somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রম্য রচনা

২০ শে নভেম্বর, ২০০৯ ভোর ৪:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


দালাল

আমার দুর সম্পর্কের এক মামা দালাল ছিলেন। না, না পাকিস্তানি জল্লাদ বাহিনীর দালাল নয়, পাটের দালাল।
একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকে এখন পর্যন্ত দালাল বলতেই পাকিস্তানী দখলদার বাহিনীকে যারা সহযোগিতা করেছে বা খুন, ধর্ষন, লুট ইত্যাদিসহ নিরীহ মানুষের ধন সম্পদ জ্বালিয়ে পুড়িয়ে পাকিস্তানী জল্লাদ বাহিনীর প্রশংসা কুড়িয়েছে তারাই দালাল বলে পরিচিত। কেউ তথাকথিত শান্তি কমিটির সদস্য, কেউ রাজাকার, কেউ আল শামস, কেউ আল বদর নামে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এমন কোন কাজ করেনি যা বাকি ছিল। আজ সাত্রিশ বছর পর তাদের বিচারের প্রক্রিয়া চলছে। আমরা আশা করি বিচার হতেই হবে এবং অপরাধি শাস্তি ভোগ করবে।
পাকিস্তানি দালালের কারনে দালাল শব্দটা এখন ঘৃণিত হয়ে গেছে। পাকিস্তানি দালাল জন্মগ্রহনের পূর্বে যদি ফিরে তাকাই তাহলে দালালের অনেক রকমের সঙ্ঘা খোজে পাব এবং অনেক রকমের দালালের অস্তিত্ব বেরিয়ে আসবে। যেমন পাটের দালাল, জমির দালাল, বাড়ীর দালাল, গরুর দালাল, বাজারের(??) দালাল, আদালতের দালাল, সরকারের দালাল ইত্যাদি। মোট কথা এমন কোন কাজ নেই যার কোন দালাল নেই। অবশ্য আজ ছত্রিশ বছর পরদেশে পরবাসে পরশ পাথর খুজতে খুজতে বেশকিছু অভিজ্ঞতা থেকে জানতে পারলাম এইসব দালালরা বিশ্বব্যাপী ভিবিন্ন নামে ভিবিন্ন দেশে দালালি করছে। কেতাদুরস্ত নাম ধারন করে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষন করে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। নাম যাই ধারন করুক না কেন কাজ একই। দালালি। কোথাও কমিশন এজেন্ট, কোথাও ব্রোকার, কোথাও সেলস রিপ্রেজেন্টেটিভ ইত্যাদি অনেক নাম। আদিকাল থেকে এই দালালি চলে আসছে। দালালি একটা পেশা। এই পেশায় মূলধন খুব বেশি লাগেনা।
যাই হোক আমাদের দেশের দালালদের কথায় ফিরে আসি। আমাদের দেশের দালালরা (পাকিস্তানী দালাল ছাড়া) কাজ করে নিজে পয়সা কামিয়েছে আবার যাদের জন্য দালালি করেছে তাদেরও উপকার করেছে। কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া। যেমন আমার মামার কথা বলা যায়। মামা পাটের দালালি করেছে বহুদিন। দীর্ঘ ছত্রিশ বছরের দালালিতে তিনি কাউকে পথে বসাননি।
