somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঘুরে এলাম নাটোর শহর

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৩:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গত ২ ডিসেম্বর ঘুরে এলাম নাটোর শহর। নাটোর আমার জীবনের প্রথম শহর দেখা সেই ১৯৭৯/৮০ সালে। পিতার সোনালী ব্যাংকে চাকুরীর সুবাদে নাটোর গমন; ১৯৮২ সালে ঢাকায় হেড অফিসে তার ট্রান্সফার হওয়ার মাধ্যমে নাটোরের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। মাঝে ২বার রাজশাহী যাওয়া নাটোরের উপর দিয়ে তা-ও আবার নাইট কোচে হওয়ার কারণে বাস থেকে নামাই হয়নি।
যা হোক আমার বন্ধুবর নাটোরের আহমেদপুর ডিগ্রী কলেজের ইংরেজীর প্রভাষক জনাব আবুল হোসেন এর আমন্ত্রণে এ সফর। পাবনা হয়ে নাটোরের আহমেদপুরে যখন নামলাম তখন বিকাল ৫ টা। হাইওয়ের পার্শ্বে মসজিদে আছর এর নামাজ পড়ে বন্ধুর হোন্ডায় তার বাড়ীতে যথেষ্ট আপ্যায়িত হলাম। এরপর যখন আহমেদপুর থেকে নাটোর শহরের (দুরত্ব ১০ কিলোমিটার) উদ্যেশ্যে বের হলাম তখন মাগরিবের আযান দিচ্ছিল। শীতের সন্ধ্যা তদুপরি হোন্ডা যারা এ পরিস্থিতিতে ভ্রমণ করেন নাই তাদের বুঝতে কষ্ট হবে। রাস্তায় মাগরিব পরে সন্ধ্যা ৬.৪৫ এ নাটোর বগুড়া সংযোগ লিংক অতিক্রম করার সময় দেখলাম আমার প্রথম শিাপ্রতিষ্ঠান নাটোর জামহুরিয়া আলিয়া মাদরাসা। বিল্ডিং এর কোন পরিবর্তন নাই। শুধু রাস্তার সাথে একটা বড় মসজিদ তৈরী হয়েছে। সামনে এগুলে রাস্তার উত্তরে একটা পুকুর ছিলো তা এখন ছোট্ট ডোবা। রাস্তার দুই ধারে দালান কোঠায় ভরপুর; যা ছিল ধুধু মাঠ। আরো সামনে রাস্তার দক্ষিণে ফায়ার ব্রিগেডের অফিসটি যথাস্থানে দাঁড়িয়ে আছে। তারপরেই কানাইখালীর মাঠ। যে মাঠে এক্সিবিশিন হতো, সার্কাস পার্ট আসতো আর ৮১ এর রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিচারপতি আব্দুস সাত্তার, ড. কামাল হোসেন সহ সবাই এসেছিলেন বলেই মনে পড়ে। আরো সামনে বাস স্ট্যান্ড রাস্তার উত্তর পার্শ্বের ছায়াবানী সিনেমা হলের দেয়াল এবং ছাদ আগের মতই আছে বলেই মনে হলো। সিনেমা হলের বিপরীতে যে রাস্তাটি দক্ষিণে গিয়েছে সেটাতেই ছিল আমার পদচারণা। হোন্ডার গতি আস্তে রাখতে বলে হারিয়ে গেলাম অতীতে রাস্তার পূর্ব পার্শ্বে টাউন মসজিদ, পশ্চিমে নীচা বাজার। ১৯৮১ সালে এবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকান্ড ঘটেছিল নাটোর ও রাজশাহীর ফায়ার ব্রিগেড এসে সে আগুন নিভিয়ে ছিল। আরো দক্ষিণে নাটোর শহরকে বিভক্তকারী নদী, নামটা মনে পড়ছে না। নদীর ব্রিজের একটু আগে পশ্চিমের গলির শেষ মাথায় সোনালী ব্যাংক দাড়িয়ে আছে। আমার গন্তব্য নদীর দক্ষিণে, ব্রীজটি চওড়া হয়েছে দ্বিগুণ। ব্রীজের দক্ষিণে পশ্চিম পার্শ্বের হাসপাতাল নেই। পূর্ব পার্শ্বের পোস্ট অফিসটি দাড়িয়ে আছে পোস্ট অফিসের সামনে দিয়ে পূর্বদিকে কান্দিরভিটা যেখানে পচু মিয়ার বাড়ীতে ভাড়া থাকতাম এলাকা দেখলাম। পোস্ট অফিস থেকে কান্দির ভিটা পর্যন্ত কয়েকটি বাড়ী আগের পজিশনেই দাড়িয়ে আছে , মূল রাস্তা থেকে কান্দিরভিটার গলির মধ্যে ঢুকতে রাস্তার উত্তরের বাড়ীটাই তার প্রমাণ। কান্দির ভিটার পচু মিয়ার বাড়ী থেকে পুকুরের ওপারে জেলখানা দেখা যায়। আবার ফিরে এলাম, এবার ঢুকলাম নাটোর পিটিআই এর রোডে। জেল খানাকে হাতের ডানে রেখে সামনে গেলে রাস্তার পশ্চিমে পানির ট্যাংক যা আমাদের সময়ে ছিল না। আসলে তখন সাপ্লাই পানিই ছিলনা। আরো সামনে হাতের বামে পিটিআই ; এর বিল্ডিং এর দুই অংশের মাঝে ফাঁকা জায়গায় প্রথম ফুটবলে লাথি মেরেছিলাম। আরো সামনে হাতের ডানে ছিল মরাকাটা ঘর, সেখানে একটি মসজিদ হয়েছে খুবই সুন্দর। আরো সামনে বর্তমান হাইওয়ে। তখন এটি একটি কাচা রাস্তা ছিল। আবার ফিরে আসলাম উত্তর দিকে জেল খানার পিছন দিয়ে সামনে এগুলে ডানে সদর থানা। থানার দক্ষিণে সুমন মেডিক্যাল স্টোর (সম্ভবত) সুমনদের বাড়ীতেও ভাড়া থাকতাম। ইচ্ছা করেই কাউকে কোন পরিচয় দেই নি। সুমনদের বাড়ীর পশ্চিমে মসজিদটি ভালই আছে তবে মিনারটি নেই। এলাম কাচারী মাঠের পশ্চিম দক্ষণি কোনায় । কাচারী মাঠের পূর্ব পার্শ্বে এস.ডি.ও এর বাংলো ছিল। এখন নেই। বিশাল পুকুরটি বিদ্যমান তবে ঘাটলাগুলো নেই। কাচারী মাঠের পশ্চিমে টেনিস কোর্ট আজো আছে। পিছনের কোর্ট নেই, সেটি এখন সদর আধুনিক হাসপাতাল। কাচারী মাঠেই জনসভা বেশী হতো আমার যতটুকু মনে পড়ে খন্দকার মোশতাক, মেজর এম.এ জলিল, নূরে আলম জিকু সে সকল জনসভায় বক্তব্য রেখেছিলেন। কাচারী মাঠের কোনায় চা খেয়ে বেরিয়ে পড়লাম বাড়ীর উদ্যেশ্যে বন্ধুবর আমাকে এগিয়ে দিলো বনপাড়া পর্যন্ত ; তখন রাত ৮.৩০ মিনিট। বিদায় নাটোর। আবার দেখা হবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৩:২২
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছেলেবেলার অকৃত্রিম বন্ধু

