somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিশ্বব্যাঙ্ক ও আইএমএফ - গ্লোবাল অর্থনীতি (৯)

২৯ শে নভেম্বর, ২০০৯ সকাল ৯:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আগের আট পর্বের হদিস পেতে নিচের লিঙ্কে গিয়ে দেখে নিন। http://www.somewhereinblog.net/blog/pmunshe/

নবম পর্ব
জাপানের টয়োটা, জার্মানির মার্সিডিজ কিংবা ইটালির ফিয়াট যদি আমেরিকান জিপ, ক্যাডিলাক বা ফোর্ডের বিকল্প হয়ে উঠে তবে সেটা আমেরিকা ভুখন্ডের পুঁজিপতির স্বার্থ কিভাবে রক্ষা করে? ফিনল্যান্ডের পুঁজিপতির নোকিয়া কিভাবে আমেরিকান পুঁজিপতির এইচ,টি,সি মোবাইলের স্বার্থ রক্ষা করছে? জার্মান পুঁজিপতির কারখানায় তৈরী নিউক্লিয়ার রিয়াক্টর যদি আমেরিকাকে কিনে ব্যবহার করতে হয় তবে সেটা একই ব্যবসায় জড়িত আমেরিকান পুঁজিপতির জন্য কেন শুভ হবে? কিংবা ফ্রান্সের অস্ত্র রফতানীর সক্ষমতা কিভাবে আমেরিকার অস্ত্র ব্যাবসায়ীর জন্য কল্যাণকর হচ্ছে?

- এর আগের পর্বে এই ছিল পাঠক প্লাটোর একটা মন্তব্য। এই মন্তব্যকে ঘিরে বিস্তারে উত্তর দিবার উছিলায় এবারের পর্বের কথা গুছিয়ে সাজাব।

প্রশ্নে জাপানের টয়োটার সাথে আমেরিকান জিপ, ক্যাডিলাক বা ফোর্ডের স্বার্থের সংঘাতকে তুলে আনা হয়েছে।
প্রশ্ন এভাবে উপস্হাপনে দুটো আগাম ধারণা এর ভিতরে এখানে লুকিয়ে আছে। সেগুলো সামনে এনে দেই। এক. আমেরিকা ভুখন্ডের পুঁজিপতির স্বার্থ। অর্থাৎ দেশ ভুখন্ডের পুঁজিপতির স্বার্থ বলে এককাট্টা কিছু একটা আছে। ২. জাপানের টয়োটা মানে কী ? টয়োটা মোটর কোম্পানির শেয়ার হোল্ডারের মালিক পরিচালকবৃন্দ? না কী টয়োটা কোম্পানী মার্কেটে শেয়ার ছেড়ে যে বিনিয়োগ সংগ্রহ করেছে ফলে সেই পুঁজি বিনিয়োগকারী অথবা বাইরে বাইরে টয়োটা কোম্পানীর সাথে কোন বিনিয়োগ কোম্পানীর সাথে চুক্তি করে নেয়া বিনিয়োগের পুঁজি বিনিয়োগকারী? জাপানী টয়োটা বলতে এভাবে ভাগ করে আগে বুঝতে নেবার দরকার আছে। এই দুই ধরণের পুঁজির পারস্পরিক সম্পর্ক হলো, শেয়ার হোল্ডারের মালিক পরিচালকবৃন্দ বাইরের বিনিয়োগকারী (বিনিয়োগ-পুঁজি) কাছে দায়বদ্ধ। গাড়ী উৎপাদন করে ঠিকঠাক মুনাফা বের করে বাইরের বিনিয়োগ-পুঁজিকে মুনাফাসহ পুঁজি ফেরত দিতে সে দায়বদ্ধ; এমনকি মুনাফা না হলে খোদ কারখানা বিক্রি করে হলেও বিনিয়োগ-পুঁজিকে মুনাফাসহ পুঁজি ফেরত দিতে সে দায়বদ্ধ। শেয়ার হোল্ডারের মালিক পরিচালকবৃন্দকে যদি উৎপাদক-পুঁজির কারবারী বলি তাহলে এটা আসলে উৎপাদক-পুঁজির সাথে বিনিয়োগ-পুঁজির সম্পর্কের মামলা। তার মানে জাপানের টয়োটা বলে আগে পুঁজির এক কারবার বলে যা বুঝ আমাদের মাথায় কাজ করছিল এখন দেখা যাচ্ছে তা আসলে উৎপাদক-পুঁজির সাথে বিনিয়োগ-পুঁজির সম্পর্কের মামলা বলে একটা আরও কিছু ওর মধ্যে আছে। মোটা দাগে সবটাই পুঁজির কারবারের বলে বুঝা বিষয়টার ভিতর