শীত শেষ ।বাতাসের গতি দক্ষিনে ঘুরে গেছে ।নিজের বাচ্চাদের অসুখ বিসুখ নিয়ে চিন্তায় আছি ।নেট ঘেটে একটা লেখা পেলাম ।যাদের বাচ্চা আছে তাদের জন্য তুলে দিলাম ।
ঋতু পরিবর্তনের সময়ে শিশুর যত্ন
ঋতু পরিবর্তনের সময় এখন। প্রচন্ড
শীতের পর এখন কিছুটা স্বাভাবিক।
চলছে ফাল্গুনের বাতাস।
বাতাসে বসন্তের গন্ধ। ঋতু
পরিবর্তনের এই ধাক্কা লাগে শিশুদের
গায়েও। পরিবর্তনের
সাথে মানাতে গিয়ে শিশুদের অনভ্যস্ত
শরীর কিছুটা নাজুক হয়ে পড়ে। নাজুক
শরীরে প্রায়ই আক্রমণ
করে বসে ভাইরাস, ব্যাক্টেরিয়া্।
সামান্য অসাবধানতায় এ সময় সাধারণ
ঠান্ডা লাগা বা ফ্লু থেকে শুরু
করে হতে পারে নিউমোনিয়া কিংবা
ব্রংকিওলাইটিস। তাই জেনে নিন এই
সময়ে শিশুর যত্ন ও করনীয় সম্পর্কে।
সাধারণ ঠান্ডা লাগা বা ফ্লুঃ এ সময়
শিশুদের নাক দিয়ে পানি বের হতে থাকে,
হাঁচি ও কাশি হয়। সামান্য জ্বর ও
থাকতে পারে।
সাধারণ
সর্দি কাশিতে শিশুকে নিম্নলিখিত
উপায়ে যত্ন
নিনঃ শিশুকে আবহাওয়া অনুযায়ী গরম
রাখুন, তবে বেশী কাপড় পরিয়ে রাখবেন
না। এতে শিশু ঘেমে আরও
ঠান্ডা লেগে যেতে পারে।
কাশি থাকলে শিশুকে গরম পানির
সাথে লেবু ও চিনি বা গরম পানির
সাথে মধু মিশিয়ে ৫-৬ চা-চামচ
করে দিনে ৪-৫ বার খাওয়ান।
সর্দি হয়ে শিশুর নাক বন্ধ
হয়ে থাকলে নরমাল স্যালাইনের ন্যাসাল
ড্রপ শিশুর নাকের উভয় ছিদ্রে দিন
এবং কটনবাড দিয়ে শিশুর নাক
ভালভাবে পরিস্কার করে দিন।
এভাবে শিশুকে প্রতিবার খাওয়ার
আগে ও ঘুমের আগে এটা করুন। নাক
পরিস্কার করার জন্য সরিষার তেল
ব্যবহার করা যাবে না। এরপরেও শিশু
বেশি অসুস্থ বোধ করলে, জ্বর
বেশি থাকলে, বুকে গড় গড় আওয়াজ
হলে বা শ্বাসকষ্ট শুরু
হলে শিশুকে তাড়াতাড়ি কাছের
হাসপাতালে নিয়ে যান।
নিউমোনিয়াঃ আমাদের দেশের
শিশুরা অতি সহজেই নিউমোনিয়ায়
আক্রান্ত হয়। এ রোগের
লক্ষণগুলো হচ্ছে-
০০ জ্বর, সর্দি ও কাশি
০০শ্বাসকষ্ট বা দ্রুত শ্বাস নেয়া
০০ শ্বাস নেয়ার সময় শিশুর বুকের
পাঁজরের হাড়ের নিচের দিক ভেতরের
দিকে ঢুকে যাওয়া ।
নিউমোনিয়া একটি মারাত্মক রোগ।
যথাসময়ে চিকিৎসা না করালে
নিউমোনিয়াতে শিশুর মৃতু্য পর্যন্ত
ঘটতে পারে। তবে এন্টিবায়োটিক
দ্বারা চিকিৎসার
মাধ্যমে নিউমোনিয়া সম্পূর্ণ ভাল
হয়ে যায়। তাই শিশুর এ রোগের লক্ষণ
দেখা দেবার সাথে সাথে তাকে নিকটস্থ
হাসপাতালে নিয়ে যান।
ব্রংকিওলাইটিসঃ
এটি ও নিউমোনিয়ার মতই
একটি অসুখ। এক্ষেত্রে ও জ্বর,
সর্দি কাশির সাথে শিশুর শ্বাসকষ্ট
থাকে
০০ শিশুর বয়স সাধারণত ২-৬ মাস
হয়
০০ শিশু শ্বাস টানার সময় আওয়াজ
হয়
০০ শ্বাসকষ্ট থাকলেও শিশু
হাসিখুশি থাকে এবং অতোটা দুর্বল
হয়ে পড়ে না।
০০ এসব ক্ষেত্রেও শিশুকে অবশ্যই
নিকটতম
চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে এবং
চিকিৎসকের পরামর্শ
অনুযায়ী প্রয়োজনীয়
ব্যবস্থা নিতে হবে।
পরিশেষে কথা হলো ঋতু তার নিয়মেই
আবর্তিত হবে। শীত, বসন্ত
কিংবা গ্রীষ্ম যাই হোক, শিশু সুস্থ
থাকুক প্রতিদিনের মত। তার সুস্থতার
আলোয় উদ্ভাসিত হোক আপনার ঘর
মন জানালা।
০০ ডাঃ আশীষ কুমার চক্রবর্তী,
পরিচালক, আয়েশা মেমোরিয়াল
হাসপাতাল