অথচ কাল ঈদের দিনটা কাটাতে হবে ব্যাস্ত সময়। সকাল ৯।১৫ তে প্রায় দেড় কিলোমিটার হেটে যেতে হবে নামাজ পড়তে। তার আগে সেমাই-পায়েসের স্থলে ব্রেড-বাটার ও আপেল বরাদ্য, সকালের নাসতার জন্য .... না না বার বার ভুলে যাচ্ছি ঈদের সকালের নাসতা
দুপুর বেয়ার মোরগ-পোলাউ রান্না করার প্লেন আছে। ভাগ্যিস রান্নাটা আগে থেকেই জানতাম। এটা রান্না করতেই হবে, নিজের জন্য যতটা না তার চাইতে দেশে ফেলে আসা পরিবার-পিরজনদের জন্য। বুঝতে পারলেন না ? ছবি পাঠাতে হবে...যাতে শনি বারের ঈদ টা তারা কিছুটা কম কষ্ট নিয়ে পাড় করতে পারে।
প্লেনটা সাকসেসফুল হবার সম্ভবনা ৫০-৫০। ইউনিভার্সিটিতে জরুরি কোন কাজে না ফাসলে একজিকিউট করব। আগামী সোম বার আমার সুপারভাইজারের কাছে পেপের সাবমিট করতে হবে, ঈদের কথা ভেবে মন খরাপ করার সময়টাও মনে হয় পাব না। ভালই হল, ব্যাস্ততা হয়ত অনেক কিছু ভূলিয়ে দিবে।
---------- এটা আগামী কালকের প্লেন, দেখা যাক বিলেতি ঈদ কেমন লাগে ?
-----------ঈদ যেমন কাটল-------------------------
২৭/১১/০৯ সকালে ৭:১৫
উঠেই টুথ-ব্রাস, পেস্ট, কাপড় ও সেভিং কিট সহ বাথরুমে। গোসল শেষে জামা-কাপড় পরে রাস্তায় নামলাম সকাল ৭:৩০ - এ। গত ১ মাসে এত সকালে বাসা থেকে বের হই নি। চারপাশটা কেমন অন্য রকম অন্য রকম লাগছে ...
মসজিদ
স্টেফোর্ড ছোট শহর আর মুসমানদের সংখ্যাও অনেক কম। বেশির ভাগই আমার মত ছাত্র। একটা ওয়ার্কশপ কিনে সেটাকে মসজিদ বানান হয়েছে....২০-৩০ জনের বেশী মানুষ জায়গা হয় না। আজ ২ টা ঈদ জামাত হবার কথা। আমি ১ম জামাতে শরিক হয়েছইলাম।
মসজিদটা বেশ দূরে, বাসায় আসতে আসতেই সাড়ে দশটা বেজে গেল। ব্রেড আর মাখন দিয়ে সকালের নাসতা সাড়লাম। ফোন ও টেকস্ট চেটের মাধ্যমে দেশের পরিবার-পরিজন ও বন্ধুদের সাথে কথা বললাম। মনটা বেশ হালকা হয়ে গেল।
ইংলেন্ডে মানুষ কোরবানী দেয় কীনা জানি না। কোরবানী দেওয়া অনেক ঝামেলার কাজ, সিটি-কাউন্সিলের অনুমতি ছাড়া ও পশু জবাই কারার জন্য নির্দিষ্ট স্লটারিং সেন্টার ও স্লাটারার দিয়ে কোরভানি করতে হয়। আবার সব জায়গায় মুসলিম স্লাটারার পাওয়া ও জায় না।
কোরবানী দিতে না পারলেও আমাদের গোসত কাটার অভিজ্ঞতা খারাপ হয় নি। ফ্রিজে রাখা মুরগি সহযোগে বাসমতি চালের বিরিয়ানি.....রান্নাটা প্রত্যাশার চাইতেও ভাল হয়েছে। অবশ্য আমার রান্না কখনই খুব একটা খরাপ হয় না। ঈদটা বেশ ভালই কাটল ...যতটা খারাপ যাবে ভেবেছিলাম ..... ততটা খারাপ না।
আমার ঈদ ত শেষ, কিন্তু আপনাদেরটা রয়েগেছে। .. ঈদ মোবারক বাংলাদেশ....।
ঈদে আমরা কত কিছুই না পেতে চাই ..... কিন্তু সব চাইতে বড় মনে হয় ' আপন জনদের সান্বিদ্ধ' । বাংলাদেশে থাকার সময় টের পাইনি ...এখন পাচ্ছি। অন্তত ১ বারের জন্য হলেও প্রত্যেকের উচিত কিছু সময়ের জন্য বাংলাদেশের বাইরে গিয়ে বাস করা....এটা আপনাকে দেশ ও পরিবার-পরিজন সম্পর্কে নতুন করে ভাবতে শেখাবে।