শুনেছি মামা একই ক্লাশে দুবছর বা তার বেশি সময় নিয়ে পোক্ত হয়ে পঞ্চম ক্লাশ অবধি পৌছে যান। পঞ্চম শ্রেনীতে মামাকে নিয়ে বাদল গোল। চার বছরেও মামা পঞ্চম শ্রেনীর চৌকাট পেরুতে ব্যর্থ হন। এই ব্যর্থতা মামার না শিক্ষকের তা আমরা জানি না। কিন্তু একদিন সব শিক্ষকরা একতাবদ্ধ হয়ে মামাকে বলে দিলেন, শামসু, তোর দ্বারা কিছু হবে না। এবার তুই বাড়ী যা’। তখন মামার বয়স সতের। এতদিন মামার একটা কাজ ছিল। প্রতিদিন অনেকগুলো বই নিয়ে স্কুলে আসা যাওয়া করা। স্কুল থেকে বের করে দেবার পর মামার করার কিছুই রইল না। এদিন সেদিক ঘুরাঘুরি করে সময় কাটায়। নিজের বাবার জমিও নেই যে কাজ করে সময় কাটাবে। মাঝে মাঝে কুটিবাজারে যায়। বুগিরের রশিদের পাটের গুদাম আছে বাজারে। নারায়নগঞ্জের পরই কুটি বাজার ছিল পাটের বড় আড়ত। সেখানে রশিদের আসেপাশে বসে থাকে প্রায় সারাদিন। মাঝে মাঝে রশিদের ফাইফরমাস খাটে। যারা রশিদের কাছে পাট নিয়ে আসে তারা কিভাবে বেচাকেনা করে তা দেখে। এক সময় রশিদ বলল, সারাদিন বসে না থেকে তুমি পাট ওজনের কাজটা কর না কেন? সেই থেকে মামা পাট ওজনের কাজটা পেয়ে গেল। কিভাবে পাট ওজন দিতে হয়, ওজন মাপার দাড়িপাল্লায় কি করলে দুএক সের বাড়ানো কমানো যায় তার কায়দাও শিখিয়ে দিল। এই কাজটা পেয়ে মামা খুব খুশি হল এবং কিছুদিনের মাঝেই মামার চেহারা বদলে গেল। এখন পকেটে পয়সা আসে। আক্তার বিড়ি ছেড়ে কাগজের বিড়ি ধরেছে। মাথায় এখন সোজাসুজি সিতা কাটে, সরিষার তেল বাদ দিয়ে এখন কলম্বো নারকেল তেল ব্যবহার করেন। কাজশেষে যখন বাড়ী ফেরে তখন বাড়ীতে একটা হৈ চৈ পড়ে যায়। শামসু এসে গেছে! খাবার দাও তাড়াতাড়ি। পাটের আড়তে কাজ করা, যে সে কথা নয়!
যারা পাট নিয়ে আসে তাদের অনেকের সাথে মামার পরিচয় হয়। কিছুদিনের মাঝেই মামা বুঝতে পারল পাট বেচাকেনার মাঝখানে একটা ফারাক আছে। তা হল গুদামের মালিক রশিদ, খালেক দালাল আর সরেজমিনে যারা পাট নিয়ে আসে তারা। যারা পাট বেচতে আনে তারা সরাসরি রশিদের কাছে যেতে পারে না। মাঝখানে খালেক কাজ করে। খালেক বিক্রেতা আর রশিদের মাঝখানে মধ্যস্থতা করে। এই মধ্যস্থতা করার জন্য খালেক পয়সা নেয়। মামা দেখল এই কাজটা খুব সোজা। কোন কিছু না করেই পয়সা বানানো যায়। এই কাজটাই তার শুরু করতে হবে। একেই বলে পাটের দালালি।
একদিন রশিদকে বলল, রশিদ ভাই, এখন আমি খালেকের কাজটা করব ঠিক করেছি। আপনি আমাকে দিয়ে দেখেন, যদি ঠিকভাবে করতে না পারি তাইলে তো ওজনের কাজটা আছেই।
ঠিক আছে, করতে চাও কর। তবে খালেক যা করে তাই করবে। দুজনেই করতে পার।
মামা আধা জল খেয়ে লেগে গেল। কয়েক মাসের মধ্যেই মামা উন্নতির প্রমান দিয়ে দিল। বাড়ীর দক্ষিনে এক কানি জমি কিনে ফেলল। তারপর দিনে দিনে, মামা বাড়ীর খড়ের ঘর ফেলে দিয়ে চারদিক টিন দিয়ে সাদা করে ফেলল। বাড়ীর চারদিক সব জমি কিনে একবারে পাকাপোক্ত ব্যবস্থা। চারপাশের মানুষ কখন কিভাবে মামাকে তাদের লিডার মেনে নিল তা মামাও জানে না। আশেপাশের দশ বিশটা গ্রামের মানুষ মামাকে ছাড়া কোন বৈঠক শালিশ করে না। এখন আর মামাকে নাম ধরে কেউ ডাকে না। ডাকে দলাল ভাই, দলাল চাচা ইত্যাদি যে যেরকম সম্পর্ক রাখতে চায় সেভাবে। এমনি ভাবে মামার আসল নামটা একদিন হারিয়ে গেল। এখন দলাল বললেই বুঝতে হবে হরিয়াবহের পাটের দালাল শামসু ভুঞা। স্থানীয় ভাষায় দালালকে ‘দলাল’ বলা হয়। দলাল মামা হয়ে গেলেন এলাকার বিশিষ্ট ব্যাক্তি। শেষ পর্যন্ত মামা আমাদের হাই স্কুলের সভাপতি ছিলেন অনেকদিন।