উৎপাদক-পুঁজির সাথে বিনিয়োগ-পুঁজির একটা সম্পর্কের খবর এখন আমরা পেলাম মাত্র। মনে হতে পারে, তো তাতে এমন কিইবা নতুন আবিস্কার হলো? এই আবিস্কার গুরুত্ত্বপূর্ণ হয়ে যাবে যখন জানা গেল এই বিনিয়োগ-পূঁজি জাপানের নয় অন্য কোন দেশের। খুব সম্ভব আমেরিকান বিনিয়োগকারী ঐ বিনিয়োগ-পুঁজির মালিক; যার দেশের অর্থাৎ আমেরিকান জিপ, ক্যাডিলাক বা ফোর্ডের, গাড়িই বাজারে জাপানী টয়োটা গাড়ীর সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্ধী। তার মানে কথা দাঁড়ালো, আমেরিকায় তৈরি গাড়িই হলো আমেরিকারই এক বিনিয়োগ-পুঁজির স্বার্থের শত্রু, প্রতিদ্বন্ধী। তাহলে জাপানের টয়োটা, জার্মানির মার্সিডিজ কিংবা ইটালির ফিয়াট আর আমেরিকান জিপ, ক্যাডিলাক বা ফোর্ড ইত্যাদি বলে প্রশ্নে যে কথা সাজানো দেখতে পেয়েছিলাম তাতে "জাপানের টয়োটা" মানে কী হলো - টয়োটার উৎপাদক-পুঁজির স্বার্থ, না কী টয়োটায় আমেরিকান বিনিয়োগ-পুঁজির স্বার্থ, না কী জাপান "ভুখন্ডের পুঁজিপতিদের স্বার্থ", না কী "আমেরিকান ভুখন্ডের পুঁজিপতিদের স্বার্থ", না কী জাপান রাষ্ট্রের স্বার্থ, না কী আমেরিকা রাষ্ট্রের স্বার্থ?
পাঠক এখন লক্ষ্য করবেন, "জাপানের টয়োটা" এই সহজ কথাটার মানে বের করা কত কঠিন হয়ে গেছে। একইভাবে "আমেরিকান ক্যাডিলাক" কথাটাকে নিয়েও একই দশায় পড়তে হয়। আর "ভুখন্ডের পুঁজিপতির স্বার্থ" কথাটা নিশ্চয় এখন সোনার পাথর বাটির মত কানে লাগবে। কাজেই "ভুখন্ডের পুঁজিপতির স্বার্থ" মানে কেবল "ভুখন্ডের পুঁজিপতির পক্ষে এর পিছনে এককাট্টা স্বার্থ হয়ে দাঁড়ানো একটা "ভুখন্ডগত রাষ্ট্র" খুঁজে পাওয়ায় মুস্কিল।
এসবের কারণ, বিনিয়োগ-পুঁজি বলে ক্রমশ জেঁকে বসা এক নতুন ফেনোমেনার এখানে আবির্ভাব ঘটে গেছে। মোটা দাগে একে চিহ্নিত করব নীচে কতগুলো পয়েন্ট আকারে।
১. পুঁজিকে রাষ্ট্রের সীমানা বা ভুখন্ড দিয়ে বেধে রাখার দিন শেষ। আর এককাট্টা "ভুখন্ডের পুঁজিপতির স্বার্থ" বলে কোন কিছুই নাই।
২. সব গন্ডগোল এলোমেলো লাগিয়ে দিয়েছে বিনিয়োগ-পুঁজির আবির্ভাব। একে আর দেশের সীমানা দিয়ে আলাদা করা বা চেনা অসম্ভব।
৩. প্রথম বিশ্বযুদ্ধের অনেক আগে বিনিয়োগ-পুঁজির আবির্ভাব বা স্ফুরণ দেখা দিতে শুরু করেছিল ভুখন্ডগত জাতিরাষ্ট্রের ভিতরে। আবির্ভাবটা হয়েছিল নিজ ভুখন্ডের উৎপাদক-পুঁজির থেকে বিনিয়োগ-পুঁজির আলাদা হওয়া দিয়ে অথবা একটা বড় কোন লুটের ঘটনা দিয়ে ; এরপর ব্যাঙ্ক-জাতীয় এক বিনিয়োগ কোম্পানী হয়ে উত্থানে যা, ম্যনুফ্যাকচারিং (উৎপাদক-পুঁজি) কোম্পানীর সাথে বাইরের চুক্তি সম্পর্কে যুক্ত হয়ে কাজকারবার করত। বিনিয়োগ-পুঁজির এই আবির্ভাব লক্ষ্য করেই লেনিনের "লগ্নি-পুঁজির" ধারণা।
