somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রেমকথা: যে তুমি ভাসিয়ে নিয়ে যাও শস্যের দেশে

২৩ শে নভেম্বর, ২০০৯ রাত ১:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

০১.
কারো আলনায় একদিন আমারও রুমাল ঝুলছিলো রোদ হয়ে। তারপর বহুদিন রোদ চুরি গেলে আমি লুকিয়ে রেখেছি মুখ জানলার ছায়ায়, ছায়ার ভিতর কথা বলছিলো আমার চোখ। চোখ আর রুমাল আজ সমার্থক যন্ত্রণা।
আমি তোমার সাথে একটা বিষয়ে মিথ্যে বলেছি। ইচ্ছে করেই। তুমি যদি শেষপর্যন্ত ধরতে না পারো তবে বলে দিবো।

০২.
আমার সুন্দর, আজ তুমি আসো নাই, বহুদূর ফিরে গেছে কুয়াশাকুসুম। তোমাকে খুঁজে খুঁজে ক্ষয় হবে চঞ্চু। কোথায় তুমি কোনখানে উড়ে উড়ো, ঘটাও প্রভাত কোথাকার ঝড়ে? আমি এসে বসে চুপিচাপ বিষাদ। আমার রাতের ভিতর জোনাক স্মৃতি, মুঠোভর্তি শূন্যতা আছে। তুমি আসো নাই বলে জ্বলেছি সুখ; ছাই উড়ে হয়ে যাবো হাওয়া। তখন কোথায় খুঁজবে আমায়, কোন ইথারে শব্দ হবে সুন্দর জানো? খুঁজে নিও খুঁজে নিও হাওয়ার ভিতর।
কোথায় নিয়ে যাবে আমাকে? আসো, নিয়ে যাও। আমাকে ভাঙো, ছড়াও।
এই এলাম। আমাকে নাও, আমার সবটুকু নাও, আমার ডানা, উড়াল, স্বপ্ন, সৌন্দর্য সবটুকু। আমাকে ডুবিয়ে ফেলো। আমাকে এক নিমেষে শুষে নাও...

০৩.
আমি তোমাকে খুন করবো না, তবে তোমার রক্ত পান করবো, আর যখন জেগে উঠবে পুনরায় তোমার রক্ত তোমাকে ফিরিয়ে দেবো, যেভাবে নিতে চাও...
আসো, তোমার জন্যে আদর নয়, শাস্তি গুছিয়ে রেখেছি যতনে।

০৪.
ভোরের আকাশে আমি ছুঁয়ে ফেলি শূন্যতা
তোমাকে ডাকি এসো বাদল পূর্ণ করো খরা সহ যন্ত্রণা
এসো আ-আলজিব চুমু খাই
এসো প্রিয় সমুদ্রে ডুবে যাই
হয়তো গান হতেও পারি-- কোনোদিন কেউ যদি কুড়িয়ে নিয়ে যায়।

০৫.
অন্ধকার কখনো রূপ বদলায় না। আমি অন্ধকার। আমি জানি, তুমিও জানো তা, আমরা পরস্পরকে কখনো পাবো না চিরদিন। আমিও তো রক্তমাংসের মানুষ একজন, সবচে' অনুভূতিপ্রবণ। ভালোবেসে যন্ত্রণা প্রকাশ করেছি। তুমি আমাকে চারবার বলেছো
পজেসিভ
পজেসিভ
পজেসিভ
পজেসিভ
আমি খুবি তুচ্ছ মানুষ। তোমার জন্যে কষ্ট হয় কী করবো? কখনো আমার সীমা আমি ভুলে যাই। অনধিকার প্রবেশ করি। তারমানে এই নয় যে আমি কোনো কিছু চাপিয়ে দিই। এটা আমার স্বভাববিরুদ্ধ।
মেয়েটি অনেককেই ভালোবাসতে পারে। ছেলেটি কেনো আপত্তি করবে? তার মানে এই নয় যে ছেলেটির ভিতর ঈর্ষা কাজ করবে না।
ছেলেটি অনেককেই ভালোবাসতে পারে। মেয়েটি কেনো আপত্তি করবে? তার মানে এই নয় যে মেয়েটির ভিতর ঈর্ষা কাজ করবে না।

০৬.
পূজা না থাকলে প্রেম বাজারে বিকোয়। প্রেমের পূর্বশর্ত পূজা। শ্রদ্ধা আর বিশ্বাসের সমন্বয় ভালোবাসা। আমার কথা তুমি বুঝতে পারো না। আমি যদি হারিয়ে যাই তারপরও বুঝবে না। আমি কেউ নই। আমার সব কথা ধরতে নেই। আমার কাছে জীবনটা আপত্তিকর।
যাই।