যারা আড়তে পাট নিয়ে আসে তারা গ্রামে গ্রামে ঘুরে ঘুরে পাট কিনে। কারও কাছে এক মণ, কারও আছে দশ সের, আবার কারও আছে দশ মণ। এমনি কিনে কিনে পাঠিয়ে দেয় আড়তে। এই ক্রেতাদেরকে গ্রামের মানুষ বেপারী বলে ডাকে। এই বেপারীদের জানাশোনা লেবার আছে। এক বললে তিন বুঝে। পাট কখন যেমন আছে তেমনি যাবে আবার কখন কত পরিমান জল বা পানি যাই হোক একটা কিছু দিয়ে একটু ওজন বাড়াতে হবে এরা সব জানে। বেপারীর সাথে এইসব লেবারের একটা হৃদ্যতা আছে। একটা বিড়ি দিয়ে মাগনা অনেক কাজ করানো যায়। চা খাওয়ালে তো কোন কথাই নেই।
তেমনি একজন বেপারী রুস্তম আলী। রুস্তম বেপারি নামেই সে পরিচিত। অনেকদিন থেকে সে এ কাজটা করে আসছে। বাজারের দর কোনদিকে, বাতাস কত উঠানামা করে তা সে সব সময় খেয়াল রাখে। সে নিজের পূজি খুব একটা খাটায় না। আশে পাশের দশ বিশটা গ্রাম তাকে চিনে। সে অভিজ্ঞ বেপারী হিসেবে পরিচিত। স্থান বুঝে সে পাটের টাকা পরিশোধ করে। কোথাও আধা দাম, কোথাও কিছু দিয়ে আবার কোথাও একবারে না দিয়ে পাট পাঠিয়ে দেয় আড়তে। বিক্রি করে ঘরে এসে টাকা দিয়ে যায়।
তবে কোন কোন সময় তার খাজনার চেয়ে বাজনা বেশি হয়ে যায়। কোন কোন সময় রুস্তম লেবার খুজে পায় না। একশ’র উপর লেবারের প্রয়োজন হলেই বাজনাটা বেড়ে যায়। মজুরি বেশি দিতে হয়। নয় ছয় করে সে ব্যবস্থা একটা করে নেয়।
সেদিন রুস্তম পাট কিনেছে দেড়শ মণের উপর। বাজারে খবর নিয়ে জেনেছে বাজার উঠতির দিকে। তাড়াতাড়ি পাঠাতে হবে। লেবার পেয়েছে একশ জন। প্রথম চালান এই একশ লেবার দিয়েই দিবে স্থির করল। মাথাপিছু এক মণের বেশি বহন করা যায় না। ভাড়ের দু মাথায় আধা মণের দুটি গাইট বেধে কাধে করে নিতে হয়। পাট নিয়ে সবাই চলল কুটি বাজারের দিকে। যাবে রশিদের গুদামে। লাইন ধরে ক্ষেতের আইল ধরে একশ মানুষ চলছে পাটের গাইট নিয়ে। কয়েকটা গ্রাম, কয়েকটা চক পেরিয়ে যেতে হবে। বাদরপুরের দক্ষিনে ছোট খালটার পাড়ে গিয়ে সবাই থামল। কাধ থেকে পাটের গাইট নামিয়ে বিশ্রাম নিবে। না, তা নয়। দেখা গেল খাল থেকে বালতি ভরে পাটের গাইটে এক বালতি করে পানি ঢালা হচ্ছে। কাজ শেষ করে আবার রওয়ানা দিল। তদারকি করল রুস্তম নিজে।
পানি ঢালার পর এক মণ পাট হয়ে গেল এক মণ দশ সের। পথে যেতে যেতে রুস্তম অংক করল। একশ মণ পাটে দশ সের করে হলে কত বেশি হল? লাভ কত হবে? তখনকার দিনে কেলকুলেটর ছিল না। রুস্তম আলী হিসেবেও পাকা নয়। তারপরও সোজা হিসেবটা করল। একশকে দশ দিয়ে ঘুণ করলে দাড়ায় কত? অনেক টাকা!
