somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তপ্ত ভাতে নুন জোটে না, পান্তা ভাতে ঘি

২২ শে নভেম্বর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত রিক্সার ব্যাপারে অন্য কোন কথা মাথায় আসে না। কে চেয়েছে সিটি কর্পোরেশানের কাছে এই ধরনের রিক্সা? আমি? আপনি? আমার আপনার পরিচিত কেউ? উত্তর আসবে না না না।

আমরা চেয়েছি উন্নত মানের পরিবহন। ঢাকার স্থান 'ক' থেকে স্থান 'খ' তে যাবার নিরাপদ, দ্রুত ও সাশ্রয়ের উপায়। সদিচ্ছা থাকলে অনেক ভাবে সরকার ও পরিবহনশিল্প এই চাওয়া মেটাতে পারে। বড় বিনীয়োগ না করে ভোক্তার কথা মাথায় রেখে রুট পর্যালোচনা ও যথাযথ ব্যাবস্থাপনার মাধ্যমে অনেকটাই উন্নতি করা সম্ভব। এসব উদ্যোগ শুধু বি আর টি সি আর ট্রাফিক পুলিশের মধ্যে না রেখে পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সমিতিগুলোকেও এগিয়ে আনানো যায়।

মনে চায় একটা ল্যাম্প পোস্টকে জড়িয়ে ধরে বলি (অন্যকেউ যেহেতু শুনবে না), ডার্লিং, আমরা কাহাকে বোকা বানাইতেছি? সমিতির নেতৃবৃন্দ, সংসদের পরিবহন বিষয়ক কমিটি, পরিবহন মন্ত্রী - ইহারা কি একই শরীরের বিভিন্ন অংশ নন? তেনারা যদি চান তাহইলে বিষয়টাকে আরও এক ধাপ এগিয়ে পরিবহনশিল্পকে ঢেইলে সাজাতে পারেন। তাদের সদিচ্ছার ফলে এমনটাও হতে পারে যে পরিবহনশিল্প ও সরকারযন্ত্র আমার-আপনার, মানে ভোক্তার কাছে একটি ন্যুনতম মানের সেবা দিতে বাধ্য থাকবে। কিন্তু ল্যাম্পপোস্টও দেখি আমার এইসব কথায় ব্যাজার হয়। থাক স্বপ্ন দেখাটা আপাতত থামাই। জেগে উঠি। চোখ কচলে তাঁকাই, আদতে কি ঘটছে দেখি।

আদতে যা ঘটছে, তা হল চীনের বস্তাপচা কিছু ইলেক্ট্রিক মোটর আমদানি হচ্ছে। দেশের এতবড় ব্যাটারির শিল্প থাকতে চীন থেকে ব্যাটারীও আসছে। আমার আপনার ও আমাদের ভাই বোনের ঘাম ঝড়ানো টাকা সাঙহাই আর কুয়াঙচৌ (Guangzhou) এর কোন এক কারখানার মালিকের একাউন্টে যাচ্ছে। কি জানি দুইটা ব্যাংক আছে না? লাল ডুগডুগির মত লোগো, আরেকটা নীলসবুজ কেচুয়ার পেজগির মত? তাঁরা তো আবার বিদেশে থাকা বাংলাদেশীদের বৈদেশিক মুদ্রায় হিসাব খুলতে দেন, তাদের টাকা আবার শেয়ার বাজারেও খেলান। এদের হাত ঘুরেই যাচছে ঐ মোটর-ব্যাটারির এলসি। তো এদেরই কিছু লোকজনের কাছে শোনা যে শাংহাইয়ে বসবাসরত একজন প্রভাবশালী বাংলাদেশীই নাকি হাজার পাঁচেক মোটর পাঠিয়ে দিয়েছেন। বংশাল, বাড্ডা আর মিরপুরের কোনাকাঞ্চিতে যেখানে যতগুলি ওয়েল্ডিং মেশিন আছে, সেগুলো এখন ব্যাস্ত, বাঁশ-কাঠ-লোহায় বানানো রিক্সার আদলে জি-আই পাইপ আর রুপবান টিনের রিক্সার গড়তে। মোটামুটি কিছু একটা খাড়া হলেই তাতে জুড়ে দেয়া হচ্ছে মোটর-ব্যাটারি। তবে এই নতুন রিক্সাগুলোর কাঠামো কি ঢাকার রাস্তায় চলার মত? রাস্তায় হাঁটু সমান পানি উঠলে এগুলো কি ভাসবে না ডুববে? এগুলোর ব্যাটারি চার্জ দিতে বিদ্যুত কোথা হইতে আসিবে? রিক্সাওয়ালা সাহেবের কি হবে? এগুলোর উত্তর আমি জানিনা। তবে ঢাকার রিক্সার প্লাস্টিক শিট আর ক্রোম বুটপিনের সুন্দর কারুকার্য যে এই নতুন রিক্সাগুলোতে থাকবে না, সেটা পরিস্কার।