০৭.
তুমি কেমন আছো? এইখানে বৃষ্টি হচ্ছে এখন। আর আমি জানলা বন্ধ করে দেখেছি একটা। কারণ বৃষ্টির ছাট এসে ভিজিয়ে দিচ্ছে আমার কম্পিটার, বিছানাপাতি আর চোখের পাঁচিল।
তুমি কেমন আছো? তোমাকে দেখে রোদ্দুর হতে ইচ্ছে করে। তারপর একদিন চিল এসে আমাকে ডানার পিঠে নিয়ে উড়ে উড়ে গাইবে শূন্যতার গান।
তুমি কেমন আছো? আমি তাকিয়ে আছি।
অহনা মানে হলো ভোর।

০৮.
তুমি কি তবে পাথর হলে? নির্জন চোখে দেখি পাথরের পাঁজর। ওটা আমার গ্রাম। গ্রামের বসন্তধূলি সকাতর বৈশাখের প্রার্থনায় রত; আমি ধূলিকান্ত তোমার পথ চেয়ে। তুমি কি তবে পাথরগৃহ; আমি ঘরহীন নিঃস্ব। হাতে শুধু একমুঠো রামধনু অসুখ; তুমি নিরাময় দিলে রামধনু পরাবো তোমার সিঁথিতে।

০৯.
সত্যিকারের শূন্যতাকে যারা কাজে লাগায় তাদের কাছে শূন্যতা বরাবরই সুন্দর। শূন্যতা গতি তৈরি করে, শূন্যতাকে পূর্ণ করার জন্যে প্রতিনিয়ত আমরা পূর্ণতার দিকে ধাবিত হই। কিন্তু পূর্ণতা মানুষকে জড় করে দেয়। পূর্ণ মানুষই বলতে পারে কেমন দম বন্ধ লাগে। তাই পূর্ণ মানুষ আবার শূন্য হয়। এটা একটা চক্র। তাই শূন্যতা সুন্দর। তাই না?

১০.
বাদল নেমে এইচোখে ঘোর একী!
বাদল নেমে আমি তোমাকে দেখি।
তেলের কুপির কালি আঙুলের বোন; বোনপরী চোখে নেমে বিবশকাজল আর সিঁথিপথে জাফরান ফুলের মীড়। তুমি যদি আমায় ভালোবাসো তবে সকল অধিকার তোমার। সবকিছু চাও। আমার চোখ আর আঙুল তোমার
তেলের কুপির কালি আঙুলে এসে চোখের কোণে নেমে বিবশকাজল। সিঁথিপথে জাফরান ফুলের মীড়, পায়ে পায়ে কাদারাত অলক্তরাগ...
তুমি ঘুমোও পরী। আর আমি আমি তোমাকে পাহারা দিই। তুমি ভালো থেকো। আমি অন্ধকারে ক্ষয় করে ঘুম তোমার আঙুলের ছায়ায় ঘুমোবো নিঝুম। আমার আলো আঁধারের সাঁকো তুমি ভালো থেকো আর যন্ত্রণা থেকে তুলে নিও স্বপ্নের বীজাণু । আমি তার ভিতর চুপিচাপ প্রাণ। তুমি সূর্যকমল গর্ভে ধরে সুন্দরের চোখ ছুঁয়ে থেকো নিরন্তর আর আমি চিরদিন তোমার সিঁথি ছুঁয়ে দেখো হয়েছি সুন্দর।

১১.
আমার ভিতর অনেক হৃদয়। তোমাকে দেখতে ইচ্ছে করছে। তুমি যখন চলে যাও... কেনো চলে যাও? তোমাকে একদিন একটা গান শোনাবো। শুনবে? তোমাকে ডাকছি তোমাকে ডাকছি, তুমি শীতসহ আসো; আমি নিদারুণ অগ্নিময়। যদি পারো নিভিয়ে দাও প্রাণ আমার। মেয়ে, আমি অনেক দুঃখ চিনি। আমি তোমার চোখের কাজল নয়, স্বপ্ন হয়ে থাকি। তুমি কখনো ভয় পেয়ো না। আমি অহর্নিশি তোমার সাথেই থাকি। আমি রাত্রি পোড়া ছাই, আমি হাওয়ায় উড়ে তোমার কাছেই যাই। তুমি যখন ডাক্তারের টেবিলে শুয়ে কাঁপছো-- আমি তখন তোমার আঙুলে প্রাণপনে রুখছি তোমার কম্পন; আমি তোমার রক্তের ভিতর থাকি-- আরক্ত হিমোগ্লোবিন।