রশিদের গুদামের সামনে সব পাট নামানো হল। দালাল খালেক এসে পরিক্ষা করে দেখল পানির পরিমান বেশি। পানির ওজন বাদ দিলে আসল পাট কত হবে তা অনুমান করা কঠিন। তাই সে এই পাট চলবেনা বলে মত দিল।
আড়তে যখন পাট কিনল না তখন রুস্তমের মাথায় হাত! এখন লেবারের টাকা, পাটের মালিকের টাকা আসবে কোথা থেকে? একশ জন লেবার তাকে ঘিরে আছে। রুস্তম টাকা দিলে তারা বাজার করবে, তারপর তাদের ছেলেমেয়েরা খাবে। একটা হৈ চৈ চিৎকার চেঁচামেচি। বাজারের মানুষ তামাসা দেখার জন্য সব কাজ বাদ দিয়ে পথে দাড়িয়ে গেছে। মনে হয় এটাই তাদের প্রধান কাজ। তামাসার শেষ দৃশ্য দেখাটা এখন তাদের কর্তব্য হয়ে দাড়িয়েছে। রাস্তা একবারে জ্যাম। কিছু কিছু পথচারিও লেবারের সাথে যোগ দিয়ে তারাও চিৎকার করছে। টাকা না দিয়ে এক পাও নড়তে পারবে না রুস্তম। হঠাৎ করে দেখা গেল লেবারদের মাঝ থেকে কে একজন ছোটখাটো একটা বক্তৃতা ঝেড়ে ফেলেছে। রুস্তমকে এক ঘন্টা সময় বেধে দেয়া হয়েছে। তখন বেলা ডুবে ডুবে। এক ঘন্টার মাঝে সকলের পাওনা বুঝিয়ে না দিলে পাট লুট করা হবে। বক্তৃতার এখানে বেশ বড় ধরনের একটা হাত তালি পড়ল। অবশ্য পাটের লেবার ছাড়াও অনেক পথচারি এই তালিতে স্বতস্ফুর্তভাবে অংশ গ্রহন করেছে। সবাই এক বাক্যে লিডারের কথা মেনে নিল। এমনকি পথচারিও। তাদের একতা দেখে মনে হল বাঙালিরা অনেক কিছুই করতে পারত, শুধু লিডারের অভাব।
রুস্তম বোধ হয় পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরেছিল। হয়ত বা তার পূর্ব অভিজ্ঞতা ছিল। সে যখন দেখল পাট সোজাভাবে বিক্রি হচ্ছে না তখন সে গোডাউনের সামনে আম গাছটার নিচে বসে রইল। ভাবখানা এই সে এখন কথা বলার শক্তি হারিয়ে ফেলেছে। আম গাছটা খালের পাড়ে। পেছন থেকে আক্রমনের কোন সাম্ভাবনা নেই। যা বলার বা করার সামনে থেকেই করতে হবে। লিডারগোছের কয়েকজন লেবারের সাথে আস্তে আস্তে পরামর্শ করছে রুস্তম। মাথায় যতরকমের বুদ্ধি আছে সবগুলোই হাতড়ে দেখল। কোনটাই মনপূত হয়না। তবে সে জানে এক সময় পাটের পানি শুকিয়ে যাবে এবং একটা দামও পাওয়া যাবে। কিন্তু কখন। ঠিক এই সময়ই বক্তৃতাটা হয়ে গেল।
নমুনা যা দেখা যাচ্ছে তাতে রুস্তমের কথায় কোন কাজ হবে বলে মনে হয় না। কারন রুস্তম আগেও কয়েক বার কথা দিয়ে রাখতে পারেনি বা রাখেনি। এক ঘন্টা পর পাটের কি গতি হবে তা রুস্তম অনুমান করতে পারে। যদি তাই হয় তাহলে এই লেবারদের মাঝে অনেকেই আগের বাকি মজুরি পাওনা আছে যা এখন মোক্ষম সময় আদায় করার। রুস্তম কি করবে বুঝতে পারছে না। ঠিক এই সময় মামার আগমন। মানুষের হৈ চৈ শুনে মামা এগিয়ে এল। দেখেন রুস্তম সেই পরিচিত আম গাছটার সাথে হেলান দিয়ে বসে বিড়ি টানছে। তার সামনে কয়েক জন মজুর দাড়িয়ে কথা বলছে। এসব রুস্তমকে উদ্দেশ্য করে কিনা বুঝা যাচ্ছে না। অবস্থা দেখে মনে হয় এই বুঝি রুস্তম কেঁদে ফেলবে। মামাকে দেখেই লাফ দিয়ে উঠে দাড়াঁল। খুব কাছে এসে বলল, আমাকে বাঁচান দলাল সাব! বড় বিপদে পড়ছি!