কিজানিএক্টা আজীব নিয়মে এইসব রিক্সার ছাড়পত্র দিচ্ছে সিটি কর্পারেশন। কেন? উত্তর আসে যে মানুষে টানা রিক্সার যে নিয়ম, সেটা এক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। আমরা সবাই জানি যে একটি রিক্সার লাইসেন্স নম্বর নিয়ে পাঁচ-দশটি রিক্সা রাস্তায় আছে। রিক্সার মালিক পক্ষ যে অবিরত শ্রমিকশোষন করে চলছে, তার প্রতিকারে সিটি কর্পোরেশান বা শ্রমিকসমিতিকে কিছু করতে দেখিনি। বড় বড় রাস্তা থেকে রিক্সা তুলে দেয়ার ফলে রিক্সা শ্রমিক ও ভোক্তার যে ক্ষতি হয়ে গেছে, সেদিকটা নিয়েও সিটি কর্পোরেশনের কোন চিন্তা ভাবনা আছে, তাই বা বলি কি করে? আজ তক মানুষে টানা রিক্সা সমস্যারই কোন সমাধানে যে দিতে পারেনি, তার কাছে আরো হাজার সাতেক এই নতুন যন্ত্রের ব্যাবস্থাপনা দিলে এর ফলাফল কত ভয়াবহ হতে পারে? সিটি কর্পোরেশন জানবে ৭ হাজার রিক্সার কথা, রাস্তায় থাকবে আদতে দশ, বিশ, তিরিশ? এখানেও আবার আমাদের বোকা হবার পালা। রিক্সা মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ, সংসদের স্থানীয় সরকার বিষয়ক কমিটি, মেয়রের দপ্তর, এরা কি একই শরীরের বিভিন্ন অংশ নন।

থুক্কু, সরকার আর মেয়রের দপ্তরে তো এখন দুই ভিন্ন পাট্টির লোক। তাই মনে হয় এইসব রিক্সার পারমিট বি আর টি এ'র হাতে দিলে সিটি কর্পোরেশন আর বখরার ভাগ পায় না। তাহলে, সৈয়দ আশরাফের মিন্টু রোডের বাসায় প্রতি শনিবারে যে মজলিশ বসে আর তাতে যে খোকার জন্য আধা বোতল স্কচ বরাদ্দ থাকে, এটা মনে হয় শুধুই মিছা কথা।


কেউ কেউ পরিবেশ বাচানোর ধুয়া তুলছেন। অন্য কেউ বলছেন এতে রিক্সাশ্রমিকের জীবন উন্নত হবে।


যদি কোন ভাবে জানতাম যে একটি বাঁশ-কাঠ-লোহায় বানানো রিক্সার বদলে, একটি জি-আই পাইপ আর রুপবান টিনের রিক্সা রাস্তায় নামছে, তাহলে না হয় কথা ছিল। কিন্তু সেটা কি এমনি এমনি হয়ে যাবে? এটা না হওয়ার গভীর আশঙ্কা আরো সুগভীর হয়ে যায় যখন জানা যায় যে ব্যাটারিচালিত রিক্সার জন্য যারা অনুমতি চেয়েছেন, তাদের কারো মালিকানায় একটিও বাঁশ-কাঠ-লোহায় বানানো রিক্সা নেই।