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৯

খুব ছোটবেলার এক বন্ধুর গল্প বলি আজ। শৈশবে তার সাথে আছে দুর্দান্ত সব স্মৃতি। বন্ধু খুবই ডানপিটে ধরনের ছিল। মফস্বল শহরে থাকতো। বাবার চাকুরির সুবাদে সেই শহরে ছিলাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণা!

লিখেছেন সোনাগাজী, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১৭



নীচে, আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণাকে ( পেশগত দক্ষতা ও আভিজ্ঞতার সারমর্ম ) আমি হুবহু তুলে দিচ্ছি। পড়ে ইহার উপর মন্তব্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ড্রেনেই পাওয়া যাচ্ছে সংসারের তাবৎ জিনিস

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫০



ঢাকার ড্রেইনে বা খালে কী পাওয়া যায়? এবার ঢাকা সিটি কর্পোরেশন (উত্তর) একটি অভুতপূর্ব প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। তাতে ঢাকাবাসীদের রুচিবোধ অথবা পরিচ্ছন্নতাবোধ বড় বিষয় ছিল না। বড় বিষয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

মোজো ইদানীং কম পাওয়া যাচ্ছে কেন?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৭


শুনলাম বাজারে নাকি বয়কটিদের প্রিয় মোজোর সাপ্লাই কমে গেছে! কিন্তু কেন? যে হারে আল্লামা পিনাকী ভাট ভাঁওতাবাজিদেরকে টাকা দিয়ে 'কোকের বিকল্প'-এর নামে 'অখাদ্য' খাওয়ানো হচ্ছিলো, আর কোককেই বয়কটের ডাক... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৮

আজ (১০ মে ২০২৪) রাত দুইটা দশ মিনিটে নিউ ইয়র্কের পথে আমাদের যাত্রা শুরু হবার কথা। এর আগেও পশ্চিমের দেশ আমেরিকা ও কানাডায় গিয়েছি, কিন্তু সে দু’বারে গিয়েছিলাম যথারীতি পশ্চিমের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×