রুস্তমও মামার নাম জানে না। ঘটনা বোধ হয় মামার জানা ছিল যে খালেক এ পাট বাদ দিয়েছে। রুস্তমের করুন অবস্থা দেখে মামা বুঝতে পারলেন। তিনি এও বুঝতে পারলেন যে, এই মজুরদের মজুরি না দিলে ওরা ছেলেপেলে নিয়ে উপোস করবে।
মামা বললেন, পানি একটু কম মিশালে হত না? তাহলে চেষ্টা করে দেখতাম। এখন যা অবস্থা দেখা যাচ্ছে দুএকদিন না শুকিয়ে বাজারে তোলা যাবে না।
রুস্তম বলল,ঐ বেটারা! ওদেরকে বললাম, অত পানি দিস না। শুনল না।
রুস্তমকে বাধা দিয়ে মামা বললেন ওদিকের দোচালা ঘরের শেষ দিকে নিয়ে রাখতে বল সব পাট। লেবার কয়জন? কত করে দিতে হবে একটা হিসাব নিয়ে আস।
সেই পাট সাত দিন পর মামা বিক্রি করে দিলেন। সবকিছু করলেন মামার দায়ীত্বে। কারন রুস্তম বিপদে পড়েছে। পাট না বিক্রি করেই রুস্তমকে টাকা দিয়েছে সব মিটমাট করার জন্য। ্অতএব এখানে মামার দালালিটাই বড়। রুস্তম কোন রকমে গা বাচিয়ে লোকশান না দিয়ে এ যাত্রা রক্ষা পেলেই হয়। তাই মামা গুনে গুনে রুস্তমের খরচটাই দিয়ে দিলেন। বাকী যা খাওয়ার বা দালালি নেবার তা মামার পকেটেই গেল। তাতেও রস্তম খুশি। অন্তত লোকশান তো হয়নি। মামাও খুশি কারন দালালির সাথে তার অনেক সুনাম ছড়িয়ে গেছে। তিনি বিপদগ্রস্থকে সাহায্য করেন। এ গেল আমার দলাল মামার পাটের দালালির কথা। এখন পাটের পাট উঠেছে। মামাও পটল তুলেছেন। পাটের দালালি আর নেই।
সব রকমের দালালের কথা বলতে গেলে পাঠক আমাকে তেড়ে আসবেন। বেটা, আর কোন কাজ নেই। দালালি নিয়ে একটা লেখার বিষয় হল! কিন্তু কিছু মানুষের অদ্ভুত কিছু অভ্যেস আছে, পেটের ভেতর কথা রাখতে পারে না। তাকে বলতেই হয়। কেউ শুনুক বা না শুনুক। আমি অবশ্য অত দূর যাব না। শুধু গরুর দালালির কথাটা বলেই শেষ করতে চেষ্টা করব। কারন সব দালালই মানুষের উপকার করতে চেষ্টা করে এবং করেও থাকে। শুধু পাকিস্তানী দালাল ছাড়া। আর এ যুগের কিছু অসৎ দালাল ছাড়া। আগেই বলেছি দালালের সঙগা এখন বদলে গেছে। কে কোন্ কাজটা দালাল হিসেবে করে তা বুঝা মুস্কিল। আপনার সবচেয়ে আদরের ছোট ভাই যাকে আপনি মানুষ করেছেন বলে দাবী করেন, সেই আপনার একটা বড় কাজ করে দিল। কাজ শেষে দেখলেন কয়েক লক্ষ টাকার ফারাক। সে ফারাকটা ছোট ভাই খেয়ে ফেলেছে নাকি দালালি নিয়েছে বুঝতে সময় লাগবে।

গরুর দালালের কথা বলছিলাম। ছোট বেলায় কসবা বাজারে গরু দেখতে যেতাম। প্রতি শনিবার গরুর হাট বসে নতুন বাজারে। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে প্রায় প্রতি শনিবার বিকেলে বাজারে যেতাম। বড় বড় ষাড়গুলোকে খুব সাজিয়ে ঘুছিয়ে, শিংএ রং মেখে, মাথায় নানারকম রুমাল বেধে বাজারে নিয়ে আসত। আমরা ঘুরে ঘুরে দেখতাম আর নানা রকম মন্তব্য করতাম। কোন্ গরুটা কত দামে যাবে, কোন্টা সবচেয়ে বড় এসব নিয়ে আলোচনা করতাম। মাঝে মাঝে ভুলে যেতাম এখানে আমরা কেউ না। না ক্রেতা না বিক্রেতা। শুধু ফালতু। তবে কোন টিকেটের ব্যবস্থা না থাকায় দেখায় কোন বাধা ছিলনা। কোন কোন দিন সন্ধ্যার পর ফিরতাম। ফেরার পথে আমাদের দেখলে মনে হত যেন দালালি শেষ করে ফিরলাম।