১২.
তোমার মধ্যে তোমরা দুইজন; তোমার শরীর এবং তুমি। তোমার শরীরটাকেই কখনো বসিয়ে রাখি জানলায়, ভাঙা ফুলদানিতে, কখনও বা কম্পিউটারে। আর তোমাকে রাখি চোখের ভিতরে। কেনো তাও কি বলে দিতে হবে? আজ তোমাকে অযাচিত ভাবে কষ্ট দিলাম। এবং তোমাকে কষ্ট দিয়ে আমার অনেক কষ্ট হলো। এমন কষ্ট! কেমন করে বলি?
জোনাক এসো তবে আমার অন্ধকারে; এই জনান্তিক তোমাকে দিলাম। কে জানে ভুল নামে ডেকে যাই রোদ। কণ্ঠমূলে বিঁধাও এসে কণ্টক প্রতিশোধ।
তোমাকে আমি একদিনও কষ্ট দেবো না আর। ভালো আছো তুমি? তুমি ভালো থেকো, তুমি ভালো থেকো, তুমি তো তার জানো না কিছুই, জানবে না কোনোদিন-- তোমায় দেখতে ইচ্ছে করে, তোমায় খুব দেখতে ইচ্ছে করে। তুমি এসো উড়ে এসো লুসিফেরিনরোদ, ঝলসে দাও এই চোখের বিবর।

১৩.
আমার জানলার বুকগলে আসুক নদী
নদীর রঙ জোনাক
অবলীলায় অভিমানে আনত বয় দূরদেশে
দূরদেশ শস্যক্ষেত পড়ে থাকে সারাবছর
জোনাকরঙ নদী আসো
আমাকে ভাসিয়ে নিয়ে যাও শস্যের দেশে
আমার জানলার বুকগলে নদী আসো
জোনাক আসো একটুখানি ভালোবেসে
ভাসিয়ে নিয়ে যাও
তলিয়ে রাখো তোমার রঙের কোরাসে।
আমি ফিরেছি ঘণ্টাদুই আগে। রান্না করলাম, খেলাম। এবং তোমাকে খুঁজলাম। এবং শুধু একবার কবি হওয়ার ইচ্ছে জাগলো। শ্বাসকষ্ট এখন নাই। তবে ক্লান্তি আছে। বাসে সাতঘণ্টা মোট।
আমরা তো একটা আশ্রম করবো। ওখানে বাচ্চাদের জন্যে তুমি ফুলের ঝাপি নিয়ে বসে থাকবে। বাচ্চারা সব তোমার নাম ধরে ডাকবে, জোনাক জো-না-ক জো-না-ক...
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১০ রাত ৩:৩৩
১৯টি মন্তব্য ২০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অতিরিক্ত বা অতি কম দুটোই সন্দেহের কারণ

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৩০

অনেক দিন গল্প করা হয়না। চলুন আজকে হালকা মেজাজের গল্প করি। সিরিয়াসলি নেয়ার কিছু নেই৷ জোসেফ স্টালিনের গল্প দিয়ে শুরু করা যাক। তিনি দীর্ঘ ২৯ বছর সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রধান নেতা ছিলেন। বলা... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সীমানা পিলার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৮



বৃটিশ কর্তৃক এদেশে ম্যাগনেটিক পিলার স্থাপনের রহস্য।
ম্যাগনেটিক পিলার নিয়ে অনেক গুজব ও জনশ্রুতি আছে, এই প্রাচীন ‘ম্যাগনেটিক পিলার' স্থাপন নিয়ে। কেউ কেউ এটিকে প্রাচীন মূল্যবান ‘ম্যাগনেটিক’ পিলার... ...বাকিটুকু পড়ুন

মাথায় চাপা ভূত ভূত ভূতং এর দিনগুলি

লিখেছেন শায়মা, ৩১ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৫


এই যে চারিদিকে এত শত কাজ কর্ম, ঝামেলা ঝক্কি, ক্লান্তি শ্রান্তি সব টপকে আমার মাথায় আজও চাপে নানান রকম ভূত। এক ভূত না নামতেই আরেক ভূত। ভূতেদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায় (দ্বিতীয় অংশ)

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ৩১ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:০৫


আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায় (প্রথমাংশ)
আমাদের সদ্য খনন করা পুকুরটা বৃষ্টির পানিতে ভেসে গেল। যা মাছ সেখানে ছিল, আটকানোর সুযোগ রইল না। আমি আর দুইবোন শিউলি ও হ্যাপি জালি... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিজের পাসওয়ার্ড অন্যকে দিবেন না ;)

লিখেছেন অপু তানভীর, ৩১ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৭



কথায় আছে যে পাসওয়ার্ড এবং জাঙ্গিয়া অন্যকে দিতে নেই । মানুষ হিসাবে, বন্ধু হিসাবে প্রেমিক/প্রেমিকা হিসাবে অথবা আজ্ঞাবহ হওয়ার সুবাদে আমরা অন্যকে ব্যবহার করতে দিই বা দিতে বাধ্য হই।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×