৪. প্রথম বিশ্বযুদ্ধের অনেক আগে থেকেই তখনকার রাষ্ট্র অর্থাৎ ইউরোপের সাম্রাজ্যগুলো (যেমন বৃটিশ সাম্রাজ্য) বিনিয়োগ-পুঁজির কারবারীদের কাছে বিভিন্ন সময়ে হাত পাততে শুরু করেছিল। সংসদে সিদ্ধান্ত হবার মাত্র চার ঘন্টার নোটিশে ১৮৭৫ সালে বিনিয়োগ-পুঁজির কারবারী Rothschchild House বৃটিশ সরকারকে সুয়েজ খালের দখলীস্বত্ত্ব কেনার জন্য সে আমলের চার মিলিয়ন পাউন্ড ধার দিয়েছিল।
৫. প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় বা পরবর্তি সময়ে যুদ্ধের খরচ যোগাতে দেউলিয়া হয়ে পড়া ইউরোপের দেশের সরকারগুলো আমেরিকান চেজ ম্যানহাটন ব্যাঙ্কসহ অনেক বিনিয়োগ-পুঁজির কারবারী কোম্পানীর কাছে ধার করতে শুরু করেছিল। অর্থাৎ বিনিয়োগ-পুঁজি এবার ভুখন্ড ছেড়ে বের হওয়া শুরু করেছিল।
৬. আমেরিকান সমাজে তখন এক তুমুল বিতর্ক চলেছিল। বিনিয়োগ-পুঁজি এবার ভুখন্ড ছেড়ে যাচ্ছে কেন বিতর্ক সেটা নিয়ে নয়, যুদ্ধের সময় যুদ্ধে জড়িয়ে থাকা রাষ্ট্রকে ধার দেয়ার ভিতর দিয়ে খোদ আমেরিকান রাষ্ট্রকে যুদ্ধে কোন পক্ষভুক্ত করে বা জড়িয়ে ফেলে রাষ্ট্রের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলা হচ্ছে কী না - এটা ছিল বিতর্কের বিষয়। ভদ্রভাষায় এটা Internationalist বনাম Isolationist বিতর্ক নামে পরিচিত। বিনিয়োগ-পুঁজির কারবারী কোম্পানীর আড্ডা, ওয়ালষ্ট্রিট ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছিল আমেরিকান রাষ্ট্র নানান আইন করে এতে বাধা দিয়েছিল বলে। সেই থেকে বিনিয়োগ-পুঁজির কারবারীরা আমেরিকান রাষ্ট্রকে বাধা বলে তর্ক জারি করেছিল; বিনিয়োগ-পুঁজির ব্যাপারীদের ভাষায়, এটা ব্যবসার উপর অযাচিত রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ। ব্যাপার আসলে পুঁজির গ্লোবাল স্বার্থের সাথে রাষ্ট্র স্বার্থের সংঘাত। আর ওদিকে Isolationist এর পক্ষের লোকেরা তাদেরকে যুদ্ধরত দেশে সঙ্গে কারবার করার জন্য “merchants of death” বলে নিচু দেখানোর চেষ্টা করত।
৭. আমেরিকান রাষ্ট্রের স্বার্থের দিক থেকে দেখলে, যুদ্ধে মূলত Isolationist হয়ে থাকা কিন্তু সময় সুযোগ বুঝে Internationalist হওয়া, এমনকি যুদ্ধে পক্ষ নেয়া ফেলা বা সরাসরি অংশগ্রহণ করা - এই নীতিকে সফলভাবে মুলামুলি করতে পেরেছিল বলেই আমেরিকা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভিতর দিয়ে অবশেষে নিজেকে এক একছত্র সাম্রাজ্য হিসাবে প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছিল। আর এর মধ্যে দিয়ে বিনিয়োগ-পুঁজির কারবার মানে ভুখন্ডের উর্ধে বিরাজ করে এমন "এক্সপোর্ট অফ ক্যাপিটাল" হওয়া সম্ভব হয়েছিল এবং নিরাপদভাবেই তা সম্ভব - এই সফল পরীক্ষাও অলক্ষ্যে সম্পন্ন হয়ে গিয়েছিল। (এনিয়ে আলাদা একটা পর্বে বিস্তার করার ইচ্ছা আছে। তবেই প্লাটো আপনার প্রশ্নের সবটা উত্তর শেষ হবে।) এটা আরও ভালভাবে ধরা পড়ে কারা বিশ্বব্যাঙ্কের প্রথম গাঠনিক পর্যায়ের প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন, কী তাদের নীতি, চিন্তাভাবনা ছিল এগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, যারা Internationalist, যুদ্ধের সময় যুদ্ধের নীতিনির্ধারণী কাজে জড়িত, এমন কী যুদ্ধমন্ত্রী বা আগে পেশায় ওয়ালষ্ট্রিটের পরামর্শক ছিলেন এরাই ছিলেন বিশ্বব্যাঙ্কের সাকসেসিভ প্রেসিডেন্ট।