শুধু গরু নয়, তার সাথে আরও অনেক কিছুই দেখতাম। দেখতাম কিভাবে গরু বেচাকেনা হয়। দালালরা কিভাবে আধা মরা গরুকে চড়া দামে বিক্রির ব্যবস্থা করে। দালালের হাতে একটা লাঠি থাকে। লাঠির মাথায় চৌকোনা এক দেড় ফিটের এক টুকরো টিন, টিনের সাথে ছোট একটা লোহার রড অথবা ভাংগা শিকল বাধা থাকে। দুর্বল, আধমরা বা অসুস্থ গরুকে চাঙা করার অস্ত্র। এই লাঠির মাথায় বাধা টিন আর লোহার রড দিয়ে গরুর কাছে নিয়ে হঠাৎ জোড়ে বারি দিলে গরু ভয়ে লাফ দিয়ে উঠে। যতক্ষন এই দুর্বল গরু বিক্রি না হবে ততক্ষন দালালের কাজ হল কতক্ষন পর পর চাঙা করে তোলা আর কিছু ভুয়া ক্রেতা জোগার করে দাম হাকা। এই লাঠি যার হাতে আছে সে একজন দালাল বুঝতে হবে। বিক্রেতা গরু বিক্রি করতে না পারলে বা ভাল দাম না পেলে দালালের শরণাপন্ন হয়। রফা হয় কত বিক্রি করে দিলে কত কমিশন ইত্যাদি। বিশেষ করে ঈদের হাটে খুব মজা হত।
সে বছর কোরবানীর ঈদ হয়েছিল চৈত্রমাসে। সাল বলার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। কারন তখন মানুষের জন্মদিনই কেউ লিখে রাখেনি। এটাতো একটা গরুর হাট। সে বছর গরুর দাম কম ছিল বলে অনেকে গরু কিনে খুশি। নিমতলির ছনা আর তার ছেলে গফুর গেল কোরবানীর গরু কিনবে বলে। সারাদিন অনেক গরু দেখল। দামে পছন্দ হয় না। শেষ পর্যন্ত একজন দালালকে বলল উজান দেশের একটা গরু দেখে দেবার জন্য। উজান দেশের গরু নাকি শুকনো হলেও খুব চর্বি থাকে, খেতে খুব স্বাদ। পাহাড়ি অঞ্চলের গরুর স্বাদই আলাদা। ছনার স্ত্রীর ইচ্ছা উজান দেশের গরু কোরবানী দিবে।
উজান দেশের গরু চিনার উপায় কি? গরুর মালিকের ঠিকানা দিয়েই উজান দেশের কিনা বুঝা যায়। যদি রেল লাইনের পূবদিকে ইন্ডিয়ার বর্ডারে বাড়ী হয় তাহলে বুঝতে হবে উজান দেশ। সেখানে পাহাড় আর বিলের কোলাকুলি, বিল আর নদী-খালের ঢলাঢলি, পাহাড়-জঙ্গলের মাতামাতি, আর প্রকৃতির বৈচিত্রতার স্পষ্ট দাগাদাগি। ওখানে পাহাড়ের ঢালে বিকেলে রাত্রি নামে। দালাল এমনি জায়গার একটি গরু পেয়ে গেল। দামও বেশি নয়। তবে দেখতে মনে হয় রোগা। হাটতে গেলে মনে হয় এই বুঝি পড়ে গেল। ছনাকে অনেক বুঝিয়ে সুজিয়ে দিয়ে দিল গরুটা। দালাল বলল, আরে উজানের গরু, মরতে মরতেও সাতদিন। কোন চিন্তা কইরনা। গরু খুব শক্ত আছে। দাম দিয়ে গরুর দড়ি ধরে তারা রওয়ানা দিল বাড়ীর দিকে।
আমরা তখন বাজারটা কয়েকটা চক্কর দিয়ে সড়কের মাথায় দাড়িয়ে গরুজাতীয় রচনার একটা মহড়া দিচ্ছি। আমাদের পাশ কাটিয়ে গফুর গরু নিয়ে গেল। পেছনে ছনা, হাতে একটা পাঁচন। একটু গিয়েই গরুটা দাড়িয়ে পড়ল। ছনা তার হাতের পাঁচন দিয়ে কয়েকটা বারি দিল। তাতে গরু বোধ হয় বেজার হয়ে গেল এবং রেগে গিয়ে সাথে সাথে মাটিতে শুয়ে পড়ল।
আমাদের দলে সেদিন আমরা তিন জন। গরুটা শুয়ে পড়ার পর আমাদের দলের বাদল বলল, এহ্ হে, কোরবানীর আরও তিন দিন বাকি। এখন যদি গরুটা মরে যায় তাহলে কাফ্ফারা কত দিতে হবে কে জানে!
