somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অসভ্য বাঙালির দিন বদল

২০ শে নভেম্বর, ২০০৯ রাত ১:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রবাস জীবনে একজন রেসিস্ট ব্যক্তির সাথে আমার পরিচয় হয়েছিল। সেছিলো আমার এক তুর্কীশ বন্ধুর খালাতো ভাই। তার মা ছিলো তুর্কীশ আর বাবা সুইজারল্যান্ডের অধিবাসী। নিজের তুর্কীশ রক্তকে সে ঘৃণা করতো আর বাবার পরিচয়ে গর্ববোধ করতো। আরব আর দক্ষিণ এশীয় লোকজনদের সে দুচোখে দেখতে পারতোনা। তার মতে এই সব এশীয়রা অসভ্য এবং ইতর গোত্রিয়। এরা ভদ্রতা শেখে নাই, হাত দিয়া ভাত খায়।

এরা যেই টেবিলে খায় সেই টেবিলেই হাগে। তার সাথে আমার মোটামুটি ধরণের ঝগড়া হয়েছিলো। আমি তাকে বলেছিলাম, আমরা ডাইল মাখা ভাত খাই, তাই হাত দিয়া খাই, কিন্তু তোমরা হাগার পরে পানি ব্যবহার করোনা কোন যুক্তিতে, তোমরা কেমনতর ভদ্র ?

সে যাই হোক, ভদ্রতা-সভ্যতা আর নৈতিকতা, এই জিনিসগুলা একেক দেশে একেকরকম। এসব জিনিসের বিশ্বজনীনতা নিয়ে আলাপ করতেও বসি নাই। আমার চিন্তা দিন বদল নিয়া। পথে, ঘাঁটে, বনে, বাদারে, স্বপ্নে, জাগরনে সব যায়গায়ই শুনি দিনবদলের গান। দিনবদল শব্দটার একসময় একটা ভার ছিলো, শব্দটার পেটেন্ট অনেকটা কিনেই নিয়ে ছিলো দেশের বাম প্রগতিশীল শ্রেণী। পেটেন্টটা মনে হয় তাদের হাত থেকে ছুটে গেছে। আওয়ামিলীগ সরকার থেকে শুরু করে বাংলালিংক, প্রথম আলো, নব্য উপনিবেশী হেজিমনির সবগুলো ক্ষমতাশালী স্তর, দিনবদলের গানের ভাগ চায় সবাই। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় থেকেই অবশ্য এই গানের শুরু, নানান সুরে গলা ছেড়ে গাওয়া শুরু বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আশার পর থেকে। গানটা অবশ্য এই দেশের জনগন সবাই গাইতে চেয়েছে। তবে এই সুরে গাইতে চেয়েছে কিনা জানিনা। এদেশের জনগন অসভ্য জনগন, গানের সুর এরা দেবেইবা কোথা থেকে, সুর কিছু জানা থাকলেও ভুলে গেছে কোন আমলে, জয় আর জিন্দাবাদের লড়াই তো কিছু কম হয় নাই। এদেশের অভদ্র-অসভ্য মানুষের মুখে বছর বছর নতুন গানের সুর তুলে দেয় রাজনীতিবীদ, মিডিয়া মুঘোল, আর নানান চেহারার সমাজকর্মি, নানান রঙের বুদ্ধিজীবীরা। সেই গানই তারা গায় আর বগল বাজায়। দুই বছর মেয়াদী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় দিন বদলের গানের পেটেন্ট যাদের ছিলো তারাওযে কেনো সুর ভুলে গেলো, তা আমি জানিনা। তবে পেটেন্ট তাদের গেছে, তা এখন নিশ্চিত।

বেশি কথা বলে লাভ নাই। বেশি কথা বলা অভদ্রতার লক্ষণ। আর আমি বদলালেই না অন্যরা বদলাবে। প্রথম আলো তাই বলে। আগে আপনি বদলান, তাহলে সবাই বদলাবে। বাদামের খোসা ঠোঙায় ফেলুন, দেয়ালে পানের পিক ফেলবেন না, নারীদের বাসের সিট ছেড়ে দিন, গ্যাসের চুলা নিভিয়ে রাখুন, ভদ্রতা শিখুন, নিজেকে বদলে ফেলুন, তাহলেই দিন বদল আসবে। অভদ্রতা-অসভ্যতাই এদেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা। আর কোন সমস্যা নাই। শিক্ষা সমস্যা নাই, বেকার সমস্যা নাই, লোড-শেডিং নাই, পানির সমস্যা নাই, অস্বাভাবিক যানজট নাই, দেশের সম্পদে বিদেশী নখর নাই, দেশিয় মগজে বিদেশী গবর নাই। যা আছে তা হলো অসভ্যতা, অভদ্রতা। আসুন, আমরা সবাই ভদ্র হয়ে যাই, সভ্য হয়ে যাই। আর যদি না হই, তাহলে দৃঢ়তার সাথে দিনবদলের পেটেন্টের নয়া ভাগিদাড়দের প্রশ্ন করি, হাগার পর পানি ব্যবহার না করেও নিজেদের তারা ভদ্র বলে কোন সাহসে। তাদের মল-মূত্রের গন্ধেই আজ এদেশের বাতাসে শ্বাস নেয়া দুষ্কর।
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাফসান দ্য ছোট ভাই এর এক আউডি গাড়ি আপনাদের হৃদয় অশান্ত কইরা ফেলল!

লিখেছেন ব্রাত্য রাইসু, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫২

রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের প্রতি আপনাদের ঈর্ষার কোনো কারণ দেখি না।

আউডি গাড়ি কিনছে ইনফ্লুয়েন্সার হইয়া, তো তার বাবা ঋণখেলাপী কিনা এই লইয়া এখন আপনারা নিজেদের অক্ষমতারে জাস্টিফাই করতে নামছেন!

এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×