তাহলে সারকথায়, বিনিয়োগ-পুঁজির আবির্ভাব আর এর ভুখন্ড ছেড়ে ছড়িয়ে পড়া স্বভাব - এই নতুন ফেলোমেনন দুনিয়ায় হাজির হয়ে যাবার পর, কোম্পানী বা উৎপাদক-পুঁজি কেন্দ্রিক বা "ভুখন্ডগত পুঁজির স্বার্থ" বলে কোন ধারণা দিয়ে আর "জার্মানির মার্সিডিজ" আর "আমেরিকান ফোর্ড" স্বার্থ-বিবাদ বুঝা যাবে না। এটা পরিত্যাগ করতে হবে। এই পুরানো ধারণার উপর দাঁড়িয়ে গ্লোবাল পুঁজির হালনাগাদ গতিপ্রকৃতি, আভ্যন্তরীণ সঙ্কট, বারবার মুখ থুবড়ে পড়া মন্দার ব্যাখ্যা পাওয়া যাবেনা। তাহলে শিল্পোন্নত দেশের রাষ্ট্র যেমন, আমেরিকান রাষ্ট্র, কোম্পানী বা উৎপাদক-পুঁজি কেন্দ্রিক স্বার্থ ও বিনিয়োগ-পুঁজির স্বার্থ - এই দুইয়ের স্বার্থ বিবাদ দেখা দিলে কার পক্ষ নিয়ে থাকে অথবা কিভাবে তা মোকাবিলা বা সমাধান বের করে?
সাধারণভাবে বললে, আমেরিকান রাষ্ট্রের ভরকেন্দ্র বিনিয়োগ-পুঁজির দিকেই তবে, কোম্পানী বা উৎপাদক-পুঁজির স্বার্থকে একেবারে উপেক্ষা বা চোখ বন্ধ করে রাখে না। ওর জন্যও যা ব্যবস্হা নেয় এটাকে আগের পর্বে "প্রতিযোগিতা ম্যানেজমেন্ট" কর্ম বলেছিলাম।
পুঁজি গ্লোবাল, ওর সুপ্ত গ্লোবাল স্বভাবকে দৃশ্যমান করে হাজির হয়েছে বিনিয়োগ-পুঁজি রূপ আবির্ভাবে; আর তা সম্ভব হয়েছে, ভুখন্ড ছেড়ে ছড়িয়ে পড়া স্বভাব বা ভুখন্ডের উর্ধে থেকে বিরাজ করার কারণে। ফলে পুঁজির বিনিয়োগ-পুঁজি রূপ একালে গ্লোবাল পুঁজির লিডিং বা চরিত্র নির্ধারক রূপ। - ফলে স্বভাবতই আমেরিকান রাষ্ট্র, পুঁজির বাকি অন্য সব রূপ ছেড়ে ভরকেন্দ্র বিনিয়োগ-পুঁজির দিকে নিয়ে ঝুঁকে গিয়েছে।
এখানে আমেরিকান রাষ্ট্রের ভারকেন্দ্র বিনিয়োগ-পুঁজির স্বার্থের দিকে ঝুঁকে গিয়েছে বললাম বটে তবে, এথেকে আবার সবসময় রাষ্ট্রের স্বার্থ মানেই বিনিয়োগ-পুঁজির স্বার্থ - এভাবে বুঝা ঠিক হবে না। বরং রাষ্ট্র ও গ্লোবাল পুঁজি - এই দুই স্বার্থের মাঝে ওখানে সুপ্ত এবং চিরন্তন কিছু বিবাদ আছে।
এটা ভুলা যাবে না যে শেষ বিচারে আমেরিকান রাষ্ট্র তো একটা রাষ্ট্রই। আর বিনিয়োগ-পুঁজি বা গ্লোবাল পুঁজির স্বার্থ সবসময় রাষ্ট্রের উর্ধে বিরাজ করে। ফলে এই বিবাদ, স্ববিরোধের উৎস এখানে লুকানো। তাই বহু উদাহরণে দেখা যাবে, গ্লোবাল পুঁজির সামগ্রিক স্বার্থ বিবেচনায় আইএমএফ বা বিশ্বব্যাঙ্কের সিদ্ধান্ত সবসময় আমেরিকান রাষ্ট্রের সাথে একইমুখী হয়ে মিলে না। গ্লোবাল পুঁজির সামগ্রিক স্বার্থ - বাজার বিকাশ, balance of Payment কার্যকর রাখা ইত্যাদির