আমি বললাম, মরবে না। কোরবানীর নিয়তে কিনে থাকলে এ তিন দিন বেচে থাকবে। কিন্তু এটা যে উজান দেশের গরু তা আমরা জানতাম না।
দেখলাম ছনা আরও কয়েকটা বারি দিয়ে গরু দাড় করানোর ব্যর্থ চেষ্টা করে পাচন ফেলে বাজারের দিকে চলে গেল। একটু পরই ফিরে এল সেই দালালকে নিয়ে। দালাল তার অস্ত্রটা নিয়ে বীরদর্পে গরুমহাশয়ের কাছে গিয়ে বুক ফলিয়ে দাড়াল। হাতের লাঠিটা গরুর কানের কাছে নিয়ে হঠাৎ জোড়ে বাজিয়ে দিল। আর যায় কোথায়! গরু এক লাফে দাড়িঁয়ে উঠে দে দৌড়। একবারে সোজা সড়ক ধরে, উল্টোদিকে। চোখের পলকে হয়ে গেল কাজটা। গফুর দড়িটা ভাল করে ধরতেও পারেনি। কারন গরু উঠে দাড়াবার কথা ছিল না। এখন গরুমহাশয় যেদিকে ছুটছে গফুরের সেদিকে ছোটা ছাড়া উপায় নেই। গরু যে কত জোড়ে ছুটতে পারে তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না। এখন গফুরের অবস্থা দেখলে কিছুটা বুঝা যায়। গরু ছুটছে, তার পেছনো দুশ গজ পেছনে গফুর, তার পেছনে ছনা। ছুটছে! তিনটি প্রাণী ছুটছে। প্রথম প্রাণীটি ছুটছে ভয় পেয়ে জীবন রক্ষার জন্য, তার শেষ শক্তি দিয়ে। তার পেছনে গফুর ছুটছে তার নিজের জিনিষটির মালিকানা প্রতিষ্ঠিত করে নিজের আয়ত্বে আনার জন্য আর ছনা ছুটছে গফুরকে সাহায্য করার জন্য। দেখা গেল একটু এগিয়ে ছনা জাম গাছটার নীচে বসে পড়েছে। সে বয়স্ক মানুষ। আর পারছে না।
আমরা দেখলাম, বাজারের মানুষ সব দাড়িয়ে দেখল গরুটা ছুটছে, তীরের বেগে, কাউকে কোন জখম না করে। তার পেছনে গফুর ছুটছে লুঙ্গি উচিয়ে, বাতাসের বেগে, একটা প্রানপন প্রতিযোগিতা। কে জিতবে কে জানে! এক সময় যেখানে সড়ক মোড় নিয়েছে সেখানে প্রতিযোগিরা চোখের আড়াল হয়ে গেল।
এদিক সেদিক তাকিয়ে বাদল জিজ্ঞেস করল, দালালটা গেল কোথায়?
ওর কাজ শেষ, আর দেখা যাবে না। আমি বললাম।

এ পর্যন্ত দু কিসিমের দালালের কথা বললাম যা আদিকাল থেকে তাদের পেশায় নিয়োজিত। কিন্তু যে দালালের কথা বলব বলে ইতস্তত করছি তা ‘বাকি রয়ে গেল শুধু বলিতে’। এ ধরনের দালালের কথা আগে কখনও শুনিনি। হতে পারে আমার অজ্ঞতা। অথবা অন্য কোন ভাবে অন্য কায়দায় এই বিশেষ দালালি চলে আসছে। এখন যে দালালের কথা বলব তা হল লেখকের দালালি। কথাটা বোধ হয় ঠিক বুঝাতে পারিনি। এধরনের দালালি তো আছেই, একজন লেখক আর একজন লেখকের দালালি করে মানে যাকে বলে পরস্পর পিঠ চুলকানি। আমি যে দালালির কথা বলতে যাচ্ছি তা অন্য রকম। রাতারাতি কোন বিশেষ লেখককে বিখ্যাত করার দালালী। সকলে এ কাজটা পারে না, বা এ ধরনের সুযোগ পায় না। হাতে গোনা দুএকজন দালাল এই দালালিটা করতে পেরেছে। তারা সুযোগ পেয়েছে এবং অনেক প্রবাসীকে সাময়িক বিখ্যাত করতে পেরেছে।
