনাব মেহেরুন্নেছা রোজী, এসো মিলে করি’র নির্বাহি পরিচালক জনাব মিলি জাকারিয়া, টিএমএসএস-এর জনাব জাহাঙ্গীর আলম, মায়ের ডাকের জনাব আলমাস পারভীন প্রমুখ। আলোচনায় বেগম রোকেয়ার নামের সাথে মা বিশেষণ যুক্ত করা এবং তা ছড়িয়ে দেয়া; মানবাধিকার কমিশনকে সক্রিয় করা, মা বেগম রোকেয়ার স্মৃতিচিহ্ন সমুন্নত রাখার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা, নারী নির্যাতন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা প্রতিকার ও প্রতিরোধে ঘরে এবং বাইরে সচেতনতা ও সংঘবদ্ধ প্রয়াস গড়ে তোলার দাবির সাথে উপস্থিত সকলেই ঐকমত্য পোষণ করেন।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগ লিখেছি: কথাটার পরে ভাসছে ১১ বছর ১১ মাস... কথাটা

লিখেছেন আবু ছােলহ, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৮

ব্লগ লিখেছি: কথাটার পরে ভাসছে ১১ বছর ১১ মাস... কথাটা

গুগল থেকে নেয়া ছবি।

সামুতে মাল্টি নিক নিয়ে অনেকেই কথা বলেন। অনেকের কাছে মাল্টি যন্ত্রণারও কারণ। শুধু যন্ত্রণা নয়, নরক যন্ত্রণাও... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×