লক্ষ্যে আইএমএফের রপ্তানিমুখী করে আমাদের মত রাষ্ট্রগুলোকে সাজিয়ে নেবার তত্ত্ব হাজির করেছে। এই তত্ত্ব অনুযায়ী মাল্টিফাইবার এগ্রিমেন্ট বা কোটা পদ্ধতি বলে কিছু থাকার কথা না। কিন্তু আমেরিকান রাষ্ট্র কোটা পদ্ধতি বা কোটার বাইরে হলে ট্যাক্স আরোপ করে আমাদের পণ্য আমেরিকান বাজারে প্রবেশ রুদ্ধ করে রেখেছে অথবা বলা যায়, নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা হিসাবে একে ব্যবহার করে আমাদের রাজনীতিতে হাত দেবার রাস্তা করে রেখেছে। আইএমএফ একদিকে আমাদের সব-আমদানীর জন্য উন্মুক্ত দেশ করে রেখেছে ওদিকে আমেরিকা কোটা, ট্যাক্স বসিয়ে আমাদের পণ্য প্রবেশ রুদ্ধ ও নিয়ন্ত্রণ করে রেখেছে। ফলাফল, আইএমএফ নিরুত্তর ঠুটো হয়ে কার্যত আমেরিকান রাষ্ট্রের সাথে আপোষের পথ ধরেছে।
দ্বিতীয় একটা মজার উদাহরণ দেই। বিশ্বব্যাঙ্কের দ্বিতীয় প্রেসিডেন্ট McCloy (১৯৪৭-৪৯) কে খুবই এক ঝামেলার সময় কাটাতে হয়েছিল। কারণ কমিউনিষ্ট পোল্যান্ড লোন চেয়েছিল আর McCloy তা দিতে চেয়েও দিতে পারেন নি। McCloy এর যুক্তি ছিল "কোন একটা দেশ কমিউনিষ্ট হিসাবে আয়রন কার্টেন বা লোহার চাদরে মুড়ি দিয়ে থাকতেই পারে। কিন্তু গ্লোবাল পুঁজির ধর্ম মানতে গেলে তাকে তো সর্বগামী হতেই দিতে হবে, তা সে কমিউনিষ্ট হোক আর যেই হোক"। ওয়ালষ্ট্রিটের পরামর্শ চেয়েছিলেন তিনি, তারাও একই পরামর্শ দেয়। কিন্তু আমেরিকান রাষ্ট্র (সবচেয়ে বড় শেয়ার হোল্ডার মালিক) রাজনৈতিক বিবেচনায় রাষ্ট্র স্বার্থে এর বিরোধী হওয়াতে McCloy কে আবেদন বাতিল করে দিতে হয়। প্রতিবাদ করে পোল্যান্ডও বিশ্বব্যাঙ্ক ছেড়ে চলে যায়।


সবশেষে একটা ফাইন টিউন মূলক কথা বলে এই পর্ব শেষ করব। অর্থাৎ আমার আগের কিছু বলা কথা আরও স্পষ্ট করে বলার সুযোগ নিব।

ওষুধ উৎপাদনকারী ওষুধ ব্যবসা করতে করতে জায়েন্ট হবার পর যদি দেখে এতে ফুলে উঠা মুনাফা-আত্মস্ফীত পুঁজি আবার ওষুধে বিনিয়োগ করার চেয়ে টয়লেটারিজ (সাবান, শ্যাম্পু, পেষ্ট, ক্রীম) উৎপাদনে বা মিডিয়া প্রডাকশন হাউস (টিভি এড বা নাটক) অথবা রিয়েল এষ্টেট ব্যবসায় মুনাফা বেশি তবে ওষুধ ব্যবসার সাথে নতুন সেসব ব্যবসায় ঝাঁপিয়ে পড়বে। এমনকি পুরানো ওষুধ ব্যবসা সমুলে গুটিয়ে সব পূঁজি নিয়ে রিয়েল এষ্টেট ব্যবসায় স্হানান্তর করেছে এমনও হতে পারে। আমাদের "হালাল সাবান" বেচা এরমেটিক সাবানের কথা মনে করে দেখুন। সোনার ডিম দেয়ার মত এই প্রিয় হাঁসকে ডিমসহ কোম্পানী বিক্রি করে দিয়ে ভুমিদস্যু-বৃত্তির ব্যবসায় ঝাপিয়ে পড়তে মালিকের হাত কাঁপে নাই। মুনাফা-আত্মস্ফীততে পুঁজির জন্ম যে ট্রেড থেকেই শুরু হোক কী করলে মুনাফা আরও বেশি পাওয়া যাবে পূঁজি এবার সেখানেই নতুন বিনিয়োজিত হবার রাস্তা ধরবে। আমার বলবার মূল কথা হলো, পুঁজি সবসময় একই জিনিষ উৎপাদনে নিজের আত্মস্ফীতি ঘটাবে এর