somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ডিসেম্বরঃ আমাদের অহংকারের মাস

৩০ শে নভেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৫:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ডিসেম্বরঃ আমাদের অহংকারের মাস।
সভ্যতার ইতিহাস শুধুমাত্র মানুষের বিকাশ ও উন্নতির ইতিহাস নয়। সভ্যতার ইতিহাস জাতিগত হানাহানির ইতিহাস, রেষারেষির ইতিহাস, মানুষের বিপক্ষে মানুষের পাশবিক সত্ত্বার আক্রমণের ইতিহাস। অমানবিক ও অযৌক্তিক বর্বরতার নৃশংস অগণিত উদাহরণ ছড়িয়ে রয়েছে ইতিহাসের নানা বাকে।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালো রাতে নিরস্ত্র ঘুমন্ত বাঙালির উপর পাক হানাদার বাহিনীর আকস্মিক আক্রমণ করে যা ইতিহাসের সকল বর্বরতার উদাহরণকে। জাতিগত আস্তিত্ব রক্ষার জন্য স্বাধীনতার জন্য বাঙালি সংঘবদ্ধভাবে রুখে দাড়ায় বর্বর পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে। পিশাচ পাকিস্থানিদের শোষণের বিরুদ্ধেই ছিল বাঙালির প্রতিরোধ আন্দোলন। বাঙালির দাবি তখন স্বাধীনতা ও মুক্তি। দীর্ঘ নয় মাস এক রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ১৬ ডিসেম্বর বাঙালি ছিনিয়ে আনে বহু আকাঙ্খিত স্বাধীনতা। তাই ডিসেম্বর মাস বাঙালির ইতিহাসের প্রধান গৌরবোজ্জল মাস।
সাতচল্লিশের দেশ বিভাগের ফলে বর্তমান বাংলাদেশ হয়ে পড়ে পাকিস্তানের অংশ। পূর্ব ও পশ্চিম এই দুটি অংশ নিয়ে ছিল সমগ্র পাকিস্তান। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান বর্তমান বাংলাদেশ ছিল পশ্চিম পাকিস্তানের শাসনাধীন। সাতচল্লিশ থেকে একাত্তর পুরো সময়টাই পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠী রক্ত খেকো হায়েনার মতো ক্ষত-বিক্ষত করে বাঙালিদের। অর্থনৈতিক শোষণ, সাংস্কৃতিক আগ্রাসন, রাজনৈতিক অধিকার বঞ্চিত করে বাঙালি জাতিকে পঙ্গু করে রাখার সকল পায়তারাই তারা সম্পূর্ণ করেছিল। সকল দিক দিয়েই ভয়ংকর বৈষম্যের শিকার হয়েছিল বাঙালিরা। আঘাত আসে বাঙালির ভাষার উপর, শিক্ষার উপর, জীবিকার উপর, দাবির উপর। সামরিকতন্ত্র চাপিয়ে দেয়া হয় প্রতিটি বাঙালির জীবনের সর্বক্ষেত্রে। সহ্যের শেষ সীমায় পৌছে রুখে দাড়ায় বাঙালি। ছিনিয়ে আনে স্বাধীনতা। হাজার বছরের ইতিহাসে প্রথম প্রতিষ্ঠা করে বাঙালির নিজস্ব রাস্ট্র। তাই ডিসেম্বর মাস সবসময়ই আমাদের কাছে একটি গৌরবোজ্জল মাস, স্বকীয় ঐতিহ্যে ভাস্বর। ডিসেম্বরের শুরু থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মুক্তিযোদ্ধারা পাক বাহিনীকে হারিয়ে দিতে থাকে। পশ্চিম পাকিস্তানের পরিকল্পনা ছিল যেকোন মূল্যে ঢাকাকে নিজেদের অধিনত করে রাখার। মুক্তিবাহিনীও জানতো চূড়ান্ত বিজয়ের জন্য ঢাকা শহরকে শত্রুমুক্ত করতেই হবে। তাই ডিসেম্বরের প্রথম থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গেরিলা বাহিনী জড়ো হয় ঢাকায়। উপর্যুপরি আকস্মিক গেরিলা আক্রমনে হটিয়ে দিতে থাকে পাক সামরিক ঘাটির ভিত্তি। গেরিলা বাহিনীর সাহায্যার্থে এগিয়ে আসে ভারতীয় স্থল ও বিমান বাহিনী।
দেড় সপ্তাহ কাটতে না কাটতেই পাক বাহিনী বুঝে যায় তাদের পরাজয় এখন আর সময়ের অবকাশ মাত্র। তাই যুদ্ধাপরাধী শক্তি স্বাধীন বাংলাদেশে টিকে থাকার জন্য সমস্ত দেশজুড়ে বুদ্ধিজীবী হত্যা নিধন যজ্ঞে মেতে উঠে। কারণ তারা বেচে থাকলে এ বাংলার মাটিতে তারা বসবাস করতে পারবে না। এজন্য ১৪ ই ডিসেম্বর রাতে তারা ঘটায় ইতিহাসের অন্যতম বর্বর হত্যাকান্ড। রাতের আধারে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান শিক্সক, বুদ্ধিজীবি, শিল্পী, সাহিত্যিক ও মেধাবী তরুনদের ধরে নিয়ে গিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে বিভন্ন বদ্ধভূমিতে। এই ঘটনার ধিক্কারে ফেটে পড়ে সারা দুনিয়ার বিবেকবান মানুষ।
এতকিছু করেও বাঙালির বিজয়কে ঠেকিয়ে রাখতে পারেনি পশ্চিম পাকিস্তানি শোষকগোষ্ঠী। দীর্ঘ সংগ্রাম, বহু রক্ত, বহু মা-বোনের সম্ভ্রম ও বহু বেদনার বিনিময়ে বাঙালি জাতি ১৬ ই ডিসেম্বর ছিনিয়ে আনে স্বাধীনতার আকাঙ্খিত লাল সূর্য।
সম্পাদনায়ঃ কল্লোল কর্মকার
৪টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

---অভিনন্দন চট্টগ্রামের বাবর আলী পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয়ী---

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫৫





পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন বাবর আলী। আজ বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৮টায় এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন তিনি।

রোববার বেসক্যাম্প টিমের বরাতে এ তথ্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সমাধান দিন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩১




সকালে কন্যা বলল তার কলিগরা ছবি দিচ্ছে রিকশাবিহীন রাস্তায় শিশু আর গার্জেনরা পায়ে হেটে যাচ্ছে । একটু বাদেই আবাসিক মোড় থেকে মিছিলের আওয়াজ । আজ রিকশাযাত্রীদের বেশ দুর্ভোগ পোয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে গরু দুধ দেয় সেই গরু লাথি মারলেও ভাল।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২০ শে মে, ২০২৪ রাত ১২:১৮


০,০,০,২,৩,৫,১৬, ৭,৮,৮,০,৩,৭,৮ কি ভাবছেন? এগুলো কিসের সংখ্যা জানেন কি? দু:খজনক হলেও সত্য যে, এগুলো আজকে ব্লগে আসা প্রথম পাতার ১৪ টি পোস্টের মন্তব্য। ৮,২৭,৯,১২,২২,৪০,৭১,৭১,১২১,৬৭,৯৪,১৯,৬৮, ৯৫,৯৯ এগুলো বিগত ২৪ ঘণ্টায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×