আসল সংখ্যাটি কত হবে সেটি না ভেবে শুধু সাত হাজার নিয়েই যদি ভাবি, তাহলে প্রতি রাতে বা একদিন পর পর যদি এগুলোকে চার্জ দিতে হয় তাহলেও তো বিদ্যুত লাগবে। সেটা আসবে কোথা থেকে। এবারো আমাদের আবার বোকা হবার পালা। থাক এই দফা না হয় আর খোকা আর চৌফিকের মামু-ভাইগ্না সম্পর্কের কথা নাই তুললাম। কিন্তু উত্তরটা কে দেবেন? যেখানে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালের নতুন ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিটে দেয়ার মত অতিরিক্ত বিদ্যুত ডেসকোর কাছে নেই, সেখানে রিক্সার ব্যাটারি চার্জ দেবার বিদ্যুত কোথা থেকে আসবে? আর এই নতুন রিক্সার মালিকে যদি তার বাসার প্লাগ থেকে চার্জ করে রিক্সা রাস্তায় নামান, তখন আর সেটা ডোমেস্টিক রেটে দেয়া যায় কি না, এইগুলোর মত আজগুবি প্রশ্ন নাই বা করলাম।



না, ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত রিক্সার ব্যাপারে এর চাইতে শ্লীল কোন কথা মাথায় আসে না
[,,,,,,,,,,,,,,,,,,,আমার লেখায় বানান এবং বিরাম চিহ্নের সন্নিবেশনের ভুল থাকলে দয়া করে ধরিয়ে দিন।,,,,,,,,,,,,,,,,,] ,,,,,,,,বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী,,,,,,
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে নভেম্বর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:২৮
৪টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ভণ্ড মুসলমান

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:২৬

ওরে মুসলিম ধর্ম তোমার টুপি পাঞ্জাবী মাথার মুকুট,
মনের ভেতর শয়তানি এক নিজের স্বার্থে চলে খুটখাট।
সবই যখন খোদার হুকুম শয়তানি করে কে?
খোদার উপর চাপিয়ে দিতেই খোদা কি-বলছে?

মানুষ ঠকিয়ে খোদার হুকুম শয়তানি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসবে তুমি কবে ?

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪২



আজি আমার আঙিনায়
তোমার দেখা নাই,
কোথায় তোমায় পাই?
বিশ্ব বিবেকের কাছে
প্রশ্ন রেখে যাই।
তুমি থাকো যে দূরে
আমার স্পর্শের বাহিরে,
আমি থাকিগো অপেক্ষায়।
আসবে যে তুমি কবে ?
কবে হবেগো ঠাঁই আমার ?
... ...বাকিটুকু পড়ুন

(রম্য রচনা -৩০কিলো/ঘন্টা মোটরসাইকেলের গতি )

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫০



একজন খুব পরিশ্রম করে খাঁটি শুকনো সবজি( দুষ্টু লোকে যাকে গাঁ*জা বলে ডাকে) খেয়ে পড়াশোনা করে হঠাৎ করে বিসিএস হয়ে গেলো। যথারীতি কষ্ট করে সফলতার গল্প হলো। সবাই খুশি। ক্যাডারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোথাও ছিলো না কেউ ....

লিখেছেন আহমেদ জী এস, ২০ শে মে, ২০২৪ রাত ১০:১৯




কখনো কোথাও ছিলো না কেউ
না ছিলো উত্তরে, না দক্ষিনে
শুধু তুমি নক্ষত্র হয়ে ছিলে উর্দ্ধাকাশে।

আকাশে আর কোন নক্ষত্র ছিলো না
খাল-বিল-পুকুরে আকাশের ছবি ছিলো না
বাতাসে কারো গন্ধ ছিলোনা
ছিলোনা... ...বাকিটুকু পড়ুন

#প্রিয়তম কী লিখি তোমায়

লিখেছেন নীল মনি, ২১ শে মে, ২০২৪ সকাল ৭:৫১


আমাদের শহর ছিল।
সে শহর ঘিরে গড়ে উঠেছিল অলৌকিক সংসার।
তুমি রোজ তাঁকে যে গল্প শোনাতে সেখানে ভিড় জমাতো বেলা বোস, বনলতা কিংবা রোদ্দুর নামের সেই মেয়েটি!
সে কেবল অভিমানে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×