ভিতরে পুঁজির স্বার্থ নিহিত নাই। বরং যা উৎপাদন বা ব্যবসা করলে মুনাফা বেশি বা আত্মস্ফীতি দ্রুত ও বেশি হবে পুঁজির স্বার্থ সেখানেই নিহিত। জহুরুল ইসলামের ইসলাম গ্রুপ সারা জীবন দেশে বিদেশে কনষ্ট্রাকশনের ব্যবসায় ছিল। তাঁর মৃত্যুর পর ভাগে পাওয়া সম্পত্তিতে গড়ে উঠা ভাইয়ের নাভানা গ্রুপ ব্যাটারী, সফটওয়ার, ফার্নিচার, রিয়েল এষ্টেট ইত্যাদি সব ব্যবসায় নেমে পড়েছে। অর্থাৎ বলতে চাচ্ছি, বিনিয়োগ-পুঁজি ট্রেড ইনডিপেন্ডেন্ট - অর্থাৎ সুনির্দিষ্ট কোন ট্রেডে, ওষুধ বা গাড়ী উৎপাদনে সে জড়াবে এমন কোন নিয়ম না মানা বিনিয়োগ-পুঁজির ধর্ম; সুনির্দিষ্ট কোন ট্রেডে এমনকী সুনির্দিষ্ট কোন দেশে, সীমানা না মানা তার ধর্ম। কোথায় সুবিধা বেশি, নিয়ম আইনকানুন ফেবারেবল, আদর বেশি, পুঁজির বয়ে চলা, স্হানান্তর সহজ ইত্যাদির উপর নির্ভর করে সে একএকবার একএক জায়গায় খানিকক্ষণ বসে নেয়।
তবে, বিনিয়োগ-পুঁজি ট্রেড ইনডিপেন্ডেন্ট বলবার তাৎপর্য হলো, ওর স্হানান্তরযোগ্যতা (moveability) গুণ। উৎপাদক-পুঁজির সাথে তুলনায় এটাই তার বাড়তি সুবিধা, গুণাগুণ। উৎপাদক-পুঁজির এই গুণাগুণ যোগাড় করে হয়ে উঠতে উপযুক্ত পরিবেশ, সময় লাগে; অপেক্ষার প্রয়োজন দেখা দেয়। স্হানান্তরযোগ্যতা গুণাগুণ অর্জনের পর বিনিয়োগ-পুঁজি পাখা মেলে দেশের ভুখন্ডে অথবা ভুখন্ড ছাড়িয়ে আবারও উৎপাদক-পুঁজির সাথেই তাকে বাইরের সম্পর্কে ঘর বাঁধতে হয়।
সিনেমা তৈরির ব্যবসায় এই ঘটনাটা একেবারে শুরু থেকেই আরও স্পষ্ট বুঝা যায়, ওটা ক্রিয়েটিভ মিডিয়ার কায়কারবার পণ্য বলে। প্রযোজক ও পরিচালক বলে সিনেমা তৈরিতে ষ্পষ্টতই দুটো ভাগ থাকে সবসময় থাকে। প্রযোজক যে সিনেমা তৈরিতে টাকা বিনিয়োগ করে আর, পরিচালক যে সিনেমাটা তৈরি করে। প্রযোজক হিসাবে বিনিয়োগ-পুঁজি উৎপাদক-পুঁজি থেকে আলাদা হয়ে থাকে, আলাদা স্বত্ত্বায় সিনেমা ছাড়াও অন্য ব্যবসা খাতের প্রযোজক বা বিনিয়োগকারী হতে পারে। সার কথা হলো, সুনির্দিষ্ট উৎপাদক নয় বরং এ থেকে উর্ধে উঠে যে কোন উৎপাদনের বিনিয়োগকারী বনে যাওয়া - নতুন পরিচয় যার পুঁজি বিনিয়োগকারী। দেশের যে কোন পণ্য উৎপাদনের থেকে যে ইনডিপেন্ডেন্ট, আবার সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীও বটে। অন্যদিকে দেশেই যদি সে ইনডিপেন্ডেন্ট এক স্বাধীন সত্ত্বা তবে দেশের সীমানা পেরিয়ে বাইরেও যে কোন পণ্য উৎপাদনের কাছে সে সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীও বটে। তবে অবশ্যই এটা হলো উৎপাদক পুঁজি থেকে বিনিয়োগ-পুঁজির আলাদা স্বাধীন হবার এক দীর্ঘ লম্বা পর্যায়।