এই পরবাসে শত বাধা বিপত্তি সত্বেও অনেকেই লেখালেখি করেন। দেশে বিদেশের পত্রপত্রিকায় প্রবাসী লেখকের অনেক উন্নতমানের লেখা দেখতে পাই। অনেক বড় মাপের লেখক আছেন যারা দেশে থাকলে বিখ্যাত লেখক হতেন হয়ত। পরিবেশ পরিস্থিতি অনেক বাধা হয়ে দাড়ায় বলে অনেকেই দেশের সাহিত্য জগতের মূলধারার সাথে যুক্ত হতে পারেন না। প্রবাসী লেখক কবি সাহিত্যিকদেরও ইচ্ছে হয় দেশে তাদের পরিচিতি হোক, লেখা ছাপা হোক, পাঠক সৃষ্টি হোক। সঠিক যোগাযোগের অভাবে সব সময় তা হয়ে উঠেনা। এই প্রবাসী লেখকের দালালরা এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে দু পয়সা কামিয়ে নিচ্ছে।
এই ধরুন, আপনি দেশে গেলেন। ইচ্ছে আছে আপনার লেখা একটা বই আকারে ছাপার। প্রকাশকের কাছে গেলে অনেক কথা শুনে মনে হবে আপনার লেখা বই আকারে ছাপা মানে কতগুলো টাকা জলে ঢালা। তখন ঐ দালালরা এগিয়ে আসে। তারা খবর রাখে, যোগাযোগ রক্ষা করে কোন কোন দেশে কোন কোন লেখক আছে। দেশে গেলে তারা সাক্ষাত করে অনেক রকমের প্রস্তাব আপনার সামনে পেশ করবে। যেমন: আপনি যদি টিভিতে সাক্ষাতকার দিতে চান তাহলে এত টাকা...
যদি দৈনিক কাগজে বড় করে ছবি সহ আপনার জীবনচরিত ছাপতে চান তাহলে ...
আপনার লেখা নিয়ে একটা বিরাট আলোচনা করাতে চান তাহলে ....
আর যদি বই ছাপতে চান তাহলে আমাদের প্রেস .... বলুন, কোনটা চাই!
প্রবাসী লেখক অনেকেই এমন একটা লোভনীয় প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান এবং রাতারাতি বিখ্যাত হবার প্রলোভনে গাটের কড়ি ছাড়েন হাত খোলে। বিখ্যাত হয়ে যান একদিনের জন্য। কিন্তু বুঝতে চান না এই একদিনের বিখ্যাত লেখককে পরের দিন কেউ মনে রাখে না। রাখে তার সৃষ্টিকে। তিনি যদি যুগের প্রয়োজনে কথামালা সৃষ্টি করে পাঠকের মন জয় করতে পারেন তবে পাঠকই এই লেখককে খোজে বের করবে। মুগ্ধ হবে তার সৃষ্টির গভীরতা দেখে। স্থান করে নিবেন পাঠকের মনের গভীরে। লেখকের ছবি পাঠকের মনে চিরতরে আঁকা হয়ে যাবে।
এই দালালরা দেশের মিডিয়ার সাথে গভীরভাবে যোগাযোগ রক্ষা করে থাকে। এমন কি সরকারি দপ্তরেও তারা কড়ি ছাড়ে কোন কিছুর মিনিময়ে। মিডিয়ার অনেকের সাথে থাকে তাদের অনেক রকম গভীর সম্পর্ক। কড়ি কথা বলে। তাও যদি হয় প্রবাসীর কড়ি। একদিনের খরচের জন্য প্রবাসী পিছপা হন না। এমন অনেক লেখককে জানি যারা কানাডা বা আমেরিকা থেকে দেশে গিয়ে এই দালালের হাতে বিখ্যাত হয়ে এসেছেন। এটা তাদের আতœতৃপ্তি। আর দালালের পোয়াবারো।
মাঝখানে এই দালালির অনেকটা ভাটা পরে। আগের মত তেমন আয় আর হয়না। প্রবাসী লেখক পাগল হয়ে আর টিভি সাক্ষাতকার দিতে চান না। আয় কমে যাওয়ায় এই দালালরা বিদেশে পাড়ি দিয়েছেন। প্রবাসে এ ধরনের দালালি মিলেনা বলে অন্য দালালি করছেন। দালালি তাদের পেশা। পৃথিবীর যেখানেই যাক, দালালি তারা করবেই। হোক সেটা গরুর দালালি বা ধনী ব্যক্তির চামচাগিরি।
-০-

১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×