somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বয়ে চলো নিরন্তর দুঃসহ স্মৃতীর প্রহর

২২ শে নভেম্বর, ২০০৯ সকাল ১০:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


গীতিকার মঞ্জুরুল আলম চৌধুরীর সম্মানীয় বীরাঙ্গনাদের নিয়ে লেখা একটি গান আপনারা অনেকেই নিশ্চই শুনেছেন। গানটির প্রথম অন্তরা--

দৃষ্টিতে আগুন তোমার চোখেতে সাগর
বিধ্বস্ত মলিন মুখ নয়ন ডাগর
কত দিন গেক কত মাস
দীর্ঘ দীর্ঘ বছর
বয়ে চলো নিরন্তর দুঃসহ স্মৃতীর প্রহর।

আমি আমার প্রিয় এই গানটির একটি লাইন নিলাম আমার আজকের এই পোস্টের শিরোনাম হিসাবে।

গানটিতে লেখক বলেছে-- তাকে কোন যুবক বলেনি ভালবাসার কথা, তার কষ্টগুলো এই দেশে ফুল হয়ে ফুটে থাকে, তার আচঁল আজ সবুজ লাল দেশের পতাকা। এই গানটি আমার ভিতরের ভীতটাকে নাড়া দেয়। এই দেশে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার হয়েছে, হচ্ছে। আমরা আলোর মুখ দেখছি। একদিন আমরা সব পাব , অবশ্যই পাব। দেখবো যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে। তাদের উদ্ধত মাথা ভূলুন্ঠিত হয়েছে।

বীরাঙ্গনা হে বীরাঙ্গনা তুমি মৃত্যুঞ্জয়ী।

আমার এক বন্ধুকে একদিন রাস্তায় এক পাগলীর দিকে গভীর মনযোগ সহকারে তাকিয়ে থাকতে দেখে জিজ্ঞাস করেছিলাম--- ''ওর দিকে কি দেখছ?''
সে বলল-- '' না দেখছি।"

এরপর খুব ধীরে ধীরে স্পষ্ট উচ্চারণে বলল---," আমার শ্বাশুরী মা কে?"

মহান স্বধীনতা যুদ্ধের সময় আমার ঐ বন্ধুর বরের বয়স ছিল পাঁচ বছর। একরাতে ওনার মাকে পাকসেনারা ধরে নিয়ে যায়।

সেই পাঁচ বছরের শিশুটি এখন ও মায়ের সেই আর্তচিৎকার শুনতে পায়। মাঝ রাতে ঘুম থেকে জেগে উঠে ভয়ে চিৎকার করে কাঁদে।

দেশ স্বাধীন হবার পর তাকে ক্যাম্প থেকে উদ্ধার করা হয়। বাসায় আনার পর একমাত্র আদরের সন্তানকে চিন্তে পেরে বুকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে শুরু করেন। কাঁদতে কাঁদতেই অজ্ঞান হয়ে যান।

তারপর যখন জ্ঞান ফেরে তখন তিনি সম্পুর্ন অপ্রকৃতস্থ। এই আবস্থায় দুই দিন থেকে, তিনি হঠাৎ করেই শান্ত হয়ে যান। একদম চুপচাপ এবং সেই রাতেই তিনি কোথায় যে চলে যান, কেউ খোঁজ পায়নি আর কোন দিন। সেই সময় পত্রিকাতেও তার খোঁজে ছবিসহ খবর ছাপান হয়, কিন্তু কোন খোঁজ পাওয়া যায় নি।

সেই পাঁচ বছরের শিশুটি এখন একজন পূর্নবয়স্ক মানুষ---------
আজও তিনি খুঁজে ফিরেন তার মাকে। রেলস্টেশনে, বাসস্টেশনে, ফেরীঘাটে সর্বত্র কোন বয়স্কা পাগলীকে দেখলেই সব ভুলে তার কাছে চলে যান । সারা বংলাদেশে তার দুই চোখ ব্যাকুল হয়ে ঘুরে বেড়ায় একবার মাকে দেখবার জন্য। শুধু একবার।

আমার বন্ধুটি বলল,'' শুধু ও কেন আমিও খুঁজি, যদি একবার তার দেখা পাই।''


আমার আজকের পোস্টটি আমি একটি মন্তব্য হিসাবে দিয়েছিলাম শেরিফ আল শায়ারের ---বীভৎস যৌন নির্যাতন, কিন্তু এড়িয়ে গেছেন সবাই এই পোস্টে।

কিন্তু রাজ মোঃ আশরাফুল হক বারামদী এর একটি মন্তব্য আমাকে মনে করিয়ে দিল এটা শুধু মন্তব্য হতে পারে না এটা একটা পোস্ট হও্যা উচিৎ । আর তাই আমি একে কিছুটা পরিবর্ধন করে পোস্ট তৈরী করে দিলাম।




গত জোট সরকার ক্ষমতা গ্রহনের পর তারা জাতীয় স্মৃতি সৌধে পুস্পস্তবক অর্পণ করলেন এবং শহীদদের সম্মান জানাবার জন্য এক মিনিট নিরবতা পালন করলেন।
রাতে টিভিতে এই খবর দেখার পর পরই একটা ফোন এল। ফোনে খুব ভদ্রভাবে আমাকে জানান হল এই সরকার একটা কাজের কাজ করছে। আমি বললাম ,''কি কাজ? ওরা তো সবে মাত্র ওথ নিল! ''
আপরপ্রান্তের কথা শোনা গেল," কেন? টিভি তে খবরে দেখলা না বড় বড় রাজাকারদেরকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে স্মৃতি সৌধে, শহীদদের সম্মান দেখাবার জন্য। তারা শহীদদের সালাম দিয়েছে আবার এক মিনিট নিরবতাও পালন করেছে?"
আমি বললাম ''খুব খুশি মনে হয় তুমি।''
উত্তর পেলাম ''বুঝতে পারছি না । সম্পুর্ন বোধ শূন্য।''
আসলেই আমি এখন মানুষ না আমি এখন রোবট। মেমোরীতে যা ডাউনলড করা আছে তার বাইরে কিছু চিন্তা করার ক্ষমতা এখন আর নাই।

আমি যুদ্ধোপরাধীর বিচার চাই। প্রকাশ্যে বিচার চাই।
১৮টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×