আগে বলেছিলাম, ১৯৪৪ সালে আইএমএফ-বিশ্বব্যাঙ্কের প্রাতিষ্ঠানিক জন্মের ফলে নতুন যে ফ্যাক্টর যোগ হয়েছিল তা হলো, পুঁজি যে গ্লোবাল, আন্তর্জাতিক - এর সাধারণ স্বার্থ স্বভাব বিনিয়োগ-পুঁজির রূপ নিয়ে যার আবির্ভাব যাকে আমি গ্লোবাল, আন্তর্জাতিক বলে বুঝতে বলছি সেই সাধারণ স্বার্থ স্বভাবকে জাগতে জায়গা করে দেবার, রক্ষা করার জন্য ইনডিপেন্ডেন্ট ও পরিকল্পিতভাবে এই প্রথম কিছু প্রতিষ্ঠানের আবির্ভাব আমরা দেখেছিলাম।

এখানে এবার ফাইন টিউনমূলক কথাটা হলো, আইএমএফ-বিশ্বব্যাঙ্কের জন্মের সময় পুঁজির গ্লোবাল, আন্তর্জাতিক স্বভাব প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি এসেছিল বটে কিন্তু একে কাজে খাটানোর জন্য প্রতিষ্ঠানকে টুল হিসাবে খাড়া করতে অনেক সময় লেগে যায়, প্রায় আশির দশক পর্যন্ত। এই ফাঁকা সময়টাই আবার কলোনী মুক্তিতে নতুন জাতিরাষ্ট্র গড়ার সময় পেয়েছিল। এটা যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউরোপের শিল্পায়িত রাষ্ট্রগুলোর পুনর্গঠনের সময়ও বটে; কথাটা অন্য ভাবে বললে, আমেরিকান বিনিয়োগ-পুঁজি ভুখন্ড ছেড়ে ইউরোপ প্রবেশের সময়। সেটা স্বভাবতই বিনিয়োগ-পুঁজির জন্য এক অবারিত অপ্রতিদ্বন্ধী সময়; বিনিয়োগ-পুঁজি নিজ ভুখন্ড ছেড়ে ছড়িয়ে পড়তে পেরেছে বলেই তা নয়, তার অন্য বড় আরও কারণ ছিল। বিনিয়োগ-পুঁজি জর্মান ও জাপানে সফলতা দেখাতে পেরেছিল অনেকগুলো কারণে যার মধ্যে অন্যতম হলো:
এক. যুদ্ধের আগেই শিল্পোন্নত উৎপাদন সংঘটনে সংগঠনগত দক্ষ অভিজ্ঞ জনশক্তি ওসব দেশে সমাবেশিত ছিল। ফলে বিনিয়োগ-পুঁজিকে কাজে লাগাতে সে ছিল সক্ষম। দুই. একদিকে যুদ্ধের হারার কারণে নৈতিকভাবে বিপর্যস্ত ওর জনগোষ্ঠি অন্যদিকে যুদ্ধে বিজয়ীদের আধিপত্যে তাদের আনুকুল্যে রাষ্ট্র পুনসংগঠিত হচ্ছে, স্হানীয় জনগোষ্ঠী নিজস্ব নয়, সেই আনুকুল্যে রাজনৈতিক আকার লাভ করেছিল। তিন. ফ্যাক্টস হলো তারা যুদ্ধে হেরেছিল। হারা যুদ্ধের পর অসংগঠিত সমাজে দুর্ভিক্ষ ও কাজের অভাবের বদলে বরং প্রত্যেকটা দক্ষতা কাজে নিয়োজিত হবার সুযোগ পেয়েছিল। এসময়ের জাপানের একটা প্রবাদসম একনিষ্ঠতার গল্প পাঠক আপনারা অনেকেই শুনে থাকতে পারেন; গল্পটা আমার কাছে প্রতিকী মনে হয়। যুদ্ধের পর কাজে ফাঁকি না দিয়ে পুরা জনগোষ্ঠি বরং সমস্ত মনোযোগ উদ্যোম ঢেলে দিয়েছিল উৎপাদনে। এই একনিষ্ঠতায় কেউ যদি ব্যতয় ঘটিয়েছে তো আত্মশ্লাঘায় ভুগে সে আত্মহত্যা করেছে - এই হলো গল্পটার সারকথা। সম্ভবত এত শৌর্য, সমৃদ্ধি থাকার পরও যুদ্ধে তারা কেন হারল, কেনইবা তাদের যুদ্ধটা আবার নাকি অনৈতিক - এসব জবাব হিসাব মেলে না নিরুত্তর পরিস্হিতি থেকে পালানোর জন্য জনগোষ্ঠির সামনে একটাই পথ খোলা ছিল - কাজের সুযোগ। ফলে সমস্ত মনোযোগ ওখানে দিয়ে সবকিছু ভুলে থাকার, সবকিছুর উত্তর ভবিষ্যৎ এর উপর ছেড়ে দেবার এর চেয়ে ভাল পথ তাদের কাছে আর কি হতে পারে। চার. বিনিয়োগ-পুঁজির দিক থেকে দেখলে তার জন্য স্হানীয় কোন নুন্যতম প্রতিরোধ, বা ভিন্ন স্বার্থের বাধা ছাড়াই - একেবারে আদর্শ পরিস্হিতি এর চেয়ে আর কী হতে পারে। পাঁচ. অন্যদিকে আমেরিকান রাষ্ট্রের দিক থেকে দেখলে পুরা রাজনৈতিক ক্ষমতা নেতৃত্ত্ব হাতের মুঠোয় যেন জর্মান, জাপান ইতালি সব একএকটা আমেরিকারই এক্সটেনডেড কোন বাহান্নতম বা তিপান্নতম state; এর উপর আবার এরা নৈতিক-রাজনৈতিক মনোবল ভাঙ্গা আজিব একতাল জনগোষ্ঠি। আমেরিকার সম্প্রতিকালের ইরাক দখলের পর নৈতিক-রাজনৈতিক মনোবল ভাঙ্গা, আভ্যন্তরীণ প্রতিরোধবিহীন এমন এক ইরাকি জনগোষ্ঠি কল্পনা করে নিলে আর, একজন আমেরিকান এ্যডমিনিষ্টেটর পল ব্রেমারের শাসনের অধীনে ইরাককে আমরা যেমন দেখতাম তৎকালীন জর্মান জাপান সম্ভবত সেরকমই কিছু একটা ছিল। (প্রসঙ্গত বলে রাখি, উপরে বিশ্বব্যাঙ্কের দ্বিতীয় প্রেসিডেন্ট McCloy কথা বলেছিলাম, তিনি এর আগে ছিলেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হারুপার্টি জর্মানের "পল ব্রেমার" - নিয়োজিত আমেরিকান এ্যডমিনিষ্ট্রেটর)। ছয়. যুদ্ধ শেষে জর্মানের চিত্রটা ছিল এমন: আমেরিকা, বৃটেন, ফ্রান্স ও সোভিয়েত ইউনিয়ন সামরিক দখলে চার ভাগে টুকরা জর্মানি। দখলী প্রথম তিনভাগ নিয়ে গঠিত হয় পশ্চিম জর্মানি আর সোভিয়েত অংশ পরিণত হয় কমিউনিষ্ট পূর্ব জার্মানি নামে - দুই দেশে। ফলে "কমিউনিষ্ট" আর "পুঁজিবাদী" - দুই জর্মানি ভবিষ্যতে কি চেহারা নিচ্ছে, উন্নতি কার কম বেশি - এমন এক প্রচ্ছন্ন প্রতিযোগিতা দুই দখলী মালিক মুরুব্বির মধ্যে ছিল। এটাও ঢেলে বিনিয়োগ পাবার একটা কারণ।
যুদ্ধে হারা দেশগুলো নিয়ে আইএমএফ-বিশ্বব্যাঙ্কের তত্ত্বাবধানে আমেরিকার reconstruction & development মূলক "মার্শাল প্লানের" সারকথা এগুলো।

ওদিকে ষাটের দশকের পর থেকে সারা ইউরোপই তার পুরানো প্রটেকশনিষ্ট কায়দায় নিজ নিজ অর্থনীতিতে (আমেরিকার বাদে) অন্যের পণ্যের প্রবেশে ট্যাক্স বসানোর চেষ্টা ছিল। আমেরিকা বাদে - বললাম এজন্য যে, যুদ্ধের পর reconstruction & development এর নামে আমেরিকার পুন বিনিয়োগের যে ঋণ ইউরোপের দেশগুলো পেয়েছিল এগুলোর প্রত্যেকটাতেই আমেরিকান পণ্য প্রবেশ বাধাহীন রাখার শর্ত যুক্ত ছিল।

আইএমএফ-বিশ্বব্যাঙ্কের জন্মের সময় পুঁজির গ্লোবাল, আন্তর্জাতিক স্বভাব প্রাতিষ্ঠানিক তাত্ত্বিক স্বীকৃতি নিয়ে গঠিত হয়েছিল আর, সত্তর দশকের শেষ ও আশির শুরু থেকে এবার প্রাতিষ্ঠানিক প্রোগ্রাম আকারে পুঁজির গ্লোবাল স্বার্থকে মুখ্য করে আইএমএফ-বিশ্বব্যাঙ্ক ক্রমশ স্পষ্ট দৃশ্যগ্রাহ্য হতে শুরু করে। এর বিপরীত ক্রমে জাতি-রাষ্ট্র ততটাই অপসৃয়মান হতে শুরু করে। আমেরিকা রাষ্ট্রও অন্য রাষ্ট্রের সীমানা বাউন্ডারির উর্ধে বিরাজিত এক Empire হিসাবে আজও বিস্তৃত হয়ে আছে, থাকার চেষ্টা করছে।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে নভেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৫:০৪
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×